টার্গেট সাড়ে ১৯ লাখ টন সংগ্রহ ৮ লাখ ৩৬ হাজার টন

সংগ্রহের মেয়াদ বাড়ছে ১৫ দিন

বোরো মৌসুমে নির্ধারিত সময়ে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র অর্ধেকও অর্জন হয়নি। বোরো মৌসুমে সাড়ে ১৯ লাখ মেট্রিক টন ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র স্থির করেছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়। এর বিপরীতে গতকাল শেষ দিন পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৮ লাখ ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। গত বছরের তুলনায় এবার সিদ্ধ চাল, আতপ চাল ও ধান এই তিনটি খাদ্যশস্য সংগ্রহেই পিছিয়ে পড়েছে খাদ্য প্রশাসন। নির্ধারিত সময়ে খাদ্যশস্য ক্রয়ে সরকার পিছিয়ে থাকলেও দেশে খাদ্য ঘাটতির কোন সম্ভাবনা নেই জানিয়ে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সারোয়ার মাহমুদ সংবাদকে বলেছেন, ‘ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র পূরণে সময় বাড়তে পারে।’

মাঠ পর্যায়ের খাদ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার ঘোষিত মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে মোটা চালের মূল্য বেশি হওয়া, খাদ্য কর্মকর্তা ও চাল ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট, চলমান বন্যা, করোনা পরিস্থিতি এবং খাদ্যশস্য সংগ্রহকালীন সময়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি, ফুড), উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, এলএসডি), আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি, ফুড) পদে শতাধিক কর্মকর্তা বদলি হওয়ার কারণে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র অর্জন হয়নি।

এছাড়া সরকারের কাছে বেসরকারিভাবে খাদ্যশস্য মজুদের প্রকৃত তথ্য না থাকার কারণেও সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হয়েছে মন্তব্য করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, এক শ্রেণীর খাদ্য পরিদর্শক মাঠে না গিয়ে বেসরকারি মজুদের মনগড়া তথ্য দেয় সরকারের কাছে। এতে মজুদ সিন্ডিকেট সম্পর্কে অন্ধকারে থাকে সরকার।

ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার কারণ সম্পর্কে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা প্রতিবারই লক্ষ্যমাত্রা একটু বেশি নির্ধারণ করে থাকি। নানা কারণে এবার লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হয়নি। প্রতিকূল পরিস্থিতি বিশেষ করে, করোনা মহামারী, বন্যা, খোলাবাজারে ধানের দাম বেশি হওয়াসহ নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিন হয়নি।’

সংগ্রহকালীন সময়ে কর্মকর্তাদের বদলির কারণে খাদ্য সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সারোয়ার মাহমুদ বলেন, ‘দু’তিনজন অফিসারের বদলির কারণে এতোবড় টার্গেট ব্যাহত হতে পারে না। যারা অপকর্ম করেছে তাদেরই বদলি করা হয়েছে। তারা যদি দাবি করেন, তাদের বদলি করার কারণে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হয়েছে, তাহলে তাদের চাকরিই থাকা উচিৎ নয়। তাদের অপকর্মের কারণেই তা করা হয়েছে।’

সংগ্রহণের জন্য এবার প্রতি কেজি চালের (মোটা) মূল্য ৩৬ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। কিন্তু খাদ্য অধিদফতরের সর্বশেষ প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, ঢাকার বাজারে খুচরায় মোটা চাল (সিদ্ধ) বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪১ থেকে ৪৩ টাকা, রাজশাহীতে প্রতি কেজি মোট চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৩৯ টাকা ৫০ পয়সায়, রংপুরে ৩৭ থেকে ৩৮ টাকায়, চট্টগ্রামে ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা এবং সিলেট, খুলনা ও বরিশালে প্রতি কেজি মোটা সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৩৯ টাকায়।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বোরো মৌসুমে ধান, সিদ্ধ চাল ও আতপ চাল সংগ্রহের সময়সীমা গতকাল শেষ হয়েছে। গত মে মাসে ধান-চাল সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়। ৩১ আগস্ট শেষ হওয়া বোরো মৌসুমে ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান, ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহণের লক্ষ্যমাত্র স্থির করেছিল সরকার।

