অস্ত্র ও মাদক পাওয়ার কারণেই ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা : র‌্যাব

দুই মামলায় জামিন

পুলিশের প্রতিবেদনে দায়মুক্তি পাওয়া ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের বাসায় অস্ত্র ও মাদক পাওয়ার কারণেই তার ছেলে ইরফান সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল।

গতকাল রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব সদর দফতরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে র‌্যাব সেবা সপ্তাহ ও রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, তদন্তে র‌্যাব যা পেয়েছে সে অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে। আর পুলিশ তদন্তে যা পেয়েছে তারা সে অনুযায়ী প্রতিবেদন দিয়েছে। বিষয়টি এখন আদালতের বিষয়, এনিয়ে আর মন্তব্য করা যাবে না।

এদিকে অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ইরফানের বাসায় আমরা অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে ওয়াকিটকিসহ যেসব মালামাল পাওয়া যায় সেসবের ভিত্তিতে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দিয়েছেন। সেগুলো লিপিবদ্ধ করে আমরা থানায় মামলা করি। তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা যে প্রতিবেদন দিয়েছেন সে বিষয়ে আমরা অবহিত না। তিনি তার বাস্তবতা ও অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে যা পেয়েছেন তার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে কী আছে সেটা আমরা হাতে পেলে এ বিষয়ে পরে জানাতে পারব।

পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন ইফরান সেলিমকে দায়মুক্তি দেয়ায় র?্যাবের অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ হয় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, র?্যাব যে অভিযানটি পরিচালনা করেছিল সে সময় বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অভিযানে যেসব আলামত পাওয়া গিয়েছিল তার ভিত্তিতে মামলাগুলো করা হয়েছে। এ তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে র?্যাব নারাজি দেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আশিক বিল্লাহ বলেন, পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আমাদের হাতে আসার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন নাকি র?্যাবের অভিযান, জনগণ কোনটাকে বিশ্বাস করবে এমন প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, র?্যাব বাংলাদেশ পুলিশেরই একটি বিশেষায়িত বাহিনী।

অর্থাৎ বাংলাদেশ পুলিশের যেসব শাখা আছে তার মধ্যে র?্যাব অন্যতম। এ রকম একটি বাস্তবতায় আমরা অভিযানে যেসব আলামত ও মালামাল পেয়েছি সেগুলো সুনির্দিষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া র‌্যাবের সব অভিযানে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে যেসব আলামত পাওয়া যায় তা এজাহারে উল্লেখ করা হয়। যে সময় ঘটনা ঘটে তার বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে মামলা করা হয়। সুতরাং, র‌্যাবের সব কার্যক্রম এক ধরনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যদিয়ে পরিলিখিত থাকে। এ বাস্তবতায় র?্যাব নিরপেক্ষ ও চাপমুক্তভাবে অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশের তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে র?্যাব মনে করে, পুলিশের যারা তদন্ত করেছেন তারা এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারবেন। প্রসঙ্গত, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কমিশনার ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য আইনে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। প্রতিবেদনে তাকে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। পুলিশ দাবি করেছে, তার কাছে কোন অস্ত্র ও মাদক ছিল না। তার সহযোগী জাহিদের কাছ থেকে এই অস্ত্র ও মাদক পাওয়া গেছে।

বুধবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২১ , ২২ পৌষ ১৪২৭, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

অস্ত্র ও মাদক পাওয়ার কারণেই ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা : র‌্যাব

দুই মামলায় জামিন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

পুলিশের প্রতিবেদনে দায়মুক্তি পাওয়া ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের বাসায় অস্ত্র ও মাদক পাওয়ার কারণেই তার ছেলে ইরফান সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল।

গতকাল রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব সদর দফতরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে র‌্যাব সেবা সপ্তাহ ও রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, তদন্তে র‌্যাব যা পেয়েছে সে অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে। আর পুলিশ তদন্তে যা পেয়েছে তারা সে অনুযায়ী প্রতিবেদন দিয়েছে। বিষয়টি এখন আদালতের বিষয়, এনিয়ে আর মন্তব্য করা যাবে না।

এদিকে অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ইরফানের বাসায় আমরা অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে ওয়াকিটকিসহ যেসব মালামাল পাওয়া যায় সেসবের ভিত্তিতে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দিয়েছেন। সেগুলো লিপিবদ্ধ করে আমরা থানায় মামলা করি। তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা যে প্রতিবেদন দিয়েছেন সে বিষয়ে আমরা অবহিত না। তিনি তার বাস্তবতা ও অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে যা পেয়েছেন তার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে কী আছে সেটা আমরা হাতে পেলে এ বিষয়ে পরে জানাতে পারব।

পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন ইফরান সেলিমকে দায়মুক্তি দেয়ায় র?্যাবের অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ হয় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, র?্যাব যে অভিযানটি পরিচালনা করেছিল সে সময় বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অভিযানে যেসব আলামত পাওয়া গিয়েছিল তার ভিত্তিতে মামলাগুলো করা হয়েছে। এ তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে র?্যাব নারাজি দেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আশিক বিল্লাহ বলেন, পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আমাদের হাতে আসার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন নাকি র?্যাবের অভিযান, জনগণ কোনটাকে বিশ্বাস করবে এমন প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, র?্যাব বাংলাদেশ পুলিশেরই একটি বিশেষায়িত বাহিনী।

অর্থাৎ বাংলাদেশ পুলিশের যেসব শাখা আছে তার মধ্যে র?্যাব অন্যতম। এ রকম একটি বাস্তবতায় আমরা অভিযানে যেসব আলামত ও মালামাল পেয়েছি সেগুলো সুনির্দিষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া র‌্যাবের সব অভিযানে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে যেসব আলামত পাওয়া যায় তা এজাহারে উল্লেখ করা হয়। যে সময় ঘটনা ঘটে তার বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে মামলা করা হয়। সুতরাং, র‌্যাবের সব কার্যক্রম এক ধরনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যদিয়ে পরিলিখিত থাকে। এ বাস্তবতায় র?্যাব নিরপেক্ষ ও চাপমুক্তভাবে অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশের তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে র?্যাব মনে করে, পুলিশের যারা তদন্ত করেছেন তারা এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারবেন। প্রসঙ্গত, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কমিশনার ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য আইনে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। প্রতিবেদনে তাকে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। পুলিশ দাবি করেছে, তার কাছে কোন অস্ত্র ও মাদক ছিল না। তার সহযোগী জাহিদের কাছ থেকে এই অস্ত্র ও মাদক পাওয়া গেছে।