৩ জেলায় বৃষ্টি জোয়ারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

চিত্রা ও ভৈরবে পানি

বেড়ে জলাবদ্ধতা

প্রতিনিধি, চিতলমারী (বাগেরহাট)

চিত্রানদীর জোয়ারের প্লাবিত হয়েছে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার এস. বাখেরগঞ্জ বাজারের দুই শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ সময় চিতলমারী ও বাগেরহাট সদর উপজেলা সীমানার প্রায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্লাবনে ভেসে গেছে গবাদি পশুর খাবার, মাছ, ক্ষেতের সবজিসহ অন্যান্য জিনিস। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের, পুকুর, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, স’মিল, বসতবাড়ি।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারের জোয়ারে চিত্রায় ৩-৪ ফুটের অধিক পানি বেড়েছে। পানির চাপ মূলত বাগেরহাটের ভৈরব নদী থেকে এসেছে। তারা তিন পুরুষেও এত পানি দেখেনি বা শোনেনি। ডুবে যাওয়ার পর তারা এখনও কোন জনপ্রতিনিধিকে কাছে পায়নি বলেও জানান।

সন্তোষপুর গ্রামের নিত্যানন্দ মজুমদার বলেন, ‘হঠাৎ করে জোয়ারের গতি বেড়ে যায়। বিগত তিন পুরুষেও আমার উঠোনে এত জল হয়নি। উঠোন ডুবে এখন ঘরের ভেতরেও জল উঠে গেছে। বাখেরগঞ্জ বাজারে ১৯৯০ সালে নির্মিত স্লুইচ গেটে জোয়ারের জল বাঁধাগ্রস্ত হয়ে ফুলে উঠে আশ-পাশের বাজার, গ্রামসহ গোটা এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।’ জুড়ান মন্ডল জানান, গত বছর এলাকার নদী খাল কাটায় সহজেই দ্রুত গতিতে পানি এসে চিতলমারী উপজেলার এস.বাখরগঞ্জ বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ রায়গ্রাম, শুড়িগাতী, চৌদ্দহজারী, সাড়েচারআনি, সন্তোষপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

বাখেরগঞ্জ বাজারের পল্লী চিকিৎসক সেকেন্দার আলী খান জানান, প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে। অপরদিকে, বাগেরহাট সদর উপজেলার মান্দ্রা, হালিশহর, খালিশপুর, আলিপুর, নাসিরপুর গ্রাম জোয়ারে প্লাবিত হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী অতিশ অধিকারী বাপ্পানী জানান, বাখেরগঞ্জ বাজারে তার ১৬টি ঘর, একটি রাইসমিল ও তিনটি সমিল ডুবে গেছে। এতে তার প্রায় নয় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। চিতলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল জানান, চিতলমারী-বাগেরহাট প্রধান সড়কের ওপরেও সন্তোষপুর এলাকায় পানি উঠে গেছে। গোদাড়া হতে বাখেরগঞ্জ পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডেও যতগুলো সøুইচগেট আছে, তা উন্নয়ন কাজের জন্য বন্ধ রয়েছে। এতে পানির গতি বাঁধাগ্রস্ত হয়ে ফুলে উঠে আশপাশের গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। সমস্যাটি নিরসনের চেষ্টা চলছে। চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মারুফুল আলম জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। দ্রুত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হরিরামপুরে ৩০০

বাড়ি বিলীন

প্রতিনিধি, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার শেষ সীমানায় অবস্থিত সেলিমপুর গ্রাম। বন্যার ক্ষতি শেষ হতে না হতেই পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে দিশেহারা উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কয়েকশত পরিবার। গত দুই সপ্তাহে নদী ভাঙ্গনে প্রায় ২৫০-৩০০ বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। কয়েকশত পরিবার গ্রাম ছেড়ে ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। পাশের জয়পুর গ্রামে নতুন করে বাড়ি করতে শুরু কেেছ কয়েকশত পরিবার। নিজেদের বাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে জানিয়ে সেলিমপুর গ্রামের জুলহাস প্রামানিক, সামাদ প্রামানিক, জামাল বেপারি ও কুটি বেপারি জানান, সেলিমপুর গ্রামের মানুষের বিপদের শেষ নেই। লেছড়াগঞ্জ ইউপির ১নং ওয়ার্ড সদস্য সালাম বেপারি সংবাদকে জানান, তার ওয়ার্ডের সেলিমপুর গ্রামের ২৫০-৩০০ পরিবারের বসত ভিটা পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। করোনা মহামারী, বন্যায় ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত তারা। এর মধ্যে পদ্মার ভাঙ্গন। লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ হোসেন ইমাম জানান, গত ১৫ দিন ধরে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে সেলিমপুর গ্রাম প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। এ গ্রামের মানুষ পাশের গ্রাম জয়পুরের দিকে যাচ্ছে। হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, পদ্মা নদীর ভাঙন ঠেকাতে ৪০০ মিটার জিও ব্যাগ ফেলতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাইন উদ্দিন জানান, ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একটি চিঠি পেয়েছি। চরের ভাঙ্গন ঠেকাতে ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঝালকাঠিতে প্লাবিত ৫০ গ্রাম

জেলা বার্তা পরিবেশক, ঝালকাঠি

লঘুচাপের প্রভাবে ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ৫০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বসতঘর ও বিভিন্ন স্থাপনায়। শহর ও গ্রামের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় পানি ভেঙে যাতায়াত করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বসতঘরে পানি প্রবেশ করায় জেলার নদী তীরের বাসিন্দারা উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। পানিতে তলিয়ে গেছে পানের রবজ, মাছের ঘের, ছোট বড় অসংখ্য পুকুর ও আমনের বীজতলা। ঘের ও পুকুর থেকে ভেসে গেছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় কাঁঠালিয়ার আমুয়া ও নলছিটির ষাইটপাকিয়া ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, স্বাভাবিকের চেয়ে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে চার-পাঁচ ফুট পানি বেড়েছে। বিপদ সীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এসব নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপশি টানা বৃষ্টিতে পানি জমে দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। শহর ও নিম্নাঞ্চলের অন্তত ঃ ৫০টি গ্রামে নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। শহর রক্ষা বাঁধ অতিক্রম করে কলেজ খেয়াঘাট, পৌরসভা খেয়াঘাট, লঞ্চঘাট, কলাবাগান, নতুনচর, কিস্তাকাঠি, সাচিলাপুর ও দিয়াকুল এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। বিষখালী নদীর ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে কাঁঠালিয়া ও রাজাপুর উপজেলার নদী তীরের গ্রামগুলোতে। এছাড়াও নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানিতে তলিয়ে গেছে বসতঘর, ফসলের ক্ষেত ও মাছের ঘের। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, মৎস্যজীবীসহ সাধারণ মানুষ। জেলা সড়ক ও জনপদ কর্তৃপক্ষ জানায়, পানিতে কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ও নলছিটির ষাইটপাকিয়া ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে যানচলাচলে বিঘœ ঘটছে।

কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির জানান, বিষখালী নদীর পানি বেড়ে তীব্র স্র্রোতে গ্রামের সংযোগ অনেক রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। আমুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার রাস্তাটি ভেঙ্গে গিয়ে রোগীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে ভাঙা বেরিবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে কাঠালিয়া উপজেলা পরিষদের মৎস্য, পরিসংখ্যান, যুব উন্নয়ন, সমবায়, আনসার বিডিপি, পল্লীসঞ্চয় ব্যাংক ও ডরমেটরি ভবনগুলোর অফিস কক্ষ তলিয়ে গেছে। অসংখ্য মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার জানান, মানুষের বসতঘর, ফসলের ক্ষেত ও মাছের ঘেরে পানি ঢুকে পড়েছে। বেশ কয়েকটি মাছের ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। পানিতে আমনের বীজতলা নিমজ্জিত থাকায় কৃষকদের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

