মৃত্যু বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়ালো

নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লায় মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জন হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল সকালে মো. ইমরান (৩০) নামে আরও একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাকে নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জন হলো। মামুন নামের এক রোগীকে গতকাল ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বর্তমানে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যে ৯ জন ভর্তি আছেন, তাদের অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের বাইতুস সালাহ জামে মসজিদ থেকে দগ্ধ অবস্থায় যে ৩৭ জনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছিল। গতকাল সকাল পর্যন্ত তাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় বার্ন ইনস্টিটিউটে আসা ৩৭ জনের মধ্যে ৩৬ জনেরই ৫০ থেকে শতভাগ পোড়া ছিল। গত শুক্রবার এশার নামাজের সময় নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাহ জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সে সময় মসজিদে থাকা অর্ধশতাধিক মানুষের সবাই কমবেশি দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে ৩৭ জনকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে যাদের প্রাণ গেছে তারা হলো- ফতুল্লার নিউখানপুর ব্যাংক কলোনির আনোয়ার হোসেনের ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী রিফাত (১৮), চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার শেখদী গ্রামের মৃত মহসিনের ছেলে মাইনুউদ্দিন (১২), চাঁদপুর সদরের করিম মিজির ছেলে মোস্তফা কামাল (৩৪), নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার সেকান্দর মিয়ার ছেলে মো. রাসেল (৩৪), লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানার পলাশী গ্রামের মেহের আলীর ছেলে নয়ন (২৭), নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার আবদুল খালেকের ছেলে বাহার উদ্দিন (৫৫), শরীয়তপুরের নড়িয়ায় কালিয়াপ্রাসাদ গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের (১৮), শরীয়তপুরের নড়িয়ায় কালিয়াপ্রাসাদ গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে সাব্বির (২১), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তল্লার আনোয়ার হোসেনের ছেলে জয়নাল (৫০), মুন্সীগঞ্জের লৌহজং হাটবুকদিয়া গ্রামের জইন উদ্দিন বেপারীর ছেলে কুদ্দুস বেপারী (৭০), পটুয়াখালী রাঙ্গাবালীর বাহেরচরের বাচ্চু ফরাজীর ছেলে জুলহাস উদ্দিন (৩০), জুলহাস উদ্দিনের ছেলে জুয়েল (৭), মসজিদের মুয়াজ্জিন কুমিল্লা লাঙ্গলকোটের বদরপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন (৪৮), মুয়াজ্জিন দেলোয়ারের ছেলে জুনায়েদ (১৭), মসজিদের ইমাম কুমিল্লার মুরাদনগরের পুটিয়াজুড়ি গ্রামের আবদুল মালেক (৬০), খুলনার খানজাহান আলী থানার মীরের জঙ্গা গ্রামের কাদের হাওলাদারের ছেলে কাঞ্চন হাওলাদার (৫৩), পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী কাউখালী গ্রামের বেলায়েত বারীর ছেলে জামাল আবেদিন (৪০), পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর সেনের হাওলার সাজাহান পেদার ছেলে নিজাম (৪০), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মজিদের ছেলে নাদিম (৪৫), নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকার কফিল উদ্দিন শেখের ছেলে হুমায়ুন কবির (৭০), পটুয়াখালী সদরের দড়িতালুক গ্রামের আবদুল হক বিশ্বাসের ছেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিম বিশ্বাস (৪৩), পটুয়াখালীর গলাচিপা খালেক হাওলাদারের ছেলে মোহাম্মদ রাশেদ (৩০), মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ চাঁদপুরের মতলব থানার সুজাপুর গ্রামের শামীম হাসান (৪৫), পশ্চিম তল্লা মকবুলের ছেলে মোহাম্মদ আলী মাস্টার (৫৫), আবুল বাশার মোল্লা (৫১), বরিশালের বাকেরগঞ্জের বারঘড়িয়া গ্রামের সোবাহান ফরাজীর ছেলে মনির ফরাজী (৩০) ও শরীয়তপুরের নড়িয়ার আলাল শেখের ছেলে ইমরান (৩০)।

