টমটম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না পৌরসভা

একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ জানানোর পরও ব্যাটারি চালিত অবৈধ টমটম মালিক চালকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না হবিগঞ্জ পৌরসভা।

যত্রতত্র পার্কিং আর আগের ৫ টাকা ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিত-া নিত্যদিনের। বিশেষ করে নারী যাত্রীদের সঙ্গে জোরজবরদস্তি ও খারাপ ব্যবহারের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় টমটম এখন হবিগঞ্জবাসীর মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্প্রতি টমটমের ৫ টাকা ভাড়া নিয়ে সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হলেও আইন-কানুনের তোয়াক্কাও করছে না টমটম চালক ও মালিকরা। তারা তাদের মতো করে ১০ টাকা ভাড়াই নিচ্ছে। পুরুষ যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে ৫ টাকা আর না করলে ১০ টাকা এবং কোন কারণ ছাড়াই মহিলা যাত্রীদের কাছ থেকেই ১০ টাকা করে নিচ্ছে এসব টমটম চালকরা।

টমটম চালকরা বলছে, তারা তালিকা পেয়েছে, তাদেরকে বলা হয়েছে ১০ টাকা করে ভাড়া নিতে। তবে কে বলেছে, কারা বলেছে জানতে চাইলে তারা একেকবার একেক কথা বলছে।

তবে পৌরসভা কর্তৃক ভাড়ার তালিকা দেখতে চাইলেই বাধে বিপত্তি। তারা তালিকা দেখায় একটি সংগঠনের। যে তালিকায় ওই সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর রয়েছে। ওই তালিকায় মেয়রের স্বাক্ষর নেই কেন জানতে চাইলে বাকবিতন্ডা শুরু হয় প্রায়ই যাত্রীদের সঙ্গে। কোন কোন সময় বাকবিত-া হাতাহাতিতেও গড়ায়। চালকদের একটাই কথা ভাড়া বেশি নিলে পৌরসভা কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমরা তো লুকিয়ে ১০ টাকা নেই না।

সরেজমিন দেখা যায়, শহরের বাসা বাড়ির গৃহবধূ ও নারী যাত্রীরা ভাড়া নিয়ে কথা বললেই চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন। মেয়রকে সাংবাদিকদের মাধ্যমে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও মেয়র বলছেন, যদি কেউ খুশি হয়ে ১০ টাকা দেয় তবে ভিন্নকথা, না হলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন এবং ওই সংগঠনের লোকজনের সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু তার আশ্বাসের প্রতিফলন ঘটেনি গত এক সপ্তাহেও।

সচেতন মহলের অভিমত, ১২শ’ টমটম ছাড়াও বৈধ অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৩-৪ হাজার টমটম চলাচল করছে হবিগঞ্জ শহরে। একদিকে শহরের বৈধ অবৈধ টমটমগুলোর যানজটের সৃষ্টিকে যোগান দিচ্ছে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা অবৈধ টমটম। যা পৌরবাসীর নাগরিক জীবনকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে।

জানা যায়, আগে পৌর এলাকার ভেতর সবখানে ভাড়া ছিল ৫ টাকা। তবে স্থান ভেদে অর্থাৎ শহরে প্রবেশপথ পোদ্দার বাড়ি/২নং পুল থেকে চৌধুরী বাজার পর্যন্ত সরাসরি ১০ টাকা এবং চৌধুরী বাজার থেকে পৌর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৫/১০ টাকা নেয়া হতো এবং মানবিক কারণে যাত্রীরাও উল্লেখিত স্থান পর্যন্ত ১০ টাকা ভাড়া দিতে আপত্তি করতেন না। সম্প্রতি মহামারী করোনার সময় জাতীয়ভাবে গণপরিবহণে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হলে হবিগঞ্জেও টমটমসহ অন্যান্য গণপরিবহনেও ভাড়ানো হয়।

গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের ভাড়া বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হলে হবিগঞ্জের সব গণপরিবহণ আগের ভাড়ায় ফিরে যায়। তবে ফিরেনি বৈধ-অবৈধ টমটম মালিকরা। উল্টো হবিগঞ্জ টমটম মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠন নিজেদের মনগড়া মতো তালিকা করে।

শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২১ মহররম ১৪৪২, ২৩ ভাদ্র ১৪২৭

