মৃতের সংখ্যা ২৮, চিকিৎসাধীন ৮ জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক

নারায়ণগঞ্জের বাইতুস সালাহ জামে মসজিদে গ্যাস সংযোগের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটে আগুনে দগ্ধ হওয়া আরও এক মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আবদুল হান্নান (৫০) নামে ওই ব্যক্তি মারা যান। এ নিয়ে গতকাল রাত ৯টা পর্যন্ত এ ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ জনে। এদিকে এ ঘটনায় আইসিইউতে থাকা ৮ জনের অবস্থাও খুবই সংকটাপন্ন। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ওই ৮ দগ্ধ রোগীকে বাচিয়ে তোলার সব চেষ্টা করছে চিকিৎসকরা।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বায়তুস সালাহ জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় চিকিৎসাধীন নতুন করে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে গত সোমবার রাতে ইমরান হোসেন (৩০) এবং গতকাল সন্ধায় মারা গেছেন আবদুল হান্নান। ওই দুইজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল জানান, মৃত হান্নান ও ইমরানের শরীরে ৮৫ শতাংশ বার্ন ছিল। চিকিৎসাধীন বাকি ৮ জনের কেউ শঙ্কামুক্ত নন। সবাই আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। মসজিদে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে এ পর্যন্ত মারা ব্যক্তিরা হলেন- ইমাম আবদুল মালেক (৬০), মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮) ও তার ছেলে জুনায়েদ (১৭), দুই ভাই জোবায়ের (১৮) ও সাব্বির (২১), কুদ্দুস ব্যাপারী (৭২), মোস্তফা কামাল (৩৪), রাশেদ (৩০), হুমায়ুন কবির (৭২), জামাল আবেদিন (৪০), ইব্রাহিম বিশ্বাস (৪৩), মো. রিফাত (১৮), মাইনুউদ্দিন (১২), ফতুল্লার জয়নাল (৩৮), নয়ন (২৭), নিজাম (৩৪), রাসেল (৩৪), কাঞ্চন হাওলাদার (৫০), শিশু জুবায়ের (৭), নাদিম (৪৫), বাহার উদ্দিন (৫৫), শামীম হাসান (৪৫) জুলহাস (৩৫), মোহাম্মদ আলী (৫৫), আবুল বাশার মোল্লা (৫১), মনির ফরাজি (৩০), ইমরান হোসেন (৩০) ও আবদুল হান্নান (৫০)।

ডা. পার্থ শংকর পাল বলেন, ‘বর্তমানে এখানে ৮ রোগী ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জন আইসিইউতে এবং একজন পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে চিকিৎসধীন ছিল। সকালে পোস্ট অপারেটিভ ভর্তি থাকা ওই রোগীকেও আইসিইউতে নেয়া হয়েছে। যেহেতু আইসিইউতে নেয়া হয়েছে সেহেতু বুঝতে হবে সবার অবস্থাই ক্রিটিক্যাল। তাদের শরীরে ৩৫ শতাংশ থেকে ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত দগ্ধ রয়েছে। পুড়ে গেছে শ্বাসনালীও। আর এখন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত সোমবার ১২ শতাংশ দগ্ধ মামুন নামে এক রোগীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বর্তমানে যারা আইসিইউতে আছেন তাদের মধ্যে মো. ফরিদ (৫০) ৫০ শতাংশ, শেখ ফরিদ (২১) ৯৩ শতাংশ, মো. কেনান (২৪) ৩০ শতাংশ, নজরুল ইসলাম (৫০) ৯৪ শতাংশ, রিফাত ওরফে সিফাত (১৮) ২২ শতাংশ, আবদুল আজিজ (৪০) ৪৬ শতাংশ, আমজাদ হোসেন (৩৭) ২৫ শতাংশ এবং আবদুস সাত্তারের (৪০) ৭০ শতাংশ শরীর পুড়ে গেছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাহ মসজিদে গ্যাস সংযোগের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ হয়। মসজিদের নিচে গ্যাসের লাইনে অসংখ্য লিকেজ থেকে গ্যাস বের হয়ে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারাও। এ ঘটনার পর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিতাসের ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনায় তিতাস, ফায়ার সার্ভিস ও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে পৃথক ৩টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গ্যাস সংযোগের লিকেজ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হতে খোঁড়াখুঁড়ি করে এর সত্যতা মিলেছে।

আরও খবর
গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুদ্ধারই বড় চ্যালেঞ্জ
প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতি শুরুর নির্দেশনা
রোহিঙ্গাদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ ছিল
পাওয়ার গ্রিডে আগুন, ময়মনসিংহ বিভাগ বিদ্যুৎহীন
মৃত্যু আরও ৩৬ শনাক্ত ১৮২৯ জন
১২ সেপ্টেম্বর থেকে ট্রেনের টিকিট কাউন্টারে বিক্রি
একাদশ শ্রেণীতে সর্বোচ্চ ভর্তি ফি ৫,০০০ টাকা নির্ধারণ
‘চুরি করতে গিয়ে ইউএনও’র ওপর হামলা বিশ্বাসযোগ্য নয়’
তদন্ত প্রতিবেদন ৭৪ বারের মতো পেছালো
বরিশালে দুই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত
মিলল আরও একটি লিকেজ
দেড়মাস পর রহস্য উদ্ঘাটন, খুনি বাবা-দাদা ও সৎমাসহ ৪ জন গ্রেফতার
ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে সাংবাদিক নির্যাতন মামলা

বুধবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৯ মহররম ১৪৪২, ২১ ভাদ্র ১৪২৭

না’গঞ্জ মসজিদে বিস্ফোরণ

মৃতের সংখ্যা ২৮, চিকিৎসাধীন ৮ জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

নারায়ণগঞ্জের বাইতুস সালাহ জামে মসজিদে গ্যাস সংযোগের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটে আগুনে দগ্ধ হওয়া আরও এক মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আবদুল হান্নান (৫০) নামে ওই ব্যক্তি মারা যান। এ নিয়ে গতকাল রাত ৯টা পর্যন্ত এ ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ জনে। এদিকে এ ঘটনায় আইসিইউতে থাকা ৮ জনের অবস্থাও খুবই সংকটাপন্ন। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ওই ৮ দগ্ধ রোগীকে বাচিয়ে তোলার সব চেষ্টা করছে চিকিৎসকরা।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বায়তুস সালাহ জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় চিকিৎসাধীন নতুন করে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে গত সোমবার রাতে ইমরান হোসেন (৩০) এবং গতকাল সন্ধায় মারা গেছেন আবদুল হান্নান। ওই দুইজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল জানান, মৃত হান্নান ও ইমরানের শরীরে ৮৫ শতাংশ বার্ন ছিল। চিকিৎসাধীন বাকি ৮ জনের কেউ শঙ্কামুক্ত নন। সবাই আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। মসজিদে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে এ পর্যন্ত মারা ব্যক্তিরা হলেন- ইমাম আবদুল মালেক (৬০), মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮) ও তার ছেলে জুনায়েদ (১৭), দুই ভাই জোবায়ের (১৮) ও সাব্বির (২১), কুদ্দুস ব্যাপারী (৭২), মোস্তফা কামাল (৩৪), রাশেদ (৩০), হুমায়ুন কবির (৭২), জামাল আবেদিন (৪০), ইব্রাহিম বিশ্বাস (৪৩), মো. রিফাত (১৮), মাইনুউদ্দিন (১২), ফতুল্লার জয়নাল (৩৮), নয়ন (২৭), নিজাম (৩৪), রাসেল (৩৪), কাঞ্চন হাওলাদার (৫০), শিশু জুবায়ের (৭), নাদিম (৪৫), বাহার উদ্দিন (৫৫), শামীম হাসান (৪৫) জুলহাস (৩৫), মোহাম্মদ আলী (৫৫), আবুল বাশার মোল্লা (৫১), মনির ফরাজি (৩০), ইমরান হোসেন (৩০) ও আবদুল হান্নান (৫০)।

ডা. পার্থ শংকর পাল বলেন, ‘বর্তমানে এখানে ৮ রোগী ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জন আইসিইউতে এবং একজন পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে চিকিৎসধীন ছিল। সকালে পোস্ট অপারেটিভ ভর্তি থাকা ওই রোগীকেও আইসিইউতে নেয়া হয়েছে। যেহেতু আইসিইউতে নেয়া হয়েছে সেহেতু বুঝতে হবে সবার অবস্থাই ক্রিটিক্যাল। তাদের শরীরে ৩৫ শতাংশ থেকে ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত দগ্ধ রয়েছে। পুড়ে গেছে শ্বাসনালীও। আর এখন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত সোমবার ১২ শতাংশ দগ্ধ মামুন নামে এক রোগীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বর্তমানে যারা আইসিইউতে আছেন তাদের মধ্যে মো. ফরিদ (৫০) ৫০ শতাংশ, শেখ ফরিদ (২১) ৯৩ শতাংশ, মো. কেনান (২৪) ৩০ শতাংশ, নজরুল ইসলাম (৫০) ৯৪ শতাংশ, রিফাত ওরফে সিফাত (১৮) ২২ শতাংশ, আবদুল আজিজ (৪০) ৪৬ শতাংশ, আমজাদ হোসেন (৩৭) ২৫ শতাংশ এবং আবদুস সাত্তারের (৪০) ৭০ শতাংশ শরীর পুড়ে গেছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাহ মসজিদে গ্যাস সংযোগের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ হয়। মসজিদের নিচে গ্যাসের লাইনে অসংখ্য লিকেজ থেকে গ্যাস বের হয়ে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারাও। এ ঘটনার পর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিতাসের ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনায় তিতাস, ফায়ার সার্ভিস ও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে পৃথক ৩টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গ্যাস সংযোগের লিকেজ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হতে খোঁড়াখুঁড়ি করে এর সত্যতা মিলেছে।