‘শেয়ারবাজার নিয়ে আর কেউ খেলতে পারবে না’

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেছেন, শেয়ারবাজারে নিয়ে আর কেউ খেলতে পারবে না। আমরা সেটা করতে দেব না। আমরা বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা দিব। গতকাল আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিএসইসির অডিটরিয়াম রুমে ‘রোল অফ ক্যাপিটাল মার্কেট ইন কিপিং ইকোনোমি ভাইবরেন্ট ডিউরিং কোভিড-১৯ প্যানডামিক’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেয়ারবাজারকে হঠাৎ করে কোন শক্তি যেন আঘাত করে ফেলতে না পারে উল্লেখ করে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ কোনদিন বেশি কিনবে, কোনদিন বেশি বিক্রি করবে। ডিমান্ড এবং সাপ্লাইয়ের ওপর বাজার উঠা-নামা করবে। এই উঠা-নামা যেন সুস্থভাবে হয়। এই উঠা-নামার মধ্যে যেন কোন রকমের দুষ্ট শক্তি আঘাত করে নিরীহ বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে দিতে না পারে সেটা আমরা খেয়াল রাখছি। সরকার সচেতন, আমরাও সচেতন। শেয়ারবাজারের ভালো অবস্থান এবং উন্নয়ন ধরে রাখার পিছনে আস্থা, বিশ্বাস এবং সবার সাহায্য ও সহযোগিতা থাকতে হবে। আইসিবিসহ অন্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান ঠিকভাবে রোল প্লে করতে পারে সেদিকেও আমরা খেয়াল করছি। আরেকটু সময়ের ব্যাপার তারপর আপনারও বুঝতে পারবেন এই বাজারের সাসটেইনেবিলিটি নেয়া হয় না কেন। সময়টা খুব বেশি লাগবে না। আশা করি তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যেই আপনারা ফিল করবেন। আইপিওর মাধ্যমে দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী-ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের ব্যবসাকে বিভিন্নভাবে ক্যাপিটাল মার্কেটের লংটার্ম ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ব্যবসাগুলোকে সাসটেইনেবল করতে পারবে। তারপরও বাজারে কোন বড় রিঅ্যাকশন দেখতে পাচ্ছি না। আশা করছি, আমরা এর মাধ্যমেই ব্যবসায়ী ও ইন্ডাস্ট্রিজ সবাই বেনিফিটেড হচ্ছে, মার্কেট বেনিফিটেড হচ্ছে এবং যারা বিনিয়োগ করছেন তারাও ভালো করছেন। সব মিলিয়ে আমরা একটা ভালো অবস্থান দেখতে পাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কোভিডের আগে ব্যবসা খুলতেন এবং ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে না পারতেন তবে ওই ব্যবসায়ী এবং ব্যাংক উভয়ই বিপদে পড়ে যেত। এই ব্যবসায়ী যদি লংটার্ম নিয়ে শুরু করতেন এবং ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে অর্থ নিয়ে শুরু করতেন তাহলে এমন হতো না। দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসার জন্য ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ব্যাংক থেকে কেউ যদি ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করে সেতো বিপদে পড়ে যাবে। আর ব্যাংক থেকে যার স্বল্পমেয়াদী লোন নেয়া দরকার সেতো ক্যাপিটাল মার্কেটে আসলে বিপদে পড়বে। কাজেই যার যেখানে যাওয়া দরকার, তার সেখানেই যেতে হবে। আর আমাদের কাছে আসার পর আমরা যদি বলি আইপিও দিব না, তাহলে সে কোথায় যাবে। একটা উদীয়মান অর্থনীতিতে ভালো ভালো কোম্পানি আছে। আমাদের অডিটর অ্যাকাউটেন্টসরা যদি সঠিক ভালো তথ্য দিতে পারে এবং সেখানে বিচার বিশ্লেষণের ওপর ব্যবসায়ীরা ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে পুঁজির সংস্থান পান, আমাদের দেশের জনগণ সেখান থেকে ভালো রিটার্ন পাবে এবং সেখানে যদি ২০০ বা ৫০০ বা হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয় তাহলে তো ভালোই হবে। আমরা সেদিকেই যাচ্ছি। আপনার দোয়া করবেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, কমিশনার প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান, বিডি ফাইন্যান্সের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন, বিএমবিএ প্রেসিডেন্ট মো. ছাইয়েদুর রহমান, সিএমজেএফের প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম রুবেল। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম।

শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ , ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪২

‘শেয়ারবাজার নিয়ে আর কেউ খেলতে পারবে না’

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেছেন, শেয়ারবাজারে নিয়ে আর কেউ খেলতে পারবে না। আমরা সেটা করতে দেব না। আমরা বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা দিব। গতকাল আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিএসইসির অডিটরিয়াম রুমে ‘রোল অফ ক্যাপিটাল মার্কেট ইন কিপিং ইকোনোমি ভাইবরেন্ট ডিউরিং কোভিড-১৯ প্যানডামিক’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেয়ারবাজারকে হঠাৎ করে কোন শক্তি যেন আঘাত করে ফেলতে না পারে উল্লেখ করে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ কোনদিন বেশি কিনবে, কোনদিন বেশি বিক্রি করবে। ডিমান্ড এবং সাপ্লাইয়ের ওপর বাজার উঠা-নামা করবে। এই উঠা-নামা যেন সুস্থভাবে হয়। এই উঠা-নামার মধ্যে যেন কোন রকমের দুষ্ট শক্তি আঘাত করে নিরীহ বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে দিতে না পারে সেটা আমরা খেয়াল রাখছি। সরকার সচেতন, আমরাও সচেতন। শেয়ারবাজারের ভালো অবস্থান এবং উন্নয়ন ধরে রাখার পিছনে আস্থা, বিশ্বাস এবং সবার সাহায্য ও সহযোগিতা থাকতে হবে। আইসিবিসহ অন্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান ঠিকভাবে রোল প্লে করতে পারে সেদিকেও আমরা খেয়াল করছি। আরেকটু সময়ের ব্যাপার তারপর আপনারও বুঝতে পারবেন এই বাজারের সাসটেইনেবিলিটি নেয়া হয় না কেন। সময়টা খুব বেশি লাগবে না। আশা করি তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যেই আপনারা ফিল করবেন। আইপিওর মাধ্যমে দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী-ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের ব্যবসাকে বিভিন্নভাবে ক্যাপিটাল মার্কেটের লংটার্ম ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ব্যবসাগুলোকে সাসটেইনেবল করতে পারবে। তারপরও বাজারে কোন বড় রিঅ্যাকশন দেখতে পাচ্ছি না। আশা করছি, আমরা এর মাধ্যমেই ব্যবসায়ী ও ইন্ডাস্ট্রিজ সবাই বেনিফিটেড হচ্ছে, মার্কেট বেনিফিটেড হচ্ছে এবং যারা বিনিয়োগ করছেন তারাও ভালো করছেন। সব মিলিয়ে আমরা একটা ভালো অবস্থান দেখতে পাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কোভিডের আগে ব্যবসা খুলতেন এবং ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে না পারতেন তবে ওই ব্যবসায়ী এবং ব্যাংক উভয়ই বিপদে পড়ে যেত। এই ব্যবসায়ী যদি লংটার্ম নিয়ে শুরু করতেন এবং ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে অর্থ নিয়ে শুরু করতেন তাহলে এমন হতো না। দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসার জন্য ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ব্যাংক থেকে কেউ যদি ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করে সেতো বিপদে পড়ে যাবে। আর ব্যাংক থেকে যার স্বল্পমেয়াদী লোন নেয়া দরকার সেতো ক্যাপিটাল মার্কেটে আসলে বিপদে পড়বে। কাজেই যার যেখানে যাওয়া দরকার, তার সেখানেই যেতে হবে। আর আমাদের কাছে আসার পর আমরা যদি বলি আইপিও দিব না, তাহলে সে কোথায় যাবে। একটা উদীয়মান অর্থনীতিতে ভালো ভালো কোম্পানি আছে। আমাদের অডিটর অ্যাকাউটেন্টসরা যদি সঠিক ভালো তথ্য দিতে পারে এবং সেখানে বিচার বিশ্লেষণের ওপর ব্যবসায়ীরা ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে পুঁজির সংস্থান পান, আমাদের দেশের জনগণ সেখান থেকে ভালো রিটার্ন পাবে এবং সেখানে যদি ২০০ বা ৫০০ বা হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয় তাহলে তো ভালোই হবে। আমরা সেদিকেই যাচ্ছি। আপনার দোয়া করবেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, কমিশনার প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান, বিডি ফাইন্যান্সের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন, বিএমবিএ প্রেসিডেন্ট মো. ছাইয়েদুর রহমান, সিএমজেএফের প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম রুবেল। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম।