কাশ্মীরের স্থানীয় নির্বাচনে মোদিবিরোধী জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা

ভারতের কাশ্মীরে একটি স্থানীয় নির্বাচনে মোদিবিরোধী রাজনৈতিক জোট সিংহভাগ আসন জিতে নিয়েছে। সেখানকার ডিস্ট্রিক্ট ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের এ নির্বাচনে মোট ২৮০ আসনের মধ্যে স্বশাসনের পক্ষে গঠিত রাজনৈতিক জোট অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশন (পিএজিডি) ১১২টিতে জয়ী হয়েছে। মোদির নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন বিজেপি পেয়েছে ৭৪ আসন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন ৪৯টিতে। আর ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস জিতেছে মাত্র ২৬টিতে।

কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি গতবছর কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে। এখন ভারত রাষ্ট্রে অন্য রাজ্যের মতোই পরিগণিত কাশ্মীর। স্থানীয় নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া পিএজিডি ভারতের প্রতি আনুগত্য পোষণ করেই কাশ্মীরে স্বায়ত্বশাসনের দাবি করে। স্থানীয় নির্বাচনটিতে বিজেপি মাত্র তিনটি আসন পেয়েছে কাশ্মীরে। তার অধিকাংশ আসনই এসেছে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু থেকে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ষাট লাখ ভোটারের মধ্যে ৫১ শতাংশ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত বেশকটি আসনের ভোট গণনা শেষ হয়নি। পিএজিডির মুখপাত্র সাজাদ লোনে বলেন, নির্বাচনের ফলাফল তাদের দাবির প্রতি একটি ‘গণরায়’। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার বিধানসংবলিত ৩৭০ ধারা বাতিল করার পর সেখানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ ছিল। পিএজিডির মুখপাত্র বলেন, আমরা আশা করতে পারি, এর মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া আবার চালু হলো। তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের স্বার্থে আমরা জোট গড়েছি। মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোনটি তাদের জন্য গুরুত্ব বহন করে, কোনটা করে না, অন্য সব দল যা বলে বলুক।

এবারই প্রথমবারের মতো কাশ্মীরের সাত দশক ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মেহবুবা মুফতির পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এক ছাতার তলায় এলো। এই জোটের লক্ষ্যই ছিল বিজেপিকে কোণঠাসা করে সরাসরি কেন্দ্রের শাসনের অবসান এবং রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা পুনরুদ্ধার। তবে এই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত ডিস্ট্রিক্ট ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল আইন প্রণয়নের জন্য নয়, বরং উন্নয়ন ও জনকল্যাণ নিশ্চিতের দায়িত্ব পায়। তবু সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়া রাজনৈতিক জোট বলছে, এই রায়ের মাধ্যমে গত বছর কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে সেখানকার মানুষ। গত বছর ৩৭০ ধারা বাতিল ছাড়াও এই অঞ্চলকে বিভক্ত করে দুটি রাজ্য গঠন করে কেন্দ্র। একটি জম্মু-কাশ্মীর, আরেকটি লাদাখ। ১৯৮৯ থেকে ভারতের সঙ্গে থাকা কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা শুরু হয়। গত বছর ৩৭০ ধারা বাতিলের পর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অধিকাংশ নেতাকেই আটক করে ফেলা হয়। এছাড়া ভারত বরাবরই এ অঞ্চলে জঙ্গীবাদে মদদ দেয়ার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে। কাশ্মীরের একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছ পাকিস্তানের হাতে। পাকিস্তান বরাবরই ভারতের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

আরও খবর
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তুরস্কের সম্পৃক্ততার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
গণপরিবহনে শৃঙ্খলার জন্য ১১১ সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিস্তার পানিবণ্টন অচিরেই সীমান্ত হত্যাও শূন্যে আসবে
সমরাস্ত্র বিনিয়োগে আগ্রহী তুরস্ক
দুদকের নজরদারিতে পিকে হালদারের এক বান্ধবী
রেলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহনের সুপারিশ
পঞ্চাশ বছর ধরে ফসলের শত্রু ইঁদুর নিধন করেন
রাজধানীর উপকণ্ঠে হবে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল দুই মেয়র
রাজউক পরিচালককে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ
‘অস্তিত্ব নেই’ এমন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে সতর্কতা জারি
নির্যাতনে প্রতিবন্ধী হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সড়ক অবরোধ

বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ , ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪২

কাশ্মীরের স্থানীয় নির্বাচনে মোদিবিরোধী জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা

সংবাদ ডেস্ক |

ভারতের কাশ্মীরে একটি স্থানীয় নির্বাচনে মোদিবিরোধী রাজনৈতিক জোট সিংহভাগ আসন জিতে নিয়েছে। সেখানকার ডিস্ট্রিক্ট ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের এ নির্বাচনে মোট ২৮০ আসনের মধ্যে স্বশাসনের পক্ষে গঠিত রাজনৈতিক জোট অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশন (পিএজিডি) ১১২টিতে জয়ী হয়েছে। মোদির নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন বিজেপি পেয়েছে ৭৪ আসন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন ৪৯টিতে। আর ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস জিতেছে মাত্র ২৬টিতে।

কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি গতবছর কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে। এখন ভারত রাষ্ট্রে অন্য রাজ্যের মতোই পরিগণিত কাশ্মীর। স্থানীয় নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া পিএজিডি ভারতের প্রতি আনুগত্য পোষণ করেই কাশ্মীরে স্বায়ত্বশাসনের দাবি করে। স্থানীয় নির্বাচনটিতে বিজেপি মাত্র তিনটি আসন পেয়েছে কাশ্মীরে। তার অধিকাংশ আসনই এসেছে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু থেকে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ষাট লাখ ভোটারের মধ্যে ৫১ শতাংশ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত বেশকটি আসনের ভোট গণনা শেষ হয়নি। পিএজিডির মুখপাত্র সাজাদ লোনে বলেন, নির্বাচনের ফলাফল তাদের দাবির প্রতি একটি ‘গণরায়’। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার বিধানসংবলিত ৩৭০ ধারা বাতিল করার পর সেখানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ ছিল। পিএজিডির মুখপাত্র বলেন, আমরা আশা করতে পারি, এর মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া আবার চালু হলো। তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের স্বার্থে আমরা জোট গড়েছি। মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোনটি তাদের জন্য গুরুত্ব বহন করে, কোনটা করে না, অন্য সব দল যা বলে বলুক।

এবারই প্রথমবারের মতো কাশ্মীরের সাত দশক ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মেহবুবা মুফতির পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এক ছাতার তলায় এলো। এই জোটের লক্ষ্যই ছিল বিজেপিকে কোণঠাসা করে সরাসরি কেন্দ্রের শাসনের অবসান এবং রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা পুনরুদ্ধার। তবে এই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত ডিস্ট্রিক্ট ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল আইন প্রণয়নের জন্য নয়, বরং উন্নয়ন ও জনকল্যাণ নিশ্চিতের দায়িত্ব পায়। তবু সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়া রাজনৈতিক জোট বলছে, এই রায়ের মাধ্যমে গত বছর কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে সেখানকার মানুষ। গত বছর ৩৭০ ধারা বাতিল ছাড়াও এই অঞ্চলকে বিভক্ত করে দুটি রাজ্য গঠন করে কেন্দ্র। একটি জম্মু-কাশ্মীর, আরেকটি লাদাখ। ১৯৮৯ থেকে ভারতের সঙ্গে থাকা কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা শুরু হয়। গত বছর ৩৭০ ধারা বাতিলের পর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অধিকাংশ নেতাকেই আটক করে ফেলা হয়। এছাড়া ভারত বরাবরই এ অঞ্চলে জঙ্গীবাদে মদদ দেয়ার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে। কাশ্মীরের একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছ পাকিস্তানের হাতে। পাকিস্তান বরাবরই ভারতের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।