খুলনার দক্ষিণের উপজেলা কয়রা

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে ক্লান্ত মানুষ

বাঁধ নির্মাণে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও পানিতে ভেসে যায়

কয়রা। খুলনা জেলার সর্ব দক্ষিণের উপজেলা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে বসবাস এখানকার মানুষের। ২০০৯ সাল থেকে বেড়িবাঁধ ভাঙনের সাথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে এখানকার লাখ লাখ লোকের। কয়রার মানুষের দুরবস্থা দেখে মনে হয় এখানে জন্মানো তাদের অপরাধ! দুর্যোগের সাথে যুদ্ধ করতে করতে তারা এখন ক্লান্ত। প্রায় সময় বেড়িবাঁধ ভাঙলেও মেরামতের কাজ হাস্যকরে পরিণত হয়েছে। কয়রার মানুষের ভাগ্যে কেবল নেই আর নেই।

সরকার বাঁধ নির্মাণে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও তা যেন জোয়ারের পানিতেই ভেসে যাচ্ছে। এখানকার যে অবস্থা তাতে করে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে কয়রা উপজেলা। এখানকার মানুষের বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা। তা না হলে সরকারি বরাদ্দের অর্থ পেটুকদের পেটেই যাবে।

একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের গাফিলতির কারণে ডুবে মরছে হাজার হাজার মানুষ। পাঁচ লাখ টাকার বাঁধ মেরামত করতে এখন লাগবে দু’ কোটি টাকা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আর ঠিকাদারদের খামখেয়ালির কারণে বছরের পর বছর পানির সাথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে এখানকার লাখ লাখ মানুষকে। বসতবাড়িতে থাকতে হলে স্বেচ্ছাশ্রমই এখন ভরসা তাদের। সরকারিভাবে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও তেমন কোনো কাজে আসছে না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ঠিকাদার এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বিপুল অঙ্কের এ টাকার বেশিরভাগ হজম করছে। ফলে, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ডুবে মরছে এই জনপদের মানুষ। আর ভালো কামাই হচ্ছে বাঁধ নির্মাণের সাথে সংশ্লিষ্টদের।

বছরের বেশিরভাগ সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে লড়াই করে বাঁচতে হয় কয়রার চার লাখ মানুষকে। কখনো ঘূর্ণিঝড়। কখনো জলোচ্ছ্বাস। কখনো নদী ভাঙন। আবার কখনো বাঁধ ভাঙা। ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলার পর থেকে বাঁধ ভাঙা এখানকার মানুষের নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ, গত ২২ মে সুপার সাইক্লোন আম্পানে কয়রার চারটি ইউনিয়নের ২০ জায়গায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে প্লাবিত হয় পাঁচটি। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তখন স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায়সব বাঁধ আটকানো হয়। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও কাজ করে। ওই সময় বাকি থাকে উত্তর বেদকাশির কাশিরহাটখোলা। এ কারণে এই ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের আনুমানিক সাত হাজার মানুষ সেই থেকে পানিবন্দি রয়েছেন। তাদের এখন উদ্বাস্তু হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ইতিমধ্যে এখানকার সচ্ছল অনেকেই ভিটেমাটির মায়া ত্যাগ করেছেন। বাঁচার তাগিদে চলে গেছেন এলাকা ছেড়ে। যাদের কোনো উপায় নেই তারাই পানির সাথে যুদ্ধ করে নামমাত্র বেঁচে আছেন।

এলাকার লোকজন জানিয়েছে, প্রবল জোয়ারের চাপে গত ২০ আগস্ট উপজেলার ২ নম্বর কয়রার রউফ শেখের বাড়ির পাশে ও ৩ নম্বর কয়রার ঢালী বাড়ির পাশে নতুন করে ভেঙে যায়। এর আগে আম্পানে কাশিরহাটখোলার ভাঙনতো রয়েছেই। এসব ভাঙন দিয়ে প্রবেশ করা পানি উপজেলার ১১ টি গ্রাম তলিয়ে দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০ হাজারের মতো মানুষ। পানির তোড়ে যেসব গ্রাম প্লাবিত হয়েছে সেগুলো হচ্ছে, গোবরা, ঘাটাখালি, ২ নম্বর কয়রা, ৩ নম্বর কয়রা, মদিনাবাদ, হরিণখোলা, উত্তর বেদকাশি, কাটমারচর, শেখ সরদারপাড়া, পূর্ব হাজতখালি, পশ্চিম হাজতখালি, দশহালিয়া ও গোবিন্দপুর।

