যুক্তরাষ্ট্রে ৬ অঙ্গরাজ্যে নতুন করে করোনার রেকর্ড সংক্রমণ

প্রায় সোয়া ১ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া মহামারী করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যই নতুন করে সচল হওয়ার পথে থাকার মধ্যেই আবার লাফিয়ে বাড়ছে এর সংক্রমণ। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে দেশটির ৬টি অঙ্গরাজ্যে রেকর্ডসংখ্যক সংক্রমণ বেড়েছে। রয়টার্স।

এদিকে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া বৈশি^ক মহামারি করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৮৩ লাখ ছাড়িয়েছে। আর এতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ। দেশটির জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৮৩ লাখ ২৯ হাজার ২২১ জনে দাঁড়িয়েছে । এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৪৮ হাজার ৪৭৪ জনের।

বিশে^ একক দেশ হিসেবে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২১ লাখ ৬২ হাজার ৮৫১ জন। আর প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৭১৩ জনের)। এমন পরিস্থিতিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা, ফ্লোরিডা, ওকলাহোমা, অরেগন, টেক্সাস, নেভাদা-এ ছয়টি অঙ্গরাজ্যে মঙ্গলবার রেকর্ড সংক্রমণ দেখা গেছে। দেশটির আরো কমপক্ষে ১৯টি অঙ্গরাজ্যে গত দুসপ্তাহ ধরেই বাড়ছে প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ। ব্যবসা-বাণিজ্য নতুন করে চালু হতে শুরু করা, গত মে মাসের শেষ দিকে মার্কিনিদের মেমোরিয়াল ডে’র ছুটি উদযাপনে যাওয়া এবং বহু অঙ্গরাজ্যেই বর্ণবাদ ও পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ- এসবকিছুকেই এ ভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসাবে দেখছেন বিভিন্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ফ্লোরিডায় মঙ্গলবার ২ হাজার ৭শ’ ৮৩ জনের শরীরে নতুন কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। টেক্সাসে ২ হাজার ৬শ’ ২২ জন এবং অ্যারিজোনায় ২ হাজার ৩শ’ ৯২ জন। ওকলাহোমা, অরেগন এবং নেভাদাতেও একদিনের হিসাবে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে একইদিন। গত ২৩ মে এ অঙ্গরাজ্যগুলোতে সংক্রমণের যে হার ছিল তার তুলনায় সংক্রমণ অনেক বেড়েছে। হাসপাতালগুলোতেও রেকর্ড সংখ্যক রোগী যাচ্ছে।

অ্যারিজোনার একটি মেডিকেল সেন্টারে এর আগের দিন সোমবার নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে কেবল একটি শয্যাই খালি ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসাকর্মীরা। জানা যায়, অরেগনের একটি চার্চ থেকে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার সংক্রমণ। আক্রান্ত হয়েছে ২শ’রও বেশি মানুষ। কর্মকর্তারা এর বিস্তার ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। চার্চটির ফেসবুক পেজের একটি ভিডিওতে গত ২৪ মে কছেশশ’ মানুষকে কাছাকাছি দাঁড়িয়ে গাইতে দেখা গেছে বলে অরেগনের এক পত্রিকার খবরে জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে কাজকর্ম আবার শুরুর পরিকল্পনা করা হলেও বড় ধরনের জমায়েতের অনুমতি এখনও নেই। চার্চটিতে ওই জমায়েতের ভিডিও সামনে আসার পর সেটি মুছে ফেলা হয়। এ বিষয়ে চার্চটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে, টেক্সাসে করোনার সংক্রমণ অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট বলছেন, ভাইরাস পরীক্ষা বেড়ে যাওয়ার কারণেই রোগী শনাক্ত হচ্ছে বেশি। তবে অঙ্গরাজ্যটিতে হাসপাতালেও বাড়ছে রোগীর ভিড়। তাদের জন্য এখনো যথেষ্ট শয্যা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যাবোট। টেক্সাসের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারাও বলছেন, করোনাভাইরাস বৃদ্ধির হার এখনও নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে পরিস্থিতি এরকম নাও থাকতে পারে।

ফ্লোরিডার গভর্নরও অঙ্গরাজ্যটিতে ভাইরাস সংক্রমণ বাড়ার কারণ হিসাবে পরীক্ষা বাড়ায় রোগী বেশি শনাক্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। নার্সিং হোম ও কৃষি এলাকাগুলোতে সংক্রণের ঝুঁকি বেশি বলে জানান তিনি। ওকলাহোমাতেও মঙ্গলবার ২২৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ে। একদিনের হিসাবে যা ছিল সর্বোচ্চ। অঙ্গরাজ্যটিতে নতুন আক্রান্তের হার বেড়ে হয়েছে ৮৬ শতাংশ।

শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০ , ৫ আষাঢ় ১৪২৭, ২৬ শাওয়াল ১৪৪১

