প্রণোদনা প্রদানের জন্য রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাচ্ছে : অর্থমন্ত্রী

করোনার মধ্যেও চলতি বছরের জুলাই ও আগস্টে গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। রেমিট্যান্সের এ প্রবৃদ্ধিকে অবিশ্বাস্য ঘটনা বলেও মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, ছোট্ট একটু প্রণোদনা ও বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোতে ঝামেলা কমানোর উদ্যোগ নেয়ার কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। একই সঙ্গে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোয় প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানান অর্থমন্ত্রী। গতকাল জুম অ্যাপসের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের জুলাই এবং আগস্ট মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ৫০ শতাংশ। গত বছর যা ছিল রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে সবচেয়ে হায়েস্ট আর্নিং বছর। গত বছর ১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত বছরের তুলায় ৫০ ভাগ বৃদ্ধি এটা অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা। ছয় মাসে যেটা পেতাম দুই মাসেই সেটা এসে গেছে। আমি যখন পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলাম তখন নিজ উদ্যোগে একটা স্টাডি করেছিলাম। স্টাডিতে দেখা গেছে, ৫১ শতাংশ রেমিট্যান্স আসে বৈধপথে আর ৪৯ শতাংশ আসে অবৈধ বা হুন্ডির মাধ্যমে। আমি তখন থেকেই ভাবতে শুরু করলাম যে শতভাগ রেমিট্যান্স বৈধপথে আনতে হবে। আমরা চাই যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আয় হয় তার পুরোটাই বৈধপথে আসুক। সেজন্য আমরা দুটি কাজ করি। একটি হচ্ছে রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা প্রদান। রেমিট্যান্স বাড়ার বিষয়ে এ প্রণোদনা কাজ করেছে। দ্বিতীটি হচ্ছে আগে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোটা ছিল অনেক জটিল। নানা প্রশ্ন করা হতো, এখন এগুলো সহজ করে দিয়েছি। গত এক বছর যাদের রেমিট্যান্স এসেছে তাদের কাউকে প্রশ্ন করা হয়নি। কারও রেমিট্যান্স মার যায়নি। সে জন্যই এতো রেমিট্যান্স বেড়েছে। প্রবাসীরা অনেক কষ্টে আয় করে আমাদের সাপোর্ট দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারা নিজেরাও শক্তিশালী হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাদের ধন্যবাদ জানাই। কারণ কাষ্টের অর্থ বৈধপথে পাঠানো তারা শুরু করেছেন। আপনারা বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠান। কোন না কোন দিন এর সুফল আপনারা পাবেন।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৬ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ধরে), যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫১ কোটি ৯২ লাখ ডলার বা ৩৬ শতাংশ বেশি। গত বছরের আগস্টে ১৪৪ কোটি ৪৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এছাড়া চলতি বছরের জুলাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। একক মাস হিসেবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জুনে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৩ মহররম ১৪৪২, ১৭ ভাদ্র ১৪২৭

প্রণোদনা প্রদানের জন্য রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাচ্ছে : অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

করোনার মধ্যেও চলতি বছরের জুলাই ও আগস্টে গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। রেমিট্যান্সের এ প্রবৃদ্ধিকে অবিশ্বাস্য ঘটনা বলেও মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, ছোট্ট একটু প্রণোদনা ও বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোতে ঝামেলা কমানোর উদ্যোগ নেয়ার কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। একই সঙ্গে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোয় প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানান অর্থমন্ত্রী। গতকাল জুম অ্যাপসের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের জুলাই এবং আগস্ট মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ৫০ শতাংশ। গত বছর যা ছিল রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে সবচেয়ে হায়েস্ট আর্নিং বছর। গত বছর ১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত বছরের তুলায় ৫০ ভাগ বৃদ্ধি এটা অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা। ছয় মাসে যেটা পেতাম দুই মাসেই সেটা এসে গেছে। আমি যখন পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলাম তখন নিজ উদ্যোগে একটা স্টাডি করেছিলাম। স্টাডিতে দেখা গেছে, ৫১ শতাংশ রেমিট্যান্স আসে বৈধপথে আর ৪৯ শতাংশ আসে অবৈধ বা হুন্ডির মাধ্যমে। আমি তখন থেকেই ভাবতে শুরু করলাম যে শতভাগ রেমিট্যান্স বৈধপথে আনতে হবে। আমরা চাই যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আয় হয় তার পুরোটাই বৈধপথে আসুক। সেজন্য আমরা দুটি কাজ করি। একটি হচ্ছে রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা প্রদান। রেমিট্যান্স বাড়ার বিষয়ে এ প্রণোদনা কাজ করেছে। দ্বিতীটি হচ্ছে আগে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোটা ছিল অনেক জটিল। নানা প্রশ্ন করা হতো, এখন এগুলো সহজ করে দিয়েছি। গত এক বছর যাদের রেমিট্যান্স এসেছে তাদের কাউকে প্রশ্ন করা হয়নি। কারও রেমিট্যান্স মার যায়নি। সে জন্যই এতো রেমিট্যান্স বেড়েছে। প্রবাসীরা অনেক কষ্টে আয় করে আমাদের সাপোর্ট দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারা নিজেরাও শক্তিশালী হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাদের ধন্যবাদ জানাই। কারণ কাষ্টের অর্থ বৈধপথে পাঠানো তারা শুরু করেছেন। আপনারা বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠান। কোন না কোন দিন এর সুফল আপনারা পাবেন।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৬ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ধরে), যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫১ কোটি ৯২ লাখ ডলার বা ৩৬ শতাংশ বেশি। গত বছরের আগস্টে ১৪৪ কোটি ৪৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এছাড়া চলতি বছরের জুলাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। একক মাস হিসেবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জুনে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার।