দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে গভীর রাতে প্রবেশ করে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার জন্য মাথায় উপর্যুপরি কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় প্রধান আসামি আসাদুল হকসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এদের মধ্যে রয়েছে হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী নবিরুল ও অংশ নেয়া সান্টু কুমার বিশ্বাস।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসাদুল হক ইউএরও ওপর হামলা তাকে কুপিয়ে হত্যা করার প্রচেষ্টার কথা স্বীকার করেছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন নবিরুল ইসলাম। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় রংপুর নগরীর স্টেশন এলাকায় র্যাব ১৩ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন রংপুর র্যাব ১৩ প্রধান কমান্ডার রেজা আহাম্মেদ ফেরদৌস। তিনি বলেন, আসামি আসাদুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার দাবি ছিল নিছক চুরির অভিপ্রায়ে ঘরে ঢুকলে বাধা পেয়ে তারা হামলা চালায়।
র্যাব জানায়, ২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বাসভবনের দোতলার ভেন্টিলেটর ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করে। সন্ত্রাসীরা সংখ্যায় ৬ জন ছিল বলে র্যাব জানায়। আসামি আসাদুল হক তার হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়ে ইউএনওর মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে। এ সময় সে মেঝেতে লুটিয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা ইউএনও নিহত হয়েছে মনে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তাকে রক্ষার জন্য বৃদ্ধ বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর শেখ এগিয়ে এলে তাকেও কোপানো হয়। ঘটনার পর পরই র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। তারা আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য দিনাজপুর, ঘোড়াঘাট বিরামপুর, হাকিমপুরসহ বিভিন্ন স্থানে হানা দিয়ে প্রথমে হাকিমপুর উপজেলার কালিগঞ্জ এলাকা থেকে আসাদুল হককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় তার বাবার নাম এমদাদুল হক। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে ঘটনার সঙ্গে সে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল এবং হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে ঘোড়াঘাট এলাকা থেকে ফরাস উদ্দিনের ছেলে নবিরুল ও খোকা চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে সান্টু কুমার বিশ্বাসকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক তদন্তে নবিরুল ও আসাদুল মুল পরিকল্পনাকারী, কিন্তু কি কারণে তারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে এটা নিশ্চিত হতে তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই মূল রহস্য উদ্ঘটিত হবে বলে জানান তিনি। তবে ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন, উপজেলা পরিষদের নাইট গার্ড পলাশ ও যুবলীগ নেতা মাসুদকে গ্রেফতার করার পরেও কেন তাদের আসামি করা হলো না এমন প্রশ্নের উত্তরে র্যাব বলেছে তাদের আপাতত সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় রাজনৈতিক কোন সম্পৃক্ততা ছিল কিনা তা জানাতে চাননি ওই র্যাব কর্মকর্তা।
র্যাব আরও জানায়, সিসিটিভির ফুটেজে লাল রংয়ের গেঞ্জি পরা এক যুবকের ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছিল সেটি আসামি আসাদুল পরে ছিল এবং আমাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে। র্যাব জানায় ঘটনাটি আরও নিবিড়ভাবে তদন্ত করতে হবে সে জন্য একটু সময় লাগবে।
র্যাব জানায়, এ ঘটনায় আমরা ৬ জনকে আটক করেছিলাম। এদের মধ্যে জাহাঙ্গীর হোসেন ও নাইট গার্ড পলাশসহ আরও একজনের বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তবে তাদের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।
এদিকে দিনাজপুর থেকে নিজস্ব বার্তা পরিবেশক জানান,
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাড়িতে হামলা ও ইউএনও ওয়হিদা খানম এবং তার ওমর শেখকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করে।
গতকাল ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে যৌথবাহিনী হাতে আটককৃত আসামিদের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় উপজেলার বাসস্যাটন্ড এলাকায় মানববন্ধন করে স্থানীয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল পড়ুয়া শিক্ষর্থীরা। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা উপজেলা প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সংবলিত ব্যানার নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে। এ সময় তারা বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমকে যারা হত্যার চেষ্টা করেছেন এবং প্রশাসন যাদেরকে আটক করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই মো. শেখ ফরিদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আসামিদের নাম উল্লেখ না করে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলা নং ০২, ০৩/০৯/২০২০।
হাকিমপুর থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়হিদা খানমের ওপর হামলার অভিযোগে অন্যতম আসামি আসাদুল ইসলামকে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টায় হিলির কালিগঞ্জ এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। আসাদুল ইসলাম ঘোড়াঘাট উপজেলার সাগরপুর গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, অপর অভিযানে রাতে র্যাব সদস্যরা জাহাঙ্গীর আলম নামে এক যুবককে আটক করেছে। জাহাঙ্গীর ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও রানিগঞ্জের আবুল কালামের ছেলে। শুক্রবার দুপুরের পরে নবীরুল ইসলামকে আরো এক যুবককে র্যাব আটক করেছে। নৈশ প্রহরী নাহিদ হোসেন পলাশকে আগেই আটক করা হয়েছে। এছাড়া ঘোড়াঘাট শিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মাসুদসহ মোট আটকের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫ জনে। আটককৃত সবাইকে রংপুরে র্যাব-১৩ এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে দুর্বৃত্তরা সরকারি আবাসিক ভবনে ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। এ সময় চিৎকারে তার সঙ্গে থাকা বাবা ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকেও কুপিয়ে জখম করে। টের পেয়ে আশপাশের কোয়ার্টারের বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন।
দিনাজপুর পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই মো. শেখ ফরিদ বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ সুপার জানান, র্যাব, পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি ও পুলিশের বেশ কিছু ইউনিট রাতভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এসব আসামিদের আটক করেছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি ইউনিট তৎপর রয়েছে।
এদিকে জাহাঙ্গীর আলম ও আসাদুল ইসলামকে কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী তাদের সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ পারভেজ জানান।
শনিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৫ মহররম ১৪৪২, ১৯ ভাদ্র ১৪২৭
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে গভীর রাতে প্রবেশ করে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার জন্য মাথায় উপর্যুপরি কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় প্রধান আসামি আসাদুল হকসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এদের মধ্যে রয়েছে হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী নবিরুল ও অংশ নেয়া সান্টু কুমার বিশ্বাস।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসাদুল হক ইউএরও ওপর হামলা তাকে কুপিয়ে হত্যা করার প্রচেষ্টার কথা স্বীকার করেছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন নবিরুল ইসলাম। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় রংপুর নগরীর স্টেশন এলাকায় র্যাব ১৩ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন রংপুর র্যাব ১৩ প্রধান কমান্ডার রেজা আহাম্মেদ ফেরদৌস। তিনি বলেন, আসামি আসাদুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার দাবি ছিল নিছক চুরির অভিপ্রায়ে ঘরে ঢুকলে বাধা পেয়ে তারা হামলা চালায়।
র্যাব জানায়, ২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বাসভবনের দোতলার ভেন্টিলেটর ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করে। সন্ত্রাসীরা সংখ্যায় ৬ জন ছিল বলে র্যাব জানায়। আসামি আসাদুল হক তার হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়ে ইউএনওর মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে। এ সময় সে মেঝেতে লুটিয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা ইউএনও নিহত হয়েছে মনে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তাকে রক্ষার জন্য বৃদ্ধ বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর শেখ এগিয়ে এলে তাকেও কোপানো হয়। ঘটনার পর পরই র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। তারা আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য দিনাজপুর, ঘোড়াঘাট বিরামপুর, হাকিমপুরসহ বিভিন্ন স্থানে হানা দিয়ে প্রথমে হাকিমপুর উপজেলার কালিগঞ্জ এলাকা থেকে আসাদুল হককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় তার বাবার নাম এমদাদুল হক। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে ঘটনার সঙ্গে সে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল এবং হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে ঘোড়াঘাট এলাকা থেকে ফরাস উদ্দিনের ছেলে নবিরুল ও খোকা চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে সান্টু কুমার বিশ্বাসকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক তদন্তে নবিরুল ও আসাদুল মুল পরিকল্পনাকারী, কিন্তু কি কারণে তারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে এটা নিশ্চিত হতে তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই মূল রহস্য উদ্ঘটিত হবে বলে জানান তিনি। তবে ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন, উপজেলা পরিষদের নাইট গার্ড পলাশ ও যুবলীগ নেতা মাসুদকে গ্রেফতার করার পরেও কেন তাদের আসামি করা হলো না এমন প্রশ্নের উত্তরে র্যাব বলেছে তাদের আপাতত সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় রাজনৈতিক কোন সম্পৃক্ততা ছিল কিনা তা জানাতে চাননি ওই র্যাব কর্মকর্তা।
র্যাব আরও জানায়, সিসিটিভির ফুটেজে লাল রংয়ের গেঞ্জি পরা এক যুবকের ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছিল সেটি আসামি আসাদুল পরে ছিল এবং আমাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে। র্যাব জানায় ঘটনাটি আরও নিবিড়ভাবে তদন্ত করতে হবে সে জন্য একটু সময় লাগবে।
র্যাব জানায়, এ ঘটনায় আমরা ৬ জনকে আটক করেছিলাম। এদের মধ্যে জাহাঙ্গীর হোসেন ও নাইট গার্ড পলাশসহ আরও একজনের বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তবে তাদের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।
এদিকে দিনাজপুর থেকে নিজস্ব বার্তা পরিবেশক জানান,
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাড়িতে হামলা ও ইউএনও ওয়হিদা খানম এবং তার ওমর শেখকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করে।
গতকাল ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে যৌথবাহিনী হাতে আটককৃত আসামিদের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় উপজেলার বাসস্যাটন্ড এলাকায় মানববন্ধন করে স্থানীয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল পড়ুয়া শিক্ষর্থীরা। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা উপজেলা প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সংবলিত ব্যানার নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে। এ সময় তারা বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমকে যারা হত্যার চেষ্টা করেছেন এবং প্রশাসন যাদেরকে আটক করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই মো. শেখ ফরিদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আসামিদের নাম উল্লেখ না করে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলা নং ০২, ০৩/০৯/২০২০।
হাকিমপুর থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়হিদা খানমের ওপর হামলার অভিযোগে অন্যতম আসামি আসাদুল ইসলামকে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টায় হিলির কালিগঞ্জ এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। আসাদুল ইসলাম ঘোড়াঘাট উপজেলার সাগরপুর গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, অপর অভিযানে রাতে র্যাব সদস্যরা জাহাঙ্গীর আলম নামে এক যুবককে আটক করেছে। জাহাঙ্গীর ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও রানিগঞ্জের আবুল কালামের ছেলে। শুক্রবার দুপুরের পরে নবীরুল ইসলামকে আরো এক যুবককে র্যাব আটক করেছে। নৈশ প্রহরী নাহিদ হোসেন পলাশকে আগেই আটক করা হয়েছে। এছাড়া ঘোড়াঘাট শিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মাসুদসহ মোট আটকের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫ জনে। আটককৃত সবাইকে রংপুরে র্যাব-১৩ এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে দুর্বৃত্তরা সরকারি আবাসিক ভবনে ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। এ সময় চিৎকারে তার সঙ্গে থাকা বাবা ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকেও কুপিয়ে জখম করে। টের পেয়ে আশপাশের কোয়ার্টারের বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন।
দিনাজপুর পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই মো. শেখ ফরিদ বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ সুপার জানান, র্যাব, পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি ও পুলিশের বেশ কিছু ইউনিট রাতভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এসব আসামিদের আটক করেছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি ইউনিট তৎপর রয়েছে।
এদিকে জাহাঙ্গীর আলম ও আসাদুল ইসলামকে কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী তাদের সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ পারভেজ জানান।