মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক

পুলিশ শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত থাকে না। এর পাশাপাশি মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েও মানুষকে সাহায্য করে থাকে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী চলতে থাকা মহামারী করোনা ভাইরাসের আক্রান্তদের যেখানে আপনজন পর হয়ে যায় সেখানে পুলিশ জীবন, সংসার ও পরিবারের কথা চিন্তা না করে আক্রান্তদেরকে সাহায্য করতে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। গত ৩ মাস ধরে চলা করোনার মহামারীতে এমন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা এ ধরনের বহু কাজ করেছেন। এসময় অসহায় দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য বিতরণসহ নানাভাবে সাহায্য ও সহযোগিতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন বাংলাদেশ পুলিশের অনেক গর্বিত সদস্য। তেমনই একজন নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার র্ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক। জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় গত বছর আগষ্ট মাসে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসাবে যোগদান করেন কামরুল ফারুক। যোগদানের পর থেকেই থানার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তার ভূমিকা ছিল প্রশংনীয়। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা অনেকটাই চলে আসে নিযন্ত্রণে। চলতি বছর মার্চ মাস থেকে দেশে শুরু হয় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া। ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী লকডাউন শুরু হলে শিল্পাঞ্চল সিদ্ধিরগঞ্জেও লকডাউন চলে। এ সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিয়ম মাফিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সিদ্ধিরগঞ্জবাসীকে ঘরে রাখতে সম্ভব্য সব ধরণের পদক্ষেপও গ্রহণ করেন এই কর্মকর্তা। করোনাভাইরাসের প্রকোপ দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া এলাকার দিনমজুরসহ স্বল্প আয়ের মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায়। অনেককেই খাদ্যের সন্দানে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে। এমনই সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ফারুক সেই সব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিতরণ করেছেন সাধ্যমত ত্রাণ সামগ্রী। এলাকার সহ¯্রাধিক পরিবারের মাঝে বিতরণ করেছেন ত্রাণ সামগ্রী যার মধ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধী, পরিবহন শ্রমিক, স্কুল শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম-মোয়াজিম। বাদ যায়নি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষও। এ সময় যারা চক্ষুলজ্জায় ত্রাণ নিতে আসতে পারেন না, তাদের গোপনে বাসায় ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের খোঁজে খোঁজে বের করে রাতের আঁধারেও ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। এছাড়াও তার মোবাইলে মেসেজ ও ফোন পেয়ে প্রায় শতাধিক অসহায় ব্যক্তির কাছেও ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। জানা যায়, করোনাকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ১৬ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। তারা সুস্থ হওয়ার পর কাজের উৎসাহ যোগাতে তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নিয়েছিলেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ফারুক বলেন, দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অসহায় মানুষের পাশে থাকা একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে গর্বের। আমরা যখন দায়িত্ব পালন করতে বের হই তখন সন্তান পরিবারের কথা মনে থাকে না। তখন দেশ ও জনগণ নিয়েই আমাদের ভাবনা।

শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০ , ১২ আষাঢ় ১৪২৭, ৪ জিলকদ ১৪৪১

মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক

প্রতিনিধি, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

পুলিশ শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত থাকে না। এর পাশাপাশি মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েও মানুষকে সাহায্য করে থাকে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী চলতে থাকা মহামারী করোনা ভাইরাসের আক্রান্তদের যেখানে আপনজন পর হয়ে যায় সেখানে পুলিশ জীবন, সংসার ও পরিবারের কথা চিন্তা না করে আক্রান্তদেরকে সাহায্য করতে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। গত ৩ মাস ধরে চলা করোনার মহামারীতে এমন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা এ ধরনের বহু কাজ করেছেন। এসময় অসহায় দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য বিতরণসহ নানাভাবে সাহায্য ও সহযোগিতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন বাংলাদেশ পুলিশের অনেক গর্বিত সদস্য। তেমনই একজন নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার র্ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক। জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় গত বছর আগষ্ট মাসে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসাবে যোগদান করেন কামরুল ফারুক। যোগদানের পর থেকেই থানার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তার ভূমিকা ছিল প্রশংনীয়। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা অনেকটাই চলে আসে নিযন্ত্রণে। চলতি বছর মার্চ মাস থেকে দেশে শুরু হয় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া। ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী লকডাউন শুরু হলে শিল্পাঞ্চল সিদ্ধিরগঞ্জেও লকডাউন চলে। এ সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিয়ম মাফিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সিদ্ধিরগঞ্জবাসীকে ঘরে রাখতে সম্ভব্য সব ধরণের পদক্ষেপও গ্রহণ করেন এই কর্মকর্তা। করোনাভাইরাসের প্রকোপ দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া এলাকার দিনমজুরসহ স্বল্প আয়ের মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায়। অনেককেই খাদ্যের সন্দানে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে। এমনই সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ফারুক সেই সব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিতরণ করেছেন সাধ্যমত ত্রাণ সামগ্রী। এলাকার সহ¯্রাধিক পরিবারের মাঝে বিতরণ করেছেন ত্রাণ সামগ্রী যার মধ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধী, পরিবহন শ্রমিক, স্কুল শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম-মোয়াজিম। বাদ যায়নি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষও। এ সময় যারা চক্ষুলজ্জায় ত্রাণ নিতে আসতে পারেন না, তাদের গোপনে বাসায় ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের খোঁজে খোঁজে বের করে রাতের আঁধারেও ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। এছাড়াও তার মোবাইলে মেসেজ ও ফোন পেয়ে প্রায় শতাধিক অসহায় ব্যক্তির কাছেও ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। জানা যায়, করোনাকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ১৬ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। তারা সুস্থ হওয়ার পর কাজের উৎসাহ যোগাতে তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নিয়েছিলেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ফারুক বলেন, দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অসহায় মানুষের পাশে থাকা একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে গর্বের। আমরা যখন দায়িত্ব পালন করতে বের হই তখন সন্তান পরিবারের কথা মনে থাকে না। তখন দেশ ও জনগণ নিয়েই আমাদের ভাবনা।