ব্যাংকে সাইবার হামলার আশঙ্কা

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ যেভাবে চুরি হয়েছিল, একইভাবে অন্যান্য ব্যাংকে সাইবার হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এজন্য দেশের ব্যাংকগুলোর ওপর সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। উত্তর কোরিয়ার একটি হ্যাকার গ্রুপ এ হামলা চালাতে পারে বলে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর ফলে অনলাইন ব্যাংকিং সেবা সীমিত করেছে অনেক ব্যাংক।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে তথ্য আসে, ‘বিগল বয়েজ’ নামে একটি হ্যাকার গ্রুপ ব্যাংকগুলোতে সাইবার হামলা চালাতে পারে। গ্রুপটি উত্তর কোরিয়ার বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ আগস্ট ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকার জন্য চিঠি দেয়। চিঠি পাওয়ার সব ব্যাংকই বিশেষ ব্যবস্থা নেয়। কেউ তদারকি জোরদার করে আবার কেউ গ্রাহকদেরও সচেতন থাকতে খুদে বার্তা দেয়। গত সপ্তাহে দেশের আর্থিক খাতের অনলাইন সিসটেমে একটি ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার বা ভাইরাসের সন্ধান পায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। সঙ্গে সঙ্গে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও এ ব্যাপারে সতর্ক হয়ে ওঠে। অনলাইন লেনদেন সীমিত করা হয়। একইসঙ্গে আরোপ করা হয় বাড়তি সতর্কতা, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। অনেক ব্যাংকের এটিএম বুথে নিজস্ব কার্ড ছাড়া অন্য ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক কার্ডের লেনদেনেও সতর্কতা অনুসরণ করা হচ্ছে। আগে এটিএম বুথগুলো সারা রাত খোলা থাকত। এখন জনবহুল এলাকায় খোলা রাখা হচ্ছে রাত ১১টা পর্যন্ত। গ্রামে রাত ৮টার পর বন্ধ রাখা হচ্ছে। সতর্কতা তুলে না নেয়া পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ম্যালওয়্যারের কার্যকারিতা একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত থাকে। এ মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। তবে এটির মেয়াদ কতদিন আছে সেটি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। তাই এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, এই আশঙ্কার পর কোন কোন ব্যাংক অন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন করতে দিচ্ছে না। অনলাইন লেনদেন সীমিত করা হয়েছে। এটিএম বুথেও বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ব্যাংকের নিজস্ব কর্মীদের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকেও এ ব্যাপারে নজরদারি করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় এটিএম নেটওয়ার্ক সেবাদাতা ডাচ্ বাংলা ব্যাংক রাত ১১টার পর এটিএম লেনদেন বন্ধ রেখেছে। সতর্কতা তুলে না নেয়া পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে।

রবিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৬ মহররম ১৪৪২, ২০ ভাদ্র ১৪২৭

ব্যাংকে সাইবার হামলার আশঙ্কা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ যেভাবে চুরি হয়েছিল, একইভাবে অন্যান্য ব্যাংকে সাইবার হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এজন্য দেশের ব্যাংকগুলোর ওপর সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। উত্তর কোরিয়ার একটি হ্যাকার গ্রুপ এ হামলা চালাতে পারে বলে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর ফলে অনলাইন ব্যাংকিং সেবা সীমিত করেছে অনেক ব্যাংক।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে তথ্য আসে, ‘বিগল বয়েজ’ নামে একটি হ্যাকার গ্রুপ ব্যাংকগুলোতে সাইবার হামলা চালাতে পারে। গ্রুপটি উত্তর কোরিয়ার বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ আগস্ট ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকার জন্য চিঠি দেয়। চিঠি পাওয়ার সব ব্যাংকই বিশেষ ব্যবস্থা নেয়। কেউ তদারকি জোরদার করে আবার কেউ গ্রাহকদেরও সচেতন থাকতে খুদে বার্তা দেয়। গত সপ্তাহে দেশের আর্থিক খাতের অনলাইন সিসটেমে একটি ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার বা ভাইরাসের সন্ধান পায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। সঙ্গে সঙ্গে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও এ ব্যাপারে সতর্ক হয়ে ওঠে। অনলাইন লেনদেন সীমিত করা হয়। একইসঙ্গে আরোপ করা হয় বাড়তি সতর্কতা, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। অনেক ব্যাংকের এটিএম বুথে নিজস্ব কার্ড ছাড়া অন্য ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক কার্ডের লেনদেনেও সতর্কতা অনুসরণ করা হচ্ছে। আগে এটিএম বুথগুলো সারা রাত খোলা থাকত। এখন জনবহুল এলাকায় খোলা রাখা হচ্ছে রাত ১১টা পর্যন্ত। গ্রামে রাত ৮টার পর বন্ধ রাখা হচ্ছে। সতর্কতা তুলে না নেয়া পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ম্যালওয়্যারের কার্যকারিতা একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত থাকে। এ মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। তবে এটির মেয়াদ কতদিন আছে সেটি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। তাই এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, এই আশঙ্কার পর কোন কোন ব্যাংক অন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন করতে দিচ্ছে না। অনলাইন লেনদেন সীমিত করা হয়েছে। এটিএম বুথেও বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ব্যাংকের নিজস্ব কর্মীদের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকেও এ ব্যাপারে নজরদারি করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় এটিএম নেটওয়ার্ক সেবাদাতা ডাচ্ বাংলা ব্যাংক রাত ১১টার পর এটিএম লেনদেন বন্ধ রেখেছে। সতর্কতা তুলে না নেয়া পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে।