সমাজসেবা সচিবের ব্যাখ্যা চেয়েছেন ডিসি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় সমাজসেবা সম্মাননা কেলেঙ্কারির বিষয়টি জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে জানিয়েছেন। গতকাল এক চিঠিতে বিষয়টি তিনি তাদের অবহিত করেন। চিঠিতে জেলা প্রশাসক বলেন, গত ২ জানুয়ারি জেলায় জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২১ পালন উপলক্ষে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদানের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। মো. শাহ আলমকে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের ক্ষেত্রে সম্মাননা প্রদানের জন্য জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালককে মনোনয়ন প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, করোনাকালীন বিতর্কিত কার্যক্রমের জন্য মো. শাহ আলমের ওএমএস ডিলারশিপ বাতিল করা হয়। ওই ব্যক্তিকে সম্মাননা প্রদান করায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

কোন প্রক্রিয়ায় মো. শাহ আলমকে সম্মাননা প্রদানের জন্য মনোনয়ন দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ৩ জানুয়ারি এক স্মারকে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কাছে ব্যাখ্যা প্রদানের অনুরোধ করা হলে তিনি সন্তোষজনক জবাব দাখিল করতে পারেননি। জাতীয় সমাজসেবা দিবসের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে কোন দাফতরিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান করায় সমাজসেবা অধিদফতরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জনকল্যাণমূলক দফতরের সার্বিক সুনাম ক্ষুণœ হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক তার দেয়া চিঠিতে উল্লেখ করেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেয়া চিঠিতে জেলা প্রশাসক কোন দাফতরিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের নিমিত্তে সম্মাননা প্রদানের জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। উল্লেখ্য, গত মে মাসে করোনাকালে সরকারের দেয়া বিশেষ ওএমএস সুবিধার তালিকা প্রণয়নে হস্তক্ষেপ করেন জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক ও শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ওএমএস ডিলার মো. শাহ আলম।

ভিক্ষুক, ভবঘুরে, সাধারণ শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, চায়ের দোকানদার, হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজনের বদলে স্ত্রী-সন্তানসহ নিজের স্বজনদের নাম উঠান তিনি ওই তালিকায়। একটি জাতীয় দৈনিকে এই খবর প্রকাশিত হলে জেলা প্রশাসন তদন্তে নেমে তার-স্ত্রী-সন্তানসহ ১৩ স্বজনের নাম পায় ওই তালিকায়। এরপরই জেলা ওএমএস কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান ডিলার মো. শাহ আলমের কাছে তার ডিলারশিপ কেন বাতিল করা হবে না মর্মে গত ১১ মে একটি ব্যাখ্যা তলব করেন এবং এর জবাব যথাযথ না হওয়ায় ১৩ মে তার ডিলারশিপ বাতিল করেন।

বুধবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২১ , ২২ পৌষ ১৪২৭, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

বিতর্কিত ব্যক্তিকে সম্মাননা

সমাজসেবা সচিবের ব্যাখ্যা চেয়েছেন ডিসি

জেলা বার্তা পরিবেশক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় সমাজসেবা সম্মাননা কেলেঙ্কারির বিষয়টি জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে জানিয়েছেন। গতকাল এক চিঠিতে বিষয়টি তিনি তাদের অবহিত করেন। চিঠিতে জেলা প্রশাসক বলেন, গত ২ জানুয়ারি জেলায় জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২১ পালন উপলক্ষে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদানের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। মো. শাহ আলমকে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের ক্ষেত্রে সম্মাননা প্রদানের জন্য জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালককে মনোনয়ন প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, করোনাকালীন বিতর্কিত কার্যক্রমের জন্য মো. শাহ আলমের ওএমএস ডিলারশিপ বাতিল করা হয়। ওই ব্যক্তিকে সম্মাননা প্রদান করায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

কোন প্রক্রিয়ায় মো. শাহ আলমকে সম্মাননা প্রদানের জন্য মনোনয়ন দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ৩ জানুয়ারি এক স্মারকে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কাছে ব্যাখ্যা প্রদানের অনুরোধ করা হলে তিনি সন্তোষজনক জবাব দাখিল করতে পারেননি। জাতীয় সমাজসেবা দিবসের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে কোন দাফতরিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান করায় সমাজসেবা অধিদফতরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জনকল্যাণমূলক দফতরের সার্বিক সুনাম ক্ষুণœ হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক তার দেয়া চিঠিতে উল্লেখ করেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেয়া চিঠিতে জেলা প্রশাসক কোন দাফতরিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের নিমিত্তে সম্মাননা প্রদানের জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। উল্লেখ্য, গত মে মাসে করোনাকালে সরকারের দেয়া বিশেষ ওএমএস সুবিধার তালিকা প্রণয়নে হস্তক্ষেপ করেন জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক ও শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ওএমএস ডিলার মো. শাহ আলম।

ভিক্ষুক, ভবঘুরে, সাধারণ শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, চায়ের দোকানদার, হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজনের বদলে স্ত্রী-সন্তানসহ নিজের স্বজনদের নাম উঠান তিনি ওই তালিকায়। একটি জাতীয় দৈনিকে এই খবর প্রকাশিত হলে জেলা প্রশাসন তদন্তে নেমে তার-স্ত্রী-সন্তানসহ ১৩ স্বজনের নাম পায় ওই তালিকায়। এরপরই জেলা ওএমএস কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান ডিলার মো. শাহ আলমের কাছে তার ডিলারশিপ কেন বাতিল করা হবে না মর্মে গত ১১ মে একটি ব্যাখ্যা তলব করেন এবং এর জবাব যথাযথ না হওয়ায় ১৩ মে তার ডিলারশিপ বাতিল করেন।