সোমবার, ২৪ আগস্ট ২০২০ , ৪ মহররম ১৪৪২, ২৪ আগস্ট ২০২০

৩ জেলায় বৃষ্টি জোয়ারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

image

চিত্রা ও ভৈরবে পানি

বেড়ে জলাবদ্ধতা

প্রতিনিধি, চিতলমারী (বাগেরহাট)

চিত্রানদীর জোয়ারের প্লাবিত হয়েছে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার এস. বাখেরগঞ্জ বাজারের দুই শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ সময় চিতলমারী ও বাগেরহাট সদর উপজেলা সীমানার প্রায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্লাবনে ভেসে গেছে গবাদি পশুর খাবার, মাছ, ক্ষেতের সবজিসহ অন্যান্য জিনিস। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের, পুকুর, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, স’মিল, বসতবাড়ি।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারের জোয়ারে চিত্রায় ৩-৪ ফুটের অধিক পানি বেড়েছে। পানির চাপ মূলত বাগেরহাটের ভৈরব নদী থেকে এসেছে। তারা তিন পুরুষেও এত পানি দেখেনি বা শোনেনি। ডুবে যাওয়ার পর তারা এখনও কোন জনপ্রতিনিধিকে কাছে পায়নি বলেও জানান।

সন্তোষপুর গ্রামের নিত্যানন্দ মজুমদার বলেন, ‘হঠাৎ করে জোয়ারের গতি বেড়ে যায়। বিগত তিন পুরুষেও আমার উঠোনে এত জল হয়নি। উঠোন ডুবে এখন ঘরের ভেতরেও জল উঠে গেছে। বাখেরগঞ্জ বাজারে ১৯৯০ সালে নির্মিত স্লুইচ গেটে জোয়ারের জল বাঁধাগ্রস্ত হয়ে ফুলে উঠে আশ-পাশের বাজার, গ্রামসহ গোটা এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।’ জুড়ান মন্ডল জানান, গত বছর এলাকার নদী খাল কাটায় সহজেই দ্রুত গতিতে পানি এসে চিতলমারী উপজেলার এস.বাখরগঞ্জ বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ রায়গ্রাম, শুড়িগাতী, চৌদ্দহজারী, সাড়েচারআনি, সন্তোষপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

বাখেরগঞ্জ বাজারের পল্লী চিকিৎসক সেকেন্দার আলী খান জানান, প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে। অপরদিকে, বাগেরহাট সদর উপজেলার মান্দ্রা, হালিশহর, খালিশপুর, আলিপুর, নাসিরপুর গ্রাম জোয়ারে প্লাবিত হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী অতিশ অধিকারী বাপ্পানী জানান, বাখেরগঞ্জ বাজারে তার ১৬টি ঘর, একটি রাইসমিল ও তিনটি সমিল ডুবে গেছে। এতে তার প্রায় নয় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। চিতলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল জানান, চিতলমারী-বাগেরহাট প্রধান সড়কের ওপরেও সন্তোষপুর এলাকায় পানি উঠে গেছে। গোদাড়া হতে বাখেরগঞ্জ পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডেও যতগুলো সøুইচগেট আছে, তা উন্নয়ন কাজের জন্য বন্ধ রয়েছে। এতে পানির গতি বাঁধাগ্রস্ত হয়ে ফুলে উঠে আশপাশের গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। সমস্যাটি নিরসনের চেষ্টা চলছে। চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মারুফুল আলম জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। দ্রুত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হরিরামপুরে ৩০০

