ঘাতক ট্রাক নিভিয়ে দিল নাট্যশিল্পী আশার জীবনপ্রদীপ

প্রায় চার বছর আগে টেলিভিশন নাটকে অভিনয় শুরু করেন নাট্যশিল্পী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী আশা চৌধুরী (২২)। অভিনয়কেই সে পেশা হিসেবে বেছে নিতে চেয়েছিলেন। স্বপ্ন ছিল প্রধান চরিত্রে অভিনয়। মাত্র দুদিন আগে সে সুযোগও পেয়ে ছিলেন। তবে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই বেপরোয়া ট্রাক নিভিয়ে দিল তার জীবন প্রদীপ। গত সোমবার রাত ২টার দিকে রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, নিহত আশা পাবনা জেলার আবুল কালামের মেয়ে। থাকতেন রূপনগর আবাসিক এলাকার ২০ নম্বর রোডের ৩৭ নম্বর বাসায় ইডেন কলেজের সাবেক এ শিক্ষার্থী। বর্তমানে রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলোজিতে (বিইউবিটি) ল’তে ৭ম সেমিস্টারে পড়েন। এক সময় বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিশুশিল্পী ছিলেন। একক নাটকে নিয়মিত অভিনয় করতেন তিনি। টেলিফিল্ম ও ধারাবাহিক নাটকেও তাকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। সর্বশেষ তিনি রুমান রুনি পরিচালিত ‘দ্য রিভেঞ্জ’ নাটকের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন।

দারুসসালাম থানার এসআই মো. সোহান আহমেদ জানান, সোমবার রাত ২টার দিকে টেকনিক্যাল মোড়ে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন আশা। তার মাথা থেতলে গেছে। খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। ঘাতক ট্রাক ও এর চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান এসআই। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রাতে বোর্ড বাজার থেকে নিজেদের বাসার কাজ দেখভাল শেষে রূপনগরের বাসায় ফিরছিলেন আশা। ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ রূপনগরের বাসায় নেয়ার কথা রয়েছে। তবে, মোটরসাইকেল চালকের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

তরুণ এই অভিনেত্রী মারা যাওয়ার দুই দিন আগে গত শুক্রবার ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। নাটকে তার সহশিল্পী ছিলেন সালাহউদ্দিন লাভলু এবং আনিসুর রহমান মিলন। নাটকটির নির্মাতা রোমান রুনী জানান, নায়িকার চরিত্রটি ঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য আশা টানা এক সপ্তাহ ধরে পরিশ্রম করেছে। নাটকের প্রতিটা শর্ট শেষে সবাইকে জিজ্ঞাসা করেছে কেমন হয়েছে, ভালো না হলে সে আবার শর্ট দিতে চাইত। কাজের প্রতি সে খুব সিরিয়াস ছিল। তার স্বপ্ন ছিল চলচ্চিত্র নিয়ে। সে পথে এগোনোর মাঝেই সে মারা গেল।

এদিকে, আশার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন অভিনেতা অভিনেত্রীরা। অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন ফেসবুকে লেখেন, আমার ২০২১ সালের শুরুর কাজটি ছিল ১ ও ২ তারিখ। যেখানে আশা চৌধুরী নামের এই মেয়েটি অভিনয় করেছেন, তার মানে দুদিন আগেই কাজ করেছি একসঙ্গে। এক সড়ক দুর্ঘটনায় আশা চিরতরে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আশার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

বুধবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২১ , ২২ পৌষ ১৪২৭, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

ঘাতক ট্রাক নিভিয়ে দিল নাট্যশিল্পী আশার জীবনপ্রদীপ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

প্রায় চার বছর আগে টেলিভিশন নাটকে অভিনয় শুরু করেন নাট্যশিল্পী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী আশা চৌধুরী (২২)। অভিনয়কেই সে পেশা হিসেবে বেছে নিতে চেয়েছিলেন। স্বপ্ন ছিল প্রধান চরিত্রে অভিনয়। মাত্র দুদিন আগে সে সুযোগও পেয়ে ছিলেন। তবে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই বেপরোয়া ট্রাক নিভিয়ে দিল তার জীবন প্রদীপ। গত সোমবার রাত ২টার দিকে রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, নিহত আশা পাবনা জেলার আবুল কালামের মেয়ে। থাকতেন রূপনগর আবাসিক এলাকার ২০ নম্বর রোডের ৩৭ নম্বর বাসায় ইডেন কলেজের সাবেক এ শিক্ষার্থী। বর্তমানে রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলোজিতে (বিইউবিটি) ল’তে ৭ম সেমিস্টারে পড়েন। এক সময় বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিশুশিল্পী ছিলেন। একক নাটকে নিয়মিত অভিনয় করতেন তিনি। টেলিফিল্ম ও ধারাবাহিক নাটকেও তাকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। সর্বশেষ তিনি রুমান রুনি পরিচালিত ‘দ্য রিভেঞ্জ’ নাটকের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন।

দারুসসালাম থানার এসআই মো. সোহান আহমেদ জানান, সোমবার রাত ২টার দিকে টেকনিক্যাল মোড়ে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন আশা। তার মাথা থেতলে গেছে। খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। ঘাতক ট্রাক ও এর চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান এসআই। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রাতে বোর্ড বাজার থেকে নিজেদের বাসার কাজ দেখভাল শেষে রূপনগরের বাসায় ফিরছিলেন আশা। ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ রূপনগরের বাসায় নেয়ার কথা রয়েছে। তবে, মোটরসাইকেল চালকের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

তরুণ এই অভিনেত্রী মারা যাওয়ার দুই দিন আগে গত শুক্রবার ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। নাটকে তার সহশিল্পী ছিলেন সালাহউদ্দিন লাভলু এবং আনিসুর রহমান মিলন। নাটকটির নির্মাতা রোমান রুনী জানান, নায়িকার চরিত্রটি ঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য আশা টানা এক সপ্তাহ ধরে পরিশ্রম করেছে। নাটকের প্রতিটা শর্ট শেষে সবাইকে জিজ্ঞাসা করেছে কেমন হয়েছে, ভালো না হলে সে আবার শর্ট দিতে চাইত। কাজের প্রতি সে খুব সিরিয়াস ছিল। তার স্বপ্ন ছিল চলচ্চিত্র নিয়ে। সে পথে এগোনোর মাঝেই সে মারা গেল।

এদিকে, আশার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন অভিনেতা অভিনেত্রীরা। অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন ফেসবুকে লেখেন, আমার ২০২১ সালের শুরুর কাজটি ছিল ১ ও ২ তারিখ। যেখানে আশা চৌধুরী নামের এই মেয়েটি অভিনয় করেছেন, তার মানে দুদিন আগেই কাজ করেছি একসঙ্গে। এক সড়ক দুর্ঘটনায় আশা চিরতরে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আশার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।