এলাকার হাজার হাজার মানুষের অভিযোগ, আম্পানের পর ২ নম্বর কয়রায় রিং বাঁধ দেওয়া হয়। এই বাঁধে মাটি দেওয়ার জন্যে পরবর্তীতে ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কোনো মাটি দেওয়া হয়নি। এ কারণে তীব্র জোয়ারে ভেঙে গেছে এই রিং বাঁধটি। উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষ অভিযোগ করেছেন, কাশিরহাটখোলায় বাঁধ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নূরুল ইসলামের উপর। তখন বাঁধ নির্মাণ করতে সর্বসাকূল্যে পাঁচ লাখ টাকার মতো খরচ হতো। কিন্তু ইচ্ছে করে তিনি সেটি করেননি। বর্তমানে এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে, এই বাঁধ নির্মাণ করতে দু’ কোটি টাকার মতো লাগতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারনা করছেন। চেয়ারম্যানের গাফিলতির কারণে এই ইউনিয়নের সাত হাজার মানুষ গত তিনমাস ধরে পানির মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে। শুকনো মাটি এতদিনেও চোখে দেখেনি তারা।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম জানান, ভেঙে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন নিয়ে তিনি নাকি রিং বাঁধ দিয়েছিলেন। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মশিউর রহমানকে বাঁধ মেরামতের কথা বলেন। কিন্তু তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি। একইসাথে স্থানীয়ভাবে বাঁধ নির্মাণ কমিটি করেন চেয়ারম্যান। যে কমিটির সভাপতি করা হয় ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমানকে। কমিটি করার পর কাশিরহাটখোলা বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে বিরোধিতা করেন তিনি। লুৎফর রহমান সেই সময় হাজতখালির বাঁধ আগে মেরামতের উপর জোর দেন। কারণ সেখানে তার ছেলে শাহীন শেখ ও ইদ্রিস শেখের মাছের ঘের রয়েছে। ওই ঘের রক্ষা করতে সেই সময় তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। এমনকি একজন মেম্বারের নেতৃত্বে কাশিরহাটখোলায় কিছু লোকজন কাজ করলে শেখ লুৎফর রহমান হুমকি ধামকি দিয়ে তা বন্ধ করান। এ কারণে ওই বাঁধ ভেঙে যায় বলে দাবি করেছেন চেয়ারম্যান।

কাশিরহাটখোলার বাঁধ নির্মাণে ইতিমধ্যে এককোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন। তার অভিযোগ, এই কাজ ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সরদার মতিয়ার রহমানকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি ঠিকমতো কাজ করছেন না। বিএনপি নেতাকে কাজ দেওয়ায় গোস্বা করেছেন চেয়ারম্যান। এ কারণে নাকি তিনি খোঁজ নিচ্ছেন না। ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে তার দায়িত্ব আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘এমপি সাহেব খোঁজ নিচ্ছেন বলে আমি খবর নিচ্ছি না।’

২০ আগস্ট নতুন করে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার পর ২ নম্বর কয়রায় রিং বাঁধ দিতে ২৫ লাখ এবং ঘাটাখালি-হরিণখোলা মিলিয়ে ৮২ লাখ টাকা জরুরি ভিত্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে কয়রা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম শফিকুল ইসলাম সোমবার রাতে জানান। কিন্তু সেই অর্থ নাকি ব্যয় করা হয়নি। সদর ইউনিয়ন পরিষদে আসা চাল দিয়ে কিছু কাজ করানো হয়। যা তেমন উপকারে আসেনি। অথচ ডিপিএম প্রকল্পের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে উপজেলা চেয়ারম্যান জানিয়েছেন। যদিও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ^াস পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই বরাদ্দ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তিনি জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো বরাদ্দ সম্পর্কে তাকে মৌখিক কিংবা লিখিত কোনোটাই জানানো হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সাতক্ষীরায় থাকেন। দুর্গত এলাকার তেমন কোনো খোঁজ তারা রাখেন না। কালেভদ্রে এসে দায় সারেন বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন, যত চাপ স্থানীয় প্রশাসনকে সামলাতে হচ্ছে। সর্বশেষ, সোমবার জোয়ারের পানি উপজেলা পরিষদে প্রবেশ করেছে। ইউএনও বলেন, জোয়ারের পানি এত পরিমাণ এসেছে যে, ভাটায় সব পানি নেমে যাওয়ার আগেই আবার জোয়ার আসছে। ফলে, কাজ করা যাচ্ছে না। তারপরও এই অবস্থার মধ্যে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ ব্যাপারে কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, এক বাঁধে ২৫ এবং অন্যান্য বাঁধে ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে। অথচ শুক্রবার পর্যন্ত এ ধরনের বরাদ্দের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। রোববার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা একটি বরাদ্দ হতে পারে বলে তাকে জানিয়েছেন। প্রবল জোয়ার থাকার কারণে ইচ্ছা থাকলে বাঁধে কাজ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির।

