শর্ত মেনে শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে না বাংলাদেশ ক্রিকেট দল

শর্ত বিবেচনার নির্দেশ লঙ্কান মন্ত্রীর

কোয়ারেন্টিনের কড়াকড়ি শর্তমেনে শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে আগ্রহী নয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

বিসিবি শক্ত অবস্থানের পর নড়েচড়ে বসেছে দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সফরের জন্য বাংলাদেশের চাহিদা ফের বিবেচনা করতে এসএলসিকে নির্দেশ দিয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী নামাল রাজাপাকসে।

শ্রীলঙ্কা সরকারের নির্দেশনা, অনুশীলন ছাড়াই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন থাকতে হবে সফরকারী দলকে। বিসিবি সর্বোচ্চ ৭ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাজি। এ জন্য শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের নতুন প্রস্তাবে না করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি। শ্রীলঙ্কান সরকারের সাফ কথা, দ্বীপরাষ্ট্রে অবতরণের পরপরই হোটেলেবন্দী থাকতে হবে ক্রিকেটারদের। সেখানে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন হবে। এ সময়ে পরপর তিনবার করোনা টেস্টের ফল নেগেটিভ হলে মাঠে নামার অনুমতি পাবেন ক্রিকেটাররা। শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ প্রস্তাব শনিবার বিসিবিকে পাঠিয়েছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড।

শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে গতকাল দুপুরে বৈঠকে বসেছিলেন টিম ম্যানেজমেন্ট ও বিসিবির শীর্ষ পরিচালকরা। সেই বৈঠকে উপস্থিত হন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বৈঠক শেষে বোর্ড প্রধান সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সফরের বিষয়ে শ্রীলঙ্কা বোর্ড যে টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন দিয়েছে তা ইতিহাসে বিরল। এ রকম নিয়ম-কানুনের মধ্যে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই সম্ভব না। এ তথ্য ওদের জানিয়ে দেব। আমরা যা ভেবেছিলাম তা ধারের কাছেও নেই। আবার অন্যান্য দেশে যেগুলো চলছে সেগুলোর ধারের কাছেও নেই। অন্যান্য দেশে সাত দিনের কোয়ারেন্টিনের মধ্যে জিম, ট্রেনিং শুরু করতে পারে। লঙ্কান প্রস্তাবে যেটা দেখলাম ১৪ দিন হোটেলের রুমের থেকেই বের হতে পারবে না। খাওয়ার জন্য বের হতে পারবে না। ওরা কি বলতে চাচ্ছে পরিস্কার বুঝতে পারছি না। এটা ছেলে খেলা না। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। এভাবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ খেলা যায় না।’ যখন শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা তখন ক্রিকেটাররা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠে অনুশীলন করছেন। বিদেশি কোচিং স্টাফরা প্রায় সবাই এখন বাংলাদেশে। এরই মধ্যে ছেলেদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। এজন্য শীঘ্রই দেশের মাটিতে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি পাপন। তবে আন্তর্জাতিক সিরিজ হবে নাকি ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করবেন তা পরিস্কার করেননি বিসিবি সভাপতি।

বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমরা ক্রিকেট ফিরিয়ে আনবো এতোটুকু আমরা জানি। কিভাবে তা জানি না। বাইরের কারও সঙ্গে হবে কি না জানি না। আমারা নিজেদের ক্রিকেট শুরু করে দিব, হয়তো ঘরোয়া ক্রিকেটও। কি করবো সেটা এখন বলছি না। কিছু তো একটা করবোই। ক্রিকেট মাঠে ফেরাবো। এখন কোচিং স্টাফরা আছে। ছেলেরা এতোদিন খেলার বাইরে, ওদেরকে আবার খেলার মাঠে নিয়ে আসব। ’

ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ শুরু হয়েছিল মার্চে। করোনার কারণে প্রথম রাউন্ডের পরই লীগ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়েছে। ঢাকা লীগ দিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হতে পারে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরেও বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘একেবারে ওই রকম কিছু করতে পারব কি না জানি না। আমরা তো সব ক্লাবগুলোকে ম্যানেজ করতে পারব না। যেটুকু আমরা ম্যানেজ করতে পারব ততজনকে নিয়েই করব। এটা আপনার ৪০ বা ৬০ খেলোয়াড় হতে পারে। করোনাকালীন সময়ে ওদের নিরাপত্তা বলয় নিশ্চিত করতে হবে। আমরা যতটুকু নিয়ন্ত্রণ করতে পারব ততটুকু খেলা চালাব। তবে মাঠে খেলা গড়াবেই।’

লঙ্কান বোর্ডকে মন্ত্রীর নির্দেশ

শ্রীলঙ্কান বোর্ডের কড়া শর্ত আরোপ করে পাঠানো চিঠির প্রতিক্রিয়ায় বিসিবি শক্ত অবস্থানের পর নড়েচড়ে বসেছে দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য বাংলাদেশের চাহিদা ফের বিবেচনা করতে এসএলসিকে নির্দেশ দিয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী নামাল রাজাপাকসে। টুইট করে তিনি জানান, বিসিবির চাহিদা আবার বিবেচনা করতে বলেছেন তিনি, ‘আমরা সবাই জানি যে কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে প্রবল দাপট দেখাচ্ছে। তবে উপমহাদেশের ক্রিকেটের স্বার্থে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছি কোভিড টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে আলাপ করে বিসিবির ইস্যু আবার বিবেচনা করতে।’

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৫ মহররম ১৪৪২, ২৭ ভাদ্র ১৪২৭

শর্ত মেনে শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে না বাংলাদেশ ক্রিকেট দল

শর্ত বিবেচনার নির্দেশ লঙ্কান মন্ত্রীর

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

কোয়ারেন্টিনের কড়াকড়ি শর্তমেনে শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে আগ্রহী নয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

বিসিবি শক্ত অবস্থানের পর নড়েচড়ে বসেছে দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সফরের জন্য বাংলাদেশের চাহিদা ফের বিবেচনা করতে এসএলসিকে নির্দেশ দিয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী নামাল রাজাপাকসে।

শ্রীলঙ্কা সরকারের নির্দেশনা, অনুশীলন ছাড়াই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন থাকতে হবে সফরকারী দলকে। বিসিবি সর্বোচ্চ ৭ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাজি। এ জন্য শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের নতুন প্রস্তাবে না করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি। শ্রীলঙ্কান সরকারের সাফ কথা, দ্বীপরাষ্ট্রে অবতরণের পরপরই হোটেলেবন্দী থাকতে হবে ক্রিকেটারদের। সেখানে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন হবে। এ সময়ে পরপর তিনবার করোনা টেস্টের ফল নেগেটিভ হলে মাঠে নামার অনুমতি পাবেন ক্রিকেটাররা। শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ প্রস্তাব শনিবার বিসিবিকে পাঠিয়েছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড।

শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে গতকাল দুপুরে বৈঠকে বসেছিলেন টিম ম্যানেজমেন্ট ও বিসিবির শীর্ষ পরিচালকরা। সেই বৈঠকে উপস্থিত হন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বৈঠক শেষে বোর্ড প্রধান সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সফরের বিষয়ে শ্রীলঙ্কা বোর্ড যে টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন দিয়েছে তা ইতিহাসে বিরল। এ রকম নিয়ম-কানুনের মধ্যে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই সম্ভব না। এ তথ্য ওদের জানিয়ে দেব। আমরা যা ভেবেছিলাম তা ধারের কাছেও নেই। আবার অন্যান্য দেশে যেগুলো চলছে সেগুলোর ধারের কাছেও নেই। অন্যান্য দেশে সাত দিনের কোয়ারেন্টিনের মধ্যে জিম, ট্রেনিং শুরু করতে পারে। লঙ্কান প্রস্তাবে যেটা দেখলাম ১৪ দিন হোটেলের রুমের থেকেই বের হতে পারবে না। খাওয়ার জন্য বের হতে পারবে না। ওরা কি বলতে চাচ্ছে পরিস্কার বুঝতে পারছি না। এটা ছেলে খেলা না। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। এভাবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ খেলা যায় না।’ যখন শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা তখন ক্রিকেটাররা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠে অনুশীলন করছেন। বিদেশি কোচিং স্টাফরা প্রায় সবাই এখন বাংলাদেশে। এরই মধ্যে ছেলেদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। এজন্য শীঘ্রই দেশের মাটিতে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি পাপন। তবে আন্তর্জাতিক সিরিজ হবে নাকি ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করবেন তা পরিস্কার করেননি বিসিবি সভাপতি।

বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমরা ক্রিকেট ফিরিয়ে আনবো এতোটুকু আমরা জানি। কিভাবে তা জানি না। বাইরের কারও সঙ্গে হবে কি না জানি না। আমারা নিজেদের ক্রিকেট শুরু করে দিব, হয়তো ঘরোয়া ক্রিকেটও। কি করবো সেটা এখন বলছি না। কিছু তো একটা করবোই। ক্রিকেট মাঠে ফেরাবো। এখন কোচিং স্টাফরা আছে। ছেলেরা এতোদিন খেলার বাইরে, ওদেরকে আবার খেলার মাঠে নিয়ে আসব। ’

ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ শুরু হয়েছিল মার্চে। করোনার কারণে প্রথম রাউন্ডের পরই লীগ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়েছে। ঢাকা লীগ দিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হতে পারে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরেও বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘একেবারে ওই রকম কিছু করতে পারব কি না জানি না। আমরা তো সব ক্লাবগুলোকে ম্যানেজ করতে পারব না। যেটুকু আমরা ম্যানেজ করতে পারব ততজনকে নিয়েই করব। এটা আপনার ৪০ বা ৬০ খেলোয়াড় হতে পারে। করোনাকালীন সময়ে ওদের নিরাপত্তা বলয় নিশ্চিত করতে হবে। আমরা যতটুকু নিয়ন্ত্রণ করতে পারব ততটুকু খেলা চালাব। তবে মাঠে খেলা গড়াবেই।’

লঙ্কান বোর্ডকে মন্ত্রীর নির্দেশ

শ্রীলঙ্কান বোর্ডের কড়া শর্ত আরোপ করে পাঠানো চিঠির প্রতিক্রিয়ায় বিসিবি শক্ত অবস্থানের পর নড়েচড়ে বসেছে দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য বাংলাদেশের চাহিদা ফের বিবেচনা করতে এসএলসিকে নির্দেশ দিয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী নামাল রাজাপাকসে। টুইট করে তিনি জানান, বিসিবির চাহিদা আবার বিবেচনা করতে বলেছেন তিনি, ‘আমরা সবাই জানি যে কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে প্রবল দাপট দেখাচ্ছে। তবে উপমহাদেশের ক্রিকেটের স্বার্থে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছি কোভিড টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে আলাপ করে বিসিবির ইস্যু আবার বিবেচনা করতে।’