হবিগঞ্জ শহরে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য

টমটম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না পৌরসভা

মোহাম্মদ শাহ আলম, হবিগঞ্জ

একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ জানানোর পরও ব্যাটারি চালিত অবৈধ টমটম মালিক চালকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না হবিগঞ্জ পৌরসভা।

যত্রতত্র পার্কিং আর আগের ৫ টাকা ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিত-া নিত্যদিনের। বিশেষ করে নারী যাত্রীদের সঙ্গে জোরজবরদস্তি ও খারাপ ব্যবহারের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় টমটম এখন হবিগঞ্জবাসীর মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্প্রতি টমটমের ৫ টাকা ভাড়া নিয়ে সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হলেও আইন-কানুনের তোয়াক্কাও করছে না টমটম চালক ও মালিকরা। তারা তাদের মতো করে ১০ টাকা ভাড়াই নিচ্ছে। পুরুষ যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে ৫ টাকা আর না করলে ১০ টাকা এবং কোন কারণ ছাড়াই মহিলা যাত্রীদের কাছ থেকেই ১০ টাকা করে নিচ্ছে এসব টমটম চালকরা।

টমটম চালকরা বলছে, তারা তালিকা পেয়েছে, তাদেরকে বলা হয়েছে ১০ টাকা করে ভাড়া নিতে। তবে কে বলেছে, কারা বলেছে জানতে চাইলে তারা একেকবার একেক কথা বলছে।

তবে পৌরসভা কর্তৃক ভাড়ার তালিকা দেখতে চাইলেই বাধে বিপত্তি। তারা তালিকা দেখায় একটি সংগঠনের। যে তালিকায় ওই সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর রয়েছে। ওই তালিকায় মেয়রের স্বাক্ষর নেই কেন জানতে চাইলে বাকবিতন্ডা শুরু হয় প্রায়ই যাত্রীদের সঙ্গে। কোন কোন সময় বাকবিত-া হাতাহাতিতেও গড়ায়। চালকদের একটাই কথা ভাড়া বেশি নিলে পৌরসভা কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমরা তো লুকিয়ে ১০ টাকা নেই না।

সরেজমিন দেখা যায়, শহরের বাসা বাড়ির গৃহবধূ ও নারী যাত্রীরা ভাড়া নিয়ে কথা বললেই চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন। মেয়রকে সাংবাদিকদের মাধ্যমে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও মেয়র বলছেন, যদি কেউ খুশি হয়ে ১০ টাকা দেয় তবে ভিন্নকথা, না হলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন এবং ওই সংগঠনের লোকজনের সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু তার আশ্বাসের প্রতিফলন ঘটেনি গত এক সপ্তাহেও।

সচেতন মহলের অভিমত, ১২শ’ টমটম ছাড়াও বৈধ অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৩-৪ হাজার টমটম চলাচল করছে হবিগঞ্জ শহরে। একদিকে শহরের বৈধ অবৈধ টমটমগুলোর যানজটের সৃষ্টিকে যোগান দিচ্ছে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা অবৈধ টমটম। যা পৌরবাসীর নাগরিক জীবনকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে।

জানা যায়, আগে পৌর এলাকার ভেতর সবখানে ভাড়া ছিল ৫ টাকা। তবে স্থান ভেদে অর্থাৎ শহরে প্রবেশপথ পোদ্দার বাড়ি/২নং পুল থেকে চৌধুরী বাজার পর্যন্ত সরাসরি ১০ টাকা এবং চৌধুরী বাজার থেকে পৌর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৫/১০ টাকা নেয়া হতো এবং মানবিক কারণে যাত্রীরাও উল্লেখিত স্থান পর্যন্ত ১০ টাকা ভাড়া দিতে আপত্তি করতেন না। সম্প্রতি মহামারী করোনার সময় জাতীয়ভাবে গণপরিবহণে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হলে হবিগঞ্জেও টমটমসহ অন্যান্য গণপরিবহনেও ভাড়ানো হয়।

গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের ভাড়া বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হলে হবিগঞ্জের সব গণপরিবহণ আগের ভাড়ায় ফিরে যায়। তবে ফিরেনি বৈধ-অবৈধ টমটম মালিকরা। উল্টো হবিগঞ্জ টমটম মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠন নিজেদের মনগড়া মতো তালিকা করে।