সুন্দরবনেই নষ্ট হচ্ছে গোলপাতা

টিনের ঘরে ঝুঁকছে মানুষ কমছে গোলপাতার চাহিদা

দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ি-ঘর নির্মাণে গোলপাতার পরিবর্তে সিআইশিটের (ঢেউটিন) ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গোলপাতার চাহিদা কমেছে। যে কারণে সুন্দরবনের বিভিন্ন গোলপাতা কূপে নষ্ট হচ্ছে পাতা।

সুন্দরবন বনজীবী ব্যবসায়ী ফেডারেশনের সভাপতি মীর কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, এক সময় সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগের খুলনা রেঞ্জেই তিনটি কূপ থেকে গোলপাতা আহরণ করা হতো। বর্তমানে একটি কূপ থেকে গোলপাতা কাটা হয়। আগে প্রায় ১ হাজার বাওয়ালি গোলপাতা আহরণ করত। এখন তা কমে ২৫০-এ নেমে এসেছে। বাড়ি-ঘর নির্মাণে ঢেউটিনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গোলপাতার চাহিদা কমেছে।

বাচ্চু আরও বলেন, গোলগাছ নারকেল, খেজুর, তাল ও কলা জাতীয় গাছের মতো। ঝোড়া বা পরিস্কার করা না হলে ফল প্রদানের পরিমাণ কমে যায়। সুন্দরবনে গাছ পরিষ্কার বা পাতা নাকাটায় ফল দেয়ার পরিমাণও কমেছে। অনেক কূপে পাতা মরে যাচ্ছে।

নগরীর চাঁনমারী এলাকার গোলপাতা মোকামে গিয়ে দেখা যায়, মোকামগুলোতে আগের মতো পাতার মজুদ নেই। বাঁশ ও গোলপাতা ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান জানান, ঢেউটিনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলে গোলপাতার চাহিদা কমেছে। এখন বাড়ি-ঘর নয়, কিছু ঘের ব্যবসায়ী তাদের ঘেরের ‘পাহারাঘর’ নির্মাণে গোলপাতা সংগ্রহ করেন।

একই কথা জানালেন, দাকোপের বাজুয়া, চালনা, নলিয়ান ও মংলার গোলপাতা ব্যবসায়ীরা।

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন,এ বিভাগের আড়ুশিবসা, শিবসা এবং ভদ্রা এ তিনটি এবং সাতক্ষীরা রেঞ্জের সাতক্ষীরা কূপ থেকে গোলপাতা আহরণ করা হতো। বর্তমানে তিনটি স্থানই অভয়ারণ্যের মধ্যে পড়েছে। এ বিভাগের আওতায় এখন মাত্র দুটি কূপ থেকে গোলপাতা আহরণ হয়।

মোহসীন বলেন,এখন গোলপাতার চাহিদা বাইরে কম। এক সময় সুন্দরবনে ১০ লাখ টন পরিমাণ পাতা আহরণ করা হতো। এখন তা কমে ২ লাখ টনে নেমেছে। যে কারণে অনুমতিও কম দেয়া হচ্ছে।

শনিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২১ , ১৮ পৌষ ১৪২৭, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

সুন্দরবনেই নষ্ট হচ্ছে গোলপাতা

টিনের ঘরে ঝুঁকছে মানুষ কমছে গোলপাতার চাহিদা

খুলনা ব্যুরো

image

দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ি-ঘর নির্মাণে গোলপাতার পরিবর্তে সিআইশিটের (ঢেউটিন) ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গোলপাতার চাহিদা কমেছে। যে কারণে সুন্দরবনের বিভিন্ন গোলপাতা কূপে নষ্ট হচ্ছে পাতা।

সুন্দরবন বনজীবী ব্যবসায়ী ফেডারেশনের সভাপতি মীর কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, এক সময় সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগের খুলনা রেঞ্জেই তিনটি কূপ থেকে গোলপাতা আহরণ করা হতো। বর্তমানে একটি কূপ থেকে গোলপাতা কাটা হয়। আগে প্রায় ১ হাজার বাওয়ালি গোলপাতা আহরণ করত। এখন তা কমে ২৫০-এ নেমে এসেছে। বাড়ি-ঘর নির্মাণে ঢেউটিনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গোলপাতার চাহিদা কমেছে।

বাচ্চু আরও বলেন, গোলগাছ নারকেল, খেজুর, তাল ও কলা জাতীয় গাছের মতো। ঝোড়া বা পরিস্কার করা না হলে ফল প্রদানের পরিমাণ কমে যায়। সুন্দরবনে গাছ পরিষ্কার বা পাতা নাকাটায় ফল দেয়ার পরিমাণও কমেছে। অনেক কূপে পাতা মরে যাচ্ছে।

নগরীর চাঁনমারী এলাকার গোলপাতা মোকামে গিয়ে দেখা যায়, মোকামগুলোতে আগের মতো পাতার মজুদ নেই। বাঁশ ও গোলপাতা ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান জানান, ঢেউটিনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলে গোলপাতার চাহিদা কমেছে। এখন বাড়ি-ঘর নয়, কিছু ঘের ব্যবসায়ী তাদের ঘেরের ‘পাহারাঘর’ নির্মাণে গোলপাতা সংগ্রহ করেন।

একই কথা জানালেন, দাকোপের বাজুয়া, চালনা, নলিয়ান ও মংলার গোলপাতা ব্যবসায়ীরা।

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন,এ বিভাগের আড়ুশিবসা, শিবসা এবং ভদ্রা এ তিনটি এবং সাতক্ষীরা রেঞ্জের সাতক্ষীরা কূপ থেকে গোলপাতা আহরণ করা হতো। বর্তমানে তিনটি স্থানই অভয়ারণ্যের মধ্যে পড়েছে। এ বিভাগের আওতায় এখন মাত্র দুটি কূপ থেকে গোলপাতা আহরণ হয়।

মোহসীন বলেন,এখন গোলপাতার চাহিদা বাইরে কম। এক সময় সুন্দরবনে ১০ লাখ টন পরিমাণ পাতা আহরণ করা হতো। এখন তা কমে ২ লাখ টনে নেমেছে। যে কারণে অনুমতিও কম দেয়া হচ্ছে।