স্বাস্থ্য অধিদফতর

করোনাভাইরাস : আক্রান্ত ও মৃত্যুতে এগিয়ে পুরুষ

আক্রান্তে কমবয়সীরা এগিয়ে থাকলেও মৃত্যুতে বয়স্করা বেশি ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ৩৮০৩, মৃত্যু ৩৮

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং প্রাণহানির দিক থেকে নারীদের তুলানায় এগিয়ে আছেন পুরুষ। অপরদিকে বয়সের বিচেনায় তরুণ-তরুণীরা আক্রান্ত বেশি হলেও প্রাণহানির দিক থেকে বয়স্করা এগিয়ে আছেন। এদিকে ১০৩তম দিনে এসে করোনা সংক্রমণ ১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮ জন। এনিয়ে ১০৩ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৩৪৩ জন। এদিকে একই সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮০৩ জন। এনিয়ে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জন। মোট আক্রান্তের মধ্যে ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪০ হাজার ১৬৪ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬০ হাজার ৭৮৫ জন। এদিকে আক্রান্ত ও প্রাণহানিতে এখনও এগিয়ে আছেন পুরুষরা। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৭০ ভাগের বেশি আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন পুরুষরা।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম বলেছেন, কোভিড পরীক্ষার কাজ সরকারি-বেসরকারিভাবে সম্প্রসারিত হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় জেলা পর্যায় পর্যন্ত আরপিসিআর পরীক্ষা যত দ্রুত সম্ভব সম্প্রসারিত হবে। আরও নতুন নতুন, সহজে করা যায় এমন কোভিড পরীক্ষা চালু হবে। উপজেলা হাসপাতাল পর্যন্ত এ ধরনের পরীক্ষা চালু করার প্রচেষ্টা নেয়া হবে। দেশের সব জেলা হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। জেলা হাসপাতাল পর্যন্ত সব সরকারি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। পরীক্ষার কিট বা পিপিই এর যেন কোন অভাব না হয় সেজন্য সুপরিকল্পিতভাবে সংগ্রহ এবং সরবরাহ এর পদ্ধতি নেয়া হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে কোভিড, নন-কোভিড রোগীদের ভালোভাবে চিকিৎসা সবা দেয়া যায় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করতে ১০৩ দিনে ৫ লাখ ৭০ হাজার ৫০৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যত বেশি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে তত বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত ১২৫টি দেশের মধ্যে শীর্ষ ২০ তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে এতোদিন ২০তম অবস্থানে থাকলেও এখন ১৭তম অবস্থানে এসেছে বাংলাদেশের নাম। আক্রান্তের দিক থেকে করোনার উৎপত্তিস্থল চীন, কাতার এবং কানাডাকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। ১০৩ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী, মেয়র, রাজনৈতিক শীর্ষ ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ, সচিব, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ সরকারি অনেক পদস্ত কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ দেশের অনেক বিশিষ্টজনরা প্রাণ হারিছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রতিদিন ৫০ হাজার করে মানুষের পরীক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে। তা না হলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না। শুধু পরীক্ষা আর চিকিৎসার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না, মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী মোট আক্রান্তের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪০ হাজার ১৬৪ জন যা সুস্থতার দিক থেকে ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ। আর এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬০ হাজার ৭৮৫ জন যা মোট আক্রান্তের ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ। আর মোট আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১ দশমিক ৩ শতাংশ অর্থাৎ ১৩৪৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিসংখ্যা অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে বয়সের বিবেচনায় ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ দশমিক, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ দশমিক, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ দশমিক, ৩১ থেকে ৪০ বয়সের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ দশমিক, ৪১ থেকে ৫১ এর মধ্যে আক্রান্তের সংখ্য ১৭ দশমিক, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ দশমিক, এবং ৬০ এর ঊর্ধ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ দশমিক। একইভাবে আক্রান্তের মধ্যে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের মধ্যে বয়সের বিবেচনায় ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন শূন্য দশমিক ৯২ ভাগ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে মারা যাওয়ার সংখ্যা ১ দশমিক ৪৯ ভাগ, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ দশমিক ৪ ভাগ, ৩১ থেকে ৪০ এর মধ্যে মারা যাওয়ার সংখ্যা ৮ দশমিক ২৯ ভাগ, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে ১৭ দশমিক ৩৯ ভাগ, ৫১ থেকে ৬০ মধ্যে ২৯ দশমিক ৬২ ভাগ এবং ৬০ বছর থেকে শতবর্ষ বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে মারা যাওয়ার সংখ্যা ৩৯ ভাগ।

