দশ বছরে পিডিবির লোকসান ৫৮ হাজার কোটি টাকা

বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিক্রি করে গত দশ বছরে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। পিডিবিকে সচল রাখতে ভর্তুকি হিসেবে সরকার লোকসানের টাকা দিলেও, পিডিবির খাতায় তা ঋণ হিসেবে জমা হচ্ছে। বছর বছর বাড়ছে প্রতিষ্ঠানটির ঋণের বোঝা। পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই থেকে চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের জুলাই পর্যন্ত ১৩ মাসে প্রতিষ্ঠানটির নিট ট্যারিফ ঘাটতি (লোকসান) হয়েছে ৮ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। লোকসানে জর্জরিত পিডিবি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া বিল পরিশোধ করতে না পেরে সরকারের শরণাপন্ন হয়েছে।

পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. বেলায়েত হোসেন গতকাল বিকেলে সংবাদকে বলেন, সরকারের নির্দেশেই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছ থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে গ্রাহক পর্যায়ে কম দামে বিক্রি করে পিডিবি। এজন্য বছর বছর পিডিবির লোকসান বাড়ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গত দশ বছরে পিডিবির লোকসান হয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা। প্রকৌশলী. মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, সরকার এক সময় পিডিবিকে ভর্তুকি দিত। পরে তা ঋণ হিসেবে দেয়া শুরু করে। তবে এখন যেটা হচ্ছে, ঋণ হিসেবে দিলেও ঋণের পরিশোধের জন্য পিডিবির ওপর কোন চাপ নেই। কারণ সরকার জানে পিডিবির কাছে কোন টাকা নেই। যেহেতু ঋণের চাপ নেই, এটাকে ভর্তুকিও বলা চলে। এক সময় হয়ত এই ঋণকে ভর্তুকি হিসেবেই মেনে নেয়া হবে।

বিদ্যুৎ খাতের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যথাসময়ে উৎপাদনে আসতে না পারায় ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে তেলভিত্তিক ছোট ছোট রেন্টাল বা ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরপিপি) এবং কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর (কিউআরপিপি) ওপর নির্ভরশীলতা এখনও রয়ে গেছে। তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। এছাড়া ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (আইপিপি) পর্যায়ের ডিজেল চালিত বেশিরভাগ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন খরচও বেশি। পিডিবি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) আদেশ অনুযায়ী পিডিবি বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের কাছ থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কিনে তা কমমূল্যে বাল্ক বা পাইকারি গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সরকারের অর্থ বিভাগ ৫টি শর্ত দিয়ে পিডিবির অনুকুলে ১ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা ছাড় করেছে। শর্তে বলা হয়েছে- ভারত থেকে আমদানিকৃত বিদ্যুতের বিল এ অর্থ থেকে দেয়া যাবে না। আইপিপি, আরপিপি এবং কিউআরপিপি’র বিল পরিশোধে মার্চ ও এপ্রিল মাসের প্রকৃত লোকসান বাবদ পিডিবির অনূকূলে এ অর্থ ছাড় করা হয়েছে। এদিকে পিডিবি অপর এক চিঠিতে জরুরি ভিত্তিতে মে, জুন ও জুলাই মাসের ট্যারিফ ঘাটতি পূরণে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে আরও অর্থ চেয়েছে। চিঠিতে পিডিবি বলেছে, গত তিন (মে-জুলাই) মাসে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ২ হাজার ৪৬৮ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা ঘাটতিতে পড়েছে। বেসরকারি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের দাম যথাসময়ে পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এতদিন পিডিবিকে ঋণ হিসেবে প্রদানকৃত অর্থ ভর্তুকি বা সাবসিডিয়ারি হিসেবে যেন প্রদান করা হয়।

পিডিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে আইপিপি খাতে ভর্তুকি বা ক্ষতি হয়েছে ৫০১ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা, রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টে ক্ষতি ২০ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা, কুইক রেন্টাল খাতে ১২৫ দশমিক ৩২ কোটি টাকা। এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি বাবদ ক্ষতি ৩১ দশমিক ৪২ কোটি টাকা। অর্থাৎ মে মাসে ক্ষতি ৬৩৭ দশমিক ২২ কোটি টাকা।

