পিয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনুন

ভারতের রফতানি বন্ধের খবরে অস্থির হয়ে উঠল দেশের পিয়াজের বাজার। ভারত সরকার গত ­সোমবার হঠাৎ করেই পিয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে। সেই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর আগেই গত সোমবার পুরো দিন দেশটি থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। এতে ঢাকার বাজারে বিকেল থেকেই দাম বাড়তে শুরু করে। রাজধানীর মসলা জাতীয় পণ্যের বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে সোমবার বিকেলের পর থেকেই পিয়াজ বিক্রি কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।

ভারত রফতানি নিষিদ্ধ করায় গতবারের মতো এবারও পিয়াজের বাজারে দুঃসংবাদ এল। অবশ্য তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, সব দেশের জন্যই। তবে এ সংকট বাংলাদেশেই বেশি দৃশ্যমান হয়। কারণ বাংলাদেশ চাহিদা মেটাতে যতটুকু পিয়াজ আমদানি করে, তার ৯০ শতাংশের বেশি আসে ভারত থেকে। পরিবহন সুবিধার জন্য ভারত থেকেই বেশির ভাগ পিয়াজ আমদানি করা হয়। সে ক্ষেত্রে দেশটি আকস্মিক রফতানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশকে বিপদে পড়তে হচ্ছে।

ভারত গত বছর যখন রফতানি বন্ধ করে দেয়, তখন দেশের বাজারে পিয়াজের দাম কেজিতে ২শ’ টাকা অতিক্রম করে। সে সময় গোটা দেশে পিয়াজ নিয়ে কারসাজি চলে। গুদামে পিয়াজ আটকে রেখে পিয়াজের দাম বাড়ানো হয়। এমনকি কোন কোন স্থানে বস্তায় বস্তায় পচা পিয়াজ ফেলে রাখতেও দেখা যায়। এবারও যেন সেটি না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। রফতানি বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পিয়াজ কেন বাজার থেকে উধাও হয়ে গেল এবং কেন পাইকারি দোকানে পিয়াজ বিক্রি বন্ধ হয়ে গেল সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। রফতানি বন্ধের খবরে যেসব আমদানিকারক পিয়াজ আড়তে সরবরাহ না করে মজুদ করে রাখছেন তাদের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।

ভারত বন্ধ করে দিলেই শুধু ব্যবসায়ীরা অন্য দেশে পিয়াজ খুঁজতে শুরু করেন। এক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আবশ্যক। পিয়াজ আমদানিতে শুধু ভারতের ওপর নির্ভর না করে পিয়াজ উৎপাদনকারী অন্যান্য দেশের দিকেও নজর দেয়া উচিত। যেসব দেশে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে পিয়াজ পাওয়া যায় সেসব দেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগাযোগ বাড়াতে হবে। পিয়াজের আমদানি বৃদ্ধি হলে আবারও পিয়াজের দাম স্বাভাবিক হবে।

এটা অস্বীকার করা যাবে না যেÑ রবিশস্য, বিশেষ করে ডাল, পিয়াজ, আদা, রসুন, ভোজ্যতেলের বীজ ইত্যাদি উৎপাদনে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। তবে এখনই কিংবা জরুরিভিত্তিতে চাহিদামাফিক পিয়াজ উৎপাদন করা সম্ভব নয়। এজন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। এ মুহূর্তে পিয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা অত্যন্ত জরুরি। টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পিয়াজ বিক্রির কার্যক্রম চালু করতে হবে। একই সঙ্গে সরকারি উদ্যোগে বাজার মনিটরিং বাড়াতে হবে।

বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৬ মহররম ১৪৪২, ২৮ ভাদ্র ১৪২৭

পিয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনুন

ভারতের রফতানি বন্ধের খবরে অস্থির হয়ে উঠল দেশের পিয়াজের বাজার। ভারত সরকার গত ­সোমবার হঠাৎ করেই পিয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে। সেই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর আগেই গত সোমবার পুরো দিন দেশটি থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। এতে ঢাকার বাজারে বিকেল থেকেই দাম বাড়তে শুরু করে। রাজধানীর মসলা জাতীয় পণ্যের বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে সোমবার বিকেলের পর থেকেই পিয়াজ বিক্রি কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।

ভারত রফতানি নিষিদ্ধ করায় গতবারের মতো এবারও পিয়াজের বাজারে দুঃসংবাদ এল। অবশ্য তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, সব দেশের জন্যই। তবে এ সংকট বাংলাদেশেই বেশি দৃশ্যমান হয়। কারণ বাংলাদেশ চাহিদা মেটাতে যতটুকু পিয়াজ আমদানি করে, তার ৯০ শতাংশের বেশি আসে ভারত থেকে। পরিবহন সুবিধার জন্য ভারত থেকেই বেশির ভাগ পিয়াজ আমদানি করা হয়। সে ক্ষেত্রে দেশটি আকস্মিক রফতানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশকে বিপদে পড়তে হচ্ছে।

ভারত গত বছর যখন রফতানি বন্ধ করে দেয়, তখন দেশের বাজারে পিয়াজের দাম কেজিতে ২শ’ টাকা অতিক্রম করে। সে সময় গোটা দেশে পিয়াজ নিয়ে কারসাজি চলে। গুদামে পিয়াজ আটকে রেখে পিয়াজের দাম বাড়ানো হয়। এমনকি কোন কোন স্থানে বস্তায় বস্তায় পচা পিয়াজ ফেলে রাখতেও দেখা যায়। এবারও যেন সেটি না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। রফতানি বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পিয়াজ কেন বাজার থেকে উধাও হয়ে গেল এবং কেন পাইকারি দোকানে পিয়াজ বিক্রি বন্ধ হয়ে গেল সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। রফতানি বন্ধের খবরে যেসব আমদানিকারক পিয়াজ আড়তে সরবরাহ না করে মজুদ করে রাখছেন তাদের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।

ভারত বন্ধ করে দিলেই শুধু ব্যবসায়ীরা অন্য দেশে পিয়াজ খুঁজতে শুরু করেন। এক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আবশ্যক। পিয়াজ আমদানিতে শুধু ভারতের ওপর নির্ভর না করে পিয়াজ উৎপাদনকারী অন্যান্য দেশের দিকেও নজর দেয়া উচিত। যেসব দেশে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে পিয়াজ পাওয়া যায় সেসব দেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগাযোগ বাড়াতে হবে। পিয়াজের আমদানি বৃদ্ধি হলে আবারও পিয়াজের দাম স্বাভাবিক হবে।

এটা অস্বীকার করা যাবে না যেÑ রবিশস্য, বিশেষ করে ডাল, পিয়াজ, আদা, রসুন, ভোজ্যতেলের বীজ ইত্যাদি উৎপাদনে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। তবে এখনই কিংবা জরুরিভিত্তিতে চাহিদামাফিক পিয়াজ উৎপাদন করা সম্ভব নয়। এজন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। এ মুহূর্তে পিয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা অত্যন্ত জরুরি। টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পিয়াজ বিক্রির কার্যক্রম চালু করতে হবে। একই সঙ্গে সরকারি উদ্যোগে বাজার মনিটরিং বাড়াতে হবে।