আইইডিসআরের তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্তের দিক থেকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন পুরুষরা। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৭১ ভাগ আক্রান্ত হচ্ছেন পুরুষ আর মহিলা হচ্ছেন ২৯ ভাগ। একইভাবে আক্রান্তদের মধ্যে মারা যাওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষ মারা গেছেন ৭৭ ভাগ আর মহিলা মারা গেছেন ২৩ ভাগ। অর্থাৎ আক্রান্তের মতো মারা যাওয়ার ক্ষেত্রেও এগিয়ে আছেন পুরুষরা।

২৪ ঘণ্টা পরিস্থিতি

বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাসবিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ হাজার ৮০৩ জনের দেহে শনাক্ত হয়েছে ১৬ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে। ফলে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১ হাজার ৩৪৩ জনে। বুলেটিনে বলা হয়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ হাজার ৩৪৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে ১৬ হাজার ২৫৯টি পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৫০৩টি।

বুলেটিনে বলা হয়, আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ১ হাজার ৩৪৩ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন, তাদের ৩১ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী। হাসপাতা?লে মারা গেছেন ৩১ জন এবং বাসায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। এদের মধ্যে ১ থেকে ১০ বছরের একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের দু’জন, ত্রিশোর্ধ্ব পাঁচজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ছয়জন, ষাটোর্ধ্ব ১৪ জন, সত্তরোর্ধ্ব পাঁচজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী দু’জন রয়ে?ছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪ জন ঢাকা বিভাগের, ১৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, দু’জন খুলনা বিভাগের এবং একজন করে রাজশাহী, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের।

বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৯৭৫ জন। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৪০ হাজার ১৬৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত বিবেচনায় ?সুস্থতার হার ৩৯ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩১ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৬৭৪ জন এবং এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে নেয়ার সংখ্যা ১৭ হাজার ৮৭১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪০০ জন এবং ফলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশন থেকে সুস্থ হয়ে এ পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৬ হাজার ৮৪৫ জন। বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে রয়েছেন ১১ হাজার ২৬ জন। বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৮২১ জনকে। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে বা উপসর্গ নিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৬৪১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৬০৫ জন। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে বা উপসর্গ নিয়ে শুধু কোয়ারেন্টিন থেকে মোট ছাড়া পেয়েছেন ২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৬৫ হাজার ৭০৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি দিনে দিনে অবনতির দিকে যাচ্ছে। সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর প্রথম রোগী শনাক্তের তারিখ থেকে অর্ধ লাখ রোগী শনাক্ত হতে সময় লেগেছিল ৮৭ দিন। বাকি অর্ধলাখ রোগী মাত্র ১৬ দিনে শনাক্ত হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। এর দশ দিনের মাথায় প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু ঘটে। সংক্রমণ শুরুর পর ৩০তম দিনে ৬ এপ্রিল দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যায়। যদিও এর আগে ২৫ মে সরকার করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। ২৬ মার্চ থেকে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। এ সময় গণপরিবহন, সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকার ঘোষণা আসে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। করোনা সংক্রমণ কমিয়ে আনতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে কাউকে বের না হওয়ার নির্দেশ দেয় সরকার। কিন্তু মানুষ নানা উছিলায় ঘর থেকে বের হওয়া, নিয়মিত হাটবাজারে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে কেনাকাটা অব্যাহত রাখে। এ সময় অযথা গাড়ি নিয়েও মানুষকে চলাচল করতে দেখা যায়। পণ্য পরিবহনের গাড়িতে মানুষ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ছুটতে থাকেন। অনেকে বিয়েশাদি এমনকি সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে তা পালনের চেষ্টা করেন। রোজা শুরু হলে মানুষ নানা উছিলায় ঘর থেকে আরও বেশি বেশি বের হতে থাকেন। ঈদের আগে সাধারণ ছুটি কিছুটা শিথিল করা হয়। এরপর গার্মেন্ট খুলে দেয়া এবং ঈদের আগে ব্যক্তিগত গাড়িতে মানুষকে গ্রামের বাড়ি যেতে দেয়ার সুযোগ দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়। এরপর থেকে সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি বেশি শনাক্ত হতে থাকে সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে মৃত্যুর সংখ্যাও। সংক্রমণ শুরুর পর ৩৮তম দিনে ১৪ এপ্রিল শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর ২০ দিনের মাথায় ৪ মে রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায় ৫৮তম দিনে। এরপর ১১ দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২০ হাজার, তার পরের সাত দিনে ৩০ হাজার এবং তার পরের ছয় দিনে ৪০ হাজার এবং আরও পাঁচ দিনের মাথায় ২ জুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। প্রথম রোগী শনাক্তের পর সেটা ছিল ৮৭তম দিন। ৩১ মে থেকে ‘সীমিত আকারে’ অফিস এবং যানবাহন চালুর অনুমতি দেয়া হয়। ২ জুনের পর তিন দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬০ হাজার এবং তার পরের চার দিনে ৭০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর প্রতি তিন দিনে গড়ে দশ হাজার করে বেড়ে ১৮ জুন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা লাখের ঘরে পৌঁছায়।

শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০ , ৫ আষাঢ় ১৪২৭, ২৬ শাওয়াল ১৪৪১

স্বাস্থ্য অধিদফতর

করোনাভাইরাস : আক্রান্ত ও মৃত্যুতে এগিয়ে পুরুষ

আক্রান্তে কমবয়সীরা এগিয়ে থাকলেও মৃত্যুতে বয়স্করা বেশি ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ৩৮০৩, মৃত্যু ৩৮

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং প্রাণহানির দিক থেকে নারীদের তুলানায় এগিয়ে আছেন পুরুষ। অপরদিকে বয়সের বিচেনায় তরুণ-তরুণীরা আক্রান্ত বেশি হলেও প্রাণহানির দিক থেকে বয়স্করা এগিয়ে আছেন। এদিকে ১০৩তম দিনে এসে করোনা সংক্রমণ ১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮ জন। এনিয়ে ১০৩ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৩৪৩ জন। এদিকে একই সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮০৩ জন। এনিয়ে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জন। মোট আক্রান্তের মধ্যে ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪০ হাজার ১৬৪ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬০ হাজার ৭৮৫ জন। এদিকে আক্রান্ত ও প্রাণহানিতে এখনও এগিয়ে আছেন পুরুষরা। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৭০ ভাগের বেশি আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন পুরুষরা।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম বলেছেন, কোভিড পরীক্ষার কাজ সরকারি-বেসরকারিভাবে সম্প্রসারিত হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় জেলা পর্যায় পর্যন্ত আরপিসিআর পরীক্ষা যত দ্রুত সম্ভব সম্প্রসারিত হবে। আরও নতুন নতুন, সহজে করা যায় এমন কোভিড পরীক্ষা চালু হবে। উপজেলা হাসপাতাল পর্যন্ত এ ধরনের পরীক্ষা চালু করার প্রচেষ্টা নেয়া হবে। দেশের সব জেলা হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। জেলা হাসপাতাল পর্যন্ত সব সরকারি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। পরীক্ষার কিট বা পিপিই এর যেন কোন অভাব না হয় সেজন্য সুপরিকল্পিতভাবে সংগ্রহ এবং সরবরাহ এর পদ্ধতি নেয়া হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে কোভিড, নন-কোভিড রোগীদের ভালোভাবে চিকিৎসা সবা দেয়া যায় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করতে ১০৩ দিনে ৫ লাখ ৭০ হাজার ৫০৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যত বেশি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে তত বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত ১২৫টি দেশের মধ্যে শীর্ষ ২০ তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে এতোদিন ২০তম অবস্থানে থাকলেও এখন ১৭তম অবস্থানে এসেছে বাংলাদেশের নাম। আক্রান্তের দিক থেকে করোনার উৎপত্তিস্থল চীন, কাতার এবং কানাডাকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। ১০৩ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী, মেয়র, রাজনৈতিক শীর্ষ ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ, সচিব, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ সরকারি অনেক পদস্ত কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ দেশের অনেক বিশিষ্টজনরা প্রাণ হারিছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রতিদিন ৫০ হাজার করে মানুষের পরীক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে। তা না হলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না। শুধু পরীক্ষা আর চিকিৎসার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না, মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী মোট আক্রান্তের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪০ হাজার ১৬৪ জন যা সুস্থতার দিক থেকে ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ। আর এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬০ হাজার ৭৮৫ জন যা মোট আক্রান্তের ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ। আর মোট আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১ দশমিক ৩ শতাংশ অর্থাৎ ১৩৪৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিসংখ্যা অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে বয়সের বিবেচনায় ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ দশমিক, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ দশমিক, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ দশমিক, ৩১ থেকে ৪০ বয়সের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ দশমিক, ৪১ থেকে ৫১ এর মধ্যে আক্রান্তের সংখ্য ১৭ দশমিক, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ দশমিক, এবং ৬০ এর ঊর্ধ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ দশমিক। একইভাবে আক্রান্তের মধ্যে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের মধ্যে বয়সের বিবেচনায় ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন শূন্য দশমিক ৯২ ভাগ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে মারা যাওয়ার সংখ্যা ১ দশমিক ৪৯ ভাগ, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ দশমিক ৪ ভাগ, ৩১ থেকে ৪০ এর মধ্যে মারা যাওয়ার সংখ্যা ৮ দশমিক ২৯ ভাগ, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে ১৭ দশমিক ৩৯ ভাগ, ৫১ থেকে ৬০ মধ্যে ২৯ দশমিক ৬২ ভাগ এবং ৬০ বছর থেকে শতবর্ষ বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে মারা যাওয়ার সংখ্যা ৩৯ ভাগ।

আইইডিসআরের তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্তের দিক থেকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন পুরুষরা। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৭১ ভাগ আক্রান্ত হচ্ছেন পুরুষ আর মহিলা হচ্ছেন ২৯ ভাগ। একইভাবে আক্রান্তদের মধ্যে মারা যাওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষ মারা গেছেন ৭৭ ভাগ আর মহিলা মারা গেছেন ২৩ ভাগ। অর্থাৎ আক্রান্তের মতো মারা যাওয়ার ক্ষেত্রেও এগিয়ে আছেন পুরুষরা।

২৪ ঘণ্টা পরিস্থিতি

বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাসবিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ হাজার ৮০৩ জনের দেহে শনাক্ত হয়েছে ১৬ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে। ফলে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১ হাজার ৩৪৩ জনে। বুলেটিনে বলা হয়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ হাজার ৩৪৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে ১৬ হাজার ২৫৯টি পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৫০৩টি।