কিন্তু গতকাল পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮ লাখ ৩৫ হাজার ৯৭১ মেট্রিক টন ধান, সিদ্ধ চাল ও আতপ চাল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে খাদ্য অধিদফতর। এরমধ্যে সিদ্ধ চাল ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৮৩১ মেট্রিক টন, আতপ চাল ৮০ হাজার ২৩৭ মেট্রিক টন এবং ধান ২ লাখ ৫ হাজার ৯০৩ মেট্রিক টন।

আর গত বছরের এই দিন পর্যন্ত সরকারের সংগ্রহ হয়েছিল সিদ্ধ চাল ৯ লাখ ৪৩ হাজার ২৭৩ মেট্রিক টন, আতপ চাল ১ লাখ ৩১ হাজার ২০৬ মেট্রিক টন এবং ধান ৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৪২ মেট্রিক টন।

প্রতিবারই সরকার আপদকালীন মজুতের জন্য আমন ও বোরো মৌসুমে স্থানীয় চালকল মালিকদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে চাল সংগ্রহ করে। করোনা মহামারীর কারণে এবার বোরো মৌসুমে খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযানকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়া হয়। এ লক্ষ্যেই ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বিগত বছরের তুলনায় বেশি নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে লটারির মাধ্যমে খাদ্যশস্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু লটারির আয়োজনেই প্রায় দেড় মাস চলে যায়। এই সুযোগে কৃষকের ধান কিনে নেয় মজুতদার সিন্ডিকেট। এ কারণে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের অভিযান খুব বেশি সফল হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

ধান-চাল সংগ্রহে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে চালকল মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা আবদুল হামিদ বাবু সংবাদকে বলেন, ‘খোলাবাজারে মোটা চালের দাম প্রতি কেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। কিন্তু সরকারের সঙ্গে আমাদের চুক্তি থাকায় আমরা ৩৬ টাকা কেজি দরেই সরকারকে চাল দিয়েছি, কিন্তু অনেক ব্যবসায়ীর পক্ষেই এভাবে লস (লোকসান) দিয়ে সরকারকে চাল কিনে দেয়া সম্ভব হয়নি। তাছাড়া সরকারের যারা দায়িত্বে থাকে তারাও অনেক সময় বেপরোয়া হয়ে যায়, এসব কারণেই এবার ধান-চাল সংগ্রহের অভিযান এবার সফল হয়নি।’

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে খাদ্যের মজুদ সন্তোষজনক। সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে ১০ লাখ ৫২ হাজার ৬৬২ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৩৭ মেট্রিক টন গমসহ মোট ১২ লাখ ৮৭ হাজার ৮৯৯ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে।

দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিটি কার্যদিবস ও ছুটির দিনসহ সারাদেশের ৫৯৫টি এলএসডি গুদাম, ১২টি সিএসডি গুদাম, ৫টি সাইলো, একটি ফ্লাওয়ার মিল ও একটি বহুতল ওয়ারহাউজসহ ৬১৪টি স্থাপনা খোলা রাখা হয়েছে।

আরও খবর
সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি বাজার ব্যবস্থা
রেডিও, টিভি পত্রিকার অনলাইন সংস্করণেও নিবন্ধন লাগবে
প্রণব মুখার্জির জীবনাবসান
প্রণব মুখার্জির মৃত্যু উপমহাদেশের রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি : রাষ্ট্রপতি
প্রণব মুখার্জির অনন্য অবদান কখনও বিস্মৃত হওয়ার নয় : প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন
আরও ৩৩ জনের মৃত্যু
নন্দদুলালের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
আগের ভাড়ায় আজ থেকে চলবে গণপরিবহন
লোকসান কমাতে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব রেলওয়ের
জীবিত স্কুলছাত্রী হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরখাস্ত
ক্রসফায়ারে হত্যায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে মামলা
ঠিকাদার শাহাদাত জামিন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কারাগার থেকে মুক্ত!

