ভবদহে ফের জলাবদ্ধতা দুর্ভোগে লাখো মানুষ

ভবদহে আবারও জলাবদ্ধতা শুরু হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে বহু কর্মপরিকল্পনা নেয়া হলেও ভবদহবাসীর দুঃখ কিছুতেই কাটতে চাইছে না। সমস্যা নিয়ে আন্দোলনও কম হয়নি। ৩ দশক পরে এসেও ভবদহবাসীর দুর্দশা নিরসন করা যায়নি। বরং টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে ওই অঞ্চলের ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের। পানি উঠেছে বসতবাড়িতে। দুর্ভোগে পডেছে লাখো মানুষ।

জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ৮০৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তবে নতুন এ প্রকল্পে টিআরএম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করলেও সুফল মিলবে না বলে দাবি করেছেন ভবদহ জলাবদ্ধতা নিষ্কাশন আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক বাবুল। তিনি সংবাদকে বলেন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের প্রতিশ্রুতি পাশ কাটিয়ে টিআরএম ছাড়াই এই টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পাইলট চ্যানেলের নামে যে কয়েক কোটি টাকা খরচ করেছে তিনি তার সঠিক তদন্ত দাবি করছেন।

যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল। সবুজায়নের নামে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৬১ সালে ভবদহের ৫টি স্থানে ৪৪টি পোল্ডার (স্লুইস গেট) নির্মাণ করে। কয়েক বছর ওই এলাকায় ভালো ফসল হলেও এরপর থেকে আশেপাশের নদ-নদীর নাব্য হ্রাস পেতে থাকে। ১৯৮১ সালের পর থেকে শুরু হয় জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে এলাকার মানুষ ১৯৯৭ সালে নদীর বেড়িবাঁধ কেটে জোয়ারের পানি পাশের ভায়না বিলে ঢুকিয়ে দেয়।

এরপর সরকার থেকে ভবদহে ‘টিআরএম’ (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ফলে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ভবদহে জলাবদ্ধতা হয়নি। এরপর এ অঞ্চলকে ঘিরে আর গুরুত্ব না দেয়ার কারণে পরের ৩ বছর আবার জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ২০০৭ সালে বিল খুকসিয়ায় সরকার আবার ‘টিআরএম’ চালু করে। এর পরের কয়েক বছর আবার জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পায় ভবদহবাসী। সর্বশেষ গত ৩ বছর ভবদহ অঞ্চলে আবার জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বর্তমানে ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে এলাকার কোন বিলে ‘জোয়ারধার’ (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট-টিআরএম) কার্যকর নেই।।

গবেষণা-বিশ্লেষণ,পর্যবেক্ষণ করে ভবদহ জলাবদ্ধতা সমস্যার অন্যতম সমাধান হিসেবে ‘জোয়ারধার’ পদ্ধতিকে বেছে নেয়া হয়েছিল। মূলত, নদীসংলগ্ন বিলে বাঁধ তৈরি করে নদীর পাড় কেটে দিয়ে জোয়ারের সঙ্গে নদী দিয়ে আসা পলি বিলে জমা হতে দেয়া হয়। এতে নদীর নাব্য অটুট থাকে। বিলে বাঁধ দিয়ে ‘টিআরএমের’ মাধ্যমে পলি ব্যবস্থাপনার এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘জোয়ারধার’। পলি ব্যবস্থাপনার এই পদ্ধতি যশোরের এই অঞ্চলে স্থানীয়ভাবে এবং পরে সরকারিভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবহার করা হতো। এই ব্যবস্থার ফলে ভবদহে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা হতো না। এ বাস্তবতায় বর্ষা মৌসুমে যে বছর ‘জোয়ারধার’ কার্যকর না থাকে সে বছর যশোরের ভবদহ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের দুঃখের অন্ত থাকে না।