জুন মাসে আইপিপি খাতে ৬৯১ দশমিক ৩১ কোটি টাকা, রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টে ২৯ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। কুইক রেন্টাল খাতে ১৮১ দশমিক ৫৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি বাবদ ক্ষতি ৩৬ দশমিক ৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ জুন মাসে মোট ক্ষতি হয়েছে ৮৮১ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা।

জুলাই মাসে আইপিপি খাতে ৭৭৩ দশমিক ৮৭ কোটি টাকা, রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টে ২৩ দশমিক শূন্য ৫ কোটি টাকা। কুইক রেন্টাল খাতে ১৬২ দশমিক ৯২ কোটি টাকা। এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি বাবদ ক্ষতি ৩৬ দশমিক ০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ জুলাই মাসে মোট ক্ষতি হয়েছে ৯৪৯ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা। তিন মাসে মোট ক্ষতি হয়েছে ২৮৬৮ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা।

পিডিবির তথ্যানুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছর পিডিবির লোকসান হয়েছে ৮ হাজার ১৪১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর আগের অর্থবছর লোকসান ছিল ৯ হাজার ২৮৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সংস্থাটির ইতিহাসে এটি ছিল সর্বোচ্চ লোকসান। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪ হাজার ৪৩৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩ হাজার ৮৭৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭ হাজার ২৮২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছিল সংস্থাটি। এ ছাড়া ২০১৩-১৪ অর্থবছরে পিডিবি লোকসান হয় ৬ হাজার ৮০৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছর ৫ হাজার ৪৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬ হাজার ৬৯৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং ২০১০-১১ অর্থবছরে সংস্থাটির লোকসান হয় ৪ হাজার ৬২০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে জানান, গত ১০ বছরে সরকার বিদ্যুৎ খাতে ৫২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় ফার্নেস অয়েলভিত্তিক গড়ে ১৩-১৪ টাকা, ডিজেলভিত্তিক ২৫-৩০ টাকা, গ্যাসভিত্তিক আড়াই থেকে তিন টাকা। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বাল্ক পর্যায়ে সরবরাহ ব্যয় প্রতি ইউনিট ৫ দশমিক ৮২ টাকা এবং বাল্ক পর্যায়ে গড় বিক্রয়মূল্য ৪ দশমিক ৮০ টাকা।

বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৩ মহররম ১৪৪২, ১৭ ভাদ্র ১৪২৭

তেলভিত্তিক আরপিপি

দশ বছরে পিডিবির লোকসান ৫৮ হাজার কোটি টাকা

ফয়েজ আহমেদ তুষার |

বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিক্রি করে গত দশ বছরে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। পিডিবিকে সচল রাখতে ভর্তুকি হিসেবে সরকার লোকসানের টাকা দিলেও, পিডিবির খাতায় তা ঋণ হিসেবে জমা হচ্ছে। বছর বছর বাড়ছে প্রতিষ্ঠানটির ঋণের বোঝা। পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই থেকে চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের জুলাই পর্যন্ত ১৩ মাসে প্রতিষ্ঠানটির নিট ট্যারিফ ঘাটতি (লোকসান) হয়েছে ৮ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। লোকসানে জর্জরিত পিডিবি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া বিল পরিশোধ করতে না পেরে সরকারের শরণাপন্ন হয়েছে।

পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. বেলায়েত হোসেন গতকাল বিকেলে সংবাদকে বলেন, সরকারের নির্দেশেই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছ থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে গ্রাহক পর্যায়ে কম দামে বিক্রি করে পিডিবি। এজন্য বছর বছর পিডিবির লোকসান বাড়ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গত দশ বছরে পিডিবির লোকসান হয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা। প্রকৌশলী. মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, সরকার এক সময় পিডিবিকে ভর্তুকি দিত। পরে তা ঋণ হিসেবে দেয়া শুরু করে। তবে এখন যেটা হচ্ছে, ঋণ হিসেবে দিলেও ঋণের পরিশোধের জন্য পিডিবির ওপর কোন চাপ নেই। কারণ সরকার জানে পিডিবির কাছে কোন টাকা নেই। যেহেতু ঋণের চাপ নেই, এটাকে ভর্তুকিও বলা চলে। এক সময় হয়ত এই ঋণকে ভর্তুকি হিসেবেই মেনে নেয়া হবে।

