তীব্র শীতে লালমনিরহাটের জনজীবন থমকে দাঁড়িয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম, ভোগান্তিতে আছে নিম্নআয়ের মানুষ। আবারও কনকনে ঠাণ্ডা আর ঘন কুয়াশায় তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের কয়েক লাখ শীতার্ত মানুষের কষ্ট বেড়েছে নিদারুণ। পরিবারগুলোর শীতের পোশাক না থাকায় খড়কুটোর আগুনই ভরসা করে চলছে শীতার্ত দুস্থ মানুষ।
গতকাল সারাদিনেও সূর্যের দেখা না পাওয়ায় বেড়েছে কনকনে ঠাণ্ডা। এতে কাবু হয়ে পড়েছে তিস্তাপাড়ের শিশু, বৃদ্ধ সবাই। তিস্তাপাড়ের মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। গতকাল দুপুর ১২টায় লালমনিরহাটের তাপমাত্রা ছিল ১০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ সুবল চন্দ্র রায়।
প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সকাল ১০টা ও সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে দিনে ও রাতে খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন তারা। ঠাণ্ডার কারণে কাজের সন্ধানে ঘরের বাইরে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন খেটেখাওয়া নিম্নআয়ের মানুষ।
তিস্তাপাড়ের অহিদুল ইসলাম জানান, সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। তিস্তাপাড়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। এই এলাকায় বেশিরভাগ মানুষ দিনমজুর ও জেলে। ঠাণ্ডায় কাজকর্ম না থাকায় এই শীত মৌসুমে তাদের কষ্ট বেড়ে যায়।
হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়ার ভ্যানচালক মকবুল হোসেন বলেন, শীতে যাত্রীও পাওয়া যায় না। দালালপাড়া গ্রামের আলাল মিয়া বলেন, ঠাণ্ডার কারণে অনেক কষ্টে রাত কাটিয়েছি। গায়ে কাপড় নাই তাই বাহিরে বের হতে পারি নাই।
হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়ার ইউনিয়নের দিনমজুর বাহেজ আলী বলেন, পরিষদে কম্বল আসে সবাই পায় আমি পাই না।
চরবেষ্টিত আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা দুর্গম। এখানে প্রায় ১২টি চর রয়েছে। এসব চরে বসবাসকারী শীতার্ত মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, দুই দফায় ২৯০টি কম্বল আমার ইউনিয়নের জন্য সরকারিভাবে পেয়েছি। তিস্তাপাড়ের শীতার্তদের মাঝে তা বিতরণ করেছি। লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বলেন, হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। উপজেলা মেডিকেল টিম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অন্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, লালমনিরহাটের শীতার্তদের জন্য প্রায় ২১ হাজার ৭শ’ কম্বল ও ৩০ লাখ টাকা ৫ উপজেলার জন্য শুকনো খাবার পেয়ে তা বিতরণ করা হয়েছে। শীতার্ত মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ চলমান আছে।
শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ , ১০ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ১০ রবিউস সানি ১৪৪২
মনিরুজ্জামান সরকার, লালমনিরহাট
তীব্র শীতে লালমনিরহাটের জনজীবন থমকে দাঁড়িয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম, ভোগান্তিতে আছে নিম্নআয়ের মানুষ। আবারও কনকনে ঠাণ্ডা আর ঘন কুয়াশায় তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের কয়েক লাখ শীতার্ত মানুষের কষ্ট বেড়েছে নিদারুণ। পরিবারগুলোর শীতের পোশাক না থাকায় খড়কুটোর আগুনই ভরসা করে চলছে শীতার্ত দুস্থ মানুষ।
গতকাল সারাদিনেও সূর্যের দেখা না পাওয়ায় বেড়েছে কনকনে ঠাণ্ডা। এতে কাবু হয়ে পড়েছে তিস্তাপাড়ের শিশু, বৃদ্ধ সবাই। তিস্তাপাড়ের মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। গতকাল দুপুর ১২টায় লালমনিরহাটের তাপমাত্রা ছিল ১০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ সুবল চন্দ্র রায়।
প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সকাল ১০টা ও সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে দিনে ও রাতে খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন তারা। ঠাণ্ডার কারণে কাজের সন্ধানে ঘরের বাইরে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন খেটেখাওয়া নিম্নআয়ের মানুষ।
তিস্তাপাড়ের অহিদুল ইসলাম জানান, সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। তিস্তাপাড়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। এই এলাকায় বেশিরভাগ মানুষ দিনমজুর ও জেলে। ঠাণ্ডায় কাজকর্ম না থাকায় এই শীত মৌসুমে তাদের কষ্ট বেড়ে যায়।
হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়ার ভ্যানচালক মকবুল হোসেন বলেন, শীতে যাত্রীও পাওয়া যায় না। দালালপাড়া গ্রামের আলাল মিয়া বলেন, ঠাণ্ডার কারণে অনেক কষ্টে রাত কাটিয়েছি। গায়ে কাপড় নাই তাই বাহিরে বের হতে পারি নাই।
হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়ার ইউনিয়নের দিনমজুর বাহেজ আলী বলেন, পরিষদে কম্বল আসে সবাই পায় আমি পাই না।
চরবেষ্টিত আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা দুর্গম। এখানে প্রায় ১২টি চর রয়েছে। এসব চরে বসবাসকারী শীতার্ত মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, দুই দফায় ২৯০টি কম্বল আমার ইউনিয়নের জন্য সরকারিভাবে পেয়েছি। তিস্তাপাড়ের শীতার্তদের মাঝে তা বিতরণ করেছি। লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বলেন, হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। উপজেলা মেডিকেল টিম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অন্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, লালমনিরহাটের শীতার্তদের জন্য প্রায় ২১ হাজার ৭শ’ কম্বল ও ৩০ লাখ টাকা ৫ উপজেলার জন্য শুকনো খাবার পেয়ে তা বিতরণ করা হয়েছে। শীতার্ত মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ চলমান আছে।