সারাদেশে গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪১ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ২৯ জন ও নারী ১২ জন। ৩৬ জন হাসপাতালে, বাড়িতে তিনজন এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে দুজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে করোনা আক্রান্তে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ৫৯৩ জনে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪টি করোনা পরীক্ষাগারে ১৪ হাজার ৭৯২টি নমুনা সংগ্রহ হয়। পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৭৫৫টি নমুনা। একই সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৮২৭ জন। ফলে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল তিন লাখ ৩১ হাজার ৭৮ জনে। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫২টি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত চব্বিশ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও দুই হাজার ৯৯৫ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় দুই লাখ ৩০ হাজার ৮০৪ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় আর রোগী শনাক্তের তুলনায় সুস্থতার হার ৬৯ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত করোনায় মৃতদের পুরুষ তিন হাজার ৫৮২ (৭৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ) এবং নারী এক হাজার ১১ জন (২২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ)। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ৪১ জনের মধ্যে দশ বছরের নিচে একজন, বিশোর্ধ্ব একজন, ত্রিশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব চারজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১০ জন এবং ষাটোর্ধ্ব ২৪ জন রয়েছেন।
বিভাগ অনুযায়ী, ৪১ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৭ জন, চট্টগ্রামে ছয়জন, রাজশাহীতে পাঁচজন, খুলনায় চারজন, বরিশালে একজন, সিলেটে দুইজন, রংপুর বিভাগে পাঁচজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে একজন রয়েছেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনা ভাইরাসে প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। গণসংক্রমণের প্রথম পর্যায় থেকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এবং এই সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার মনিরা পারভিন বলেন, করোনা আক্রান্তদের দ্রুত শনাক্ত করে আইসোলেটেড করতে হবে। শনাক্ত করতে না পারলে ভাইরাসটি দ্রুত অনেক বেশি লোককে সংক্রমিত করবে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত ভীতিকর হবে। দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সেইসাথে বেশি বেশি করে করোনার টেস্ট করতে হবে। আইডেন্টিফাইড রোগীদের যত দ্রুত সম্ভব অন্যদের থেকে আলাদা করে চিকিৎসা দিতে হবে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ, ২৬ আগস্ট তা তিন লাখ পেরিয়ে যায়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ৮৫ দিন পর ৫ জুলাই মৃতের সংখ্যা দুই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায়। এরপর তা আড়াই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায় ১৭ জুলাই। ২৮ জুলাই সেই সংখ্যা তিন হাজার স্পর্শ করে। ১২ আগস্ট মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছায় সাড়ে তিন হাজারে। তারপর ১৩ দিনের মাথায় ২৫ আগস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এই তালিকায় আরও ৫০০ নাম যোগ হতে সেই ১৩ দিনই লাগে। অর্থাৎ গতকাল ৮ সেপ্টম্বরে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ৪ হাজার ৫৫২ জনে। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার ৯৭৮ জন পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৮ লাখ ৯৭ হাজার ৮৩৩ জনে। সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৮৫ লাখ ৫৫ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৫তম স্থানে। তার মৃতের সংখ্যায় বাংলাদেশ রয়েছে ২৯তম অবস্থানে।
বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২০ মহররম ১৪৪২, ২২ ভাদ্র ১৪২৭
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
সারাদেশে গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪১ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ২৯ জন ও নারী ১২ জন। ৩৬ জন হাসপাতালে, বাড়িতে তিনজন এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে দুজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে করোনা আক্রান্তে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ৫৯৩ জনে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪টি করোনা পরীক্ষাগারে ১৪ হাজার ৭৯২টি নমুনা সংগ্রহ হয়। পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৭৫৫টি নমুনা। একই সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৮২৭ জন। ফলে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল তিন লাখ ৩১ হাজার ৭৮ জনে। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫২টি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত চব্বিশ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও দুই হাজার ৯৯৫ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় দুই লাখ ৩০ হাজার ৮০৪ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় আর রোগী শনাক্তের তুলনায় সুস্থতার হার ৬৯ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত করোনায় মৃতদের পুরুষ তিন হাজার ৫৮২ (৭৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ) এবং নারী এক হাজার ১১ জন (২২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ)। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ৪১ জনের মধ্যে দশ বছরের নিচে একজন, বিশোর্ধ্ব একজন, ত্রিশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব চারজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১০ জন এবং ষাটোর্ধ্ব ২৪ জন রয়েছেন।
বিভাগ অনুযায়ী, ৪১ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৭ জন, চট্টগ্রামে ছয়জন, রাজশাহীতে পাঁচজন, খুলনায় চারজন, বরিশালে একজন, সিলেটে দুইজন, রংপুর বিভাগে পাঁচজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে একজন রয়েছেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনা ভাইরাসে প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। গণসংক্রমণের প্রথম পর্যায় থেকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এবং এই সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার মনিরা পারভিন বলেন, করোনা আক্রান্তদের দ্রুত শনাক্ত করে আইসোলেটেড করতে হবে। শনাক্ত করতে না পারলে ভাইরাসটি দ্রুত অনেক বেশি লোককে সংক্রমিত করবে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত ভীতিকর হবে। দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সেইসাথে বেশি বেশি করে করোনার টেস্ট করতে হবে। আইডেন্টিফাইড রোগীদের যত দ্রুত সম্ভব অন্যদের থেকে আলাদা করে চিকিৎসা দিতে হবে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ, ২৬ আগস্ট তা তিন লাখ পেরিয়ে যায়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ৮৫ দিন পর ৫ জুলাই মৃতের সংখ্যা দুই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায়। এরপর তা আড়াই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায় ১৭ জুলাই। ২৮ জুলাই সেই সংখ্যা তিন হাজার স্পর্শ করে। ১২ আগস্ট মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছায় সাড়ে তিন হাজারে। তারপর ১৩ দিনের মাথায় ২৫ আগস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এই তালিকায় আরও ৫০০ নাম যোগ হতে সেই ১৩ দিনই লাগে। অর্থাৎ গতকাল ৮ সেপ্টম্বরে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ৪ হাজার ৫৫২ জনে। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার ৯৭৮ জন পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৮ লাখ ৯৭ হাজার ৮৩৩ জনে। সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৮৫ লাখ ৫৫ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৫তম স্থানে। তার মৃতের সংখ্যায় বাংলাদেশ রয়েছে ২৯তম অবস্থানে।