খুলনায় দুটি পাটকল লিজ নিতে চায় চীন

দেশের বৃহত্তম পাটকল ক্রিসেন্ট ও প্লাটিনাম লিজ নেয়ার প্রাথমিক আগ্রহ দেখিয়েছে চীন। পাটকল শ্রমিকদের বেকারত্ব নিরসনে সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে চীন এ আগ্রহ দেখিয়েছে। মোংলা বন্দর কাছে হওয়ায় তারা এটাকে পজেটিভ হিসেবে দেখছেন। ইতোমধ্যে চীনের একটি প্রতিনিধি দল মিল ২টি পরিদর্শন করেছেন।

খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদফতরের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, শ্রমিকদের বেকারত্ব নিরসনে বন্ধ পাটকলগুলো লিজ দেয়ার জন্য সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা করে। টার্কি ও চীন আগ্রহ দেখিয়েছে। ইতোমধ্যেই চীনের প্রতিনিধি দল প্লাটিনাম ও ক্রিসেন্ট জুট মিল পরিদর্শন করেছে। তবে, এখনও তাদের মতামত জানা যায়নি।

মিজান বলেন, ক্রমাগত লোকসানের কারণে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ক্রিসেন্ট ও প্লাটিনামসহ খুলনাঞ্চলের ৯টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে। আদমজী জুট মিলের পর দেশের বৃহত্তম পাটকল ক্রিসেন্ট। তৃতীয় অবস্থানে আছে প্লাটিনাম জুবলী জুট মিল। বন্ধ পাটকলগুলো চালু করার জন্য সরকার দুটি বিষয় নিয়ে ভাবছে। প্রথমত, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ ও দ্বিতীয়ত লিজ।

সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাটকলগুলো বন্ধ হওয়ার পর খালিশপুর শিল্পাঞ্চলে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠে। এরপর পাট মন্ত্রণালয় গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের প্রক্রিয়া শুরু করে। কলোনীগুলো থেকে শ্রমিকরা গ্রামে ফিরে যায়।

সূত্রমতে, ক্রিসেন্ট জুট মিলে আবাসনকৃত দুই হাজার ৭৭১ জন শ্রমিকের মধ্যে দুই হাজার ২৩০ জন ও অবসরপ্রাপ্ত এক হাজার ৫৯৩ জনের মধ্যে ৯১৮ জনের এবং প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলের আবাসনকৃত দুই হাজার ৭৭৩ শ্রমিকের মধ্যে দুই হাজার ৬৩০ জন এবং অবসরপ্রাপ্ত এক হাজার শ্রমিকের মধ্যে ৬৬২ জন গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ পেয়েছেন। তবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোন মিলের শ্রমিকরা এখনও সঞ্চয়পত্র পায়নি।

উল্লেখ্য, খালিশপুর এলাকায় ১১৩ একর জমির ওপর ১৯৫২ সালে ক্রিসেন্ট জুট মিলের যাত্রা শুরু হয়। মিলের মালিকানা ছিল আগাখান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, মেসার্স র‌্যালী ব্রাদার্স ও জেমস মেকলি আ্যন্ড সন্স লিমিটেডের। যাত্রার শুরুতে আট হাজার ৩১৩ জন শ্রমিক কর্মরত ছিল। এক হাজার ৩৩৬টি তাঁত চালু ছিল।

অন্যদিকে ১৯৫৮ সালে একই এলাকায় ৭৯ একর জমির ওপর প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলের উৎপাদন শুরু হয়। ইপিআইডিসি ও আগাখান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ যৌথভাবে মিলের সূচনা লগ্নে মালিক ছিলেন। পরবর্তীতে ইপিআইডিসি একক মালিকানা লাভ করে। মিলটিতে ৯৫৭টি তাতে বার্ষিক ৮০ মেট্রিক টন উৎপাদন হত। বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সালে ২৬ মার্চ মিলগুলো জাতীয়করণ করেন।

আরও খবর
দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার যোগ্য করে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান
রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে প্রত্যাবাসন জরুরি জাপানের রাষ্ট্রদূত
পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এমএ হাসেমের মৃত্যু
বিএনপি রাজনৈতিক আইসোলেশনে আছে : কাদের
আ’লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-কমিটি ঘোষণা
আজ বিটিভির ৫৬ বছরে পদার্পণ
শেষ বিদায়ে ভালোবাসায় সিক্ত নাট্যজন মান্নান হীরা
সুশাসনের ঘাটতি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ১২ দফা সুপারিশ টিআইবির
টিআরপি নির্ধারণের কৌশল প্রণয়নে কমিটি হচ্ছে তথ্যমন্ত্রী
৯৪ হাজারের বেশি শিশু পাবে নিজ ভাষায় পাঠ্যবই
ঘন কুয়াশায় শীতের হাওয়ায় জীবন বিপর্যস্ত
ফ্লাইট উড়ার আগেই বোমাতঙ্ক : উদ্ধারে শ্বাসরুদ্ধকর মহড়া

শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ , ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪২

খুলনায় দুটি পাটকল লিজ নিতে চায় চীন

খুলনা ব্যুরো

দেশের বৃহত্তম পাটকল ক্রিসেন্ট ও প্লাটিনাম লিজ নেয়ার প্রাথমিক আগ্রহ দেখিয়েছে চীন। পাটকল শ্রমিকদের বেকারত্ব নিরসনে সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে চীন এ আগ্রহ দেখিয়েছে। মোংলা বন্দর কাছে হওয়ায় তারা এটাকে পজেটিভ হিসেবে দেখছেন। ইতোমধ্যে চীনের একটি প্রতিনিধি দল মিল ২টি পরিদর্শন করেছেন।

খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদফতরের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, শ্রমিকদের বেকারত্ব নিরসনে বন্ধ পাটকলগুলো লিজ দেয়ার জন্য সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা করে। টার্কি ও চীন আগ্রহ দেখিয়েছে। ইতোমধ্যেই চীনের প্রতিনিধি দল প্লাটিনাম ও ক্রিসেন্ট জুট মিল পরিদর্শন করেছে। তবে, এখনও তাদের মতামত জানা যায়নি।

মিজান বলেন, ক্রমাগত লোকসানের কারণে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ক্রিসেন্ট ও প্লাটিনামসহ খুলনাঞ্চলের ৯টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে। আদমজী জুট মিলের পর দেশের বৃহত্তম পাটকল ক্রিসেন্ট। তৃতীয় অবস্থানে আছে প্লাটিনাম জুবলী জুট মিল। বন্ধ পাটকলগুলো চালু করার জন্য সরকার দুটি বিষয় নিয়ে ভাবছে। প্রথমত, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ ও দ্বিতীয়ত লিজ।

সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাটকলগুলো বন্ধ হওয়ার পর খালিশপুর শিল্পাঞ্চলে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠে। এরপর পাট মন্ত্রণালয় গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের প্রক্রিয়া শুরু করে। কলোনীগুলো থেকে শ্রমিকরা গ্রামে ফিরে যায়।

সূত্রমতে, ক্রিসেন্ট জুট মিলে আবাসনকৃত দুই হাজার ৭৭১ জন শ্রমিকের মধ্যে দুই হাজার ২৩০ জন ও অবসরপ্রাপ্ত এক হাজার ৫৯৩ জনের মধ্যে ৯১৮ জনের এবং প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলের আবাসনকৃত দুই হাজার ৭৭৩ শ্রমিকের মধ্যে দুই হাজার ৬৩০ জন এবং অবসরপ্রাপ্ত এক হাজার শ্রমিকের মধ্যে ৬৬২ জন গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ পেয়েছেন। তবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোন মিলের শ্রমিকরা এখনও সঞ্চয়পত্র পায়নি।

উল্লেখ্য, খালিশপুর এলাকায় ১১৩ একর জমির ওপর ১৯৫২ সালে ক্রিসেন্ট জুট মিলের যাত্রা শুরু হয়। মিলের মালিকানা ছিল আগাখান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, মেসার্স র‌্যালী ব্রাদার্স ও জেমস মেকলি আ্যন্ড সন্স লিমিটেডের। যাত্রার শুরুতে আট হাজার ৩১৩ জন শ্রমিক কর্মরত ছিল। এক হাজার ৩৩৬টি তাঁত চালু ছিল।

অন্যদিকে ১৯৫৮ সালে একই এলাকায় ৭৯ একর জমির ওপর প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলের উৎপাদন শুরু হয়। ইপিআইডিসি ও আগাখান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ যৌথভাবে মিলের সূচনা লগ্নে মালিক ছিলেন। পরবর্তীতে ইপিআইডিসি একক মালিকানা লাভ করে। মিলটিতে ৯৫৭টি তাতে বার্ষিক ৮০ মেট্রিক টন উৎপাদন হত। বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সালে ২৬ মার্চ মিলগুলো জাতীয়করণ করেন।