ক্যাপসিকামে সফল কৃষক খলিল

মিষ্টি মরিচ বা ক্যাপসিকাল চাষ করে সফলতার স্বপ্ন পূরণের আশায় উৎসাহ ও উদ্দিপনা নিয়ে জমি পরিচর্যার কাজে বেশ উৎফুল্লতার সঙ্গে সময় পার করছেন খলিলুর রহমান। ক্যাপসিকাম চাষে একজন সফল চাষি হিসেবে এলাকায় বেশ সাড়া জাগিয়েছেন। নতুন নতুন ফসল আবাদে মণিরামপুরের কৃষক খলিল বেশ সিদ্ধ হস্ত। তিনি মণিরামপুরের এক আত্মপ্রত্যয়ী ও সফল চাষি হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত। মণিরামপুর পৌর শহরের তাহেরপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক খলিলুর রহমান তার নিজ গ্রাম তাহেরপুরের মাঠে এবার নিজস্ব ৪২ শতাংশ জমিতে বিদেশী মিষ্টি মরিচ খ্যাত ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন।

মিষ্টি মরিচ বা ক্যাপসিকাম সারা বিশ্বেই একটি জনপ্রিয় সবজি। বাংলাদেশেও এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। মিষ্টি মরিচের আকার ও আকৃতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে সাধারণত ফল গোলাকার ও ত্বক পুরু হয়। মিষ্টি মরিচ আমাদের দেশীয় প্রচলিত সবজি না হলেও ইদানিং এর চাষ প্রসারিত হচ্ছে। খলিলুর রহমান বলেন, গত মাস দুই আগে তিনি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় ইউনাইটেড সিড কোম্পানির কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ক্যাপসিকামের বীজ সংগ্রহ করে পূর্ব থেকে তৈরিকৃত বীজতলায় বীজ রোপণ করে চারা উৎপাদন করে সেই চারা তিনি সরাসরি তার নিজস্ব ৪২ শতক জমিতে চাষ করেছেন। মাত্র দেড়মাস আগে রোপণকৃত ক্যাপসিকাম এখন গাছে পাতায় খেত ভরে গেছে। প্রায়ই গাছে ফুল-ফল আসতে শুরু করেছে। তাই তিনি এই বিদেশি মিষ্টি মরিচ খ্যাত ক্যাপসিকামের আগাম চাষ করে ভাল ফলন আশা করছেন এবং তা উচ্চমূল্যে বিক্রি করে বেশ লাভবান হবেন বলে স্বপ্ন দেখছেন। খলিলুর রহমান আরও জানান, গত বছর তিনি স্বল্প পরিসরে চারা সংগ্রহ করে তার জমিতে এটির চাষ করে প্রতিকেজি ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি করে বেশ লাভজনক একটি ফসল হিসেবে ধারণা থেকেই তিনি এবার বীজ সংগ্রহ করে গত নভেম্বরের প্রথমদিকে চারা উৎপাদনের লক্ষ্যে বীজ বপন করেন। প্রতি শতক জমির জন্য তিনি ১ গ্রাম করে বীজ বপন করেন। তাতে তার ৫০ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করতে হয়। তিনি ১৫ হাজার টাকার বীজ থেকে উৎপাদিত চারা দিয়ে ৪২ শতক জমিতে দুই ফুট দূরত্বে বেড প্রস্তুত করেন। অতঃপর বেডের মধ্যে এক-দেড় ফুট অন্তর অন্তর চারা লাগিয়েছেন। প্রতিটি বেড পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। পলিথিন দিয়ে বেড ঢেকে দেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত শীত বেশি থাকে। এই সময়ে মাটিতে তাপমাত্রা ধরে রাখতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বরাত দিয়ে এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি জানান, ক্যাপসিকাম চাষের জন্য আমাদের দেশের মাটি ও জলবায়ু বেশ উপযোগী। তবে এই ফসল অধিক খরা ও অধিক বৃষ্টি সহ্য করতে পারে না। তাই উঁচু বেলে দোআঁশ ও মাটিতে রস ধরে রাখতে পারে এমন জমি এই ফসল চাষের জন্য উপযুক্ত বলে তিনি জানান। সরাসরি জমিতে এই মিষ্টি মরিচ ক্যাপসিকাম চাষ করে কেমন লাভবান হবেন জানতে চাইলে তিনি জানান, গাছে পাতায় যেমন দেখা যাচ্ছে তাতে ৪২ শতক জমি থেকে ক্যাপসিকাম বিক্রি করে তিনি খরচ বাদ দিয়ে ৪-৫ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার হীরক কুমার সরকার বলেন, আমাদের দেশে উৎপাদিত মিষ্টি মরিচ খ্যাত ক্যাপসিকাম এটি ভারতীয় জাতের। আমাদের দেশে এটি শীতকালে চাষের জন্য উপযোগী। এর বাজারমূল্য বেশ ভাল। লাভবান একটি চাষ। লাভের সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় অধিক লাভের আশায় কৃষকরা এই সবজি’র চাষের দিকে ঝুঁকছে।

