ধবদরগঞ্জের চরে বালু লুটের মহোৎসব : নির্বিকার প্রশাসন

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নাগেরহাটে জেগে ওঠা চরে চলছে বালু লুটের মহোৎসব।

বালু লুটের জন্য এজন্য এলাকায় গড়ে উঠেছে কয়েকটি গ্রুপ। একেকটি গ্রুপে রয়েছে কমপক্ষে ১০ জন সদস্য। এসব সদস্য কখনো নৌকায় করে কখনো বা পাড় ঘেঁষে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু লুট করছে। প্রকাশ্যে দিবালোকে বালু লুটের এমন মহোৎসব চললেও বদরগঞ্জ থানার ওসি’র সাফ জবাব- বিষয়টি ইউএনও’র, আমাদের করণীয় নেই। আবার ইউএনও বলছেন- এক্ষেত্রে ইউএনও’র কিছুই করার নেই।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নাগেরহাট ঘেঁষে বালু লুটের মহোৎসবে নেমেছেন এলাকার অর্ধশতাধিক মানুষ। তারা নদীর চর কেটে নৌকায় করে বালু এনে পাড়ে ফেলছেন। সেখান থেকে ট্রাক্টর ও ট্রলিতে করে বালু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নানা স্থানে।

এক ট্রাক্টর বালু বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকায় আর এক ট্রলি এক হাজার টাকায়। এভাবে মাধাইখামার চরের বালু প্রতিদিন লুট হচ্ছে শত শত ট্রাক্টর ও ট্রলিতে। আবার কেউ কেউ নতুন নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বিষয়ে সেখানকার কর্মরত শ্রমিকরা কথা বলতে না চাইলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব নৌকা চরের বালু লুটের কাজে ব্যবহৃত হবে।

কথা হয় গরু চরাতে আসা বৃদ্ধের সাথে। তিনি বলেন, এসকেভেটরটি কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান দুলুর। এখানকার মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তার ইটভাটায়। তিনি বলেন, চরের ওই জায়গা বিক্রি করেছেন জগন্নাথ নামে এক ব্যক্তি। প্রতি ট্রাক্টর মাটি বাবদ তাকে দেয়া হচ্ছে ২২০ টাকা করে। আবার চরের একাংশের বালু লুটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লোহানীপাড়া ইউপি মেম্বার আইয়ুব আলী জান্টু নিজেই।

সেখান থেকে সোনারপাড়া চরের দিকে রওনা হতেই দেখা যায় মোড়ে মোড়ে বাঁশ দিয়ে বেরিকেড দেয়া হয়েছে। একজনকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, বালু উত্তোলনকারীরা সাংবাদিক আসার কথা শুনে এভাবেই বেরিকেড দিয়ে সরে পড়েছে। বেরিকেড সরিয়ে সোনারপাড়া চরে প্রবেশ করলেই দেখা যায় কাশবন কিংবা আখক্ষেতের আড়ালে স্তুপ করে রাখা হয়েছে বালু। আর নদীতে ভাসছে ড্রেজার মেশিন বসানোর মাচাং। তবে মাত্র দু’জায়গায় পাড় ঘেঁষে দু’টি বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন থাকলেও সেগুলো বন্ধ ছিল। এক জেলে জানান, রাতভর ড্রেজার মেশিন চলে। আর ভোর হওয়ার সাথে সাথে সেগুলো সরিয়ে নেয়া হয়। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো সেখানে মোট তিনটি পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। একটির নেতৃত্বে রয়েছেন জেসিম, একটিতে জামান এবং অপরটিতে সেলিম।

শুক্রবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৪ মহররম ১৪৪২, ১৮ ভাদ্র ১৪২৭

ধবদরগঞ্জের চরে বালু লুটের মহোৎসব : নির্বিকার প্রশাসন

প্রতিনিধি, বদরগঞ্জ (রংপুর)

image

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নাগেরহাটে জেগে ওঠা চরে চলছে বালু লুটের মহোৎসব।

বালু লুটের জন্য এজন্য এলাকায় গড়ে উঠেছে কয়েকটি গ্রুপ। একেকটি গ্রুপে রয়েছে কমপক্ষে ১০ জন সদস্য। এসব সদস্য কখনো নৌকায় করে কখনো বা পাড় ঘেঁষে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু লুট করছে। প্রকাশ্যে দিবালোকে বালু লুটের এমন মহোৎসব চললেও বদরগঞ্জ থানার ওসি’র সাফ জবাব- বিষয়টি ইউএনও’র, আমাদের করণীয় নেই। আবার ইউএনও বলছেন- এক্ষেত্রে ইউএনও’র কিছুই করার নেই।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নাগেরহাট ঘেঁষে বালু লুটের মহোৎসবে নেমেছেন এলাকার অর্ধশতাধিক মানুষ। তারা নদীর চর কেটে নৌকায় করে বালু এনে পাড়ে ফেলছেন। সেখান থেকে ট্রাক্টর ও ট্রলিতে করে বালু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নানা স্থানে।

এক ট্রাক্টর বালু বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকায় আর এক ট্রলি এক হাজার টাকায়। এভাবে মাধাইখামার চরের বালু প্রতিদিন লুট হচ্ছে শত শত ট্রাক্টর ও ট্রলিতে। আবার কেউ কেউ নতুন নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বিষয়ে সেখানকার কর্মরত শ্রমিকরা কথা বলতে না চাইলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব নৌকা চরের বালু লুটের কাজে ব্যবহৃত হবে।

কথা হয় গরু চরাতে আসা বৃদ্ধের সাথে। তিনি বলেন, এসকেভেটরটি কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান দুলুর। এখানকার মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তার ইটভাটায়। তিনি বলেন, চরের ওই জায়গা বিক্রি করেছেন জগন্নাথ নামে এক ব্যক্তি। প্রতি ট্রাক্টর মাটি বাবদ তাকে দেয়া হচ্ছে ২২০ টাকা করে। আবার চরের একাংশের বালু লুটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লোহানীপাড়া ইউপি মেম্বার আইয়ুব আলী জান্টু নিজেই।

সেখান থেকে সোনারপাড়া চরের দিকে রওনা হতেই দেখা যায় মোড়ে মোড়ে বাঁশ দিয়ে বেরিকেড দেয়া হয়েছে। একজনকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, বালু উত্তোলনকারীরা সাংবাদিক আসার কথা শুনে এভাবেই বেরিকেড দিয়ে সরে পড়েছে। বেরিকেড সরিয়ে সোনারপাড়া চরে প্রবেশ করলেই দেখা যায় কাশবন কিংবা আখক্ষেতের আড়ালে স্তুপ করে রাখা হয়েছে বালু। আর নদীতে ভাসছে ড্রেজার মেশিন বসানোর মাচাং। তবে মাত্র দু’জায়গায় পাড় ঘেঁষে দু’টি বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন থাকলেও সেগুলো বন্ধ ছিল। এক জেলে জানান, রাতভর ড্রেজার মেশিন চলে। আর ভোর হওয়ার সাথে সাথে সেগুলো সরিয়ে নেয়া হয়। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো সেখানে মোট তিনটি পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। একটির নেতৃত্বে রয়েছেন জেসিম, একটিতে জামান এবং অপরটিতে সেলিম।