এ বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা হবে না

এ বছর কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা হবে না। সমাপনী পরীক্ষার বদলে স্কুলে স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের পর গতকাল বিকেলে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন উপস্থিত ছিলেন। করোনা মহামারীর কারণে আগামী নভেম্বর থেকে অনুষ্ঠেয় প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেয়ার জন্য গত ১৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব করে সার-সংক্ষেপ পাঠানো হয়। ২০০৯ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।

জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণে সার্বিক পরস্থিতি বিবেচনা করে এবারের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণ না করার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। অতএব, আমরা পিইসি পরীক্ষাটা নিচ্ছি না, এ বছর স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষাগুলো নেব। এই পরীক্ষা না নেয়ার কারণে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া হবে না।’ তিনি জানান, এবার পঞ্চমের দুই সমাপনী পরীক্ষার ২৯ লাখ শিক্ষার্থীর অংশ নেয়ার কথা ছিল।

এমসিকিউ পদ্ধতিতে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে কিনা-জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘এটা স্কুল কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে, আমরা তাদের দায়িত্ব দেব। শিক্ষকরা যেভাবে প্রশ্ন করবেন, সেভাবেই হবে, স্ব স্ব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ সিদ্ধান্ত দেবেন। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমিকে (নেপ) তিনটি বিকল্প পাঠ পরিকল্পনা করতে বলেছিলাম। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসের জন্য তিনটি পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছিল। যেহেতু সেপ্টেম্বরে এখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি, তাই সেপ্টেম্বরকে বিকল্প হিসেবে ধরছি না। অক্টোবর এবং নভেম্বরকে সামনে রেখে যে পাঠ পরিকল্পনা করেছি, সেটাকে সামনে রেখে, সেটার ভিত্তিতে প্রত্যেকটা স্কুল ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত প্রশ্নপত্র করে পরীক্ষা নেবে।’

শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কীভাবে স্কুল রি-ওপেনিং হবে সেই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে জানিয়ে গণশিক্ষা সচিব বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে আমরা এটা জারি করব। স্কুল রি-ওপেনিং হলে কী কী করতে হবে, সেটা ওই নীতিমালার মধ্যে বলা আছে। প্রত্যেকটা স্কুলকে বলেছি, নিজেদের মতো করে রি-ওপেনিং প্ল্যান করতে। কারণ একেক স্কুলের ছাত্র সংখ্যা একেক রকম। এসব বিবেচনায় নিয়ে তারা পরিকল্পনা করবেন।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একসঙ্গে বসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব বলেন, ‘আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেব কবে স্কুল খুলতে পারব।’

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। ৬/৭ দফা বাড়িয়ে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।

বুধবার, ২৬ আগস্ট ২০২০ , ৬ মহররম ১৪৪২, ২৬ আগস্ট ২০২০

এ বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা হবে না

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

এ বছর কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা হবে না। সমাপনী পরীক্ষার বদলে স্কুলে স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের পর গতকাল বিকেলে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন উপস্থিত ছিলেন। করোনা মহামারীর কারণে আগামী নভেম্বর থেকে অনুষ্ঠেয় প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেয়ার জন্য গত ১৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব করে সার-সংক্ষেপ পাঠানো হয়। ২০০৯ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।

জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণে সার্বিক পরস্থিতি বিবেচনা করে এবারের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণ না করার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। অতএব, আমরা পিইসি পরীক্ষাটা নিচ্ছি না, এ বছর স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষাগুলো নেব। এই পরীক্ষা না নেয়ার কারণে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া হবে না।’ তিনি জানান, এবার পঞ্চমের দুই সমাপনী পরীক্ষার ২৯ লাখ শিক্ষার্থীর অংশ নেয়ার কথা ছিল।

এমসিকিউ পদ্ধতিতে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে কিনা-জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘এটা স্কুল কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে, আমরা তাদের দায়িত্ব দেব। শিক্ষকরা যেভাবে প্রশ্ন করবেন, সেভাবেই হবে, স্ব স্ব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ সিদ্ধান্ত দেবেন। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমিকে (নেপ) তিনটি বিকল্প পাঠ পরিকল্পনা করতে বলেছিলাম। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসের জন্য তিনটি পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছিল। যেহেতু সেপ্টেম্বরে এখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি, তাই সেপ্টেম্বরকে বিকল্প হিসেবে ধরছি না। অক্টোবর এবং নভেম্বরকে সামনে রেখে যে পাঠ পরিকল্পনা করেছি, সেটাকে সামনে রেখে, সেটার ভিত্তিতে প্রত্যেকটা স্কুল ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত প্রশ্নপত্র করে পরীক্ষা নেবে।’

শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কীভাবে স্কুল রি-ওপেনিং হবে সেই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে জানিয়ে গণশিক্ষা সচিব বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে আমরা এটা জারি করব। স্কুল রি-ওপেনিং হলে কী কী করতে হবে, সেটা ওই নীতিমালার মধ্যে বলা আছে। প্রত্যেকটা স্কুলকে বলেছি, নিজেদের মতো করে রি-ওপেনিং প্ল্যান করতে। কারণ একেক স্কুলের ছাত্র সংখ্যা একেক রকম। এসব বিবেচনায় নিয়ে তারা পরিকল্পনা করবেন।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একসঙ্গে বসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব বলেন, ‘আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেব কবে স্কুল খুলতে পারব।’

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। ৬/৭ দফা বাড়িয়ে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।