চিকিৎসাধীন রয়েছেন, ময়মনসিংহের ত্রিশালের আবদুর রহমানের ছেলে ফরিদ (৫৫), কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার চর আলগী গ্রামের এমদাদুল হকের ছেলে শেখ ফরিদ (২১), পটুয়াখালীর চুন্নু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ কেনান (২৪), পটুয়াখালী মোহাম্মদ রাজ্জাকের ছেলে নজরুল ইসলাম (৫০), নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার পশ্চিম তল্লার মো. স্বপনের ছেলে সিফাত (১৮), একই এলাকার আফজালের ছেলে হান্নান (৫০) ও আবদুল মান্নানের ছেলে আবদুস সাত্তার (৪০), নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসিরহাট গ্রামের আবদুল আহাদের ছেলে আমজাদ (৩৭) ও শরীয়তপুরের নড়িয়ার কেদারপুর গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে আবদুল আজিজ (৪০)।

দগ্ধদের মধ্যে মামুন নামে একজন আছেন তার ১৫ শতাংশ বার্ন। তাই তাকে গতকাল ছাড়পত্র দেয়া হয়। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এর আবাসিক চিকিৎসক ডা. পার্থ শংকর পাল সাংবাদিকদের একথা বলেন।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ মসজিদে বিস্ফোরণে ৩৭ জন দগ্ধ হয়েছিল। এর মধ্যে ২৭ জন মারা গেছে। একজনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বাকি ৯ জন এখানে চিকিৎসাধীন আছেন। এদের মধ্যে ৬ জন আছেন আইসিইউতে, ৩ জন পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।

মো. ফরিদ ৫০ শতাংশ, শেখ ফরিদ ৯৩ শতাংশ, মো. কেনান ৩০ শতাংশ, নজরুল ইসলাম ৯৪ শতাংশ, রিফাত/সিফাত ২২ শতাংশ, আবদুল আজিজ ৪৬ শতাংশ, আবদুল হান্নান ৮৫ শতাংশ এবং আমজাদ হোসেন ২৫ শতাংশ পোড়া নিয়ে ভর্তি আছেন। তাদের সারিয়ে তুলতে বার্ন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন বলে জানান পার্থ শংকর পাল।

মঙ্গলবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৮ মহররম ১৪৪২, ২২ ভাদ্র ১৪২৭