মঙ্গলবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১১ মহররম ১৪৪২, ১৫ ভাদ্র ১৪২৭

বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শেষ

টার্গেট সাড়ে ১৯ লাখ টন সংগ্রহ ৮ লাখ ৩৬ হাজার টন

সংগ্রহের মেয়াদ বাড়ছে ১৫ দিন

রাকিব উদ্দিন

বোরো মৌসুমে নির্ধারিত সময়ে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র অর্ধেকও অর্জন হয়নি। বোরো মৌসুমে সাড়ে ১৯ লাখ মেট্রিক টন ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র স্থির করেছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়। এর বিপরীতে গতকাল শেষ দিন পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৮ লাখ ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। গত বছরের তুলনায় এবার সিদ্ধ চাল, আতপ চাল ও ধান এই তিনটি খাদ্যশস্য সংগ্রহেই পিছিয়ে পড়েছে খাদ্য প্রশাসন। নির্ধারিত সময়ে খাদ্যশস্য ক্রয়ে সরকার পিছিয়ে থাকলেও দেশে খাদ্য ঘাটতির কোন সম্ভাবনা নেই জানিয়ে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সারোয়ার মাহমুদ সংবাদকে বলেছেন, ‘ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র পূরণে সময় বাড়তে পারে।’

মাঠ পর্যায়ের খাদ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার ঘোষিত মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে মোটা চালের মূল্য বেশি হওয়া, খাদ্য কর্মকর্তা ও চাল ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট, চলমান বন্যা, করোনা পরিস্থিতি এবং খাদ্যশস্য সংগ্রহকালীন সময়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি, ফুড), উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, এলএসডি), আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি, ফুড) পদে শতাধিক কর্মকর্তা বদলি হওয়ার কারণে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র অর্জন হয়নি।

এছাড়া সরকারের কাছে বেসরকারিভাবে খাদ্যশস্য মজুদের প্রকৃত তথ্য না থাকার কারণেও সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হয়েছে মন্তব্য করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, এক শ্রেণীর খাদ্য পরিদর্শক মাঠে না গিয়ে বেসরকারি মজুদের মনগড়া তথ্য দেয় সরকারের কাছে। এতে মজুদ সিন্ডিকেট সম্পর্কে অন্ধকারে থাকে সরকার।

ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার কারণ সম্পর্কে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা প্রতিবারই লক্ষ্যমাত্রা একটু বেশি নির্ধারণ করে থাকি। নানা কারণে এবার লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হয়নি। প্রতিকূল পরিস্থিতি বিশেষ করে, করোনা মহামারী, বন্যা, খোলাবাজারে ধানের দাম বেশি হওয়াসহ নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিন হয়নি।’

সংগ্রহকালীন সময়ে কর্মকর্তাদের বদলির কারণে খাদ্য সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সারোয়ার মাহমুদ বলেন, ‘দু’তিনজন অফিসারের বদলির কারণে এতোবড় টার্গেট ব্যাহত হতে পারে না। যারা অপকর্ম করেছে তাদেরই বদলি করা হয়েছে। তারা যদি দাবি করেন, তাদের বদলি করার কারণে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হয়েছে, তাহলে তাদের চাকরিই থাকা উচিৎ নয়। তাদের অপকর্মের কারণেই তা করা হয়েছে।’

