আজ ৩০ ডিসেম্বর। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই বছরপূর্তি। ২০১৮ সালের এদিন দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উদযাপন করবে। অন্যদিকে, একাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ৩০ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করবে বিএনপি। এ উপলক্ষে উভয় দলই বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেবে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে জয় পায় এবং টানা তৃতীয়বারের মতো পাঁচ বছরের জন্য সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন এবং ৪৭ সদস্য বিশিষ্ট মন্ত্রী সভা গঠন করেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ৮ নেভেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষণায় ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা হলেও ১২ নভেম্বর পুনঃতফসিলে ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতৃত্বে গঠিত মহাজোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোটসহ বাংলাদেশের নিবন্ধিত সর্বমোট ৩৯টি দল অংশগ্রহণ করে।
নির্বাচনে ১ হাজার ৮৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন যার মধ্যে ১২৮ জন স্বতন্ত্র। এছাড়া গাইবান্ধা-৩ আসনে ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বি চৌধুরী ২০১৮ সালে ১৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের প্রাক্কালে মৃত্যুবরণ করায় নির্বাচন কমিশন আসনটিতে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে। ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি এ আসনে ভোট গ্রহণের পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে সারাদেশে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন। যারমধ্যে ৫ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩২৯ জন পুরুষ ও ৫ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ১৫১ জন নারী ভোটার বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ নির্বাচনের ৬টি নির্বাচনী আসনে সম্পূর্ণভাবে ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ভোট গ্রহণ করা হয়। ইভিএম ব্যবহার করা আসনগুলো ছিল, ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-৯, রংপুর-৩, খুলনা-২ ও সাতক্ষীরা-২। এ উপলক্ষে গতকাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ইতিহাসে একটি বিজয়ের মাইলফলক। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তি, দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকদের আস্ফালন আর সহিংস রাজনীতির অন্ধকার ছায়া কাটিয়ে গণতন্ত্রের নবতর অভিযাত্রায় অগ্রসর হয় বাংলাদেশ। এ কারণে ৩০ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পক্ষে ব্যালটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে নৌকা প্রতীকে গণরায় প্রদান করে। স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী, ১৫ আগস্ট, জেলহত্যা ও ২১ আগস্টের খুনি এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে জনগণ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে দেশের। বিএনপি তাদের চিরাচরিত ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারাবাহিকতায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে এবং জনগণের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা ও নির্বাচন কেন্দ্রিক উৎসব-আমেজে স্থবিরতা সৃষ্টি করতে অপতৎরপতা চালায়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এবং পরে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বিনষ্টে সারাদেশে বিএনপি-জামাত অশুভ জোট আগুন সন্ত্রাস চালায় ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। বিএনপি-জামাতের আগুন সন্ত্রাসে শত শত সাধারণ মানুষ নিহত হয়। আগুন সন্ত্রাসে দগ্ধ হয়ে এখনও অসংখ্য মানুষ দুর্বিষহ যন্ত্রণা ভোগ করছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্ভাসিত সমাজ বিনির্মাণ করতে বদ্ধপরিকর। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন ধারাবাহিক অগ্রগতির মধ্য দিয়ে কাক্সিক্ষত অভিষ্ঠে এগিয়ে চলেছে, তখনই একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ব্যাহত করার নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উপলক্ষে কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আজ সকাল ১১টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। বিকেল ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ এমপি, ডা. দীপু মণি এমপি ও ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
উল্লেখিত কর্মসূচিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা শাখাসমূহে ৩০ ডিসেম্বর অনুরূপ কর্মসূচি পালিত হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ঘোষিত কর্মসূচি স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে যথাযথভাবে পালনের জন্য দেশের সব জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে দেশের সর্বস্তরের জনগণকে গণতন্ত্রের বিজয়ের এই ঐতিহাসিক দিনটি যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে উদযাপনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। অন্যদিকে, ৩০ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে এবং একাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১১টায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতাদের উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে দেশবাসীসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ও সারাদেশে জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি। গতকাল নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আরও জানান, গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে একই দিন দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হবে।
বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ , ১৫ পৌষ ১৪২৭, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
আজ ৩০ ডিসেম্বর। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই বছরপূর্তি। ২০১৮ সালের এদিন দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উদযাপন করবে। অন্যদিকে, একাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ৩০ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করবে বিএনপি। এ উপলক্ষে উভয় দলই বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেবে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে জয় পায় এবং টানা তৃতীয়বারের মতো পাঁচ বছরের জন্য সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন এবং ৪৭ সদস্য বিশিষ্ট মন্ত্রী সভা গঠন করেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ৮ নেভেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষণায় ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা হলেও ১২ নভেম্বর পুনঃতফসিলে ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতৃত্বে গঠিত মহাজোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোটসহ বাংলাদেশের নিবন্ধিত সর্বমোট ৩৯টি দল অংশগ্রহণ করে।
নির্বাচনে ১ হাজার ৮৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন যার মধ্যে ১২৮ জন স্বতন্ত্র। এছাড়া গাইবান্ধা-৩ আসনে ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বি চৌধুরী ২০১৮ সালে ১৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের প্রাক্কালে মৃত্যুবরণ করায় নির্বাচন কমিশন আসনটিতে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে। ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি এ আসনে ভোট গ্রহণের পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে সারাদেশে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন। যারমধ্যে ৫ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩২৯ জন পুরুষ ও ৫ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ১৫১ জন নারী ভোটার বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ নির্বাচনের ৬টি নির্বাচনী আসনে সম্পূর্ণভাবে ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ভোট গ্রহণ করা হয়। ইভিএম ব্যবহার করা আসনগুলো ছিল, ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-৯, রংপুর-৩, খুলনা-২ ও সাতক্ষীরা-২। এ উপলক্ষে গতকাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ইতিহাসে একটি বিজয়ের মাইলফলক। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তি, দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকদের আস্ফালন আর সহিংস রাজনীতির অন্ধকার ছায়া কাটিয়ে গণতন্ত্রের নবতর অভিযাত্রায় অগ্রসর হয় বাংলাদেশ। এ কারণে ৩০ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পক্ষে ব্যালটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে নৌকা প্রতীকে গণরায় প্রদান করে। স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী, ১৫ আগস্ট, জেলহত্যা ও ২১ আগস্টের খুনি এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে জনগণ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে দেশের। বিএনপি তাদের চিরাচরিত ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারাবাহিকতায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে এবং জনগণের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা ও নির্বাচন কেন্দ্রিক উৎসব-আমেজে স্থবিরতা সৃষ্টি করতে অপতৎরপতা চালায়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এবং পরে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বিনষ্টে সারাদেশে বিএনপি-জামাত অশুভ জোট আগুন সন্ত্রাস চালায় ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। বিএনপি-জামাতের আগুন সন্ত্রাসে শত শত সাধারণ মানুষ নিহত হয়। আগুন সন্ত্রাসে দগ্ধ হয়ে এখনও অসংখ্য মানুষ দুর্বিষহ যন্ত্রণা ভোগ করছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্ভাসিত সমাজ বিনির্মাণ করতে বদ্ধপরিকর। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন ধারাবাহিক অগ্রগতির মধ্য দিয়ে কাক্সিক্ষত অভিষ্ঠে এগিয়ে চলেছে, তখনই একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ব্যাহত করার নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উপলক্ষে কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আজ সকাল ১১টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। বিকেল ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ এমপি, ডা. দীপু মণি এমপি ও ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
উল্লেখিত কর্মসূচিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা শাখাসমূহে ৩০ ডিসেম্বর অনুরূপ কর্মসূচি পালিত হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ঘোষিত কর্মসূচি স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে যথাযথভাবে পালনের জন্য দেশের সব জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে দেশের সর্বস্তরের জনগণকে গণতন্ত্রের বিজয়ের এই ঐতিহাসিক দিনটি যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে উদযাপনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। অন্যদিকে, ৩০ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে এবং একাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১১টায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতাদের উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে দেশবাসীসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ও সারাদেশে জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি। গতকাল নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আরও জানান, গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে একই দিন দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হবে।