ইটভাটায় বির্বণ বাংলাদেশ

কাঠ পুড়িয়ে ইট পোড়ানোর মহোৎসব : হুমকিতে পরিবেশ

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় আইন অমান্য করে ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া ইট তৈরির কাজে কৃষি জমি ব্যবহার করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা করে দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ইটভাটা পরিচালনা করা হচ্ছে। পাল্লা দিয়ে ইটভাটায় কাঠ ক্রয় করে জমা রাখা হচ্ছে। বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মোট ১২টি ইটভাঁটা রয়েছে। ইটভাটাগুলো হলো কেএসপি বিকস, আরকে বিকস, এআরবি বিকস, এবিএম বিকস (নতুন নাম আরএসবি), এনএসবি বিকস, টিএমবি বিকস (দুটি), এডি ব্রিকস (দুটি), রনি বিকস, এমএইচডি বিকস ও হাজী সুপার বিকস। এসব ইটভাটার মধ্যে আতাউর রহমানে এআরবি ব্রিকসের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বাকি ইটভাটার মধ্যে চারটি ঝিকঝাক ইটভাঁটা। এতে কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। কেএসপি ব্রিকস, আরএসবি ব্রিকস, টিএমবি ব্রিকস, এডি ব্রিকস, এমএইচডি ব্রিকস ও হাজী সুপার ব্রিকস ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা হয়।

সরেজমিনে ইটভাটাটি রাজবাড়ী-বালিয়াকান্দি সড়কের ইসলামপুর ইউনিয়নের গণপত্যা এলাকায় কেএসপি ইটভাটা অবস্থিত। ইটভাটা থেকে প্রায় পাঁচশ গজের মধ্যে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাটার তিনপাশ দিয়ে ফসলি জমি। ইটভাটার দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে পোড়ানোর জন্য কাঠ এনে রাখা হয়েছে। গণপত্যার কেএসপি ইটভাটার মালিক ৩জন। একজন শাহীনের ভাই পার্টনার পরিচয়ে বলেন, আমি একজন পার্টনার। কাঠ দিয়ে প্রতিবছরই ইট পোড়ানো হয়ে থাকে। প্রশাসনকে আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চাঁদা দিয়ে থাকি।

ইন্দুরদী ইটভাটাটি ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছেন নাসির উদ্দিন।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন (সংশোধিত) অনুসারে, আবাসিক, সংরিক্ষত ও বাণিজ্যিক এলাকা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর ও কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। এসব এলাকা থেকে অন্তত এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা হবে স্থাপন করতে হবে।

জ্বালানি কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ সম্পর্কে ৬ ধারায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য জ্বালানি হিসেবে কোন জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করতে পারবেন না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আম্বিয়া বেগম বলেন, ইটভাটাগুলো বেশ আগে থেকেই চলে আসছে। বেশকিছু ইটভাটা ঝিকঝাক হিসেবে পরিবর্তন করা হয়েছে। আরও কিছু ভাটা পুরোনো পদ্ধতিতে পরিচালনা করা হচ্ছে। আর কাঠ পুড়ানো ভাটায় মাঝে মধ্যে জরিমানা করা হয়। তবে এ বছর এখনও ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়নি। দ্রুতই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ , ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪২

ইটভাটায় বির্বণ বাংলাদেশ

কাঠ পুড়িয়ে ইট পোড়ানোর মহোৎসব : হুমকিতে পরিবেশ

প্রতিনিধি, বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী)

image

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় আইন অমান্য করে ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া ইট তৈরির কাজে কৃষি জমি ব্যবহার করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা করে দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ইটভাটা পরিচালনা করা হচ্ছে। পাল্লা দিয়ে ইটভাটায় কাঠ ক্রয় করে জমা রাখা হচ্ছে। বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মোট ১২টি ইটভাঁটা রয়েছে। ইটভাটাগুলো হলো কেএসপি বিকস, আরকে বিকস, এআরবি বিকস, এবিএম বিকস (নতুন নাম আরএসবি), এনএসবি বিকস, টিএমবি বিকস (দুটি), এডি ব্রিকস (দুটি), রনি বিকস, এমএইচডি বিকস ও হাজী সুপার বিকস। এসব ইটভাটার মধ্যে আতাউর রহমানে এআরবি ব্রিকসের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বাকি ইটভাটার মধ্যে চারটি ঝিকঝাক ইটভাঁটা। এতে কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। কেএসপি ব্রিকস, আরএসবি ব্রিকস, টিএমবি ব্রিকস, এডি ব্রিকস, এমএইচডি ব্রিকস ও হাজী সুপার ব্রিকস ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা হয়।

সরেজমিনে ইটভাটাটি রাজবাড়ী-বালিয়াকান্দি সড়কের ইসলামপুর ইউনিয়নের গণপত্যা এলাকায় কেএসপি ইটভাটা অবস্থিত। ইটভাটা থেকে প্রায় পাঁচশ গজের মধ্যে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাটার তিনপাশ দিয়ে ফসলি জমি। ইটভাটার দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে পোড়ানোর জন্য কাঠ এনে রাখা হয়েছে। গণপত্যার কেএসপি ইটভাটার মালিক ৩জন। একজন শাহীনের ভাই পার্টনার পরিচয়ে বলেন, আমি একজন পার্টনার। কাঠ দিয়ে প্রতিবছরই ইট পোড়ানো হয়ে থাকে। প্রশাসনকে আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চাঁদা দিয়ে থাকি।

ইন্দুরদী ইটভাটাটি ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছেন নাসির উদ্দিন।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন (সংশোধিত) অনুসারে, আবাসিক, সংরিক্ষত ও বাণিজ্যিক এলাকা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর ও কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। এসব এলাকা থেকে অন্তত এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা হবে স্থাপন করতে হবে।

জ্বালানি কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ সম্পর্কে ৬ ধারায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য জ্বালানি হিসেবে কোন জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করতে পারবেন না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আম্বিয়া বেগম বলেন, ইটভাটাগুলো বেশ আগে থেকেই চলে আসছে। বেশকিছু ইটভাটা ঝিকঝাক হিসেবে পরিবর্তন করা হয়েছে। আরও কিছু ভাটা পুরোনো পদ্ধতিতে পরিচালনা করা হচ্ছে। আর কাঠ পুড়ানো ভাটায় মাঝে মধ্যে জরিমানা করা হয়। তবে এ বছর এখনও ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়নি। দ্রুতই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।