ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলন আজ শুরু

সীমান্ত হত্যা মূল আলোচ্যসূচিতে থাকছে

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেল শুরু হচ্ছে। আজ ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত তবে। তবে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে ১৭ সেপ্টেম্বর বেলা পৌনে ১১টায়। গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিজস্ব এয়ারক্রাফট ত্রুটির কথা জানিয়ে ঢাকায় পৌঁছতে পারেনি বিএসএফ প্রতিনিধি দল। ফলে ওইদিন সম্মেলন স্থগিত করা হয়। নতুন সময় সূচিতে ৬ দিন থেকে কমিয়ে ৪ দিনের সম্মেলন করা হয়েছে। এক দফা পিছিয়ে শুরু হওয়া এবারের সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারতের প্রতিশ্রুতি মূল এজেন্ডা হওয়ার প্রয়োজন মনে করে মত দিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং মানবাধিবার কর্মীরা। ভারতের সঙ্গে অন্য দেশের সীমান্তে যখন কোন হত্যার ঘটনা ঘটছে না সেখানে বাংলাদেশ সীমানায় কেন হত্যকা- সে বিষয়টিও পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলে তারা মত দিয়েছেন।

বিজিবি সূত্রে জানা যায়, আজ স্পেশাল এয়ার ক্রাফটে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ঢাকা পৌঁছাবেন। তবে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বিজিবি সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে শুরু হবে।

বিজিবি সদর দফতর থেকে জানানো হয়, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমান্ত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক বৈঠক ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটি বিজিবি সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে শুরু হবে। সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করবেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবি’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও বিজিবি সদর দফতরের সংশ্লিষ্ট স্টাফ অফিসাররা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যৌথ নদী কমিশন এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করবেন। সম্মেলনে বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করবেন। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে সম্মেলনের যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সীমান্ত সম্মেলন শেষে বিএসএফ প্রতিনিধিদল ঢাকা ত্যাগ করবেন।

বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সম্মেলন ৬ দিনের ছিল। নির্ধারিত সময়সূচি বাতিল হওয়ার নতুন সময় সূচিতে সম্মেলন ২ দিন কমিয়ে ৪ দিনে আনা হয়েছে। প্রথমদিন আনুষ্ঠানিক কোন আনাচনা না হওয়ায় মূলত সম্মেলটি ৩ দিনের হিসেবে ধরা যায়।

সীমান্ত সম্মেলনের বিষয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর বিজিবির পরিচালক (অপারেশন্স) ও মুখপাত্র লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান সংবাদকে জানান, ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সেস (বিএসএফ) এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির’র) মহাপরিচালক পর্যায়ে সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, চোরচালানসহ অপরাধ বন্ধে দুই দেশের সীমানায় আরও বেশি নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। এছাড়া দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নসহ সীমান্ত সংক্রান্ত সবগুলো বিষয়েই আলোচনা হবে। বৈঠকে বিএসএফ এবং বিজিবি প্রধানরা নেতৃত্ব দিবেন। বৈঠকের আলোচনার বিষয়গুলো নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।

বিজিবি সূত্র জানায়, বৈঠকে আন্তঃসীমান্ত বিশেষত মাদক চোরাচালান, কাটাতারের বেড়া ও অন্যান্য স্থাপনার মতো বিভিন্ন কাঠামো নির্মাণ ও অন্যান্য আলোচনার বিষয় ছিল। তবে তিনি এই বৈঠক একটি রুটিন বৈঠক। উভয় পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থের পাশাপাশি দুই সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের উপায় নিয়ে আলোচনা করবে। বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এম শাফিনুল ইসলাম এবং ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সেস (বিএসএফ) রকেশ আস্থানা বিজিবির পিলখানা সদর দফতরে দুই পক্ষের আলোচনার নেতৃত্ব দেবেন।

ভারতীয় সিমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যার বিষয়টি বেশ পুরোনো। এছাড়া অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন চোরাচালানও রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে সম্মেলনে বরাবর সীমান্ত হত্যাসহ এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে বার বার বিজিবি’র পর্যায় থেকে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জোড়ালো দাবি ছিল। সীমান্ত হত্যা শুন্যের কোথায় নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি ছিল বিএসএফের। কিন্তু এর পরও সীমান্তে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে গতকালের সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা প্রধান ইস্যু রাখার দাবি ছিল বিভিন্ন মহলের।