যুক্তরাষ্ট্রে ৬ অঙ্গরাজ্যে নতুন করে করোনার রেকর্ড সংক্রমণ

সংবাদ ডেস্ক |

image

প্রায় সোয়া ১ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া মহামারী করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যই নতুন করে সচল হওয়ার পথে থাকার মধ্যেই আবার লাফিয়ে বাড়ছে এর সংক্রমণ। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে দেশটির ৬টি অঙ্গরাজ্যে রেকর্ডসংখ্যক সংক্রমণ বেড়েছে। রয়টার্স।

এদিকে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া বৈশি^ক মহামারি করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৮৩ লাখ ছাড়িয়েছে। আর এতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ। দেশটির জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৮৩ লাখ ২৯ হাজার ২২১ জনে দাঁড়িয়েছে । এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৪৮ হাজার ৪৭৪ জনের।

বিশে^ একক দেশ হিসেবে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২১ লাখ ৬২ হাজার ৮৫১ জন। আর প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৭১৩ জনের)। এমন পরিস্থিতিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা, ফ্লোরিডা, ওকলাহোমা, অরেগন, টেক্সাস, নেভাদা-এ ছয়টি অঙ্গরাজ্যে মঙ্গলবার রেকর্ড সংক্রমণ দেখা গেছে। দেশটির আরো কমপক্ষে ১৯টি অঙ্গরাজ্যে গত দুসপ্তাহ ধরেই বাড়ছে প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ। ব্যবসা-বাণিজ্য নতুন করে চালু হতে শুরু করা, গত মে মাসের শেষ দিকে মার্কিনিদের মেমোরিয়াল ডে’র ছুটি উদযাপনে যাওয়া এবং বহু অঙ্গরাজ্যেই বর্ণবাদ ও পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ- এসবকিছুকেই এ ভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসাবে দেখছেন বিভিন্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ফ্লোরিডায় মঙ্গলবার ২ হাজার ৭শ’ ৮৩ জনের শরীরে নতুন কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। টেক্সাসে ২ হাজার ৬শ’ ২২ জন এবং অ্যারিজোনায় ২ হাজার ৩শ’ ৯২ জন। ওকলাহোমা, অরেগন এবং নেভাদাতেও একদিনের হিসাবে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে একইদিন। গত ২৩ মে এ অঙ্গরাজ্যগুলোতে সংক্রমণের যে হার ছিল তার তুলনায় সংক্রমণ অনেক বেড়েছে। হাসপাতালগুলোতেও রেকর্ড সংখ্যক রোগী যাচ্ছে।

অ্যারিজোনার একটি মেডিকেল সেন্টারে এর আগের দিন সোমবার নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে কেবল একটি শয্যাই খালি ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসাকর্মীরা। জানা যায়, অরেগনের একটি চার্চ থেকে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার সংক্রমণ। আক্রান্ত হয়েছে ২শ’রও বেশি মানুষ। কর্মকর্তারা এর বিস্তার ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। চার্চটির ফেসবুক পেজের একটি ভিডিওতে গত ২৪ মে কছেশশ’ মানুষকে কাছাকাছি দাঁড়িয়ে গাইতে দেখা গেছে বলে অরেগনের এক পত্রিকার খবরে জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে কাজকর্ম আবার শুরুর পরিকল্পনা করা হলেও বড় ধরনের জমায়েতের অনুমতি এখনও নেই। চার্চটিতে ওই জমায়েতের ভিডিও সামনে আসার পর সেটি মুছে ফেলা হয়। এ বিষয়ে চার্চটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে, টেক্সাসে করোনার সংক্রমণ অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট বলছেন, ভাইরাস পরীক্ষা বেড়ে যাওয়ার কারণেই রোগী শনাক্ত হচ্ছে বেশি। তবে অঙ্গরাজ্যটিতে হাসপাতালেও বাড়ছে রোগীর ভিড়। তাদের জন্য এখনো যথেষ্ট শয্যা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যাবোট। টেক্সাসের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারাও বলছেন, করোনাভাইরাস বৃদ্ধির হার এখনও নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে পরিস্থিতি এরকম নাও থাকতে পারে।

ফ্লোরিডার গভর্নরও অঙ্গরাজ্যটিতে ভাইরাস সংক্রমণ বাড়ার কারণ হিসাবে পরীক্ষা বাড়ায় রোগী বেশি শনাক্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। নার্সিং হোম ও কৃষি এলাকাগুলোতে সংক্রণের ঝুঁকি বেশি বলে জানান তিনি। ওকলাহোমাতেও মঙ্গলবার ২২৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ে। একদিনের হিসাবে যা ছিল সর্বোচ্চ। অঙ্গরাজ্যটিতে নতুন আক্রান্তের হার বেড়ে হয়েছে ৮৬ শতাংশ।