বুলেটিনে বলা হয়, আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ১ হাজার ৩৪৩ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন, তাদের ৩১ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী। হাসপাতা?লে মারা গেছেন ৩১ জন এবং বাসায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। এদের মধ্যে ১ থেকে ১০ বছরের একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের দু’জন, ত্রিশোর্ধ্ব পাঁচজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ছয়জন, ষাটোর্ধ্ব ১৪ জন, সত্তরোর্ধ্ব পাঁচজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী দু’জন রয়ে?ছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪ জন ঢাকা বিভাগের, ১৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, দু’জন খুলনা বিভাগের এবং একজন করে রাজশাহী, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের।

বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৯৭৫ জন। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৪০ হাজার ১৬৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত বিবেচনায় ?সুস্থতার হার ৩৯ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩১ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৬৭৪ জন এবং এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে নেয়ার সংখ্যা ১৭ হাজার ৮৭১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪০০ জন এবং ফলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশন থেকে সুস্থ হয়ে এ পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৬ হাজার ৮৪৫ জন। বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে রয়েছেন ১১ হাজার ২৬ জন। বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৮২১ জনকে। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে বা উপসর্গ নিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৬৪১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৬০৫ জন। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে বা উপসর্গ নিয়ে শুধু কোয়ারেন্টিন থেকে মোট ছাড়া পেয়েছেন ২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৬৫ হাজার ৭০৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি দিনে দিনে অবনতির দিকে যাচ্ছে। সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর প্রথম রোগী শনাক্তের তারিখ থেকে অর্ধ লাখ রোগী শনাক্ত হতে সময় লেগেছিল ৮৭ দিন। বাকি অর্ধলাখ রোগী মাত্র ১৬ দিনে শনাক্ত হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। এর দশ দিনের মাথায় প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু ঘটে। সংক্রমণ শুরুর পর ৩০তম দিনে ৬ এপ্রিল দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যায়। যদিও এর আগে ২৫ মে সরকার করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। ২৬ মার্চ থেকে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। এ সময় গণপরিবহন, সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকার ঘোষণা আসে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। করোনা সংক্রমণ কমিয়ে আনতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে কাউকে বের না হওয়ার নির্দেশ দেয় সরকার। কিন্তু মানুষ নানা উছিলায় ঘর থেকে বের হওয়া, নিয়মিত হাটবাজারে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে কেনাকাটা অব্যাহত রাখে। এ সময় অযথা গাড়ি নিয়েও মানুষকে চলাচল করতে দেখা যায়। পণ্য পরিবহনের গাড়িতে মানুষ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ছুটতে থাকেন। অনেকে বিয়েশাদি এমনকি সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে তা পালনের চেষ্টা করেন। রোজা শুরু হলে মানুষ নানা উছিলায় ঘর থেকে আরও বেশি বেশি বের হতে থাকেন। ঈদের আগে সাধারণ ছুটি কিছুটা শিথিল করা হয়। এরপর গার্মেন্ট খুলে দেয়া এবং ঈদের আগে ব্যক্তিগত গাড়িতে মানুষকে গ্রামের বাড়ি যেতে দেয়ার সুযোগ দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়। এরপর থেকে সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি বেশি শনাক্ত হতে থাকে সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে মৃত্যুর সংখ্যাও। সংক্রমণ শুরুর পর ৩৮তম দিনে ১৪ এপ্রিল শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর ২০ দিনের মাথায় ৪ মে রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায় ৫৮তম দিনে। এরপর ১১ দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২০ হাজার, তার পরের সাত দিনে ৩০ হাজার এবং তার পরের ছয় দিনে ৪০ হাজার এবং আরও পাঁচ দিনের মাথায় ২ জুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। প্রথম রোগী শনাক্তের পর সেটা ছিল ৮৭তম দিন। ৩১ মে থেকে ‘সীমিত আকারে’ অফিস এবং যানবাহন চালুর অনুমতি দেয়া হয়। ২ জুনের পর তিন দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬০ হাজার এবং তার পরের চার দিনে ৭০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর প্রতি তিন দিনে গড়ে দশ হাজার করে বেড়ে ১৮ জুন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা লাখের ঘরে পৌঁছায়।