আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন নতুন ডিআইজি

কক্সবাজার অন্যতম লক্ষ্য

চট্টগ্রাম বিভাগে কক্সবাজারসহ অন্যান্য জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে কাজ শুরু করেছেন নতুন ডিআইজি আনোয়ার হোসেন। বিভাগের জেলাগুলোতে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ঘুরে ফিরে বছরের পর বছর দায়িত্ব পালন করছেন তাদের চিহ্নিত করে রদবদল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম রেঞ্জের সব জেলাকে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত করতে পুলিশ কাজ করছেন। চট্টগ্রাম রেঞ্জের নতুন ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন কর্মস্থলে যোগদান করে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।

যোগদানের পর তিনি আলোচিত কক্সবাজার জেলা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। এ পুলিশ কর্মকর্তা এক সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন (ডিএমপি) পুলিশের হেডকোয়াটার্স, মতিঝিল বিভাগ ও মিরপুরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পাালন করেছেন। এছাড়াও তিনি পুলিশ হেডকোয়াটার্সের গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। সর্বশেষ গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হিসেবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর তাকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের দায়িত্ব দেয়া হয়। জেলা পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, জেলার অধিকাংশ থানা এলাকার নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাব রয়েছে। দুর্গম দ্বীপ ও চরাঞ্চলে গিয়ে ডিউটি করার মতো যানবাহনসহ অন্যান্য ব্যবস্থা নেই। পুলিশ যাওয়ার আগে অপরাধীরা পালিয়ে যায়। সরু রাস্তায় (চিপা রাস্তায়) বৈদ্যুতিক লাইটের ব্যবস্থা না থাকায় অপরাধীরা অন্ধকারে পালিয়ে যায়।

রেঞ্জ ডিআইজি আনোয়ার হোসেন মুঠোফোনে সংবাদকে বলেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জে মোট ১১টি জেলা। জেলাগুলো হলো- চট্টগ্রাম সদর জেলা, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, বাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলা। এসব জেলার ১০৯টি থানার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ২২ হাজার পুলিশ দায়িত্ব পাালন করছেন। থানা পুলিশ ছাড়াও বিশেষায়িত অন্যান্য ইউনিট কাজ করছেন। তারা জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মামলা তদন্ত করছেন। ডিআইজি রেঞ্জের প্রতিটি জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন। সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদবাজি বন্ধে তিনি কঠোর ব্যবস্থা নিবেন।

জানা গেছে, নয়া ডিআইজি কাজে যোগদান করার একদিন পর গত ৭ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার যান। সম্প্রতি কক্সবাজারের টেকনাফ থানার আলোচিত ওসি প্রদীপের অপকর্ম নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনা হয়েছে। সেখানে প্রদীপ একই ছিলেন না। তার অপকর্মে আরও অনেকেই জড়িত ছিলেন। প্রদীপের অপকর্মের কারণে পুলিশের গৌরবময় অর্জন অনেকটাই ম্লান হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কিন্তু প্রদীপের অপকর্মের দায়িত্ব পুলিশ বাহিনী নেয়নি। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এরপর কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন থানার ওসিসহ পুলিশের অনেক কর্মকর্তার রদবদল করা হয়েছে। নতুন করে আবার কক্সবাজারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে এবং পর্যটক আকর্ষণ করতে জেলায় যা কিছু দরকার সবই করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কক্সবাজারের প্রথম সমস্যাই ইয়াবা ও মাদক। এ মাদক নিয়ে বন্দুকযুদ্ধ হচ্ছে। আর মানব পাচার, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও সেন্টমার্টিন, চকরিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে অপরাধীদের দেশি অস্ত্র তৈরি, বিক্রি, চোরাচালানিসহ নানা অপকর্ম করছে অপরাধীরা। নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচরসহ বহু চরে অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। পুলিশ যাওয়ার আগেই অপরাধীরা পালিয়ে যায়। আর সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিত লক্ষ্মীপুরে এখনও সন্ত্রাস কমেনি। পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি বান্দরবানে স্থানীয় রাজনৈতিক কোন্দল গোপন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি নিয়ে নিত্য কোন্দল চলছে। এছাড়াও সীমান্তবর্র্তী জেলাগুলোতে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য আছে। বান্দরবান ও রাঙ্গামাটিতে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়সহ নানা অপরাধ ঘটে থাকে। গভীর অরণ্যে অপরাধীরা আশ্রয় নিয়ে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করছে।

নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন থানায় অনেক দারোগা বছরের পর বছর একই থানা এলাকায় থেকে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। তারা সিন্ডিকেট করে এলাকায় মাদক ব্যবসা করেন। আবার অনেক দারোগা সালিসের নামে দুই পক্ষ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সালিস করেন। অনেকেই একই থানায় বছরের পর বছর দায়িত্ব পালন করে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ করে দেন। নোয়াখালীতে হত্যাসহ বহু মামলার আসামি এলাকায় অবস্থান করছে। র‌্যাব অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করলেও পুলিশ তাদের ধরে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নোয়াখালীতে অ্যাম্বুলেন্স ও বালুভর্তি, ইটভর্তি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানযোগে মাদক নেয়া হয়। এখন এলাকার প্রধান সমস্যা মাদক ও বোখাটেদের উপদ্রব।

এক সময়ের সন্ত্রাসের জনপদ লক্ষ্মীপুর জেলার অপরাধ প্রবণতা বেশি হলেও সেখানে পুলিশের পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাবে টহল দেয়া কষ্টকর বলে স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। চন্দ্রগঞ্জ থানাসহ গ্রামগঞ্জের সরু রাস্তায় বৈদ্যুতিক লাইট বা আলোর ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় অপরাধীরা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়।

কুমিল্লায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ মুহূর্তে কুমিল্লার প্রথম সমস্যা মাদক। সীমান্তবর্তী উপজেলায় মাদক ব্যবসা জমজমাট। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, সদর দক্ষিণ ও বুড়িচং কয়েকটি সীমান্তবর্তী এলাকা মাদক নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। মাদক নিয়ে প্রায় হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। মাদকসহ নানা কারণে পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে। আর ফেনীতে সকড়ক মহাসড়কে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনাও রয়েছে।

এদিকে রাঙ্গামাটি জেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার কারণে অর্থের অভাবে দুর্গম অঞ্চলে ছোটখাট অপরাধ বাড়ছে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গামাটিতে পুলিশের টহল দেয়ার মতো ও পাহাড়ি অঞ্চলে চালানোর মতো উন্নত যানবাহনের অভাব রয়েছে। যানবাহন না থাকায় পুলিশ সব এলাকায় টহল দিতে পারছে না। এমনকি দুর্গম অঞ্চলে যাওয়ার ইঞ্জিনচালিত নোকারও সংকট রয়েছে। ফলে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রকে আইনের আওতায় আনা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, নতুন রেঞ্জ ডিআইজি ভালো অফিসার, সৎ হিসেবে পরিচিতি আছে। এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। পুলিশের নানামুখী সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হলে কাজের গতিও বাড়বে বলে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা মনে করেন। এভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা মতামত দেন।

সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৪ মহররম ১৪৪২, ২৬ ভাদ্র ১৪২৭

চট্টগ্রাম বিভাগে

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন নতুন ডিআইজি

কক্সবাজার অন্যতম লক্ষ্য

বাকী বিল্লাহ

চট্টগ্রাম বিভাগে কক্সবাজারসহ অন্যান্য জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে কাজ শুরু করেছেন নতুন ডিআইজি আনোয়ার হোসেন। বিভাগের জেলাগুলোতে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ঘুরে ফিরে বছরের পর বছর দায়িত্ব পালন করছেন তাদের চিহ্নিত করে রদবদল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম রেঞ্জের সব জেলাকে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত করতে পুলিশ কাজ করছেন। চট্টগ্রাম রেঞ্জের নতুন ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন কর্মস্থলে যোগদান করে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।

যোগদানের পর তিনি আলোচিত কক্সবাজার জেলা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। এ পুলিশ কর্মকর্তা এক সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন (ডিএমপি) পুলিশের হেডকোয়াটার্স, মতিঝিল বিভাগ ও মিরপুরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পাালন করেছেন। এছাড়াও তিনি পুলিশ হেডকোয়াটার্সের গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। সর্বশেষ গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হিসেবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর তাকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের দায়িত্ব দেয়া হয়। জেলা পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, জেলার অধিকাংশ থানা এলাকার নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাব রয়েছে। দুর্গম দ্বীপ ও চরাঞ্চলে গিয়ে ডিউটি করার মতো যানবাহনসহ অন্যান্য ব্যবস্থা নেই। পুলিশ যাওয়ার আগে অপরাধীরা পালিয়ে যায়। সরু রাস্তায় (চিপা রাস্তায়) বৈদ্যুতিক লাইটের ব্যবস্থা না থাকায় অপরাধীরা অন্ধকারে পালিয়ে যায়।

রেঞ্জ ডিআইজি আনোয়ার হোসেন মুঠোফোনে সংবাদকে বলেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জে মোট ১১টি জেলা। জেলাগুলো হলো- চট্টগ্রাম সদর জেলা, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, বাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলা। এসব জেলার ১০৯টি থানার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ২২ হাজার পুলিশ দায়িত্ব পাালন করছেন। থানা পুলিশ ছাড়াও বিশেষায়িত অন্যান্য ইউনিট কাজ করছেন। তারা জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মামলা তদন্ত করছেন। ডিআইজি রেঞ্জের প্রতিটি জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন। সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদবাজি বন্ধে তিনি কঠোর ব্যবস্থা নিবেন।

