করোনায় ত্রাণ আত্মসাতে সাজা ২০৫ জনের

৭২ জন ইউপি চেয়ারম্যান অন্যরা মেম্বারসহ বিভিন্ন পদের

করোনা ‘লকডাউন’ ও পরবর্তী সময়ে সুবিধাবঞ্চিতদের সুবিধায় ত্রাণের ব্যবস্থা করেছিল সরকার। নগদ অর্থ সহায়তা ছাড়াও ছিল কম দামে চালের ব্যবস্থা। যথারীতি এই বিতরণে দুর্নীতি করেছেন অনেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। দুর্নীতিবাজের সঠিক সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। তবে দুর্নীতি করে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন ২০০ জন। পাঁচজন হয়েছেন স্থায়ী বরখাস্ত।

বরখাস্তকৃতদের মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার ব্যক্তি রয়েছেন। গত এপ্রিল মাস থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এদের বরখাস্ত করে। সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃতদের মধ্যে ৭২ জন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। অন্যরা মেম্বারসহ অন্য পদের।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়লে গ্রামগঞ্জের হতদরিদ্র মানুষ নানা আর্থিক সংকটে পড়েন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী অসহায় মানুষ যাতে কষ্ট না করে দুই বেলা ভাত খেয়ে দিন কাটতে পারে তার জন্য নগদ অর্থ সহায়তা, দরিদ্র সাধারণ মানুষকে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিতরণসহ নানা কর্মসূচি নেয়। তবে দুর্নীতিবাজদের কারণে তা কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অভিযোগ রয়েছে, দুর্নীতিবাজ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ, দরিদ্র মানুষের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়ম করেছে। তালিকা তৈরিতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে।

মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান, মেম্বারদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রথমে জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে তদন্ত করা হয়। এরপর এ তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে আবার কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাকে প্রথমে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এরপর স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়। আবার অনিয়মের কারণে কারও কারও বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে কেউ কেউ আদালতের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে আবার স্বপদে ফিরে এসেছেন। ফিরে আসাদের তালিকা জানা যায়নি।

গত ১৭ জুনের এক প্রজ্ঞাপন থেকে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রদত্ত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ সহায়তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রণয়নে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলম মিয়া এবং জেলার সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য ফরিদা বেগমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

এছাড়া, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র জনসাধারণের জন্য বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ, উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়নে অনিয়মসহ বিভিন্ন কারণে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মনিরুল ইসলাম ও ৮নং ওয়ার্ডের মো. আবুল কালাম, মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার ৮নং নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের ০৫নং ওয়ার্ডের সদস্য কাঞ্চন মিয়া, ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলাধীন ০৪নং কুমারগাতা ইউনিয়ন পরিষদের ০৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. মফিজুল ইসলাম, ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলাধীন রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ০৮নং ওয়ার্ডের সদস্য রইছ উদ্দিন, জয়পুরহাট জেলার সদর উপজেলাধীন বম্বু ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য পারভীন আক্তার ও ০২নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. লোকমান হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার গোমস্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য মোসা. মুসলেমা বেগম এবং নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলাধীন ৬নং চরকিং ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. ইকবালকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদের কুমিল্লা প্রতিনিধি জাহিদুর রহমান জানান, করোনাকালীন সময়ে গত এপ্রিল মাসে কুমিল্লায় ত্রাণ বিতরণে একের পর এক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন কিছু জনপ্রতিনিধি। হতদরিদ্রদের টিপসই নকল করে বিক্রি করে দেয়া, ছবি ঠিক থাকলেও নামের মিল না থাকাসহ বিভিন্নভাবেই চাল আত্মসাতের সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত হয়েছেন। এসব ঘটনা প্রশাসনের নজরে আসলেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে অনেকেই পার পেয়ে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১৪ এপ্রিল জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর বাজারে সাবেক ইউপি সদস্য আবদুস সামাদের গোডাউন থেকে ১ হাজার ৭৮ কেজি চাল উদ্ধার করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল-আমিন সরকার। জেলার দেবিদ্বারে সুবিল এবং দক্ষিণ গুনাইঘর ইউনিয়নে সরকারি ১০ টাকা কেজি খাদ্যবান্ধব কার্ড ও ত্রাণের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সুবিল ইউনিয়নে আবদুল মান্নান মেম্বারকে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দক্ষিণ গুনাইঘর ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের তালিকা তৈরি করে চেয়ারম্যানের কাছে ত্রাণ চাওয়ায় লাঞ্ছিত হন আশেক এলাহী নামে এক যুবক। এদিকে ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড চাইতে গিয়ে আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার তোফায়েল আহমেদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন এক নারী। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ত্রাণ বিতরণে এ ধরনের বিভিন্ন ঘটনায় হতাশ সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, সিলেট, কুমিল্লা ও ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন স্থানে করোনা চলাকালে ত্রাণের চাল আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম যেসব ইউনিয়ন ও বিভাগে হয়েছে সেখানে এখনো খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। চলছে নানা তদন্ত। ইউনিয়ন ছাড়াও উপজেলা, পৌরসভা ও জেলা পরিষদের কেউ অনিয়ম করলে তদন্তে প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না। কারণ দর্শানো নোটিশ থেকে শাস্তি সবই হচ্ছে বলে জালিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ , ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪২

