ক্যাসিনোকাণ্ডের ৩২ মামলায় গ্রেফতার ২৭৫

২০২০ সালে আলোচিত ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান। এসব ক্যাসিনো অভিযানে ২৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে রাজধানী ঢাকায় ২২২ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫৩ জন। আর এসব ঘটনায় ৩২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি মামলার তদন্ত করে র‌্যাব। আর ১৩টি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এখনও একটি মামলা তদন্তাধীন। আর বাকি ১৮টি মামলার তদন্ত করছে পুলিশ। পুলিশের তদন্ত করা মামলাগুলোর মধ্যে সাতটি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু ও রুপন ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের পাঁচটি মামলার মধ্যে চারটির চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

রাজধানীর মতিঝিলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে বেশ কয়েকজন রাঘববোয়াল ধরা পড়ে। গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়। রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। ওই দিন ক্যাসিনো কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে গুলশানের বাসা থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে যুবলীগের একই শাখার সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী স¤্রাটকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এই দুইজনের গ্রেফতার ছাড়াও ২২টি অবৈধ আগ্নেয়ান্ত্র, ৮ কেজি স্বর্ণ এবং বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। র‌্যাব সূত্র জানায়, এসব অভিযানের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা এখনও তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ডিআইজি (অর্গানাইজড ক্রাইম) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছিলেন, এনামুল-রুপনের কাছ থেকে জমিসহ ২০টি বাড়ি, ১২০টি ফ্ল্যাট, ২৫ কাঠা জমি ছাড়াও ৯১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১৯ কোটি টাকা পাওয়া গেছে।

যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়ার কাণ্ড ফাঁস হয় গত ২২ ফেব্রুয়ারি। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এরপর তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। অস্ত্র মামলা ছাড়া বাকি মামলাগুলো হলো শেরেবাংলা নগর থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা, গুলশান থানায় মানি লন্ডারিংয়ের মামলা, বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে (জাল টাকার) মামলা এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। গত ১২ অক্টোবর যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরীকে অস্ত্র মামলায় ২০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন।

ক্যাসিনোকাণ্ডের ব্যাপক কারবার ফাঁস হওয়ার পর কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজির তথ্য ছাড়াও পাশাপাশি ক্যাসিনোকাণ্ডের আরও হোতার নাম প্রকাশ হতে থাকে। গণপূর্তের ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমের টেন্ডারবাণিজ্য, মোহামেডান ক্লাবের পরিচালক মো. লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনাকারী এনামুল হক আরমান, কলাবাগান ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ শফিফুল আলম ফিরোজ, অনলাইন ক্যাসিনোর প্রধান সমন্বয়কারী সেলিম প্রধান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান, মোহাম্মদপুরের ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা ময়নুল হক ওরফে মনজুর নাম আসে। অভিযানে একে একে তারা ধরা পড়েন। অনেকেই গাঢাকা দেন। আবার কেউ কেউ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতে আত্মগোপন করেন। এভাবে প্রায় তিন মাস ক্যাসিনোবিরোধী মোট ৪৯টি অভিযান পরিচালিত হয়। এরমধ্যে ৩২টি র‌্যাব এবং ১৭টি অভিযান পুলিশ পরিচালনা করে। এসব অভিযানে ২৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরমধ্যে ঢাকায় ২২২ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫৩ জন।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ওই সময় ১১টি ক্যাসিনো ও ক্লাবে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব। আলোচিত ক্যাসিনোকাণ্ডের ক্লাবগুলো হলো- রাজধানীর মতিঝিলে মোহামেডান ক্লাব, ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাব, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, গুলিস্তানে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র, কলাবাগান ক্রীড়াচক্র, ধানমণ্ডি ক্লাব, ফু-ওয়াং ক্লাব,বনানীর গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ, চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ক্লাব ও আবহানী ক্লাব। এরপর আরও বেশ কয়েকটি ক্যাসিনোতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

জানা গেছে, যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ, কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান, ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি এসএম রবিউল ইসলাম সোহেল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের জুয়ার আসরের ইজারাদার আলী আহমেদ ও গুলিস্তান এলাকার দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলুসহ অন্তত ৪০ জন এখন দেশে, যারা ওই সময় অভিযানের ভয়ে বিদেশে পালিয়েছিলেন। আর অভিযানে গ্রেফতার হওয়া কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ ও মোহামেডান ক্লাবের পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

অন্যদিকে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তিন সংসদ সদস্যসহ ২৩ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাবেক দফতর সম্পাদক আনিসুর রহমানের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়। আবার ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। আর ১৬৬ কোটি টাকার এফডিআর, ১৩২টি বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই এবং ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকার চেকও জব্দ করা হয়। আর এসব ঘটনার মামলাগুলো তদন্ত চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।

রবিবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২১ , ১৯ পৌষ ১৪২৭, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