জানা গেছে, নয়া ডিআইজি কাজে যোগদান করার একদিন পর গত ৭ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার যান। সম্প্রতি কক্সবাজারের টেকনাফ থানার আলোচিত ওসি প্রদীপের অপকর্ম নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনা হয়েছে। সেখানে প্রদীপ একই ছিলেন না। তার অপকর্মে আরও অনেকেই জড়িত ছিলেন। প্রদীপের অপকর্মের কারণে পুলিশের গৌরবময় অর্জন অনেকটাই ম্লান হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কিন্তু প্রদীপের অপকর্মের দায়িত্ব পুলিশ বাহিনী নেয়নি। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এরপর কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন থানার ওসিসহ পুলিশের অনেক কর্মকর্তার রদবদল করা হয়েছে। নতুন করে আবার কক্সবাজারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে এবং পর্যটক আকর্ষণ করতে জেলায় যা কিছু দরকার সবই করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কক্সবাজারের প্রথম সমস্যাই ইয়াবা ও মাদক। এ মাদক নিয়ে বন্দুকযুদ্ধ হচ্ছে। আর মানব পাচার, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও সেন্টমার্টিন, চকরিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে অপরাধীদের দেশি অস্ত্র তৈরি, বিক্রি, চোরাচালানিসহ নানা অপকর্ম করছে অপরাধীরা। নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচরসহ বহু চরে অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। পুলিশ যাওয়ার আগেই অপরাধীরা পালিয়ে যায়। আর সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিত লক্ষ্মীপুরে এখনও সন্ত্রাস কমেনি। পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি বান্দরবানে স্থানীয় রাজনৈতিক কোন্দল গোপন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি নিয়ে নিত্য কোন্দল চলছে। এছাড়াও সীমান্তবর্র্তী জেলাগুলোতে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য আছে। বান্দরবান ও রাঙ্গামাটিতে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়সহ নানা অপরাধ ঘটে থাকে। গভীর অরণ্যে অপরাধীরা আশ্রয় নিয়ে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করছে।

নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন থানায় অনেক দারোগা বছরের পর বছর একই থানা এলাকায় থেকে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। তারা সিন্ডিকেট করে এলাকায় মাদক ব্যবসা করেন। আবার অনেক দারোগা সালিসের নামে দুই পক্ষ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সালিস করেন। অনেকেই একই থানায় বছরের পর বছর দায়িত্ব পালন করে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ করে দেন। নোয়াখালীতে হত্যাসহ বহু মামলার আসামি এলাকায় অবস্থান করছে। র‌্যাব অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করলেও পুলিশ তাদের ধরে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নোয়াখালীতে অ্যাম্বুলেন্স ও বালুভর্তি, ইটভর্তি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানযোগে মাদক নেয়া হয়। এখন এলাকার প্রধান সমস্যা মাদক ও বোখাটেদের উপদ্রব।

এক সময়ের সন্ত্রাসের জনপদ লক্ষ্মীপুর জেলার অপরাধ প্রবণতা বেশি হলেও সেখানে পুলিশের পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাবে টহল দেয়া কষ্টকর বলে স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। চন্দ্রগঞ্জ থানাসহ গ্রামগঞ্জের সরু রাস্তায় বৈদ্যুতিক লাইট বা আলোর ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় অপরাধীরা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়।

কুমিল্লায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ মুহূর্তে কুমিল্লার প্রথম সমস্যা মাদক। সীমান্তবর্তী উপজেলায় মাদক ব্যবসা জমজমাট। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, সদর দক্ষিণ ও বুড়িচং কয়েকটি সীমান্তবর্তী এলাকা মাদক নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। মাদক নিয়ে প্রায় হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। মাদকসহ নানা কারণে পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে। আর ফেনীতে সকড়ক মহাসড়কে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনাও রয়েছে।

এদিকে রাঙ্গামাটি জেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার কারণে অর্থের অভাবে দুর্গম অঞ্চলে ছোটখাট অপরাধ বাড়ছে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গামাটিতে পুলিশের টহল দেয়ার মতো ও পাহাড়ি অঞ্চলে চালানোর মতো উন্নত যানবাহনের অভাব রয়েছে। যানবাহন না থাকায় পুলিশ সব এলাকায় টহল দিতে পারছে না। এমনকি দুর্গম অঞ্চলে যাওয়ার ইঞ্জিনচালিত নোকারও সংকট রয়েছে। ফলে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রকে আইনের আওতায় আনা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, নতুন রেঞ্জ ডিআইজি ভালো অফিসার, সৎ হিসেবে পরিচিতি আছে। এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। পুলিশের নানামুখী সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হলে কাজের গতিও বাড়বে বলে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা মনে করেন। এভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা মতামত দেন।