অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে টাস্কফোর্সের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করুন

পাবনা জেলার পদ্মা ও যমুনা নদীর ২৪টি পয়েন্ট থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে এক কোটি টাকার বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বালুর টাকা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা হচ্ছে এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। আরো অভিযোগ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে খোদ সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান জড়িত এবং বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের তিনিই নাকি হোতা। তিনি প্রতিদিন বালু উত্তোলনকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা পান। এ নিয়ে গত সোমবার ‘সংবাদ’ সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. ফিরোজ কবির বালু উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও বন্ধ হচ্ছে না। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন স্থানে নদী তীর ভেঙে যাওয়ায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে নদীর নাব্যতা রক্ষা ও নদীর গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখা সংক্রান্ত ‘টাস্কাফোর্স’।

শুধু যে পাবনাতেই এমন হচ্ছে তা নয়। সারা দেশেই বিভিন্ন নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এর সঙ্গে প্রশাসন এবং স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা জড়িত থাকে। নদীভাঙনের একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। কিন্তু যাদের উচিত এগুলো বন্ধ করা বা ব্যবস্থা নেয়া তারা নিজেরাই এই অবৈধ কাজের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকছে। সর্ষের মধ্যেই যদি ভূত থাকে। তাহলে সে ভূত তাড়ানো যাবে না।

স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং প্রভাবশালীদের অবৈধভাবে জাতীয় সম্পদ হাতিয়ে নেয়া এবং দখল করার এই যে চর্চা, তা বাংলাদেশে চিরস্থায়ী এক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আদর্শ নয় বা জনস্বার্থের কোন রাজনীতি নয় কেবল স্বল্প সময়ে অবৈধভাবে বিপুল অর্থ উপার্জন করার জন্য তারা এমন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে।

দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে উদাসীন বা নিষ্ক্রিয়। আর এসব অপকর্মের দায়ভার শেষ পর্যন্ত সরকারের উপরই বর্তায়। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও সুবিধাবাদীদের দৌরাত্ম্যে সরকারের অনেক বড় অর্জনও চাপা পড়ে যায়। তাই অনতিবিলম্বে এই ধরনের অপকর্মের হোতাদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া প্রয়াজন। কেবল পাবনা জেলার পদ্মা ও যমুনা নদীর ২৪টি পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করাই যথেষ্ট নয়, দেশবাসী এ ধরনের যেসব অনিয়ম ও সীমালঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে সেগুলোকেও জবাবদিহিতা ও নজরদারিরে মধ্যে আনা সরকারের ভাবমূর্তির স্বার্থেই জরুরি হয়ে পড়েছে। বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ‘টাস্কফোর্স’ যে নির্দেশনা দিয়েছে সেটাও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২০ মহররম ১৪৪২, ২২ ভাদ্র ১৪২৭

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে টাস্কফোর্সের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করুন

পাবনা জেলার পদ্মা ও যমুনা নদীর ২৪টি পয়েন্ট থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে এক কোটি টাকার বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বালুর টাকা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা হচ্ছে এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। আরো অভিযোগ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে খোদ সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান জড়িত এবং বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের তিনিই নাকি হোতা। তিনি প্রতিদিন বালু উত্তোলনকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা পান। এ নিয়ে গত সোমবার ‘সংবাদ’ সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. ফিরোজ কবির বালু উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও বন্ধ হচ্ছে না। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন স্থানে নদী তীর ভেঙে যাওয়ায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে নদীর নাব্যতা রক্ষা ও নদীর গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখা সংক্রান্ত ‘টাস্কাফোর্স’।

শুধু যে পাবনাতেই এমন হচ্ছে তা নয়। সারা দেশেই বিভিন্ন নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এর সঙ্গে প্রশাসন এবং স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা জড়িত থাকে। নদীভাঙনের একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। কিন্তু যাদের উচিত এগুলো বন্ধ করা বা ব্যবস্থা নেয়া তারা নিজেরাই এই অবৈধ কাজের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকছে। সর্ষের মধ্যেই যদি ভূত থাকে। তাহলে সে ভূত তাড়ানো যাবে না।

স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং প্রভাবশালীদের অবৈধভাবে জাতীয় সম্পদ হাতিয়ে নেয়া এবং দখল করার এই যে চর্চা, তা বাংলাদেশে চিরস্থায়ী এক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আদর্শ নয় বা জনস্বার্থের কোন রাজনীতি নয় কেবল স্বল্প সময়ে অবৈধভাবে বিপুল অর্থ উপার্জন করার জন্য তারা এমন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে।

দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে উদাসীন বা নিষ্ক্রিয়। আর এসব অপকর্মের দায়ভার শেষ পর্যন্ত সরকারের উপরই বর্তায়। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও সুবিধাবাদীদের দৌরাত্ম্যে সরকারের অনেক বড় অর্জনও চাপা পড়ে যায়। তাই অনতিবিলম্বে এই ধরনের অপকর্মের হোতাদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া প্রয়াজন। কেবল পাবনা জেলার পদ্মা ও যমুনা নদীর ২৪টি পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করাই যথেষ্ট নয়, দেশবাসী এ ধরনের যেসব অনিয়ম ও সীমালঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে সেগুলোকেও জবাবদিহিতা ও নজরদারিরে মধ্যে আনা সরকারের ভাবমূর্তির স্বার্থেই জরুরি হয়ে পড়েছে। বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ‘টাস্কফোর্স’ যে নির্দেশনা দিয়েছে সেটাও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।