মসজিদে বিস্ফোরণ

মৃত্যু বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়ালো

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লায় মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জন হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল সকালে মো. ইমরান (৩০) নামে আরও একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাকে নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জন হলো। মামুন নামের এক রোগীকে গতকাল ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বর্তমানে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যে ৯ জন ভর্তি আছেন, তাদের অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের বাইতুস সালাহ জামে মসজিদ থেকে দগ্ধ অবস্থায় যে ৩৭ জনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছিল। গতকাল সকাল পর্যন্ত তাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় বার্ন ইনস্টিটিউটে আসা ৩৭ জনের মধ্যে ৩৬ জনেরই ৫০ থেকে শতভাগ পোড়া ছিল। গত শুক্রবার এশার নামাজের সময় নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাহ জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সে সময় মসজিদে থাকা অর্ধশতাধিক মানুষের সবাই কমবেশি দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে ৩৭ জনকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে যাদের প্রাণ গেছে তারা হলো- ফতুল্লার নিউখানপুর ব্যাংক কলোনির আনোয়ার হোসেনের ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী রিফাত (১৮), চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার শেখদী গ্রামের মৃত মহসিনের ছেলে মাইনুউদ্দিন (১২), চাঁদপুর সদরের করিম মিজির ছেলে মোস্তফা কামাল (৩৪), নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার সেকান্দর মিয়ার ছেলে মো. রাসেল (৩৪), লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানার পলাশী গ্রামের মেহের আলীর ছেলে নয়ন (২৭), নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার আবদুল খালেকের ছেলে বাহার উদ্দিন (৫৫), শরীয়তপুরের নড়িয়ায় কালিয়াপ্রাসাদ গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের (১৮), শরীয়তপুরের নড়িয়ায় কালিয়াপ্রাসাদ গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে সাব্বির (২১), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তল্লার আনোয়ার হোসেনের ছেলে জয়নাল (৫০), মুন্সীগঞ্জের লৌহজং হাটবুকদিয়া গ্রামের জইন উদ্দিন বেপারীর ছেলে কুদ্দুস বেপারী (৭০), পটুয়াখালী রাঙ্গাবালীর বাহেরচরের বাচ্চু ফরাজীর ছেলে জুলহাস উদ্দিন (৩০), জুলহাস উদ্দিনের ছেলে জুয়েল (৭), মসজিদের মুয়াজ্জিন কুমিল্লা লাঙ্গলকোটের বদরপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন (৪৮), মুয়াজ্জিন দেলোয়ারের ছেলে জুনায়েদ (১৭), মসজিদের ইমাম কুমিল্লার মুরাদনগরের পুটিয়াজুড়ি গ্রামের আবদুল মালেক (৬০), খুলনার খানজাহান আলী থানার মীরের জঙ্গা গ্রামের কাদের হাওলাদারের ছেলে কাঞ্চন হাওলাদার (৫৩), পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী কাউখালী গ্রামের বেলায়েত বারীর ছেলে জামাল আবেদিন (৪০), পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর সেনের হাওলার সাজাহান পেদার ছেলে নিজাম (৪০), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মজিদের ছেলে নাদিম (৪৫), নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকার কফিল উদ্দিন শেখের ছেলে হুমায়ুন কবির (৭০), পটুয়াখালী সদরের দড়িতালুক গ্রামের আবদুল হক বিশ্বাসের ছেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিম বিশ্বাস (৪৩), পটুয়াখালীর গলাচিপা খালেক হাওলাদারের ছেলে মোহাম্মদ রাশেদ (৩০), মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ চাঁদপুরের মতলব থানার সুজাপুর গ্রামের শামীম হাসান (৪৫), পশ্চিম তল্লা মকবুলের ছেলে মোহাম্মদ আলী মাস্টার (৫৫), আবুল বাশার মোল্লা (৫১), বরিশালের বাকেরগঞ্জের বারঘড়িয়া গ্রামের সোবাহান ফরাজীর ছেলে মনির ফরাজী (৩০) ও শরীয়তপুরের নড়িয়ার আলাল শেখের ছেলে ইমরান (৩০)।

চিকিৎসাধীন রয়েছেন, ময়মনসিংহের ত্রিশালের আবদুর রহমানের ছেলে ফরিদ (৫৫), কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার চর আলগী গ্রামের এমদাদুল হকের ছেলে শেখ ফরিদ (২১), পটুয়াখালীর চুন্নু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ কেনান (২৪), পটুয়াখালী মোহাম্মদ রাজ্জাকের ছেলে নজরুল ইসলাম (৫০), নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার পশ্চিম তল্লার মো. স্বপনের ছেলে সিফাত (১৮), একই এলাকার আফজালের ছেলে হান্নান (৫০) ও আবদুল মান্নানের ছেলে আবদুস সাত্তার (৪০), নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসিরহাট গ্রামের আবদুল আহাদের ছেলে আমজাদ (৩৭) ও শরীয়তপুরের নড়িয়ার কেদারপুর গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে আবদুল আজিজ (৪০)।

দগ্ধদের মধ্যে মামুন নামে একজন আছেন তার ১৫ শতাংশ বার্ন। তাই তাকে গতকাল ছাড়পত্র দেয়া হয়। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এর আবাসিক চিকিৎসক ডা. পার্থ শংকর পাল সাংবাদিকদের একথা বলেন।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ মসজিদে বিস্ফোরণে ৩৭ জন দগ্ধ হয়েছিল। এর মধ্যে ২৭ জন মারা গেছে। একজনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বাকি ৯ জন এখানে চিকিৎসাধীন আছেন। এদের মধ্যে ৬ জন আছেন আইসিইউতে, ৩ জন পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।

মো. ফরিদ ৫০ শতাংশ, শেখ ফরিদ ৯৩ শতাংশ, মো. কেনান ৩০ শতাংশ, নজরুল ইসলাম ৯৪ শতাংশ, রিফাত/সিফাত ২২ শতাংশ, আবদুল আজিজ ৪৬ শতাংশ, আবদুল হান্নান ৮৫ শতাংশ এবং আমজাদ হোসেন ২৫ শতাংশ পোড়া নিয়ে ভর্তি আছেন। তাদের সারিয়ে তুলতে বার্ন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন বলে জানান পার্থ শংকর পাল।