চিকিৎসক সংকটে বন্ধ গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড

২২৪টির মধ্যে ১২৮টি পদই শূন্য

দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষের জন্য প্রতিষ্ঠিত শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি চিকিৎসকসহ অভিজ্ঞ সহায়কদের অভাবে চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। কলেজটিতে রয়েছেন মাত্র দু’জন প্রফেসর। তাই হাসপাতালের ন্যায় কলেজটিও চলছে জোড়াতালি দিয়ে। হাসপাতালটির ২২৪ জন চিকিৎসকের পদের মধ্যে ১২৮টি পদই শূন্য। মেডিকেল কলেজটি অর্ধ শতাব্দি পার করলেও বহু গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড আজও খোলা হয়নি। চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক ওয়ার্ডও আবারও বন্ধ হয়ে গেছে।

দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষের আধুনিক চিকিৎসার এই হাসপাতালটিতে পূর্বে অগ্নিদগ্ধ বা এসিডদগ্ধ রোগীদের সাধারণ সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হতো। সে সময়ে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন না। বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. এমএ আজাদ সজলকে এখানে পদায়ন করা হলে মাত্র পাঁচ বছর আগে ২০১৫ সনের ১২ মার্চ তার হাত ধরে ওয়ার্ডটি চালু করা হয়। ওয়ার্ডের নারী ও পুরুষ অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসাসেবা দেবার জন্য ৮ জন চিকিৎসক, ১৬ জন নার্স ও ব্রাদারের পদ রাখা হয়। শুরুতে মাত্র ১০টি শয্যা দিয়ে ওয়ার্ডটি চালু করা হলেও প্রথম থেকেই ওয়ার্ডে অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসা সামাল দিতে ৩০/৩২টি শয্যা সরবরাহ করা হত। পরবর্তীতে সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাখাওয়াত হোসেনকে এই বিভাগে পদায়ন করা হলেও গত মার্চ মাসে তিনি চিকিৎসাজনিত ছুটি নিয়ে বরিশাল ত্যাগ করেন এবং এখন পর্যন্ত ছুটিতেই আছেন। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. এমএ আজাদ সজল গত ২৬ এপ্রিল রহস্যজনক দুর্ঘটনায় মারাা যাবার পর চিকিৎসক শূন্য ওয়ার্ডটি কিছুদিন ব্রাদার ও নার্সদের দ্বারা পরিচালনা করা হলেও আর কোন চিকিৎসককে পদায়ন না করায় এখন ওয়ার্ডটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখন আবার সাধারণ অগ্নিদগ্ধ বা এসিডদগ্ধদেরকে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হচ্ছে। অন্যদের ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। এখন ওই ওয়ার্ডটির অন্যান্য স্টাফরা মালামাল পাহারা দিচ্ছে।

একইভাবে দীর্ঘ বছর চালু থাকা মানসিক রোগীদের চিকিৎসার বিভাগটির সর্বশেষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. তপন কুমার সাহা এক বছর আগে অবসরে যান। এরপর বিভাগটিতে চিকিৎসক সংকটের কারণে রোগী ভর্তি করা বন্ধ হয়ে যায়। আর ওয়ার্ডটিকে মালামাল রাখার গুদাম হিসাবে ব্যবহার করা হয়। সম্প্রতি এই বিভাগে ডা. সৈয়দ মাহাবুব কিবরিয়াকে পদায়ন করা হলে তিনি শুধুমাত্র আউটডোরে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। একইভাবে হাসাপাতালে একটি আইসিইউ ইউনিট থাকলেও সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জানান, হাসপাতালটির ৩৭টি ওয়ার্ডেই চিকিৎসক সংকট রয়েছে। আবার একইভাবে মেডিকেল কলেজেও ভাইরোলজিসহ অনেক বিভাগ খোলা হলেও সেখনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক/শিক্ষককে নিয়োগ না দেয়ায় সেখানেও চলছে শুধু নাই আর নাই। এছাড়া চিকিৎসকের পাশাপাশি সংকট রয়েছে টেকনোলোজিস্টসহ অন্যান্য সহায়ক কর্মীর।

আরও খবর
দ্বিতীয় ঢেউ রোধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার
জাতিসংঘের ভার্চুয়াল অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন আজ
ঢাকা-সৌদি ফ্লাইট বাতিল প্রবাসীরা ক্ষুব্ধ
স্বাস্থ্যের আরও ৪৫ কোটিপতির অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নামছে দুদক
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
অস্ত্র ও জাল টাকার মামলায় স্বাস্থ্যের ড্রাইভার মালেক রিমান্ডে
আট বছরের শিশু মামলার আসামি আসকের নিন্দা
করোনা : দেশে এন্টিজেন টেস্টের অনুমোদন
করোনায় মৃত্যু ৫ হাজার ছুঁই ছুঁই শনাক্ত সাড়ে ৩ লাখ ছাড়ালো
কোভিড-১৯ পরামর্শক কমিটি ও স্বাস্থ্যের ডিজির বৈঠক
পিয়াজের খুচরা বাজার স্থিতিশীল
৪৮ বছর পর গঠিত হচ্ছে পানিসম্পদ অধিদফতর
হতাহত পরিবারের ছয় দাবি : তিতাসের ৮ জনের জামিন

