জীবিত স্কুলছাত্রী হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরখাস্ত

নারায়ণগঞ্জে স্কুলছাত্রী জিসা মনি (১৫)কে অপহরণের পর কথিত গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (প্রত্যাহার) শামীম আল মামুনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এসপি সংবাদকে বলেন, জিসা মনি অপহরণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম আল মামুনের বিরুদ্ধে আসামির পরিবারের লোকজন অবৈধ উপায়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে অভিযুক্ত এসআইয়ের অপেশাদারিত্বের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান এসপি।

এক প্রশ্নের জবাবে জায়েদুল আলম বলেন, এই মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের গাফিলতি ছিল কিনা সে বিষয়ে তদন্ত এখনও চলছে। যেহেতু মামলাটি তদন্তাধীন, হাইকোর্টের বিষয়টিও রয়েছে ফলে বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে মামলার তদন্তে গাফিলতি পাওয়া গেলে কিংবা তার সঙ্গে থানার ওসি জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত ৪ জুলাই নিখোঁজ হয় জিসা মনি। পরে অপহরণ মামলা দায়ের করা হলে তিন আসামিকে গ্রেফতার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। আসামিরা গত ৯ আগস্ট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে তারা জানায়, জিসা মনিকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়। তবে ২৩ আগস্ট ওই স্কুলছাত্রী জীবিত ফিরে এসে জানায়, সে তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে সংসার করছিল। এ ঘটনায় চারদিকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পুলিশের তদন্ত ও আদালতে দেয়া তিন আসামির দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। জবানবন্দির সঙ্গে প্রকৃত ঘটনার সামঞ্জস্য না থাকাতে পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তকার্যে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। ব্যাপক সমালোচনার মুখে গত ২৬ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম আল মামুনকে সদর মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। তদন্তভার দেয়া হয় পরিদর্শক (অপারেশন) আবদুল হাইকে। এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার ওসিকে তলব করেন হাইকোর্ট। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র নিয়ে হাইকোর্টে এই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে আগামী ১ সেপ্টেম্বর ওই দুই কর্মকর্তাকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। জিসা মনির অপহরণ মামলায় কারাগারে রয়েছেন বন্দর উপজেলার বুরুন্ডি খলিলনগর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ (২২), তার বন্ধু বুরুন্ডি পশ্চিমপাড়া এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে রকিব (১৯), বন্দরের একরামপুর ইস্পাহানি এলাকার বাসিন্দা নৌকার মাঝি খলিলকে (৩৬) এবং জিসার কথিত স্বামী যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলের মৃত সোহরাব পণ্ডিতের ছেলে ইকবাল পণ্ডিত (২৭)।

আরও খবর
সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি বাজার ব্যবস্থা
টার্গেট সাড়ে ১৯ লাখ টন সংগ্রহ ৮ লাখ ৩৬ হাজার টন
রেডিও, টিভি পত্রিকার অনলাইন সংস্করণেও নিবন্ধন লাগবে
প্রণব মুখার্জির জীবনাবসান
প্রণব মুখার্জির মৃত্যু উপমহাদেশের রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি : রাষ্ট্রপতি
প্রণব মুখার্জির অনন্য অবদান কখনও বিস্মৃত হওয়ার নয় : প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন
আরও ৩৩ জনের মৃত্যু
নন্দদুলালের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
আগের ভাড়ায় আজ থেকে চলবে গণপরিবহন
লোকসান কমাতে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব রেলওয়ের
ক্রসফায়ারে হত্যায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে মামলা
ঠিকাদার শাহাদাত জামিন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কারাগার থেকে মুক্ত!

মঙ্গলবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১১ মহররম ১৪৪২, ১৫ ভাদ্র ১৪২৭

না’গঞ্জ

জীবিত স্কুলছাত্রী হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরখাস্ত

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জে স্কুলছাত্রী জিসা মনি (১৫)কে অপহরণের পর কথিত গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (প্রত্যাহার) শামীম আল মামুনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এসপি সংবাদকে বলেন, জিসা মনি অপহরণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম আল মামুনের বিরুদ্ধে আসামির পরিবারের লোকজন অবৈধ উপায়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে অভিযুক্ত এসআইয়ের অপেশাদারিত্বের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান এসপি।

এক প্রশ্নের জবাবে জায়েদুল আলম বলেন, এই মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের গাফিলতি ছিল কিনা সে বিষয়ে তদন্ত এখনও চলছে। যেহেতু মামলাটি তদন্তাধীন, হাইকোর্টের বিষয়টিও রয়েছে ফলে বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে মামলার তদন্তে গাফিলতি পাওয়া গেলে কিংবা তার সঙ্গে থানার ওসি জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত ৪ জুলাই নিখোঁজ হয় জিসা মনি। পরে অপহরণ মামলা দায়ের করা হলে তিন আসামিকে গ্রেফতার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। আসামিরা গত ৯ আগস্ট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে তারা জানায়, জিসা মনিকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়। তবে ২৩ আগস্ট ওই স্কুলছাত্রী জীবিত ফিরে এসে জানায়, সে তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে সংসার করছিল। এ ঘটনায় চারদিকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পুলিশের তদন্ত ও আদালতে দেয়া তিন আসামির দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। জবানবন্দির সঙ্গে প্রকৃত ঘটনার সামঞ্জস্য না থাকাতে পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তকার্যে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। ব্যাপক সমালোচনার মুখে গত ২৬ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম আল মামুনকে সদর মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। তদন্তভার দেয়া হয় পরিদর্শক (অপারেশন) আবদুল হাইকে। এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার ওসিকে তলব করেন হাইকোর্ট। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র নিয়ে হাইকোর্টে এই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে আগামী ১ সেপ্টেম্বর ওই দুই কর্মকর্তাকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। জিসা মনির অপহরণ মামলায় কারাগারে রয়েছেন বন্দর উপজেলার বুরুন্ডি খলিলনগর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ (২২), তার বন্ধু বুরুন্ডি পশ্চিমপাড়া এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে রকিব (১৯), বন্দরের একরামপুর ইস্পাহানি এলাকার বাসিন্দা নৌকার মাঝি খলিলকে (৩৬) এবং জিসার কথিত স্বামী যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলের মৃত সোহরাব পণ্ডিতের ছেলে ইকবাল পণ্ডিত (২৭)।