নওগাঁর মান্দা উপজেলার সতীহাট বাজারে গণেশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বনিজ উদ্দিন মণ্ডলের ২ শতক জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ এসব কাজ করেছেন বলে অভিযোগকারী শ্রীরামপুর গ্রামের বনিজ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে মোতাহার হোসেন জানান। তিনি বলেন, দখল করা জমির দাম প্রায় অর্ধ কোটি টাকা।
বিধি মোতাবেক তিনি তার দাবিকৃত মোট ৫১ শতাংশের মধ্যে ৬ শতাংশ জমি বুঝিয়ে চেয়ে সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানকে বিবাদী করে নওগাঁ জেলা প্রসাশক, পুলিশ সুপার ও মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর সম্প্রতি একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্র্তাকে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ নভেম্বর ২০১২ সালে প্রায়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা বনিজ উদ্দিন মন্ডল তার তিন ছেলেকে ৯০২৫ নং দলিল মূলে রেজিষ্ট্রেশন করে দেন। উক্ত দলিল মূলে জমি প্রাপ্ত হয়ে সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের গেট থেকে শ্রীরামপুর(২) সপ্রাবি’র মাঠের সীমানা পর্যন্ত দুইতলা বিশিষ্ট একটি মার্কেট নির্মাণ করে মোট ১৮টি কক্ষবিশিষ্ট দোকান ঘর ভাড়া দিয়ে এবং তারা নিজেরা ব্যবসা করছেন। তিন ছেলে নিজ নামে নাম জারিপূর্বক জমিটির ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে খারিজ খাজনা পরিশোধ করে আসছেন। পরবর্তীতে তারা জানতে পারেন যে তাদের ৬ শতাংশ জমির মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ জমিতে তাদের মার্কেট স্থাপনা রয়েছে। আর ২ শতাংশ জমি সতীহাট কেটি হাইস্কুল বা বিবাদী পেশি শক্তির দ্বারা অবৈধভাবে জবর দখল করছেন।
বাদী মোতাহার হোসেন বলেন, গত ১৯৬৯ সালে স্থানীয় জনৈক বাবু ফকিরের কাছ থেকে তার মরহুম বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা বনিজ উদ্দিন মন্ডল সোয়া ৮ শতক জমি ক্রয়সূত্রে রেজিষ্ট্রেশন করেন এবং এর মধ্যে থেকে সোয়া ২ শতক জমি স্কুল বরাবর দান করেন। তার অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষ সোয়া ২ শতকের স্থলে সোয়া ৪ শতক জমি দখল করে রাখায় আমরা ৬ শতকের মধ্যে মাত্র ৪ শতক জমি দখল পেয়েছি। বাঁকি ২ শতক জমি স্কুল কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে দখল করে মার্কেট নির্মান করে ভাড়া দিয়েছেন। তিনি তাদের দাবিকৃত ২ শতাংশ জমি বিবাদীর কাছ থেকে ফেরত চান।
অভিযোগের বিষয়ে সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, জমির সাবেক মালিক বাবু ফকিরেরা ৩ ভাই, ২ বোন। এই তফসিলে তাদের মোট জমির পরিমাণ প্রায় ২৫ শতক। এই ২৫ শতক জমির মধ্যে বাবু ফকিরের জমির পরিমাণ সোয়া ৬ শতক যেটা তিনি প্রয়াত বনিজ উদ্দিন মণ্ডলকে দিয়েছেন। প্রয়াত বনিজ উদ্দিন মণ্ডল ৪ শতক রেখে সোয়া ২ শতক স্কুল বরাবর দান করার ফলে তার প্রকৃত জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ শতক। এখন কেউ যদি ৪ শতক জমির মালিক হয়েও ৬ শতক কাউকে রেজিস্ট্রি করে দেয় তার দায়ভার কে নেবে?
সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের সভাপতি এবং স্থানীয় গনেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হানিফ উদ্দিন মণ্ডল বলেন, মোতাহার হোসেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রসাশক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের নির্দেশ মোতাবেক আমি উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। উভয় পক্ষের বাকবিতন্ডায় আলোচনা স্থগিত করতে হয়েছে। বাদী যেহেতু পুলিশ সুপার বরাবরও আবেদন করেছেন এজন্য পুলিশ প্রসাশনও এ বিষয়ে আলোচনায় বসবেন, তখন পুলিশের সহায়তা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একটা আপোস মীমাংসা করা সম্ভব হবে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হালিম মিয়া বলেন, এ বিষয়ে জেলা প্রসাশক মহোদয় ও আমার নিকট একটি অভিযোগের কারণে স্থানীয়ভাবে আলোচনায় বসে সমস্যাটির দ্রুত সমাধান করার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বুধবার, ২৬ আগস্ট ২০২০ , ৬ মহররম ১৪৪২, ২৬ আগস্ট ২০২০
জেলা বার্তা পরিবেশক, নওগাঁ
নওগাঁর মান্দা উপজেলার সতীহাট বাজারে গণেশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বনিজ উদ্দিন মণ্ডলের ২ শতক জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ এসব কাজ করেছেন বলে অভিযোগকারী শ্রীরামপুর গ্রামের বনিজ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে মোতাহার হোসেন জানান। তিনি বলেন, দখল করা জমির দাম প্রায় অর্ধ কোটি টাকা।
বিধি মোতাবেক তিনি তার দাবিকৃত মোট ৫১ শতাংশের মধ্যে ৬ শতাংশ জমি বুঝিয়ে চেয়ে সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানকে বিবাদী করে নওগাঁ জেলা প্রসাশক, পুলিশ সুপার ও মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর সম্প্রতি একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্র্তাকে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ নভেম্বর ২০১২ সালে প্রায়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা বনিজ উদ্দিন মন্ডল তার তিন ছেলেকে ৯০২৫ নং দলিল মূলে রেজিষ্ট্রেশন করে দেন। উক্ত দলিল মূলে জমি প্রাপ্ত হয়ে সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের গেট থেকে শ্রীরামপুর(২) সপ্রাবি’র মাঠের সীমানা পর্যন্ত দুইতলা বিশিষ্ট একটি মার্কেট নির্মাণ করে মোট ১৮টি কক্ষবিশিষ্ট দোকান ঘর ভাড়া দিয়ে এবং তারা নিজেরা ব্যবসা করছেন। তিন ছেলে নিজ নামে নাম জারিপূর্বক জমিটির ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে খারিজ খাজনা পরিশোধ করে আসছেন। পরবর্তীতে তারা জানতে পারেন যে তাদের ৬ শতাংশ জমির মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ জমিতে তাদের মার্কেট স্থাপনা রয়েছে। আর ২ শতাংশ জমি সতীহাট কেটি হাইস্কুল বা বিবাদী পেশি শক্তির দ্বারা অবৈধভাবে জবর দখল করছেন।
বাদী মোতাহার হোসেন বলেন, গত ১৯৬৯ সালে স্থানীয় জনৈক বাবু ফকিরের কাছ থেকে তার মরহুম বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা বনিজ উদ্দিন মন্ডল সোয়া ৮ শতক জমি ক্রয়সূত্রে রেজিষ্ট্রেশন করেন এবং এর মধ্যে থেকে সোয়া ২ শতক জমি স্কুল বরাবর দান করেন। তার অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষ সোয়া ২ শতকের স্থলে সোয়া ৪ শতক জমি দখল করে রাখায় আমরা ৬ শতকের মধ্যে মাত্র ৪ শতক জমি দখল পেয়েছি। বাঁকি ২ শতক জমি স্কুল কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে দখল করে মার্কেট নির্মান করে ভাড়া দিয়েছেন। তিনি তাদের দাবিকৃত ২ শতাংশ জমি বিবাদীর কাছ থেকে ফেরত চান।
অভিযোগের বিষয়ে সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, জমির সাবেক মালিক বাবু ফকিরেরা ৩ ভাই, ২ বোন। এই তফসিলে তাদের মোট জমির পরিমাণ প্রায় ২৫ শতক। এই ২৫ শতক জমির মধ্যে বাবু ফকিরের জমির পরিমাণ সোয়া ৬ শতক যেটা তিনি প্রয়াত বনিজ উদ্দিন মণ্ডলকে দিয়েছেন। প্রয়াত বনিজ উদ্দিন মণ্ডল ৪ শতক রেখে সোয়া ২ শতক স্কুল বরাবর দান করার ফলে তার প্রকৃত জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ শতক। এখন কেউ যদি ৪ শতক জমির মালিক হয়েও ৬ শতক কাউকে রেজিস্ট্রি করে দেয় তার দায়ভার কে নেবে?
সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের সভাপতি এবং স্থানীয় গনেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হানিফ উদ্দিন মণ্ডল বলেন, মোতাহার হোসেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রসাশক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের নির্দেশ মোতাবেক আমি উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। উভয় পক্ষের বাকবিতন্ডায় আলোচনা স্থগিত করতে হয়েছে। বাদী যেহেতু পুলিশ সুপার বরাবরও আবেদন করেছেন এজন্য পুলিশ প্রসাশনও এ বিষয়ে আলোচনায় বসবেন, তখন পুলিশের সহায়তা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একটা আপোস মীমাংসা করা সম্ভব হবে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হালিম মিয়া বলেন, এ বিষয়ে জেলা প্রসাশক মহোদয় ও আমার নিকট একটি অভিযোগের কারণে স্থানীয়ভাবে আলোচনায় বসে সমস্যাটির দ্রুত সমাধান করার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।