গত ২/৩ বছর ধরে ভবদহ অঞ্চলে আবার ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ভবদহে শত শত গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়ে। হাজার হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান নষ্ট হয়ে যায়। পানিবন্দি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়। এই অস্বাভাবিক জীবনযাত্রার ফলে ভবদহবাসীর জীবনে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে। এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কোনও কোনও বিলে বর্তমানে জোয়ারধার (টিআরএম) কার্যকর না থাকায় পলি জমে নদ-নদীর বুক উঁচু হয়ে গেছে। ফলে এ অঞ্চলের প্রায় ২৭টি বিলসহ ভবদহের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ মুক্তেশরী-টেকা-শ্রী-হরি নদীর তলদেশ পলিতে ভরে নাব্য হারিয়েছে। আশপাশের কোন বিলে ‘জোয়ারধারের’ মাধ্যমে নদীর পলি অবক্ষেপণ করলে বিলগুলো যেমন উঁচু হবে তেমনি নদীর গতিও ঠিক থাকবে। ভবদহ স্লুইস গেটের উজান ও ভাটিতে পলি পড়ে আশীর্বাদের স্লুইসগেট এখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে। সাগর থেকে আসা জোয়ারের পানি প্রতিদিন দু’বার নদীগুলো (মুক্তেশরী, টেকা ও শ্রী হরি) দিয়ে ভবদহ অঞ্চলে প্রবেশে করে। আবার ভাটির সময় পানি সাগরে ফিরে যায়। এভাবে পলি পড়ে পড়ে নাব্য হারিয়েছে নদীগুলো।

তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে যে খনন কাজ হচ্ছে, তা অপরিকল্পিত ও সমন্বয়হীভাবে। দায়সারাভাবে কাজ করার ফলে তা কোন কাজেই আসছে না। এক নদীতে খনন করতে করতে অন্য খননকৃত নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদী দিয়ে প্রচুর পলি আসছে। খনন করে যে পরিমাণ মাটি কাটা হচ্ছে তা আবার পলিতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদীর মাটি কেটে নদীর পাড়েই স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। সেই মাটির স্তূপ ভেঙে কোন না কোনভাবে আবার নদীতেই পড়ছে। আবার নদী গভীর করে কাটা হচ্ছে না। এই সব কারণে যেনতেনভাবে নদী খনন করে ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসন করা যাবে বলে মনে হচ্ছে না।

কিন্তু সরকার কেন ভবদহ জলাবদ্ধতা নিরসনে ‘টিআরএম’ প্রকল্প কার্যকর করতে পারছে না? কারণ হলো স্থানীয় চিংড়ি ঘেরের মালিক ও প্রভাবশালী গোষ্ঠী তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে (টিআরএম) চালু করতে দিচ্ছে না।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক গাজী আবদুল হামিদ জানান, বিল বোকর, বিল কেদারিয়া, বিল কপালিয়াসহ বিভিন্ন বিল পানিতে ভরে গেছে। এরই মধ্যে ডুমুরতলা, সুজতপুর, ডহর মুষিহাটি, হাটগাছা নেবুগাতি, বেদভিটা, বরারাবাদ গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। মানুষজন ঘর বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে রাস্তার উপর।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পলিতে নদী ভরাট হয়ে গেছে। এ জন্য পাইলট চ্যানেলের মাধ্যমে খননকাজ চলছে। চ্যানেল কাটার পরও নদী ভরাট হয়ে গেছে।

image

যশোর : টানা কয়েক দিনের বর্ষণে ভবদহের অনেক এলাকার ফসল তলিয়ে গেছে। ছবিটি অভয়নগর মসিহাটির -সংবাদ

আরও খবর
চীনা ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য ছয় হাসপাতাল নির্ধারণ
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রক্ষক থেকে ভক্ষকে রূপান্তরিত টিআইবি
জঙ্গিদের বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে হামলার পরিকল্পনা ছিল
খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ল
ইউএনও ওয়াহিদাকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা দুর্বৃত্তদের
রিজেন্টের সাহেদ ও মাসুদ ফের রিমান্ডে
সাবরিনা দু’দিনের রিমান্ডে
প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে বিশেষ উদ্যোগ যথাসময়ে সমাপ্ত হবে : চেয়ারম্যান
করোনা শনাক্ত ও হাসপাতাল কমলেও মৃত্যু কমেনি
স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরবরাহে দুর্নীতির অভিযোগ জাদিদ অটোমোবাইলসের বিরুদ্ধে 