বিদ্যুৎ খাতের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যথাসময়ে উৎপাদনে আসতে না পারায় ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে তেলভিত্তিক ছোট ছোট রেন্টাল বা ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরপিপি) এবং কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর (কিউআরপিপি) ওপর নির্ভরশীলতা এখনও রয়ে গেছে। তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। এছাড়া ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (আইপিপি) পর্যায়ের ডিজেল চালিত বেশিরভাগ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন খরচও বেশি। পিডিবি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) আদেশ অনুযায়ী পিডিবি বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের কাছ থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কিনে তা কমমূল্যে বাল্ক বা পাইকারি গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সরকারের অর্থ বিভাগ ৫টি শর্ত দিয়ে পিডিবির অনুকুলে ১ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা ছাড় করেছে। শর্তে বলা হয়েছে- ভারত থেকে আমদানিকৃত বিদ্যুতের বিল এ অর্থ থেকে দেয়া যাবে না। আইপিপি, আরপিপি এবং কিউআরপিপি’র বিল পরিশোধে মার্চ ও এপ্রিল মাসের প্রকৃত লোকসান বাবদ পিডিবির অনূকূলে এ অর্থ ছাড় করা হয়েছে। এদিকে পিডিবি অপর এক চিঠিতে জরুরি ভিত্তিতে মে, জুন ও জুলাই মাসের ট্যারিফ ঘাটতি পূরণে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে আরও অর্থ চেয়েছে। চিঠিতে পিডিবি বলেছে, গত তিন (মে-জুলাই) মাসে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ২ হাজার ৪৬৮ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা ঘাটতিতে পড়েছে। বেসরকারি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের দাম যথাসময়ে পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এতদিন পিডিবিকে ঋণ হিসেবে প্রদানকৃত অর্থ ভর্তুকি বা সাবসিডিয়ারি হিসেবে যেন প্রদান করা হয়।

পিডিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে আইপিপি খাতে ভর্তুকি বা ক্ষতি হয়েছে ৫০১ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা, রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টে ক্ষতি ২০ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা, কুইক রেন্টাল খাতে ১২৫ দশমিক ৩২ কোটি টাকা। এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি বাবদ ক্ষতি ৩১ দশমিক ৪২ কোটি টাকা। অর্থাৎ মে মাসে ক্ষতি ৬৩৭ দশমিক ২২ কোটি টাকা।

জুন মাসে আইপিপি খাতে ৬৯১ দশমিক ৩১ কোটি টাকা, রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টে ২৯ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। কুইক রেন্টাল খাতে ১৮১ দশমিক ৫৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি বাবদ ক্ষতি ৩৬ দশমিক ৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ জুন মাসে মোট ক্ষতি হয়েছে ৮৮১ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা।

জুলাই মাসে আইপিপি খাতে ৭৭৩ দশমিক ৮৭ কোটি টাকা, রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টে ২৩ দশমিক শূন্য ৫ কোটি টাকা। কুইক রেন্টাল খাতে ১৬২ দশমিক ৯২ কোটি টাকা। এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি বাবদ ক্ষতি ৩৬ দশমিক ০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ জুলাই মাসে মোট ক্ষতি হয়েছে ৯৪৯ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা। তিন মাসে মোট ক্ষতি হয়েছে ২৮৬৮ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা।

পিডিবির তথ্যানুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছর পিডিবির লোকসান হয়েছে ৮ হাজার ১৪১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর আগের অর্থবছর লোকসান ছিল ৯ হাজার ২৮৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সংস্থাটির ইতিহাসে এটি ছিল সর্বোচ্চ লোকসান। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪ হাজার ৪৩৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩ হাজার ৮৭৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭ হাজার ২৮২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছিল সংস্থাটি। এ ছাড়া ২০১৩-১৪ অর্থবছরে পিডিবি লোকসান হয় ৬ হাজার ৮০৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছর ৫ হাজার ৪৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬ হাজার ৬৯৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং ২০১০-১১ অর্থবছরে সংস্থাটির লোকসান হয় ৪ হাজার ৬২০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে জানান, গত ১০ বছরে সরকার বিদ্যুৎ খাতে ৫২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় ফার্নেস অয়েলভিত্তিক গড়ে ১৩-১৪ টাকা, ডিজেলভিত্তিক ২৫-৩০ টাকা, গ্যাসভিত্তিক আড়াই থেকে তিন টাকা। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বাল্ক পর্যায়ে সরবরাহ ব্যয় প্রতি ইউনিট ৫ দশমিক ৮২ টাকা এবং বাল্ক পর্যায়ে গড় বিক্রয়মূল্য ৪ দশমিক ৮০ টাকা।