অপরিকল্পিত বাঁধে জলাবদ্ধতা আমন চাষির স্বপ্নভঙ্গ

গত এক সপ্তাহ আগে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতার কারণে গলাচিপায় আমন চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একদিকে বৃষ্টির পানি অপরেিদক জলোচ্ছ্বাসে ডুবে যাওয়া আমন ক্ষেতে অপরিকল্পিত বাঁধের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কৃষকরা জানান। শুধুমাত্র উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাটিভাঙ্গা এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার একর জমির ৭০ ভাগ ধানের রোপা আমনের বীজ নষ্ট হয়ে গেছে বলে পশ্চিম চরকাজল এলাকার সমাজকর্মী ও কৃষক মো. হাবিবুর রহমান মোল্লা জানান। উপজেলায় প্রায় ১০ ভাগ আমন ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ আগে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতার কারণে গলাচিপায় আমন চাষে কিছু এলাকার ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার বড়চরকাজল ও ছোটচরকাজল এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ একটু বেশি। কিন্তু সার্বিকভাবে উপজেলার অন্য এলাকার ক্ষতি হলেও তা কৃষকরা পুষিয়ে নিতে পারবেন। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১০ ভাগ ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে ভবিষ্যতে আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এর প্রভাব পড়বে না। বড়চরকাজল এলাকার মাটিভাঙ্গা গ্রামের আবুল হাসেম হাওলাদার বলেন ‘আমি গরিব মানুষ। গত ১২ দিন ধরে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ক্ষ্যাত (ক্ষেত) তলিয়ে আছে। আমার সব বীজ পইচ্চ (পঁচে) নষ্ট হইয়া গ্যাছে। আগাম রবিশস্য দেয়ার আশায় সবার আগে আমন চাষ করি। কিন্তু পানিতে আমার সব ডুইব্বা গেছে।’ এ বিষয় চরকাজল ইউনিয়নের সমাজকর্মী ও কৃষক মো. হাবিবুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস (পিআইও) থেকে মাটিভাঙ্গা খালে একটি ব্রিজ দিয়েছে। যা দিয়ে পানি ওঠা-নামা করতে পারে। কিন্তু এখানে ব্রিজ না দিয়ে অন্তত একটি বড় কালভার্ট দেয়া দরকার ছিল। তাহলে এ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো না। এখন ওই ব্রিজ দিয়ে নিজেরা বিকল্পভাবে পানি সরানোর চেষ্টা করছি যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।’ এ প্রসঙ্গে গলাচিপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘অতিবর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে কিছু এলাকায় কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। কাজল এলাকায় মাটিভাঙ্গা খালে একটি বড় কালভার্ট দেয়া হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।’ এ প্রসঙ্গে গলাচিপা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটিভাঙ্গা খালে সম্প্রতি একটি ব্রিজ দেয়া হয়েছে। লে-আউট ও জায়গা সিলেকশনে একটু সমস্যা হয়েছে। তবে এখন যেখানে আছে সেখানে প্রভাবশালীরা পানি চলাচলে বাধার সৃষ্টি করছে। ওই বাঁধ খুলে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তারা নিজেরা বাঁধ খুলে না দিলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’

রবিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৬ মহররম ১৪৪২, ২০ ভাদ্র ১৪২৭

অপরিকল্পিত বাঁধে জলাবদ্ধতা আমন চাষির স্বপ্নভঙ্গ

মুশফিকুর রহমান, গলাচিপা (পটুয়াখালী)

image

গত এক সপ্তাহ আগে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতার কারণে গলাচিপায় আমন চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একদিকে বৃষ্টির পানি অপরেিদক জলোচ্ছ্বাসে ডুবে যাওয়া আমন ক্ষেতে অপরিকল্পিত বাঁধের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কৃষকরা জানান। শুধুমাত্র উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাটিভাঙ্গা এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার একর জমির ৭০ ভাগ ধানের রোপা আমনের বীজ নষ্ট হয়ে গেছে বলে পশ্চিম চরকাজল এলাকার সমাজকর্মী ও কৃষক মো. হাবিবুর রহমান মোল্লা জানান। উপজেলায় প্রায় ১০ ভাগ আমন ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ আগে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতার কারণে গলাচিপায় আমন চাষে কিছু এলাকার ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার বড়চরকাজল ও ছোটচরকাজল এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ একটু বেশি। কিন্তু সার্বিকভাবে উপজেলার অন্য এলাকার ক্ষতি হলেও তা কৃষকরা পুষিয়ে নিতে পারবেন। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১০ ভাগ ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে ভবিষ্যতে আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এর প্রভাব পড়বে না। বড়চরকাজল এলাকার মাটিভাঙ্গা গ্রামের আবুল হাসেম হাওলাদার বলেন ‘আমি গরিব মানুষ। গত ১২ দিন ধরে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ক্ষ্যাত (ক্ষেত) তলিয়ে আছে। আমার সব বীজ পইচ্চ (পঁচে) নষ্ট হইয়া গ্যাছে। আগাম রবিশস্য দেয়ার আশায় সবার আগে আমন চাষ করি। কিন্তু পানিতে আমার সব ডুইব্বা গেছে।’ এ বিষয় চরকাজল ইউনিয়নের সমাজকর্মী ও কৃষক মো. হাবিবুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস (পিআইও) থেকে মাটিভাঙ্গা খালে একটি ব্রিজ দিয়েছে। যা দিয়ে পানি ওঠা-নামা করতে পারে। কিন্তু এখানে ব্রিজ না দিয়ে অন্তত একটি বড় কালভার্ট দেয়া দরকার ছিল। তাহলে এ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো না। এখন ওই ব্রিজ দিয়ে নিজেরা বিকল্পভাবে পানি সরানোর চেষ্টা করছি যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।’ এ প্রসঙ্গে গলাচিপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘অতিবর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে কিছু এলাকায় কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। কাজল এলাকায় মাটিভাঙ্গা খালে একটি বড় কালভার্ট দেয়া হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।’ এ প্রসঙ্গে গলাচিপা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটিভাঙ্গা খালে সম্প্রতি একটি ব্রিজ দেয়া হয়েছে। লে-আউট ও জায়গা সিলেকশনে একটু সমস্যা হয়েছে। তবে এখন যেখানে আছে সেখানে প্রভাবশালীরা পানি চলাচলে বাধার সৃষ্টি করছে। ওই বাঁধ খুলে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তারা নিজেরা বাঁধ খুলে না দিলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’