করোনায় ত্রাণ আত্মসাতে সাজা ২০৫ জনের

৭২ জন ইউপি চেয়ারম্যান অন্যরা মেম্বারসহ বিভিন্ন পদের

বাকী বিল্লাহ

করোনা ‘লকডাউন’ ও পরবর্তী সময়ে সুবিধাবঞ্চিতদের সুবিধায় ত্রাণের ব্যবস্থা করেছিল সরকার। নগদ অর্থ সহায়তা ছাড়াও ছিল কম দামে চালের ব্যবস্থা। যথারীতি এই বিতরণে দুর্নীতি করেছেন অনেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। দুর্নীতিবাজের সঠিক সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। তবে দুর্নীতি করে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন ২০০ জন। পাঁচজন হয়েছেন স্থায়ী বরখাস্ত।

বরখাস্তকৃতদের মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার ব্যক্তি রয়েছেন। গত এপ্রিল মাস থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এদের বরখাস্ত করে। সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃতদের মধ্যে ৭২ জন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। অন্যরা মেম্বারসহ অন্য পদের।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়লে গ্রামগঞ্জের হতদরিদ্র মানুষ নানা আর্থিক সংকটে পড়েন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী অসহায় মানুষ যাতে কষ্ট না করে দুই বেলা ভাত খেয়ে দিন কাটতে পারে তার জন্য নগদ অর্থ সহায়তা, দরিদ্র সাধারণ মানুষকে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিতরণসহ নানা কর্মসূচি নেয়। তবে দুর্নীতিবাজদের কারণে তা কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অভিযোগ রয়েছে, দুর্নীতিবাজ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ, দরিদ্র মানুষের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়ম করেছে। তালিকা তৈরিতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে।

মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান, মেম্বারদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রথমে জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে তদন্ত করা হয়। এরপর এ তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে আবার কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাকে প্রথমে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এরপর স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়। আবার অনিয়মের কারণে কারও কারও বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে কেউ কেউ আদালতের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে আবার স্বপদে ফিরে এসেছেন। ফিরে আসাদের তালিকা জানা যায়নি।

গত ১৭ জুনের এক প্রজ্ঞাপন থেকে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রদত্ত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ সহায়তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রণয়নে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলম মিয়া এবং জেলার সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য ফরিদা বেগমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

এছাড়া, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র জনসাধারণের জন্য বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ, উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়নে অনিয়মসহ বিভিন্ন কারণে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মনিরুল ইসলাম ও ৮নং ওয়ার্ডের মো. আবুল কালাম, মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার ৮নং নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের ০৫নং ওয়ার্ডের সদস্য কাঞ্চন মিয়া, ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলাধীন ০৪নং কুমারগাতা ইউনিয়ন পরিষদের ০৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. মফিজুল ইসলাম, ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলাধীন রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ০৮নং ওয়ার্ডের সদস্য রইছ উদ্দিন, জয়পুরহাট জেলার সদর উপজেলাধীন বম্বু ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য পারভীন আক্তার ও ০২নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. লোকমান হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার গোমস্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য মোসা. মুসলেমা বেগম এবং নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলাধীন ৬নং চরকিং ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. ইকবালকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদের কুমিল্লা প্রতিনিধি জাহিদুর রহমান জানান, করোনাকালীন সময়ে গত এপ্রিল মাসে কুমিল্লায় ত্রাণ বিতরণে একের পর এক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন কিছু জনপ্রতিনিধি। হতদরিদ্রদের টিপসই নকল করে বিক্রি করে দেয়া, ছবি ঠিক থাকলেও নামের মিল না থাকাসহ বিভিন্নভাবেই চাল আত্মসাতের সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত হয়েছেন। এসব ঘটনা প্রশাসনের নজরে আসলেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে অনেকেই পার পেয়ে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১৪ এপ্রিল জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর বাজারে সাবেক ইউপি সদস্য আবদুস সামাদের গোডাউন থেকে ১ হাজার ৭৮ কেজি চাল উদ্ধার করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল-আমিন সরকার। জেলার দেবিদ্বারে সুবিল এবং দক্ষিণ গুনাইঘর ইউনিয়নে সরকারি ১০ টাকা কেজি খাদ্যবান্ধব কার্ড ও ত্রাণের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সুবিল ইউনিয়নে আবদুল মান্নান মেম্বারকে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দক্ষিণ গুনাইঘর ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের তালিকা তৈরি করে চেয়ারম্যানের কাছে ত্রাণ চাওয়ায় লাঞ্ছিত হন আশেক এলাহী নামে এক যুবক। এদিকে ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড চাইতে গিয়ে আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার তোফায়েল আহমেদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন এক নারী। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ত্রাণ বিতরণে এ ধরনের বিভিন্ন ঘটনায় হতাশ সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, সিলেট, কুমিল্লা ও ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন স্থানে করোনা চলাকালে ত্রাণের চাল আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম যেসব ইউনিয়ন ও বিভাগে হয়েছে সেখানে এখনো খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। চলছে নানা তদন্ত। ইউনিয়ন ছাড়াও উপজেলা, পৌরসভা ও জেলা পরিষদের কেউ অনিয়ম করলে তদন্তে প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না। কারণ দর্শানো নোটিশ থেকে শাস্তি সবই হচ্ছে বলে জালিয়েছেন তারা।