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০২ মহররম ১৪৪২, ০৪ আশ্বিন ১৪২৭

বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল হাসপাতাল

চিকিৎসক সংকটে বন্ধ গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড

২২৪টির মধ্যে ১২৮টি পদই শূন্য

মানবেন্দ্র বটব্যাল, বরিশাল

দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষের জন্য প্রতিষ্ঠিত শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি চিকিৎসকসহ অভিজ্ঞ সহায়কদের অভাবে চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। কলেজটিতে রয়েছেন মাত্র দু’জন প্রফেসর। তাই হাসপাতালের ন্যায় কলেজটিও চলছে জোড়াতালি দিয়ে। হাসপাতালটির ২২৪ জন চিকিৎসকের পদের মধ্যে ১২৮টি পদই শূন্য। মেডিকেল কলেজটি অর্ধ শতাব্দি পার করলেও বহু গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড আজও খোলা হয়নি। চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক ওয়ার্ডও আবারও বন্ধ হয়ে গেছে।

দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষের আধুনিক চিকিৎসার এই হাসপাতালটিতে পূর্বে অগ্নিদগ্ধ বা এসিডদগ্ধ রোগীদের সাধারণ সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হতো। সে সময়ে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন না। বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. এমএ আজাদ সজলকে এখানে পদায়ন করা হলে মাত্র পাঁচ বছর আগে ২০১৫ সনের ১২ মার্চ তার হাত ধরে ওয়ার্ডটি চালু করা হয়। ওয়ার্ডের নারী ও পুরুষ অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসাসেবা দেবার জন্য ৮ জন চিকিৎসক, ১৬ জন নার্স ও ব্রাদারের পদ রাখা হয়। শুরুতে মাত্র ১০টি শয্যা দিয়ে ওয়ার্ডটি চালু করা হলেও প্রথম থেকেই ওয়ার্ডে অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসা সামাল দিতে ৩০/৩২টি শয্যা সরবরাহ করা হত। পরবর্তীতে সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাখাওয়াত হোসেনকে এই বিভাগে পদায়ন করা হলেও গত মার্চ মাসে তিনি চিকিৎসাজনিত ছুটি নিয়ে বরিশাল ত্যাগ করেন এবং এখন পর্যন্ত ছুটিতেই আছেন। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. এমএ আজাদ সজল গত ২৬ এপ্রিল রহস্যজনক দুর্ঘটনায় মারাা যাবার পর চিকিৎসক শূন্য ওয়ার্ডটি কিছুদিন ব্রাদার ও নার্সদের দ্বারা পরিচালনা করা হলেও আর কোন চিকিৎসককে পদায়ন না করায় এখন ওয়ার্ডটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখন আবার সাধারণ অগ্নিদগ্ধ বা এসিডদগ্ধদেরকে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হচ্ছে। অন্যদের ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। এখন ওই ওয়ার্ডটির অন্যান্য স্টাফরা মালামাল পাহারা দিচ্ছে।

একইভাবে দীর্ঘ বছর চালু থাকা মানসিক রোগীদের চিকিৎসার বিভাগটির সর্বশেষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. তপন কুমার সাহা এক বছর আগে অবসরে যান। এরপর বিভাগটিতে চিকিৎসক সংকটের কারণে রোগী ভর্তি করা বন্ধ হয়ে যায়। আর ওয়ার্ডটিকে মালামাল রাখার গুদাম হিসাবে ব্যবহার করা হয়। সম্প্রতি এই বিভাগে ডা. সৈয়দ মাহাবুব কিবরিয়াকে পদায়ন করা হলে তিনি শুধুমাত্র আউটডোরে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। একইভাবে হাসাপাতালে একটি আইসিইউ ইউনিট থাকলেও সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জানান, হাসপাতালটির ৩৭টি ওয়ার্ডেই চিকিৎসক সংকট রয়েছে। আবার একইভাবে মেডিকেল কলেজেও ভাইরোলজিসহ অনেক বিভাগ খোলা হলেও সেখনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক/শিক্ষককে নিয়োগ না দেয়ায় সেখানেও চলছে শুধু নাই আর নাই। এছাড়া চিকিৎসকের পাশাপাশি সংকট রয়েছে টেকনোলোজিস্টসহ অন্যান্য সহায়ক কর্মীর।