করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির তাগিদ আইসিসিবি’র

করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের জন্য আরও বেশি অর্থ বরাদ্দের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি)। আসিসিবি মনে করে, করোনাভাইরাস একদিকে যেমন বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করেছে অন্যদিকে বিশ্ব অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তার হুমকি। গতকাল আইসিসিবির এক নিউজ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, করোনা মহামারীর ফলে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সংকট, অরক্ষিত জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করা এবং দীর্ঘস্থায়ী পুনরুদ্ধারের মঞ্চ নির্ধারণের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। স্বাস্থ্য সংকট অবসানের পর উদীয়মান বাজার এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, অনানুষ্ঠানিকতায় সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা, শক্তিশালী ও টেকসই বৃদ্ধি সমর্থন করবে এমন সংস্কার বাস্তবায়ন জরুরি। মহামারিটির মেয়াদ দীর্ঘায়িত হলে ব্যাপক বেকারত্বের সৃষ্টি হতে পারে ও ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যার্থতা দেখা দিতে পারে। কিছু শিল্প, যেমন পর্যটন ও প্লেন, অবশ্যই সমস্যার মুখোমুখি হবে। মহামারীটি এমন এক ঝুঁকির তৈরি করেছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের ফলে নিম্ন আয় ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর বিপজ্জনক অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বে। একই সঙ্গে উন্নত অর্থনীতিগুলো মন্দায় পিছলে যাওয়ার ফলে পণ্যগুলোর দাম কমবে এবং এই দেশগুলোর রপ্তানি আয়ের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। স্বল্পমেয়াদে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তরঙ্গের মতো চলমান মহামারীটি মোকাবিলার জন্য রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা, লকডাউন, যোগাযোগের সীমাবদ্ধতা, ভ্রমণ সীমাবদ্ধকরণ, নাগরিকদের বিচ্ছিন্নকরণ এবং বৃহত্তর জমায়েত বাতিল করে ভাইরাসের বিস্তার কমিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা একটি নতুন বিশ্ব দেখব যা আমাদের চেয়ে অনেক আলাদা ও অজানা। বিশ্ব নেতাদের মানবতা বাঁচাতে একত্রিত হতে হবে, ভবিষ্যতে এই মহামারী মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন ও ওষুধের বিকাশের জন্য আরও বেশি অর্থ বরাদ্দের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোভিড-১৯ এ কতজন আক্রান্ত হয়েছে শুধু এটাই বিবেচ্য বিষয় নয়, এর ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাটাও জরুরি। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিশ্ব কেমন হবে তা নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

করোনাভাইরাস হচ্ছে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট এবং বৃহত্তম অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ যা বিশ্ববাসী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ১৯১৮ এর স্প্যানিশ ফ্লু’র সময় মোকাবিলা করেছিল, যেটা ১৫ মাস স্থায়ী হয়েছিল। এটি ৫শ’ মিলিয়ন মানুষকে সংক্রামিত করেছিল, ৫ মিলিয়ন মানুষ মারা গিয়েছিল, যা তৎকালীন বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ। ১৯১৮ সালের সেই ভাইরাস অদ্যাবধি রয়ে গেছে মহামারী ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস হিসেবে, এ ভাইরাসে প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য মৃত্যু ঘটে। বিশ্বে এত উন্নয়ন হয়েছে অথচ দুর্ভাগ্যক্রমে অদ্যাবধি স্বাস্থ্যখাত অবহেলিত রয়ে গেছে।

সোমবার, ২২ জুন ২০২০ , ৮ আষাঢ় ১৪২৭, ২৯ শাওয়াল ১৪৪১

করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির তাগিদ আইসিসিবি’র

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের জন্য আরও বেশি অর্থ বরাদ্দের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি)। আসিসিবি মনে করে, করোনাভাইরাস একদিকে যেমন বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করেছে অন্যদিকে বিশ্ব অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তার হুমকি। গতকাল আইসিসিবির এক নিউজ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, করোনা মহামারীর ফলে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সংকট, অরক্ষিত জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করা এবং দীর্ঘস্থায়ী পুনরুদ্ধারের মঞ্চ নির্ধারণের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। স্বাস্থ্য সংকট অবসানের পর উদীয়মান বাজার এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, অনানুষ্ঠানিকতায় সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা, শক্তিশালী ও টেকসই বৃদ্ধি সমর্থন করবে এমন সংস্কার বাস্তবায়ন জরুরি। মহামারিটির মেয়াদ দীর্ঘায়িত হলে ব্যাপক বেকারত্বের সৃষ্টি হতে পারে ও ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যার্থতা দেখা দিতে পারে। কিছু শিল্প, যেমন পর্যটন ও প্লেন, অবশ্যই সমস্যার মুখোমুখি হবে। মহামারীটি এমন এক ঝুঁকির তৈরি করেছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের ফলে নিম্ন আয় ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর বিপজ্জনক অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বে। একই সঙ্গে উন্নত অর্থনীতিগুলো মন্দায় পিছলে যাওয়ার ফলে পণ্যগুলোর দাম কমবে এবং এই দেশগুলোর রপ্তানি আয়ের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। স্বল্পমেয়াদে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তরঙ্গের মতো চলমান মহামারীটি মোকাবিলার জন্য রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা, লকডাউন, যোগাযোগের সীমাবদ্ধতা, ভ্রমণ সীমাবদ্ধকরণ, নাগরিকদের বিচ্ছিন্নকরণ এবং বৃহত্তর জমায়েত বাতিল করে ভাইরাসের বিস্তার কমিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা একটি নতুন বিশ্ব দেখব যা আমাদের চেয়ে অনেক আলাদা ও অজানা। বিশ্ব নেতাদের মানবতা বাঁচাতে একত্রিত হতে হবে, ভবিষ্যতে এই মহামারী মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন ও ওষুধের বিকাশের জন্য আরও বেশি অর্থ বরাদ্দের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোভিড-১৯ এ কতজন আক্রান্ত হয়েছে শুধু এটাই বিবেচ্য বিষয় নয়, এর ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাটাও জরুরি। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিশ্ব কেমন হবে তা নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

করোনাভাইরাস হচ্ছে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট এবং বৃহত্তম অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ যা বিশ্ববাসী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ১৯১৮ এর স্প্যানিশ ফ্লু’র সময় মোকাবিলা করেছিল, যেটা ১৫ মাস স্থায়ী হয়েছিল। এটি ৫শ’ মিলিয়ন মানুষকে সংক্রামিত করেছিল, ৫ মিলিয়ন মানুষ মারা গিয়েছিল, যা তৎকালীন বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ। ১৯১৮ সালের সেই ভাইরাস অদ্যাবধি রয়ে গেছে মহামারী ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস হিসেবে, এ ভাইরাসে প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য মৃত্যু ঘটে। বিশ্বে এত উন্নয়ন হয়েছে অথচ দুর্ভাগ্যক্রমে অদ্যাবধি স্বাস্থ্যখাত অবহেলিত রয়ে গেছে।