ক্যাসিনোকাণ্ডের ৩২ মামলায় গ্রেফতার ২৭৫

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

২০২০ সালে আলোচিত ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান। এসব ক্যাসিনো অভিযানে ২৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে রাজধানী ঢাকায় ২২২ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫৩ জন। আর এসব ঘটনায় ৩২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি মামলার তদন্ত করে র‌্যাব। আর ১৩টি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এখনও একটি মামলা তদন্তাধীন। আর বাকি ১৮টি মামলার তদন্ত করছে পুলিশ। পুলিশের তদন্ত করা মামলাগুলোর মধ্যে সাতটি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু ও রুপন ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের পাঁচটি মামলার মধ্যে চারটির চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

রাজধানীর মতিঝিলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে বেশ কয়েকজন রাঘববোয়াল ধরা পড়ে। গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়। রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। ওই দিন ক্যাসিনো কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে গুলশানের বাসা থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে যুবলীগের একই শাখার সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী স¤্রাটকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এই দুইজনের গ্রেফতার ছাড়াও ২২টি অবৈধ আগ্নেয়ান্ত্র, ৮ কেজি স্বর্ণ এবং বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। র‌্যাব সূত্র জানায়, এসব অভিযানের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা এখনও তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ডিআইজি (অর্গানাইজড ক্রাইম) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছিলেন, এনামুল-রুপনের কাছ থেকে জমিসহ ২০টি বাড়ি, ১২০টি ফ্ল্যাট, ২৫ কাঠা জমি ছাড়াও ৯১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১৯ কোটি টাকা পাওয়া গেছে।

যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়ার কাণ্ড ফাঁস হয় গত ২২ ফেব্রুয়ারি। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এরপর তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। অস্ত্র মামলা ছাড়া বাকি মামলাগুলো হলো শেরেবাংলা নগর থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা, গুলশান থানায় মানি লন্ডারিংয়ের মামলা, বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে (জাল টাকার) মামলা এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। গত ১২ অক্টোবর যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরীকে অস্ত্র মামলায় ২০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন।

ক্যাসিনোকাণ্ডের ব্যাপক কারবার ফাঁস হওয়ার পর কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজির তথ্য ছাড়াও পাশাপাশি ক্যাসিনোকাণ্ডের আরও হোতার নাম প্রকাশ হতে থাকে। গণপূর্তের ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমের টেন্ডারবাণিজ্য, মোহামেডান ক্লাবের পরিচালক মো. লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনাকারী এনামুল হক আরমান, কলাবাগান ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ শফিফুল আলম ফিরোজ, অনলাইন ক্যাসিনোর প্রধান সমন্বয়কারী সেলিম প্রধান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান, মোহাম্মদপুরের ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা ময়নুল হক ওরফে মনজুর নাম আসে। অভিযানে একে একে তারা ধরা পড়েন। অনেকেই গাঢাকা দেন। আবার কেউ কেউ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতে আত্মগোপন করেন। এভাবে প্রায় তিন মাস ক্যাসিনোবিরোধী মোট ৪৯টি অভিযান পরিচালিত হয়। এরমধ্যে ৩২টি র‌্যাব এবং ১৭টি অভিযান পুলিশ পরিচালনা করে। এসব অভিযানে ২৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরমধ্যে ঢাকায় ২২২ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫৩ জন।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ওই সময় ১১টি ক্যাসিনো ও ক্লাবে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব। আলোচিত ক্যাসিনোকাণ্ডের ক্লাবগুলো হলো- রাজধানীর মতিঝিলে মোহামেডান ক্লাব, ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাব, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, গুলিস্তানে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র, কলাবাগান ক্রীড়াচক্র, ধানমণ্ডি ক্লাব, ফু-ওয়াং ক্লাব,বনানীর গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ, চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ক্লাব ও আবহানী ক্লাব। এরপর আরও বেশ কয়েকটি ক্যাসিনোতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

জানা গেছে, যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ, কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান, ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি এসএম রবিউল ইসলাম সোহেল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের জুয়ার আসরের ইজারাদার আলী আহমেদ ও গুলিস্তান এলাকার দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলুসহ অন্তত ৪০ জন এখন দেশে, যারা ওই সময় অভিযানের ভয়ে বিদেশে পালিয়েছিলেন। আর অভিযানে গ্রেফতার হওয়া কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ ও মোহামেডান ক্লাবের পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

অন্যদিকে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তিন সংসদ সদস্যসহ ২৩ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাবেক দফতর সম্পাদক আনিসুর রহমানের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়। আবার ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। আর ১৬৬ কোটি টাকার এফডিআর, ১৩২টি বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই এবং ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকার চেকও জব্দ করা হয়। আর এসব ঘটনার মামলাগুলো তদন্ত চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।