স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা

১৩টি সুপারিশ, প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এ সময় এ কমিটির সদস্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি লেফেটেনেন্ট কর্নেল এসএম সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা। ওই ঘটনায় পুলিশের ভাষ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২ অগাস্ট তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। পরদিন কমিটি পুনর্গঠন করে চার সদস্যের করা হয়। চার সদস্যের এই তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক জাকির হোসেন খান এবং কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহজাহান আলী। প্রতিবেদনে ১৩টি সুপারিশ রয়েছে। মূল প্রতিবেদন ৮০ পৃষ্ঠার, তবে এরসঙ্গে ৫৮৬ পৃষ্ঠার সংযুক্তি রয়েছে। হত্যায় দায়ীদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে বলে তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে। তবে তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু নিয়ে কোন তথ্য দেননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা কমিটি প্রধান।

তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সিনহা হত্যার পরপরই চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনা সরেজমিন তদন্ত করে কারণ, উৎস এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয়সহ সার্বিক বিষয় বিশ্লেষণ করে তদন্ত কমিটিকে সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে এসেছে। রিপোর্টে কি আছে আমরা এখনও দেখিনি। আমাদের সচিব মহোদয় এগুলো বিশ্লেষণ করে যেখানে যেটা প্রয়োজন সেই অনুযায়ী কাজ করবেন।

মন্ত্রী বলেন, আপনারা নিশ্চয় জানেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এটার পুলিশি তদন্ত চলছে। সে কারণে আমরা প্রকাশ্যে কিছু জানাতে পারব না। আমরা আদালতকে এটার সম্পর্কে জানিয়ে দেব, আদালত মনে করলে এটাকে আমাদের কাছ থেকে অফিসিয়ালি নেবেন। এটা আদালতের এখতিয়ার। তদন্ত প্রতিবেদনে যাদের নামে অভিযোগ আসবে তাদের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে তা গণমাধ্যমকে জানানো হবে বলে।

সিনহা হত্যার ঘটনাটি ‘পরিকল্পিত’ ছিল কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তদন্ত রিপোর্ট আমার কাছে মাত্র এলো। এর ভেতর কী লেখা আছে, কী উল্লেখ আছে আমরা তো জানি না কিছু। আমরা বের করে নেই, আমরা এগুলো স্টাডি করি, তারপরে আপনাদের জানাতে পারব। তদন্ত প্রতিবেদন কী সুপারিশ এসেছে, সেই প্রশ্নে কামাল বলেন, ‘আমরাতো এখনও দেখিনি।’

এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য কি উদ্যোগ নিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেখুন, দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমরা মনে করি, এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটুক। কেন ঘটেছে, কীভাবে ঘটেছে এগুলোর পুরোপুরি বিশ্লেষণ এখানে (প্রতিবেদনে) রয়েছে, সেগুলো আমাদের স্টাডি করতে হবে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে, সবাই সজাগ রয়েছে, আমরা মনে করি, এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে আমরা সবাই সজাগ রয়েছি।

সিনহার হত্যাকে কেন্দ্র করে দুই বাহিনীর মধ্যে ‘গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে’- সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, - এ ধরনের উপাদান আমরা পাইনি। আমরা মনে করি, চমৎকার একটি পরিবেশ রয়েছে, আমরা দেখেছি পুলিশ প্রধান ও সেনাবাহিনীর প্রধান দুইজনে মিলে কক্সবাজারে গিয়েছেন, তারা ব্রিফ করেছেন। কাজেই দুই বাহিনীর ভেতরে ‘মতপার্থক্য রয়েছে’- এগুলো সত্য নয়। চমৎকার পরিবেশ রয়েছে, দুই বাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে।

সিনহার বোনের দায়ের করা হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ তার ওপর নির্যাতন করার অভিযোগ করছেন এ রকম একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। প্রদীপকে নির্যাতনের অভিযোগ সঠিক কিনা- সেই প্রশ্নও করা হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। জবাবে কামাল বলেন, ‘ভিডিও কোথা থেকে কী হচ্ছে আমরা সেগুলো নজরে আনি না। তথ্যভিত্তিক যেসব সংবাদ আমাদের কাছে আসে, সেগুলোই আমরা নজরে আনি, সেগুলোই আমরা গ্রহণ করি।

কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, আমি একটি কথা বলব, পুলিশ বাহিনী আইনশৃঙ্খলার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে, দেশে এই ঘটনাটি কোনভাবেই তাদের ভূমিকাকে ম্লান করবে না। আমরা চারজন কমিটির সদস্য এখানে উপস্থিত হয়ে এক মাসের বেশি সময় ধরে আমরা যে কাজটি করেছি, যে রিপোর্টটি প্রণয়ন করেছি, সেটি হস্তান্তর করতে পেরেছি। আমাদের প্রথমে সাত কর্মদিবস সময় দেয়া হয়েছিল। ১ আগস্ট আদেশটি হয় সেদিন ছিল ঈদের দিন। আমি আমার মাকে দেখার জন্য গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। কমিশনার স্যার আমাকে বললেন, তোমাকে অর্ডার দেয়া হয়েছে। আমি ২ তারিখ হোয়াটস অ্যাপে (কমিটি গঠনের অর্ডার) পাই। ৩ তারিখ (আগস্ট) আমরা নমিনেশনের জন্য চিঠি লিখি, ৩ তারিখই সশস্ত্র বহিনী বিভাগ ও পুলিশ থেকে আমাদের দু’জন সহকর্মীর নাম আমাদের দেয়া হয়। আমরা ৪ তারিখে (আগস্ট) কক্সবাজারে গিয়ে প্রথম সভা করি। আমরা চেয়েছি আমাদের মন্ত্রণালয় যেটি নির্দেশনা দিয়েছে, এটির উৎস কী, কারণ কী, এই ধরনের ঘটনার প্রতিকারের ব্যাপারে কী ধরনের সুপারিশ করা যায়, সেই ব্যাপারে আমরা চারজন পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে কমিটির প্রধান বলেন, আমরা স্যার আপনার সদয় অবগতির জন্য বলব, কর্মপরিকল্পনায় আমরা নির্ধারণ করেছি কারা কারা এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এরকম একটা সম্ভাব্য তালিকা করেছি। এটি ইনক্রিমেন্টাল ছিল, শেষ পর্যন্ত ৬৮ জনে এটি দাঁড়িয়েছে। এই ৬৮ জনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেছি। এছাড়া আমরা ঘটনাস্থলগুলোতে রাত ৯টার দিকেও গিয়েছি। আমরা রাতে এপিবিএনের (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) ফোর্স নিয়ে ডেমো করেছি, বোঝার চেষ্টা করেছি। যে পাহাড়ে মেজর সিনহা গিয়েছেন সেই পাহাড়ে গিয়েছি। ওখানকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে উৎস, কারণ ও আমাদের সুপারিশ প্রণয়ন করেছি।’

মঙ্গলবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৮ মহররম ১৪৪২, ২২ ভাদ্র ১৪২৭

সিনহা হত্যা

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা

১৩টি সুপারিশ, প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এ সময় এ কমিটির সদস্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি লেফেটেনেন্ট কর্নেল এসএম সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা। ওই ঘটনায় পুলিশের ভাষ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২ অগাস্ট তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। পরদিন কমিটি পুনর্গঠন করে চার সদস্যের করা হয়। চার সদস্যের এই তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক জাকির হোসেন খান এবং কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহজাহান আলী। প্রতিবেদনে ১৩টি সুপারিশ রয়েছে। মূল প্রতিবেদন ৮০ পৃষ্ঠার, তবে এরসঙ্গে ৫৮৬ পৃষ্ঠার সংযুক্তি রয়েছে। হত্যায় দায়ীদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে বলে তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে। তবে তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু নিয়ে কোন তথ্য দেননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা কমিটি প্রধান।

তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সিনহা হত্যার পরপরই চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনা সরেজমিন তদন্ত করে কারণ, উৎস এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয়সহ সার্বিক বিষয় বিশ্লেষণ করে তদন্ত কমিটিকে সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে এসেছে। রিপোর্টে কি আছে আমরা এখনও দেখিনি। আমাদের সচিব মহোদয় এগুলো বিশ্লেষণ করে যেখানে যেটা প্রয়োজন সেই অনুযায়ী কাজ করবেন।

মন্ত্রী বলেন, আপনারা নিশ্চয় জানেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এটার পুলিশি তদন্ত চলছে। সে কারণে আমরা প্রকাশ্যে কিছু জানাতে পারব না। আমরা আদালতকে এটার সম্পর্কে জানিয়ে দেব, আদালত মনে করলে এটাকে আমাদের কাছ থেকে অফিসিয়ালি নেবেন। এটা আদালতের এখতিয়ার। তদন্ত প্রতিবেদনে যাদের নামে অভিযোগ আসবে তাদের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে তা গণমাধ্যমকে জানানো হবে বলে।

সিনহা হত্যার ঘটনাটি ‘পরিকল্পিত’ ছিল কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তদন্ত রিপোর্ট আমার কাছে মাত্র এলো। এর ভেতর কী লেখা আছে, কী উল্লেখ আছে আমরা তো জানি না কিছু। আমরা বের করে নেই, আমরা এগুলো স্টাডি করি, তারপরে আপনাদের জানাতে পারব। তদন্ত প্রতিবেদন কী সুপারিশ এসেছে, সেই প্রশ্নে কামাল বলেন, ‘আমরাতো এখনও দেখিনি।’

এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য কি উদ্যোগ নিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেখুন, দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমরা মনে করি, এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটুক। কেন ঘটেছে, কীভাবে ঘটেছে এগুলোর পুরোপুরি বিশ্লেষণ এখানে (প্রতিবেদনে) রয়েছে, সেগুলো আমাদের স্টাডি করতে হবে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে, সবাই সজাগ রয়েছে, আমরা মনে করি, এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে আমরা সবাই সজাগ রয়েছি।

সিনহার হত্যাকে কেন্দ্র করে দুই বাহিনীর মধ্যে ‘গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে’- সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, - এ ধরনের উপাদান আমরা পাইনি। আমরা মনে করি, চমৎকার একটি পরিবেশ রয়েছে, আমরা দেখেছি পুলিশ প্রধান ও সেনাবাহিনীর প্রধান দুইজনে মিলে কক্সবাজারে গিয়েছেন, তারা ব্রিফ করেছেন। কাজেই দুই বাহিনীর ভেতরে ‘মতপার্থক্য রয়েছে’- এগুলো সত্য নয়। চমৎকার পরিবেশ রয়েছে, দুই বাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে।

সিনহার বোনের দায়ের করা হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ তার ওপর নির্যাতন করার অভিযোগ করছেন এ রকম একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। প্রদীপকে নির্যাতনের অভিযোগ সঠিক কিনা- সেই প্রশ্নও করা হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। জবাবে কামাল বলেন, ‘ভিডিও কোথা থেকে কী হচ্ছে আমরা সেগুলো নজরে আনি না। তথ্যভিত্তিক যেসব সংবাদ আমাদের কাছে আসে, সেগুলোই আমরা নজরে আনি, সেগুলোই আমরা গ্রহণ করি।

কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, আমি একটি কথা বলব, পুলিশ বাহিনী আইনশৃঙ্খলার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে, দেশে এই ঘটনাটি কোনভাবেই তাদের ভূমিকাকে ম্লান করবে না। আমরা চারজন কমিটির সদস্য এখানে উপস্থিত হয়ে এক মাসের বেশি সময় ধরে আমরা যে কাজটি করেছি, যে রিপোর্টটি প্রণয়ন করেছি, সেটি হস্তান্তর করতে পেরেছি। আমাদের প্রথমে সাত কর্মদিবস সময় দেয়া হয়েছিল। ১ আগস্ট আদেশটি হয় সেদিন ছিল ঈদের দিন। আমি আমার মাকে দেখার জন্য গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। কমিশনার স্যার আমাকে বললেন, তোমাকে অর্ডার দেয়া হয়েছে। আমি ২ তারিখ হোয়াটস অ্যাপে (কমিটি গঠনের অর্ডার) পাই। ৩ তারিখ (আগস্ট) আমরা নমিনেশনের জন্য চিঠি লিখি, ৩ তারিখই সশস্ত্র বহিনী বিভাগ ও পুলিশ থেকে আমাদের দু’জন সহকর্মীর নাম আমাদের দেয়া হয়। আমরা ৪ তারিখে (আগস্ট) কক্সবাজারে গিয়ে প্রথম সভা করি। আমরা চেয়েছি আমাদের মন্ত্রণালয় যেটি নির্দেশনা দিয়েছে, এটির উৎস কী, কারণ কী, এই ধরনের ঘটনার প্রতিকারের ব্যাপারে কী ধরনের সুপারিশ করা যায়, সেই ব্যাপারে আমরা চারজন পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে কমিটির প্রধান বলেন, আমরা স্যার আপনার সদয় অবগতির জন্য বলব, কর্মপরিকল্পনায় আমরা নির্ধারণ করেছি কারা কারা এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এরকম একটা সম্ভাব্য তালিকা করেছি। এটি ইনক্রিমেন্টাল ছিল, শেষ পর্যন্ত ৬৮ জনে এটি দাঁড়িয়েছে। এই ৬৮ জনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেছি। এছাড়া আমরা ঘটনাস্থলগুলোতে রাত ৯টার দিকেও গিয়েছি। আমরা রাতে এপিবিএনের (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) ফোর্স নিয়ে ডেমো করেছি, বোঝার চেষ্টা করেছি। যে পাহাড়ে মেজর সিনহা গিয়েছেন সেই পাহাড়ে গিয়েছি। ওখানকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে উৎস, কারণ ও আমাদের সুপারিশ প্রণয়ন করেছি।’