করোনা সংকটাপন্নের চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসন ব্যবহারের নির্দেশনা ডব্লিউএইচএ’র

করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত যেসব রোগীর শারীরিক অবস্থা গুরুতর বা সংকটাপন্ন তাদের চিকিৎসায় ‘ডেক্সামেথাসন’ ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থ্যা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস গত বুধবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, অবশেষে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে গবেষণা, যখন কিনা এই ভাইরাসটি কেড়ে নিয়েছে বিশ্বের চার লাখেরও বেশি প্রাণ। আক্রান্ত হয়েছে ৮০ লাখের বেশি।

করোনা উপশমের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য ওষুধ ডেক্সামেথাসনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইক রায়ান বলেছেন, যেসব দেশে এই ওষুধটি ব্যবহারের উপকারিতা পাওয়া গেছে, তাদের উচিত এটা শুধু গুরুতর কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা। এক ব্রিফিংয়ে রায়ান আরও বলেন, তাই যারা কোভিড আক্রান্ত হয়ে গুরুতরভাবে ভুগছেন এবং অবস্থা সংকটাপন্ন, শুধু তাদের জন্যই এই ওষুধ সংরক্ষণ করে রাখা উচিত। গত মঙ্গলবার ডেক্সামেথাসনকে করোনা রোগীদের ‘জীবনরক্ষাকারী ওষুধ’ বলে ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। ফলে ওষুধটি দামে সস্তা হলেও পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দেশগুলো। যদিও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে যথেষ্ট পরিমাণ মজুত রয়েছে ডেক্সামেথাসন। তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কিছু চিকিৎসক। এ বিষয়ে আরও তথ্য-উপাত্ত চেয়েছেন তারা।

অক্সফোর্ডের গবেষকরা বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কম ডোজের স্টেরয়েড এই চিকিৎসা একটি বড় ধরনের অগ্রগতি। ভেন্টিলেটরে থাকা করোনা রোগীদের মৃত্যুর হার এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনে ওষুধটি। এছাড়া যারা অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন, তাদের মৃত্যুর হার এক-পঞ্চমাংশ কমিয়ে আনে। বলা হচ্ছে, যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুর দিকে যদি ওষুধটি পাওয়া যেত, তাহলে সেখানে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হতো।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, এটা খুবই ভালো খবর। আমি যুক্তরাজ্য সরকার, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং অসংখ্য হাসপাতাল ও রোগীদের অভিনন্দন জানাই, যারা জীবনরক্ষাকারী এ আবিষ্কারে অবদান রেখেছেন। অক্সিজেন বা ভেন্টিলেটর সাপোর্টে থাকা কোভিড-১৯ রোগীদের মৃত্যুহার কমানোয় প্রথমবারের মতো কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে এই চিকিৎসা। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, তারা ডেক্সামেথাসনের বিষয়ে আরও জানতে শীঘ্রই বিশদভাবে বিশ্লেষণ শুরু করবে। পাশাপাশি, করোনার চিকিৎসাবিষয়ক তাদের নির্দেশিকাও সংশোধন করা হবে।

শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০ , ৫ আষাঢ় ১৪২৭, ২৬ শাওয়াল ১৪৪১

করোনা সংকটাপন্নের চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসন ব্যবহারের নির্দেশনা ডব্লিউএইচএ’র

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত যেসব রোগীর শারীরিক অবস্থা গুরুতর বা সংকটাপন্ন তাদের চিকিৎসায় ‘ডেক্সামেথাসন’ ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থ্যা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস গত বুধবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, অবশেষে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে গবেষণা, যখন কিনা এই ভাইরাসটি কেড়ে নিয়েছে বিশ্বের চার লাখেরও বেশি প্রাণ। আক্রান্ত হয়েছে ৮০ লাখের বেশি।

করোনা উপশমের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য ওষুধ ডেক্সামেথাসনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইক রায়ান বলেছেন, যেসব দেশে এই ওষুধটি ব্যবহারের উপকারিতা পাওয়া গেছে, তাদের উচিত এটা শুধু গুরুতর কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা। এক ব্রিফিংয়ে রায়ান আরও বলেন, তাই যারা কোভিড আক্রান্ত হয়ে গুরুতরভাবে ভুগছেন এবং অবস্থা সংকটাপন্ন, শুধু তাদের জন্যই এই ওষুধ সংরক্ষণ করে রাখা উচিত। গত মঙ্গলবার ডেক্সামেথাসনকে করোনা রোগীদের ‘জীবনরক্ষাকারী ওষুধ’ বলে ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। ফলে ওষুধটি দামে সস্তা হলেও পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দেশগুলো। যদিও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে যথেষ্ট পরিমাণ মজুত রয়েছে ডেক্সামেথাসন। তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কিছু চিকিৎসক। এ বিষয়ে আরও তথ্য-উপাত্ত চেয়েছেন তারা।

অক্সফোর্ডের গবেষকরা বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কম ডোজের স্টেরয়েড এই চিকিৎসা একটি বড় ধরনের অগ্রগতি। ভেন্টিলেটরে থাকা করোনা রোগীদের মৃত্যুর হার এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনে ওষুধটি। এছাড়া যারা অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন, তাদের মৃত্যুর হার এক-পঞ্চমাংশ কমিয়ে আনে। বলা হচ্ছে, যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুর দিকে যদি ওষুধটি পাওয়া যেত, তাহলে সেখানে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হতো।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, এটা খুবই ভালো খবর। আমি যুক্তরাজ্য সরকার, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং অসংখ্য হাসপাতাল ও রোগীদের অভিনন্দন জানাই, যারা জীবনরক্ষাকারী এ আবিষ্কারে অবদান রেখেছেন। অক্সিজেন বা ভেন্টিলেটর সাপোর্টে থাকা কোভিড-১৯ রোগীদের মৃত্যুহার কমানোয় প্রথমবারের মতো কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে এই চিকিৎসা। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, তারা ডেক্সামেথাসনের বিষয়ে আরও জানতে শীঘ্রই বিশদভাবে বিশ্লেষণ শুরু করবে। পাশাপাশি, করোনার চিকিৎসাবিষয়ক তাদের নির্দেশিকাও সংশোধন করা হবে।