বাড়ি বিলীন

প্রতিনিধি, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার শেষ সীমানায় অবস্থিত সেলিমপুর গ্রাম। বন্যার ক্ষতি শেষ হতে না হতেই পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে দিশেহারা উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কয়েকশত পরিবার। গত দুই সপ্তাহে নদী ভাঙ্গনে প্রায় ২৫০-৩০০ বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। কয়েকশত পরিবার গ্রাম ছেড়ে ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। পাশের জয়পুর গ্রামে নতুন করে বাড়ি করতে শুরু কেেছ কয়েকশত পরিবার। নিজেদের বাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে জানিয়ে সেলিমপুর গ্রামের জুলহাস প্রামানিক, সামাদ প্রামানিক, জামাল বেপারি ও কুটি বেপারি জানান, সেলিমপুর গ্রামের মানুষের বিপদের শেষ নেই। লেছড়াগঞ্জ ইউপির ১নং ওয়ার্ড সদস্য সালাম বেপারি সংবাদকে জানান, তার ওয়ার্ডের সেলিমপুর গ্রামের ২৫০-৩০০ পরিবারের বসত ভিটা পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। করোনা মহামারী, বন্যায় ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত তারা। এর মধ্যে পদ্মার ভাঙ্গন। লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ হোসেন ইমাম জানান, গত ১৫ দিন ধরে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে সেলিমপুর গ্রাম প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। এ গ্রামের মানুষ পাশের গ্রাম জয়পুরের দিকে যাচ্ছে। হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, পদ্মা নদীর ভাঙন ঠেকাতে ৪০০ মিটার জিও ব্যাগ ফেলতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাইন উদ্দিন জানান, ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একটি চিঠি পেয়েছি। চরের ভাঙ্গন ঠেকাতে ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঝালকাঠিতে প্লাবিত ৫০ গ্রাম

জেলা বার্তা পরিবেশক, ঝালকাঠি

লঘুচাপের প্রভাবে ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ৫০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বসতঘর ও বিভিন্ন স্থাপনায়। শহর ও গ্রামের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় পানি ভেঙে যাতায়াত করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বসতঘরে পানি প্রবেশ করায় জেলার নদী তীরের বাসিন্দারা উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। পানিতে তলিয়ে গেছে পানের রবজ, মাছের ঘের, ছোট বড় অসংখ্য পুকুর ও আমনের বীজতলা। ঘের ও পুকুর থেকে ভেসে গেছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় কাঁঠালিয়ার আমুয়া ও নলছিটির ষাইটপাকিয়া ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, স্বাভাবিকের চেয়ে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে চার-পাঁচ ফুট পানি বেড়েছে। বিপদ সীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এসব নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপশি টানা বৃষ্টিতে পানি জমে দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। শহর ও নিম্নাঞ্চলের অন্তত ঃ ৫০টি গ্রামে নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। শহর রক্ষা বাঁধ অতিক্রম করে কলেজ খেয়াঘাট, পৌরসভা খেয়াঘাট, লঞ্চঘাট, কলাবাগান, নতুনচর, কিস্তাকাঠি, সাচিলাপুর ও দিয়াকুল এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। বিষখালী নদীর ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে কাঁঠালিয়া ও রাজাপুর উপজেলার নদী তীরের গ্রামগুলোতে। এছাড়াও নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানিতে তলিয়ে গেছে বসতঘর, ফসলের ক্ষেত ও মাছের ঘের। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, মৎস্যজীবীসহ সাধারণ মানুষ। জেলা সড়ক ও জনপদ কর্তৃপক্ষ জানায়, পানিতে কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ও নলছিটির ষাইটপাকিয়া ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে যানচলাচলে বিঘœ ঘটছে।

কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির জানান, বিষখালী নদীর পানি বেড়ে তীব্র স্র্রোতে গ্রামের সংযোগ অনেক রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। আমুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার রাস্তাটি ভেঙ্গে গিয়ে রোগীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে ভাঙা বেরিবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে কাঠালিয়া উপজেলা পরিষদের মৎস্য, পরিসংখ্যান, যুব উন্নয়ন, সমবায়, আনসার বিডিপি, পল্লীসঞ্চয় ব্যাংক ও ডরমেটরি ভবনগুলোর অফিস কক্ষ তলিয়ে গেছে। অসংখ্য মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার জানান, মানুষের বসতঘর, ফসলের ক্ষেত ও মাছের ঘেরে পানি ঢুকে পড়েছে। বেশ কয়েকটি মাছের ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। পানিতে আমনের বীজতলা নিমজ্জিত থাকায় কৃষকদের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।