নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত হোক

দেশের জনসংখ্যা ও খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নত জাতের ফলমূল, শাক-সবজির পাশাপাশি নতুন নতুন ধানও এসেছে। উচ্চ ফলনশীল এসব ধান দেশে বিপ্লব ঘটিয়েছে ঠিকি কিন্তু দুঃখজনক ঘটনা হলো, অধিক ফসল উৎপাদন করতে গিয়ে আমরা জনজীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছি। ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির এক তথ্যমতে, গবেষণার জন্য চালের যে ২৩২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিলো, তার ১৩১টিতে মিলেছে বিভিন্ন মাত্রার ক্রোমিয়াম। ১৩০টিতে পাওয়া গেছে ক্যাডমিয়াম ও সিসা। ৮৩টিতে মিলেছে আর্সেনিকের অস্তিত্ব; যা রীতিমতো ভয়ংকর।

শুধু কৃষকের অসচেতনতার জন্য জন্যই যে খাদ্য অনিরাপদ হচ্ছে এমনটি নয় । কিছু অসাধু ব্যবসায়ীও অধিক মুলাফা লাভের লোভে পরে খাদ্যে ভেজাল মিশাচ্ছে। আর এসব ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্য যেমন ঝুঁকির মধ্যে পরেছে তেমনি জাতির মেধা ধ্বংস হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহারের পরিণতি কমবেশি সবাইকেই ভোগ করতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে শিশুরা। বিশেষ করে এসব কীটনাশকের অপপ্রয়োগের ফলে উৎপাদিত খাদ্য মারাত্মকভাবে বিষাক্ত হয়ে থাকে এবং মানুষের শরীরে ঢুকে মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলছে। সেইসঙ্গে নানা ধরনের জটিল রোগের ঝুঁকিতে ফেলছে মানুষকে।

খাদ্যে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে খাদ্যকে বিপজ্জনক করার এ প্রক্রিয়া লাগামহীনভাবে চলতে থাকলে এক সময় তা মহামারী রূপ নিতে পারে। কাজেই এ সমস্যার আশু সমাধানের জন্য চাই জোরালো পদক্ষেপ। আইনের কঠোর বাস্তবায়বের পাশাপাশি খাদ্যে ভেজাল মিশ্রিতকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে; যাতে করে অন্য কেউ খাদ্যে ভেজাল দেয়ার সাহস করতে না পারে।

ভেজার খাবার গ্রহণের ভয়াবহতা ও ভেজাল খাদ্য বিক্রির কঠিন শাস্তির ব্যাপারে জনসাধারণকে সচেতনতা পূর্বক আইনের কঠোর বাস্তবায়ন জরুরি। প্রয়োজনে বাজারগুলোতে মনিটরিং সিস্টেম চালু করতে হবে; যাতে কেউ খাদ্যে ভেজাল দিতে কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য বিক্রি করতে না পারে। পরীক্ষামূলকভাবে খাদ্য বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারলেই এই সমস্যার অনেকটা লাঘব হবে বলে আশা করি।

ফয়সাল মাহমুদ আল-মারজান

বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৩ মহররম ১৪৪২, ১৭ ভাদ্র ১৪২৭

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত হোক

দেশের জনসংখ্যা ও খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নত জাতের ফলমূল, শাক-সবজির পাশাপাশি নতুন নতুন ধানও এসেছে। উচ্চ ফলনশীল এসব ধান দেশে বিপ্লব ঘটিয়েছে ঠিকি কিন্তু দুঃখজনক ঘটনা হলো, অধিক ফসল উৎপাদন করতে গিয়ে আমরা জনজীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছি। ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির এক তথ্যমতে, গবেষণার জন্য চালের যে ২৩২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিলো, তার ১৩১টিতে মিলেছে বিভিন্ন মাত্রার ক্রোমিয়াম। ১৩০টিতে পাওয়া গেছে ক্যাডমিয়াম ও সিসা। ৮৩টিতে মিলেছে আর্সেনিকের অস্তিত্ব; যা রীতিমতো ভয়ংকর।

শুধু কৃষকের অসচেতনতার জন্য জন্যই যে খাদ্য অনিরাপদ হচ্ছে এমনটি নয় । কিছু অসাধু ব্যবসায়ীও অধিক মুলাফা লাভের লোভে পরে খাদ্যে ভেজাল মিশাচ্ছে। আর এসব ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্য যেমন ঝুঁকির মধ্যে পরেছে তেমনি জাতির মেধা ধ্বংস হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহারের পরিণতি কমবেশি সবাইকেই ভোগ করতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে শিশুরা। বিশেষ করে এসব কীটনাশকের অপপ্রয়োগের ফলে উৎপাদিত খাদ্য মারাত্মকভাবে বিষাক্ত হয়ে থাকে এবং মানুষের শরীরে ঢুকে মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলছে। সেইসঙ্গে নানা ধরনের জটিল রোগের ঝুঁকিতে ফেলছে মানুষকে।

খাদ্যে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে খাদ্যকে বিপজ্জনক করার এ প্রক্রিয়া লাগামহীনভাবে চলতে থাকলে এক সময় তা মহামারী রূপ নিতে পারে। কাজেই এ সমস্যার আশু সমাধানের জন্য চাই জোরালো পদক্ষেপ। আইনের কঠোর বাস্তবায়বের পাশাপাশি খাদ্যে ভেজাল মিশ্রিতকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে; যাতে করে অন্য কেউ খাদ্যে ভেজাল দেয়ার সাহস করতে না পারে।

ভেজার খাবার গ্রহণের ভয়াবহতা ও ভেজাল খাদ্য বিক্রির কঠিন শাস্তির ব্যাপারে জনসাধারণকে সচেতনতা পূর্বক আইনের কঠোর বাস্তবায়ন জরুরি। প্রয়োজনে বাজারগুলোতে মনিটরিং সিস্টেম চালু করতে হবে; যাতে কেউ খাদ্যে ভেজাল দিতে কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য বিক্রি করতে না পারে। পরীক্ষামূলকভাবে খাদ্য বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারলেই এই সমস্যার অনেকটা লাঘব হবে বলে আশা করি।

ফয়সাল মাহমুদ আল-মারজান