এবারের সম্মেলনের বিষয়ে গত শনিবার ১২ সেপ্টেম্বর আইন ও সালিস কেন্দ্রের সিনিয়র সহকারী পরিচাকল (প্রোগ্রাম) নীনা গোস্বামী সংবাদকে বলেন, বিজিবি-বিএসএফের এ সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা বন্ধ প্রধান এজেন্ডা হিসেবে আমরা দেখতে চাই। ভারত সীমান্ত হত্যা বন্ধে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটি কেন বাস্তবায়ন হচ্ছে না সেটিও আলোচনা হওয়া দরকার। মানুষের জীবন কেড়ে নেয়ার অধিকার কারও নেই। যাদের কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধ প্রতিশ্রুটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না (বিএসএফের কতিপয় সদস্য) তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। যদি কোন চোরাচালান বা অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটে তার জন্য আইনি ব্যবস্থা রয়েছে তাই বলে তো মানুষ মেরে ফেলার মতো ঘটনা হতে পারে না। এটি মানবাধিকার লঙ্গন। সম্প্রতী সীমান্ত হত্যা নিয়ে বাংলাদেশ ভারতীয় হাই কমিশনারের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন কোথায় কিভাবে মারা হচেছ তার জলন্ত উদাহরণ ফেলানী। ফেলানী হত্যার বিচার তো আজও হলো না।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অপ পিচ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্ট্যাটিজ এর প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) এএমএম মনিরুজ্জামান সংবাদকে বলেন, এবারের সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনার যে প্রতিশ্রুটি সেটির বাস্তবায়ন মূল এজেন্ডা হওয়া প্রয়োজন। সীমান্ত হত্যা কোন দেশেই গ্রহণযোগ্য নয়। সীমান্তে কোন সমস্যা থাকলে সেটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। মানুষ হত্যা কোন সমাধান নয়। ভারতের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায় থেকে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুদি দেয়া হয়েছিলো। কিন্তা আমরা দেখছি সেই প্রতিশ্রুটি রক্ষার কোন চিত্রই দেখা যাচ্ছে না। বরং বাংলাদেশের সীমারেখার মধ্যে বিএসএফ সদস্যরা গুলি করে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে। সীমান্তে যদি চোরাচাল হয়ে থাকে যদি অস্ত্রের ব্যবহারের প্রয়োজন হয় তাহলে তার ব্যবহারের নিয়ম আছে কিন্তু মানুষ হত্যার মতো ঘটনা হতে পারে না। মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা চাই সীমান্ত হত্যা চিরতরে বন্ধ হোক। সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।

বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৬ মহররম ১৪৪২, ২৮ ভাদ্র ১৪২৭

ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলন আজ শুরু

সীমান্ত হত্যা মূল আলোচ্যসূচিতে থাকছে

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেল শুরু হচ্ছে। আজ ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত তবে। তবে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে ১৭ সেপ্টেম্বর বেলা পৌনে ১১টায়। গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিজস্ব এয়ারক্রাফট ত্রুটির কথা জানিয়ে ঢাকায় পৌঁছতে পারেনি বিএসএফ প্রতিনিধি দল। ফলে ওইদিন সম্মেলন স্থগিত করা হয়। নতুন সময় সূচিতে ৬ দিন থেকে কমিয়ে ৪ দিনের সম্মেলন করা হয়েছে। এক দফা পিছিয়ে শুরু হওয়া এবারের সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারতের প্রতিশ্রুতি মূল এজেন্ডা হওয়ার প্রয়োজন মনে করে মত দিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং মানবাধিবার কর্মীরা। ভারতের সঙ্গে অন্য দেশের সীমান্তে যখন কোন হত্যার ঘটনা ঘটছে না সেখানে বাংলাদেশ সীমানায় কেন হত্যকা- সে বিষয়টিও পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলে তারা মত দিয়েছেন।

বিজিবি সূত্রে জানা যায়, আজ স্পেশাল এয়ার ক্রাফটে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ঢাকা পৌঁছাবেন। তবে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বিজিবি সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে শুরু হবে।

বিজিবি সদর দফতর থেকে জানানো হয়, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমান্ত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক বৈঠক ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটি বিজিবি সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে শুরু হবে। সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করবেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবি’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও বিজিবি সদর দফতরের সংশ্লিষ্ট স্টাফ অফিসাররা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যৌথ নদী কমিশন এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করবেন। সম্মেলনে বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করবেন। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে সম্মেলনের যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সীমান্ত সম্মেলন শেষে বিএসএফ প্রতিনিধিদল ঢাকা ত্যাগ করবেন।

বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সম্মেলন ৬ দিনের ছিল। নির্ধারিত সময়সূচি বাতিল হওয়ার নতুন সময় সূচিতে সম্মেলন ২ দিন কমিয়ে ৪ দিনে আনা হয়েছে। প্রথমদিন আনুষ্ঠানিক কোন আনাচনা না হওয়ায় মূলত সম্মেলটি ৩ দিনের হিসেবে ধরা যায়।