সংগ্রহণের জন্য এবার প্রতি কেজি চালের (মোটা) মূল্য ৩৬ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। কিন্তু খাদ্য অধিদফতরের সর্বশেষ প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, ঢাকার বাজারে খুচরায় মোটা চাল (সিদ্ধ) বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪১ থেকে ৪৩ টাকা, রাজশাহীতে প্রতি কেজি মোট চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৩৯ টাকা ৫০ পয়সায়, রংপুরে ৩৭ থেকে ৩৮ টাকায়, চট্টগ্রামে ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা এবং সিলেট, খুলনা ও বরিশালে প্রতি কেজি মোটা সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৩৯ টাকায়।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বোরো মৌসুমে ধান, সিদ্ধ চাল ও আতপ চাল সংগ্রহের সময়সীমা গতকাল শেষ হয়েছে। গত মে মাসে ধান-চাল সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়। ৩১ আগস্ট শেষ হওয়া বোরো মৌসুমে ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান, ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহণের লক্ষ্যমাত্র স্থির করেছিল সরকার।

কিন্তু গতকাল পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮ লাখ ৩৫ হাজার ৯৭১ মেট্রিক টন ধান, সিদ্ধ চাল ও আতপ চাল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে খাদ্য অধিদফতর। এরমধ্যে সিদ্ধ চাল ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৮৩১ মেট্রিক টন, আতপ চাল ৮০ হাজার ২৩৭ মেট্রিক টন এবং ধান ২ লাখ ৫ হাজার ৯০৩ মেট্রিক টন।

আর গত বছরের এই দিন পর্যন্ত সরকারের সংগ্রহ হয়েছিল সিদ্ধ চাল ৯ লাখ ৪৩ হাজার ২৭৩ মেট্রিক টন, আতপ চাল ১ লাখ ৩১ হাজার ২০৬ মেট্রিক টন এবং ধান ৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৪২ মেট্রিক টন।

প্রতিবারই সরকার আপদকালীন মজুতের জন্য আমন ও বোরো মৌসুমে স্থানীয় চালকল মালিকদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে চাল সংগ্রহ করে। করোনা মহামারীর কারণে এবার বোরো মৌসুমে খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযানকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়া হয়। এ লক্ষ্যেই ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বিগত বছরের তুলনায় বেশি নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে লটারির মাধ্যমে খাদ্যশস্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু লটারির আয়োজনেই প্রায় দেড় মাস চলে যায়। এই সুযোগে কৃষকের ধান কিনে নেয় মজুতদার সিন্ডিকেট। এ কারণে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের অভিযান খুব বেশি সফল হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

ধান-চাল সংগ্রহে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে চালকল মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা আবদুল হামিদ বাবু সংবাদকে বলেন, ‘খোলাবাজারে মোটা চালের দাম প্রতি কেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। কিন্তু সরকারের সঙ্গে আমাদের চুক্তি থাকায় আমরা ৩৬ টাকা কেজি দরেই সরকারকে চাল দিয়েছি, কিন্তু অনেক ব্যবসায়ীর পক্ষেই এভাবে লস (লোকসান) দিয়ে সরকারকে চাল কিনে দেয়া সম্ভব হয়নি। তাছাড়া সরকারের যারা দায়িত্বে থাকে তারাও অনেক সময় বেপরোয়া হয়ে যায়, এসব কারণেই এবার ধান-চাল সংগ্রহের অভিযান এবার সফল হয়নি।’

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে খাদ্যের মজুদ সন্তোষজনক। সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে ১০ লাখ ৫২ হাজার ৬৬২ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৩৭ মেট্রিক টন গমসহ মোট ১২ লাখ ৮৭ হাজার ৮৯৯ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে।

দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিটি কার্যদিবস ও ছুটির দিনসহ সারাদেশের ৫৯৫টি এলএসডি গুদাম, ১২টি সিএসডি গুদাম, ৫টি সাইলো, একটি ফ্লাওয়ার মিল ও একটি বহুতল ওয়ারহাউজসহ ৬১৪টি স্থাপনা খোলা রাখা হয়েছে।