image
আরও খবর
কর্তা-ঠিকাদার যোগসাজশে এডিপির বরাদ্দ হরিলুট
ময়মনসিংহে করোনায় নতুন শনাক্ত ১২
মুক্তাগাছায় কালভার্টে হঠাৎ ধস ময়মনসিংহ-উত্তরবঙ্গ বিচ্ছিন্ন
পাকুন্দিয়ায় মাস্ক না পরায় অর্থদন্ড
রোহিঙ্গা শিবিরে অপহৃত ত্রাণ কর্তা উদ্ধার
মহেশপুর সীমান্তে ২ ভারতীয়সহ আটক ১৪
দোহারে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন দন্ডিত দুই
শীত-গ্রীষ্মে বিপন্ন কাঠমিস্ত্রি বাবুলের মানবেতর জীবন
পাঁচ দিনেও উদ্ধার হয়নি সোনাগাজীর অপহৃত স্কুলছাত্রী
গফরগাঁয়ে ২৩ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে স্কুলের গন্ডি পেরোননি ১৪ জনই!
শ্রীমঙ্গলে পটকা মাছ খেয়ে বউ শাশুড়ির মৃত্যু
চাঁপাইনবাবগঞ্জে অস্ত্রসহ আটক ১
ভোলায় স্ত্রীর চুল কেটে দিলেন মাদ্রাসাশিক্ষক স্থানীয়দের ক্ষোভ
মাগুরায় শীতজনিত রোগী বেড়েছে

শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ , ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪২

ক্যাপসিকামে সফল কৃষক খলিল

প্রতিনিধি, মনিরামপুর (যশোর)

image

মিষ্টি মরিচ বা ক্যাপসিকাল চাষ করে সফলতার স্বপ্ন পূরণের আশায় উৎসাহ ও উদ্দিপনা নিয়ে জমি পরিচর্যার কাজে বেশ উৎফুল্লতার সঙ্গে সময় পার করছেন খলিলুর রহমান। ক্যাপসিকাম চাষে একজন সফল চাষি হিসেবে এলাকায় বেশ সাড়া জাগিয়েছেন। নতুন নতুন ফসল আবাদে মণিরামপুরের কৃষক খলিল বেশ সিদ্ধ হস্ত। তিনি মণিরামপুরের এক আত্মপ্রত্যয়ী ও সফল চাষি হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত। মণিরামপুর পৌর শহরের তাহেরপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক খলিলুর রহমান তার নিজ গ্রাম তাহেরপুরের মাঠে এবার নিজস্ব ৪২ শতাংশ জমিতে বিদেশী মিষ্টি মরিচ খ্যাত ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন।