সীমান্ত সম্মেলনের বিষয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর বিজিবির পরিচালক (অপারেশন্স) ও মুখপাত্র লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান সংবাদকে জানান, ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সেস (বিএসএফ) এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির’র) মহাপরিচালক পর্যায়ে সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, চোরচালানসহ অপরাধ বন্ধে দুই দেশের সীমানায় আরও বেশি নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। এছাড়া দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নসহ সীমান্ত সংক্রান্ত সবগুলো বিষয়েই আলোচনা হবে। বৈঠকে বিএসএফ এবং বিজিবি প্রধানরা নেতৃত্ব দিবেন। বৈঠকের আলোচনার বিষয়গুলো নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।

বিজিবি সূত্র জানায়, বৈঠকে আন্তঃসীমান্ত বিশেষত মাদক চোরাচালান, কাটাতারের বেড়া ও অন্যান্য স্থাপনার মতো বিভিন্ন কাঠামো নির্মাণ ও অন্যান্য আলোচনার বিষয় ছিল। তবে তিনি এই বৈঠক একটি রুটিন বৈঠক। উভয় পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থের পাশাপাশি দুই সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের উপায় নিয়ে আলোচনা করবে। বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এম শাফিনুল ইসলাম এবং ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সেস (বিএসএফ) রকেশ আস্থানা বিজিবির পিলখানা সদর দফতরে দুই পক্ষের আলোচনার নেতৃত্ব দেবেন।

ভারতীয় সিমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যার বিষয়টি বেশ পুরোনো। এছাড়া অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন চোরাচালানও রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে সম্মেলনে বরাবর সীমান্ত হত্যাসহ এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে বার বার বিজিবি’র পর্যায় থেকে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জোড়ালো দাবি ছিল। সীমান্ত হত্যা শুন্যের কোথায় নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি ছিল বিএসএফের। কিন্তু এর পরও সীমান্তে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে গতকালের সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা প্রধান ইস্যু রাখার দাবি ছিল বিভিন্ন মহলের।

এবারের সম্মেলনের বিষয়ে গত শনিবার ১২ সেপ্টেম্বর আইন ও সালিস কেন্দ্রের সিনিয়র সহকারী পরিচাকল (প্রোগ্রাম) নীনা গোস্বামী সংবাদকে বলেন, বিজিবি-বিএসএফের এ সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা বন্ধ প্রধান এজেন্ডা হিসেবে আমরা দেখতে চাই। ভারত সীমান্ত হত্যা বন্ধে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটি কেন বাস্তবায়ন হচ্ছে না সেটিও আলোচনা হওয়া দরকার। মানুষের জীবন কেড়ে নেয়ার অধিকার কারও নেই। যাদের কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধ প্রতিশ্রুটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না (বিএসএফের কতিপয় সদস্য) তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। যদি কোন চোরাচালান বা অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটে তার জন্য আইনি ব্যবস্থা রয়েছে তাই বলে তো মানুষ মেরে ফেলার মতো ঘটনা হতে পারে না। এটি মানবাধিকার লঙ্গন। সম্প্রতী সীমান্ত হত্যা নিয়ে বাংলাদেশ ভারতীয় হাই কমিশনারের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন কোথায় কিভাবে মারা হচেছ তার জলন্ত উদাহরণ ফেলানী। ফেলানী হত্যার বিচার তো আজও হলো না।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অপ পিচ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্ট্যাটিজ এর প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) এএমএম মনিরুজ্জামান সংবাদকে বলেন, এবারের সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনার যে প্রতিশ্রুটি সেটির বাস্তবায়ন মূল এজেন্ডা হওয়া প্রয়োজন। সীমান্ত হত্যা কোন দেশেই গ্রহণযোগ্য নয়। সীমান্তে কোন সমস্যা থাকলে সেটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। মানুষ হত্যা কোন সমাধান নয়। ভারতের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায় থেকে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুদি দেয়া হয়েছিলো। কিন্তা আমরা দেখছি সেই প্রতিশ্রুটি রক্ষার কোন চিত্রই দেখা যাচ্ছে না। বরং বাংলাদেশের সীমারেখার মধ্যে বিএসএফ সদস্যরা গুলি করে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে। সীমান্তে যদি চোরাচাল হয়ে থাকে যদি অস্ত্রের ব্যবহারের প্রয়োজন হয় তাহলে তার ব্যবহারের নিয়ম আছে কিন্তু মানুষ হত্যার মতো ঘটনা হতে পারে না। মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা চাই সীমান্ত হত্যা চিরতরে বন্ধ হোক। সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।