শুক্রবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৪ মহররম ১৪৪২, ১৮ ভাদ্র ১৪২৭

ভবদহে ফের জলাবদ্ধতা দুর্ভোগে লাখো মানুষ

যশোর অফিস

image

যশোর : টানা কয়েক দিনের বর্ষণে ভবদহের অনেক এলাকার ফসল তলিয়ে গেছে। ছবিটি অভয়নগর মসিহাটির -সংবাদ

ভবদহে আবারও জলাবদ্ধতা শুরু হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে বহু কর্মপরিকল্পনা নেয়া হলেও ভবদহবাসীর দুঃখ কিছুতেই কাটতে চাইছে না। সমস্যা নিয়ে আন্দোলনও কম হয়নি। ৩ দশক পরে এসেও ভবদহবাসীর দুর্দশা নিরসন করা যায়নি। বরং টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে ওই অঞ্চলের ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের। পানি উঠেছে বসতবাড়িতে। দুর্ভোগে পডেছে লাখো মানুষ।

জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ৮০৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তবে নতুন এ প্রকল্পে টিআরএম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করলেও সুফল মিলবে না বলে দাবি করেছেন ভবদহ জলাবদ্ধতা নিষ্কাশন আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক বাবুল। তিনি সংবাদকে বলেন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের প্রতিশ্রুতি পাশ কাটিয়ে টিআরএম ছাড়াই এই টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পাইলট চ্যানেলের নামে যে কয়েক কোটি টাকা খরচ করেছে তিনি তার সঠিক তদন্ত দাবি করছেন।

যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল। সবুজায়নের নামে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৬১ সালে ভবদহের ৫টি স্থানে ৪৪টি পোল্ডার (স্লুইস গেট) নির্মাণ করে। কয়েক বছর ওই এলাকায় ভালো ফসল হলেও এরপর থেকে আশেপাশের নদ-নদীর নাব্য হ্রাস পেতে থাকে। ১৯৮১ সালের পর থেকে শুরু হয় জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে এলাকার মানুষ ১৯৯৭ সালে নদীর বেড়িবাঁধ কেটে জোয়ারের পানি পাশের ভায়না বিলে ঢুকিয়ে দেয়।

এরপর সরকার থেকে ভবদহে ‘টিআরএম’ (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ফলে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ভবদহে জলাবদ্ধতা হয়নি। এরপর এ অঞ্চলকে ঘিরে আর গুরুত্ব না দেয়ার কারণে পরের ৩ বছর আবার জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ২০০৭ সালে বিল খুকসিয়ায় সরকার আবার ‘টিআরএম’ চালু করে। এর পরের কয়েক বছর আবার জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পায় ভবদহবাসী। সর্বশেষ গত ৩ বছর ভবদহ অঞ্চলে আবার জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বর্তমানে ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে এলাকার কোন বিলে ‘জোয়ারধার’ (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট-টিআরএম) কার্যকর নেই।।

গবেষণা-বিশ্লেষণ,পর্যবেক্ষণ করে ভবদহ জলাবদ্ধতা সমস্যার অন্যতম সমাধান হিসেবে ‘জোয়ারধার’ পদ্ধতিকে বেছে নেয়া হয়েছিল। মূলত, নদীসংলগ্ন বিলে বাঁধ তৈরি করে নদীর পাড় কেটে দিয়ে জোয়ারের সঙ্গে নদী দিয়ে আসা পলি বিলে জমা হতে দেয়া হয়। এতে নদীর নাব্য অটুট থাকে। বিলে বাঁধ দিয়ে ‘টিআরএমের’ মাধ্যমে পলি ব্যবস্থাপনার এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘জোয়ারধার’। পলি ব্যবস্থাপনার এই পদ্ধতি যশোরের এই অঞ্চলে স্থানীয়ভাবে এবং পরে সরকারিভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবহার করা হতো। এই ব্যবস্থার ফলে ভবদহে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা হতো না। এ বাস্তবতায় বর্ষা মৌসুমে যে বছর ‘জোয়ারধার’ কার্যকর না থাকে সে বছর যশোরের ভবদহ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের দুঃখের অন্ত থাকে না।

গত ২/৩ বছর ধরে ভবদহ অঞ্চলে আবার ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ভবদহে শত শত গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়ে। হাজার হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান নষ্ট হয়ে যায়। পানিবন্দি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়। এই অস্বাভাবিক জীবনযাত্রার ফলে ভবদহবাসীর জীবনে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে। এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কোনও কোনও বিলে বর্তমানে জোয়ারধার (টিআরএম) কার্যকর না থাকায় পলি জমে নদ-নদীর বুক উঁচু হয়ে গেছে। ফলে এ অঞ্চলের প্রায় ২৭টি বিলসহ ভবদহের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ মুক্তেশরী-টেকা-শ্রী-হরি নদীর তলদেশ পলিতে ভরে নাব্য হারিয়েছে। আশপাশের কোন বিলে ‘জোয়ারধারের’ মাধ্যমে নদীর পলি অবক্ষেপণ করলে বিলগুলো যেমন উঁচু হবে তেমনি নদীর গতিও ঠিক থাকবে। ভবদহ স্লুইস গেটের উজান ও ভাটিতে পলি পড়ে আশীর্বাদের স্লুইসগেট এখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে। সাগর থেকে আসা জোয়ারের পানি প্রতিদিন দু’বার নদীগুলো (মুক্তেশরী, টেকা ও শ্রী হরি) দিয়ে ভবদহ অঞ্চলে প্রবেশে করে। আবার ভাটির সময় পানি সাগরে ফিরে যায়। এভাবে পলি পড়ে পড়ে নাব্য হারিয়েছে নদীগুলো।

তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে যে খনন কাজ হচ্ছে, তা অপরিকল্পিত ও সমন্বয়হীভাবে। দায়সারাভাবে কাজ করার ফলে তা কোন কাজেই আসছে না। এক নদীতে খনন করতে করতে অন্য খননকৃত নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদী দিয়ে প্রচুর পলি আসছে। খনন করে যে পরিমাণ মাটি কাটা হচ্ছে তা আবার পলিতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদীর মাটি কেটে নদীর পাড়েই স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। সেই মাটির স্তূপ ভেঙে কোন না কোনভাবে আবার নদীতেই পড়ছে। আবার নদী গভীর করে কাটা হচ্ছে না। এই সব কারণে যেনতেনভাবে নদী খনন করে ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসন করা যাবে বলে মনে হচ্ছে না।

কিন্তু সরকার কেন ভবদহ জলাবদ্ধতা নিরসনে ‘টিআরএম’ প্রকল্প কার্যকর করতে পারছে না? কারণ হলো স্থানীয় চিংড়ি ঘেরের মালিক ও প্রভাবশালী গোষ্ঠী তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে (টিআরএম) চালু করতে দিচ্ছে না।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক গাজী আবদুল হামিদ জানান, বিল বোকর, বিল কেদারিয়া, বিল কপালিয়াসহ বিভিন্ন বিল পানিতে ভরে গেছে। এরই মধ্যে ডুমুরতলা, সুজতপুর, ডহর মুষিহাটি, হাটগাছা নেবুগাতি, বেদভিটা, বরারাবাদ গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। মানুষজন ঘর বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে রাস্তার উপর।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পলিতে নদী ভরাট হয়ে গেছে। এ জন্য পাইলট চ্যানেলের মাধ্যমে খননকাজ চলছে। চ্যানেল কাটার পরও নদী ভরাট হয়ে গেছে।