মিষ্টি মরিচ বা ক্যাপসিকাম সারা বিশ্বেই একটি জনপ্রিয় সবজি। বাংলাদেশেও এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। মিষ্টি মরিচের আকার ও আকৃতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে সাধারণত ফল গোলাকার ও ত্বক পুরু হয়। মিষ্টি মরিচ আমাদের দেশীয় প্রচলিত সবজি না হলেও ইদানিং এর চাষ প্রসারিত হচ্ছে। খলিলুর রহমান বলেন, গত মাস দুই আগে তিনি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় ইউনাইটেড সিড কোম্পানির কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ক্যাপসিকামের বীজ সংগ্রহ করে পূর্ব থেকে তৈরিকৃত বীজতলায় বীজ রোপণ করে চারা উৎপাদন করে সেই চারা তিনি সরাসরি তার নিজস্ব ৪২ শতক জমিতে চাষ করেছেন। মাত্র দেড়মাস আগে রোপণকৃত ক্যাপসিকাম এখন গাছে পাতায় খেত ভরে গেছে। প্রায়ই গাছে ফুল-ফল আসতে শুরু করেছে। তাই তিনি এই বিদেশি মিষ্টি মরিচ খ্যাত ক্যাপসিকামের আগাম চাষ করে ভাল ফলন আশা করছেন এবং তা উচ্চমূল্যে বিক্রি করে বেশ লাভবান হবেন বলে স্বপ্ন দেখছেন। খলিলুর রহমান আরও জানান, গত বছর তিনি স্বল্প পরিসরে চারা সংগ্রহ করে তার জমিতে এটির চাষ করে প্রতিকেজি ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি করে বেশ লাভজনক একটি ফসল হিসেবে ধারণা থেকেই তিনি এবার বীজ সংগ্রহ করে গত নভেম্বরের প্রথমদিকে চারা উৎপাদনের লক্ষ্যে বীজ বপন করেন। প্রতি শতক জমির জন্য তিনি ১ গ্রাম করে বীজ বপন করেন। তাতে তার ৫০ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করতে হয়। তিনি ১৫ হাজার টাকার বীজ থেকে উৎপাদিত চারা দিয়ে ৪২ শতক জমিতে দুই ফুট দূরত্বে বেড প্রস্তুত করেন। অতঃপর বেডের মধ্যে এক-দেড় ফুট অন্তর অন্তর চারা লাগিয়েছেন। প্রতিটি বেড পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। পলিথিন দিয়ে বেড ঢেকে দেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত শীত বেশি থাকে। এই সময়ে মাটিতে তাপমাত্রা ধরে রাখতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বরাত দিয়ে এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি জানান, ক্যাপসিকাম চাষের জন্য আমাদের দেশের মাটি ও জলবায়ু বেশ উপযোগী। তবে এই ফসল অধিক খরা ও অধিক বৃষ্টি সহ্য করতে পারে না। তাই উঁচু বেলে দোআঁশ ও মাটিতে রস ধরে রাখতে পারে এমন জমি এই ফসল চাষের জন্য উপযুক্ত বলে তিনি জানান। সরাসরি জমিতে এই মিষ্টি মরিচ ক্যাপসিকাম চাষ করে কেমন লাভবান হবেন জানতে চাইলে তিনি জানান, গাছে পাতায় যেমন দেখা যাচ্ছে তাতে ৪২ শতক জমি থেকে ক্যাপসিকাম বিক্রি করে তিনি খরচ বাদ দিয়ে ৪-৫ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার হীরক কুমার সরকার বলেন, আমাদের দেশে উৎপাদিত মিষ্টি মরিচ খ্যাত ক্যাপসিকাম এটি ভারতীয় জাতের। আমাদের দেশে এটি শীতকালে চাষের জন্য উপযোগী। এর বাজারমূল্য বেশ ভাল। লাভবান একটি চাষ। লাভের সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় অধিক লাভের আশায় কৃষকরা এই সবজি’র চাষের দিকে ঝুঁকছে।