অবহেলিত এই জনপদের বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বাঁধ ভাঙনের সাথে সাথে এলাকার হাজার হাজার মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে স্বেচ্ছাশ্রমে আটকানোর চেষ্টা করেন। আর এটিই কাজে লাগান পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ও ঠিকাদার। তারা নামকাওয়াস্তে কাজ করে পুরো বরাদ্দ হজম করার পাঁয়তারা করেন। ফলে, কখনই টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে না। এ কারণে নির্মিত বাঁধ অল্প সময়ের মধ্যে নদীতে বিলীন হচ্ছে।

কয়রার মানুষ ঠিকাদার কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ ধরনের ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করার দাবি তুলেছে। তারা বলছে, কার্যকরভাবে বাঁধ নির্মাণ করা হোক। যাতে করে এখানকার মানুষ বেঁচে থাকতে পারে। নামকাওয়াস্তে বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করছেন তারা।

কয়রা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মনু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আম্পানে ভেঙে যাওয়ার পর সেসব জায়গায় রিং বাঁধ দেওয়া হয়। এই রিং বাঁধে পরে মাটি দেওয়ার কথা থাকলেও তা আর দেওয়া হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহেলার কারণে বার বার দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষকে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে একই কথা বলেন কয়রা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এমএ হাসান। তিনি বলেন, সময়মতো বাঁধগুলো সংস্কার করলে বার বার ভাঙার ঘটনা ঘটতো না।

দুর্ভোগে থাকা হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের বেঁচে থাকার আকুতির কথা জানাচ্ছেন। কিন্তু কারা শোনে কাদের কথা! দিনের পর দিন একই অবস্থা থেকে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগীদের বক্তব্য, এখানকার মানুষ আর কতদিন স্বেচ্ছাশ্রম দিবে। সরকারিভাবে যেখানে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে সেখানে তারা কেন স্বেচ্ছাশ্রম দিবেন। একই ধরনের বক্তব্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ^াসেরও। তিনি বলেছেন, মানুষ কয়দিন স্বেচ্ছাশ্রম দিবেন। তাদের মজুরির কী হবে। আর বাঁধ মেরামত করতে গেলে বাঁশ, বস্তা এবং টিনের প্রয়োজন। সেগুলো কীভাবে কেনা হবে।

বেঁচে থাকার তাগিদে ভুক্তভোগীরা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে কাজ করার চিন্তা করছে। কিন্তু সেখানেও বাধা সরঞ্জাম। নেই বাঁশ, বস্তা ও টিন। বিপুল পরিমাণ এসব জিনিসপত্র কিনতে টাকার জোগান কে দেবে? তাহলে কি কয়রার হাজার হাজার মানুষ ডুবে মরবে? এ প্রশ্নের উত্তর কেউ দিচ্ছে না।

নতুন করে বাঁধ ভাঙার বিষয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, যেসব জায়গা জরুরি ভিত্তিতে আটকানো দরকার সেগুলো সেনাবাহিনীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুকূল পরিবেশ পাওয়া মাত্র তারা কাজ শুরু করবে। কবে নাগাদ সেই অনুকূল পরিবেশ পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কে তিনি বলেন, খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে তারা মনে করছেন। তবে, সোমবার উপজেলা পরিষদে পানি প্রবেশ করার বিষয়ে তিনি জানেন না বলে জানান।

সর্বশেষ, গতকাল বুধবার স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করার কথা থাকলেও সরঞ্জামের অভাবে সেটি হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

image

যশোর : খুলনার কয়রার বেড়িবাঁধ ভাঙায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগের চিত্র। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে -সংবাদ

আরও খবর
পরীক্ষা নিম্নমুখী মৃত্যু ঊর্ধ্বমুখী
জাতীয় কবির ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
রেলওয়ের নতুন নির্দেশনায় বিভ্রান্তিতে যাত্রীরা
নিম্নআয়ের মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
প্রবল বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা
স্বাস্থ্যের আবজাল কারাগারে
একক উৎস থেকে পণ্য কার্য ও সেবা ক্রয় না করার নির্দেশ
লিয়াকতসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা
পিছিয়ে গেছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ
বিএসএমএমইউর প্লাজমা থেরাপি গবেষণায় সাফল্য দাবি
আশুরা উপলক্ষে বিধি-নিষেধ
রিজেন্টের সাহেদ রিমান্ডে

বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট ২০২০ , ৭ মহররম ১৪৪২, ২৭ আগস্ট ২০২০

খুলনার দক্ষিণের উপজেলা কয়রা

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে ক্লান্ত মানুষ

বাঁধ নির্মাণে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও পানিতে ভেসে যায়

রুকুনউদ্দৌলাহ

image

যশোর : খুলনার কয়রার বেড়িবাঁধ ভাঙায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগের চিত্র। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে -সংবাদ

কয়রা। খুলনা জেলার সর্ব দক্ষিণের উপজেলা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে বসবাস এখানকার মানুষের। ২০০৯ সাল থেকে বেড়িবাঁধ ভাঙনের সাথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে এখানকার লাখ লাখ লোকের। কয়রার মানুষের দুরবস্থা দেখে মনে হয় এখানে জন্মানো তাদের অপরাধ! দুর্যোগের সাথে যুদ্ধ করতে করতে তারা এখন ক্লান্ত। প্রায় সময় বেড়িবাঁধ ভাঙলেও মেরামতের কাজ হাস্যকরে পরিণত হয়েছে। কয়রার মানুষের ভাগ্যে কেবল নেই আর নেই।

সরকার বাঁধ নির্মাণে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও তা যেন জোয়ারের পানিতেই ভেসে যাচ্ছে। এখানকার যে অবস্থা তাতে করে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে কয়রা উপজেলা। এখানকার মানুষের বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা। তা না হলে সরকারি বরাদ্দের অর্থ পেটুকদের পেটেই যাবে।

একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের গাফিলতির কারণে ডুবে মরছে হাজার হাজার মানুষ। পাঁচ লাখ টাকার বাঁধ মেরামত করতে এখন লাগবে দু’ কোটি টাকা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আর ঠিকাদারদের খামখেয়ালির কারণে বছরের পর বছর পানির সাথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে এখানকার লাখ লাখ মানুষকে। বসতবাড়িতে থাকতে হলে স্বেচ্ছাশ্রমই এখন ভরসা তাদের। সরকারিভাবে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও তেমন কোনো কাজে আসছে না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ঠিকাদার এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বিপুল অঙ্কের এ টাকার বেশিরভাগ হজম করছে। ফলে, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ডুবে মরছে এই জনপদের মানুষ। আর ভালো কামাই হচ্ছে বাঁধ নির্মাণের সাথে সংশ্লিষ্টদের।

বছরের বেশিরভাগ সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে লড়াই করে বাঁচতে হয় কয়রার চার লাখ মানুষকে। কখনো ঘূর্ণিঝড়। কখনো জলোচ্ছ্বাস। কখনো নদী ভাঙন। আবার কখনো বাঁধ ভাঙা। ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলার পর থেকে বাঁধ ভাঙা এখানকার মানুষের নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ, গত ২২ মে সুপার সাইক্লোন আম্পানে কয়রার চারটি ইউনিয়নের ২০ জায়গায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে প্লাবিত হয় পাঁচটি। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তখন স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায়সব বাঁধ আটকানো হয়। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও কাজ করে। ওই সময় বাকি থাকে উত্তর বেদকাশির কাশিরহাটখোলা। এ কারণে এই ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের আনুমানিক সাত হাজার মানুষ সেই থেকে পানিবন্দি রয়েছেন। তাদের এখন উদ্বাস্তু হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ইতিমধ্যে এখানকার সচ্ছল অনেকেই ভিটেমাটির মায়া ত্যাগ করেছেন। বাঁচার তাগিদে চলে গেছেন এলাকা ছেড়ে। যাদের কোনো উপায় নেই তারাই পানির সাথে যুদ্ধ করে নামমাত্র বেঁচে আছেন।

এলাকার লোকজন জানিয়েছে, প্রবল জোয়ারের চাপে গত ২০ আগস্ট উপজেলার ২ নম্বর কয়রার রউফ শেখের বাড়ির পাশে ও ৩ নম্বর কয়রার ঢালী বাড়ির পাশে নতুন করে ভেঙে যায়। এর আগে আম্পানে কাশিরহাটখোলার ভাঙনতো রয়েছেই। এসব ভাঙন দিয়ে প্রবেশ করা পানি উপজেলার ১১ টি গ্রাম তলিয়ে দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০ হাজারের মতো মানুষ। পানির তোড়ে যেসব গ্রাম প্লাবিত হয়েছে সেগুলো হচ্ছে, গোবরা, ঘাটাখালি, ২ নম্বর কয়রা, ৩ নম্বর কয়রা, মদিনাবাদ, হরিণখোলা, উত্তর বেদকাশি, কাটমারচর, শেখ সরদারপাড়া, পূর্ব হাজতখালি, পশ্চিম হাজতখালি, দশহালিয়া ও গোবিন্দপুর।

এলাকার হাজার হাজার মানুষের অভিযোগ, আম্পানের পর ২ নম্বর কয়রায় রিং বাঁধ দেওয়া হয়। এই বাঁধে মাটি দেওয়ার জন্যে পরবর্তীতে ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কোনো মাটি দেওয়া হয়নি। এ কারণে তীব্র জোয়ারে ভেঙে গেছে এই রিং বাঁধটি। উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষ অভিযোগ করেছেন, কাশিরহাটখোলায় বাঁধ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নূরুল ইসলামের উপর। তখন বাঁধ নির্মাণ করতে সর্বসাকূল্যে পাঁচ লাখ টাকার মতো খরচ হতো। কিন্তু ইচ্ছে করে তিনি সেটি করেননি। বর্তমানে এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে, এই বাঁধ নির্মাণ করতে দু’ কোটি টাকার মতো লাগতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারনা করছেন। চেয়ারম্যানের গাফিলতির কারণে এই ইউনিয়নের সাত হাজার মানুষ গত তিনমাস ধরে পানির মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে। শুকনো মাটি এতদিনেও চোখে দেখেনি তারা।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম জানান, ভেঙে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন নিয়ে তিনি নাকি রিং বাঁধ দিয়েছিলেন। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মশিউর রহমানকে বাঁধ মেরামতের কথা বলেন। কিন্তু তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি। একইসাথে স্থানীয়ভাবে বাঁধ নির্মাণ কমিটি করেন চেয়ারম্যান। যে কমিটির সভাপতি করা হয় ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমানকে। কমিটি করার পর কাশিরহাটখোলা বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে বিরোধিতা করেন তিনি। লুৎফর রহমান সেই সময় হাজতখালির বাঁধ আগে মেরামতের উপর জোর দেন। কারণ সেখানে তার ছেলে শাহীন শেখ ও ইদ্রিস শেখের মাছের ঘের রয়েছে। ওই ঘের রক্ষা করতে সেই সময় তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। এমনকি একজন মেম্বারের নেতৃত্বে কাশিরহাটখোলায় কিছু লোকজন কাজ করলে শেখ লুৎফর রহমান হুমকি ধামকি দিয়ে তা বন্ধ করান। এ কারণে ওই বাঁধ ভেঙে যায় বলে দাবি করেছেন চেয়ারম্যান।

কাশিরহাটখোলার বাঁধ নির্মাণে ইতিমধ্যে এককোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন। তার অভিযোগ, এই কাজ ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সরদার মতিয়ার রহমানকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি ঠিকমতো কাজ করছেন না। বিএনপি নেতাকে কাজ দেওয়ায় গোস্বা করেছেন চেয়ারম্যান। এ কারণে নাকি তিনি খোঁজ নিচ্ছেন না। ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে তার দায়িত্ব আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘এমপি সাহেব খোঁজ নিচ্ছেন বলে আমি খবর নিচ্ছি না।’

