করোনা নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরও দীর্ঘ হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। এরপর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও নভেল করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ এখনো শেষ হয়নি। দৈনিক শনাক্তের হার ৫ শতাংশের কম হলে ধরে নেয়া যাবে যে, করোনা সংক্রমণের প্রথম ঢেউ শেষ হয়েছে। কিন্তু দেশে এখনো প্রতিদিন কমবেশি ১৫ শতাংশ হারে করোনার সংক্রমণ ঘটছে। এক সময় শনাক্তের হার ২৫ শতাংশের কাছাকাছি ছিল। এখন শনাক্তের হার কমলেও মৃত্যু কমেনি। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হওয়ার কারণে দেশে করোনার সংক্রমণ কমছে না। এ নিয়ে গতকাল সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত ১৫ আগস্ট বলেছিলেন, দেশ থেকে করোনা এমনিতেই বিদায় নেবে। বাস্তবতা হচ্ছে করোনা এখনো বিদায় নেয়নি। বরং করোনার সংক্রমণ আরও দীর্ঘ হবে বলে জনস্বাস্থ্যবিদরা আভাস দিয়েছেন। করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে কিনা, সেটা বোঝার জন্য বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কিছু মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে। কোন মানদণ্ডেই বাংলাদেশে করোনা নিয়ন্ত্রণের লক্ষণ প্রকাশ পায় না। অথচ বিশ্বের অনেক দেশ করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। চীনের যে উহান প্রদেশে করোনার প্রথম সংক্রমণ হয়েছিল সেখানে সফলভাবে এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা গেছে।

দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। টেস্ট থেকে শুরু করে কোয়ারেন্টিন পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে এখন ঢিলেঢালা ভাব চলে এসেছে। টেস্টের পরিমাণ দিন দিন কমছে। সংক্রমিত ব্যক্তি কোয়ারেন্টিনে আছে কিনা সেটা দেখার কেউ আছে বলে মনে হয় না। সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের আইসোলেশনে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বালাই নেই। বারবার হাত ধোয়ার মতো সাধারণ কাজটুকুও সিংহভাগ মানুষ এখন করছে না। নভেল করোনাভাইরাসে কিছু হবে নাÑ এমন একটা ভ্রান্ত ধারণা দেশের একশ্রেণীর মানুষের মধ্যে আগে থেকেই ছিল। এখন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে করোনাভাইরাস নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক কথা বলা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ বিজ্ঞানভিত্তিক কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি। সংশ্লিষ্ট জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আমলে নেয়া হয় না।

আমরা চাই না, নভেল করোনাভাইরাসের মতো মহামারী দেশে দীর্ঘস্থায়ী হোক। এ ভাইরাসের যে বৈশিষ্ট্য তাতে এটা যে কোন মহূর্তে ভয়ংকর রূপধারণ করতে পারে। এ বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। জাতীয় পরামর্শক কমিটি যেসব পরামর্শ দিয়েছে সেগুলো আমলে নিতে হবে। নইলে গাছাড়া ভাবের জন্য আগামীতে দেশবাসীকে চড়া মূল্য দিতে হবে।

বুধবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৯ মহররম ১৪৪২, ২১ ভাদ্র ১৪২৭

করোনা নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরও দীর্ঘ হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। এরপর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও নভেল করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ এখনো শেষ হয়নি। দৈনিক শনাক্তের হার ৫ শতাংশের কম হলে ধরে নেয়া যাবে যে, করোনা সংক্রমণের প্রথম ঢেউ শেষ হয়েছে। কিন্তু দেশে এখনো প্রতিদিন কমবেশি ১৫ শতাংশ হারে করোনার সংক্রমণ ঘটছে। এক সময় শনাক্তের হার ২৫ শতাংশের কাছাকাছি ছিল। এখন শনাক্তের হার কমলেও মৃত্যু কমেনি। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হওয়ার কারণে দেশে করোনার সংক্রমণ কমছে না। এ নিয়ে গতকাল সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত ১৫ আগস্ট বলেছিলেন, দেশ থেকে করোনা এমনিতেই বিদায় নেবে। বাস্তবতা হচ্ছে করোনা এখনো বিদায় নেয়নি। বরং করোনার সংক্রমণ আরও দীর্ঘ হবে বলে জনস্বাস্থ্যবিদরা আভাস দিয়েছেন। করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে কিনা, সেটা বোঝার জন্য বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কিছু মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে। কোন মানদণ্ডেই বাংলাদেশে করোনা নিয়ন্ত্রণের লক্ষণ প্রকাশ পায় না। অথচ বিশ্বের অনেক দেশ করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। চীনের যে উহান প্রদেশে করোনার প্রথম সংক্রমণ হয়েছিল সেখানে সফলভাবে এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা গেছে।

দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। টেস্ট থেকে শুরু করে কোয়ারেন্টিন পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে এখন ঢিলেঢালা ভাব চলে এসেছে। টেস্টের পরিমাণ দিন দিন কমছে। সংক্রমিত ব্যক্তি কোয়ারেন্টিনে আছে কিনা সেটা দেখার কেউ আছে বলে মনে হয় না। সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের আইসোলেশনে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বালাই নেই। বারবার হাত ধোয়ার মতো সাধারণ কাজটুকুও সিংহভাগ মানুষ এখন করছে না। নভেল করোনাভাইরাসে কিছু হবে নাÑ এমন একটা ভ্রান্ত ধারণা দেশের একশ্রেণীর মানুষের মধ্যে আগে থেকেই ছিল। এখন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে করোনাভাইরাস নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক কথা বলা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ বিজ্ঞানভিত্তিক কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি। সংশ্লিষ্ট জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আমলে নেয়া হয় না।

আমরা চাই না, নভেল করোনাভাইরাসের মতো মহামারী দেশে দীর্ঘস্থায়ী হোক। এ ভাইরাসের যে বৈশিষ্ট্য তাতে এটা যে কোন মহূর্তে ভয়ংকর রূপধারণ করতে পারে। এ বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। জাতীয় পরামর্শক কমিটি যেসব পরামর্শ দিয়েছে সেগুলো আমলে নিতে হবে। নইলে গাছাড়া ভাবের জন্য আগামীতে দেশবাসীকে চড়া মূল্য দিতে হবে।