২০ আগস্ট নতুন করে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার পর ২ নম্বর কয়রায় রিং বাঁধ দিতে ২৫ লাখ এবং ঘাটাখালি-হরিণখোলা মিলিয়ে ৮২ লাখ টাকা জরুরি ভিত্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে কয়রা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম শফিকুল ইসলাম সোমবার রাতে জানান। কিন্তু সেই অর্থ নাকি ব্যয় করা হয়নি। সদর ইউনিয়ন পরিষদে আসা চাল দিয়ে কিছু কাজ করানো হয়। যা তেমন উপকারে আসেনি। অথচ ডিপিএম প্রকল্পের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে উপজেলা চেয়ারম্যান জানিয়েছেন। যদিও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ^াস পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই বরাদ্দ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তিনি জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো বরাদ্দ সম্পর্কে তাকে মৌখিক কিংবা লিখিত কোনোটাই জানানো হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সাতক্ষীরায় থাকেন। দুর্গত এলাকার তেমন কোনো খোঁজ তারা রাখেন না। কালেভদ্রে এসে দায় সারেন বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন, যত চাপ স্থানীয় প্রশাসনকে সামলাতে হচ্ছে। সর্বশেষ, সোমবার জোয়ারের পানি উপজেলা পরিষদে প্রবেশ করেছে। ইউএনও বলেন, জোয়ারের পানি এত পরিমাণ এসেছে যে, ভাটায় সব পানি নেমে যাওয়ার আগেই আবার জোয়ার আসছে। ফলে, কাজ করা যাচ্ছে না। তারপরও এই অবস্থার মধ্যে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ ব্যাপারে কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, এক বাঁধে ২৫ এবং অন্যান্য বাঁধে ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে। অথচ শুক্রবার পর্যন্ত এ ধরনের বরাদ্দের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। রোববার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা একটি বরাদ্দ হতে পারে বলে তাকে জানিয়েছেন। প্রবল জোয়ার থাকার কারণে ইচ্ছা থাকলে বাঁধে কাজ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির।

অবহেলিত এই জনপদের বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বাঁধ ভাঙনের সাথে সাথে এলাকার হাজার হাজার মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে স্বেচ্ছাশ্রমে আটকানোর চেষ্টা করেন। আর এটিই কাজে লাগান পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ও ঠিকাদার। তারা নামকাওয়াস্তে কাজ করে পুরো বরাদ্দ হজম করার পাঁয়তারা করেন। ফলে, কখনই টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে না। এ কারণে নির্মিত বাঁধ অল্প সময়ের মধ্যে নদীতে বিলীন হচ্ছে।

কয়রার মানুষ ঠিকাদার কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ ধরনের ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করার দাবি তুলেছে। তারা বলছে, কার্যকরভাবে বাঁধ নির্মাণ করা হোক। যাতে করে এখানকার মানুষ বেঁচে থাকতে পারে। নামকাওয়াস্তে বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করছেন তারা।

কয়রা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মনু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আম্পানে ভেঙে যাওয়ার পর সেসব জায়গায় রিং বাঁধ দেওয়া হয়। এই রিং বাঁধে পরে মাটি দেওয়ার কথা থাকলেও তা আর দেওয়া হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহেলার কারণে বার বার দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষকে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে একই কথা বলেন কয়রা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এমএ হাসান। তিনি বলেন, সময়মতো বাঁধগুলো সংস্কার করলে বার বার ভাঙার ঘটনা ঘটতো না।

দুর্ভোগে থাকা হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের বেঁচে থাকার আকুতির কথা জানাচ্ছেন। কিন্তু কারা শোনে কাদের কথা! দিনের পর দিন একই অবস্থা থেকে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগীদের বক্তব্য, এখানকার মানুষ আর কতদিন স্বেচ্ছাশ্রম দিবে। সরকারিভাবে যেখানে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে সেখানে তারা কেন স্বেচ্ছাশ্রম দিবেন। একই ধরনের বক্তব্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ^াসেরও। তিনি বলেছেন, মানুষ কয়দিন স্বেচ্ছাশ্রম দিবেন। তাদের মজুরির কী হবে। আর বাঁধ মেরামত করতে গেলে বাঁশ, বস্তা এবং টিনের প্রয়োজন। সেগুলো কীভাবে কেনা হবে।

বেঁচে থাকার তাগিদে ভুক্তভোগীরা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে কাজ করার চিন্তা করছে। কিন্তু সেখানেও বাধা সরঞ্জাম। নেই বাঁশ, বস্তা ও টিন। বিপুল পরিমাণ এসব জিনিসপত্র কিনতে টাকার জোগান কে দেবে? তাহলে কি কয়রার হাজার হাজার মানুষ ডুবে মরবে? এ প্রশ্নের উত্তর কেউ দিচ্ছে না।

নতুন করে বাঁধ ভাঙার বিষয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, যেসব জায়গা জরুরি ভিত্তিতে আটকানো দরকার সেগুলো সেনাবাহিনীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুকূল পরিবেশ পাওয়া মাত্র তারা কাজ শুরু করবে। কবে নাগাদ সেই অনুকূল পরিবেশ পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কে তিনি বলেন, খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে তারা মনে করছেন। তবে, সোমবার উপজেলা পরিষদে পানি প্রবেশ করার বিষয়ে তিনি জানেন না বলে জানান।

সর্বশেষ, গতকাল বুধবার স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করার কথা থাকলেও সরঞ্জামের অভাবে সেটি হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।