টিসিবির মাধ্যমে রড আমদানির উদ্যোগ নেয়ার দাবি

নির্মাণকাজের গতি বৃদ্ধির জন্য টিসিবির মাধ্যমে শুল্কবিহীন রড আমদানির উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রিজ (বিএসিআই)। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত ৭ দফা দাবির একটিতে এ প্রস্তাব করে অ্যাসোসিয়েশনটি।

সংগঠনটি বলছে, গত দুই মাসে মাইল্ড স্টিল (এমএস) রডের দাম বেড়েছে ২৫-৩০ শতাংশ। একই সঙ্গে অন্য নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় এ শিল্পে জড়িতরা বিপর্যস্ত হচ্ছেন। এতে নির্মাণ শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হয়ে পড়বে এবং ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে দেশের অর্থনৈতিক গতি মন্থর হবে। লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী এসএম খোরশেদ আলম বলেন, অবকাঠামো নির্মাণকাজে দরকারি উপকরণের মধ্যে ২০-২৫ ভাগ রডের প্রয়োজন হয়। তবে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মূল দামের চেয়ে ২৫-৩০ শতাংশ দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ খাতের ব্যয় অনেক বেড়েছে। এতে করে চলমান কাজ চালিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছে নির্মাণকাজের প্রতিষ্ঠানগুলো। করোনা পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্ক্র্যাপ পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে বিলেট উৎপাদন কম হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে বলে মনে করেন সংগঠনটির সভাপতি। তিনি বলেন, একই কারণে স্থানীয় এমএস রড তথা ইস্পাতসামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোয়ও এমএস রডের মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিলেট দেশে উৎপাদিত হয় এবং বিদেশ থেকেও আমদানি করা হয়ে থাকে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে অনেকগুলো এমএস রড প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং দেশের চাহিদা মেটাচ্ছে। সরকার নতুন করে কোন শুল্ক বৃদ্ধি করেনি। এরপর এত পরিমাণের মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক। এতে প্রতিষ্ঠান লোকসানে পড়ায় এ শিল্পে জড়িত ৫০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে উন্নয়নকাজ চলমান রাখতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) অনুযায়ী সব কাজে মূল্য সমন্বয় (প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট) পদ্ধতি চালুসহ এ সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এসব দাবির বাকিগুলো হলো চলমান কাজগুলো যেহেতু নির্দিষ্ট আনুপাতিক চুক্তি (ফিক্সড রেট কনট্র্যাক্ট), তাই সরকারি নিয়ম মোতাবেক পরিপত্র জারি করে ভেরিয়েশনের মাধ্যমে মূল্য সমন্বয় করা, অতি দ্রুত বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএমএ) সঙ্গে সরাসরি নীতিনির্ধারকদের বসে ট্যারিফ, ভ্যাট ও এআইটি সমন্বয় করে এমএস রডের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে স্থানীয় শিল্পের সঙ্গে অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা, দেশি-বিদেশি যৌথ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠানকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কর কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করা এবং বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার রেট শিডিউল হালনাগাদের ব্যবস্থা করা।

রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১ , ২৬ পৌষ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

টিসিবির মাধ্যমে রড আমদানির উদ্যোগ নেয়ার দাবি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

নির্মাণকাজের গতি বৃদ্ধির জন্য টিসিবির মাধ্যমে শুল্কবিহীন রড আমদানির উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রিজ (বিএসিআই)। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত ৭ দফা দাবির একটিতে এ প্রস্তাব করে অ্যাসোসিয়েশনটি।

সংগঠনটি বলছে, গত দুই মাসে মাইল্ড স্টিল (এমএস) রডের দাম বেড়েছে ২৫-৩০ শতাংশ। একই সঙ্গে অন্য নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় এ শিল্পে জড়িতরা বিপর্যস্ত হচ্ছেন। এতে নির্মাণ শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হয়ে পড়বে এবং ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে দেশের অর্থনৈতিক গতি মন্থর হবে। লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী এসএম খোরশেদ আলম বলেন, অবকাঠামো নির্মাণকাজে দরকারি উপকরণের মধ্যে ২০-২৫ ভাগ রডের প্রয়োজন হয়। তবে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মূল দামের চেয়ে ২৫-৩০ শতাংশ দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ খাতের ব্যয় অনেক বেড়েছে। এতে করে চলমান কাজ চালিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছে নির্মাণকাজের প্রতিষ্ঠানগুলো। করোনা পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্ক্র্যাপ পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে বিলেট উৎপাদন কম হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে বলে মনে করেন সংগঠনটির সভাপতি। তিনি বলেন, একই কারণে স্থানীয় এমএস রড তথা ইস্পাতসামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোয়ও এমএস রডের মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিলেট দেশে উৎপাদিত হয় এবং বিদেশ থেকেও আমদানি করা হয়ে থাকে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে অনেকগুলো এমএস রড প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং দেশের চাহিদা মেটাচ্ছে। সরকার নতুন করে কোন শুল্ক বৃদ্ধি করেনি। এরপর এত পরিমাণের মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক। এতে প্রতিষ্ঠান লোকসানে পড়ায় এ শিল্পে জড়িত ৫০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে উন্নয়নকাজ চলমান রাখতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) অনুযায়ী সব কাজে মূল্য সমন্বয় (প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট) পদ্ধতি চালুসহ এ সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এসব দাবির বাকিগুলো হলো চলমান কাজগুলো যেহেতু নির্দিষ্ট আনুপাতিক চুক্তি (ফিক্সড রেট কনট্র্যাক্ট), তাই সরকারি নিয়ম মোতাবেক পরিপত্র জারি করে ভেরিয়েশনের মাধ্যমে মূল্য সমন্বয় করা, অতি দ্রুত বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএমএ) সঙ্গে সরাসরি নীতিনির্ধারকদের বসে ট্যারিফ, ভ্যাট ও এআইটি সমন্বয় করে এমএস রডের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে স্থানীয় শিল্পের সঙ্গে অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা, দেশি-বিদেশি যৌথ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠানকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কর কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করা এবং বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার রেট শিডিউল হালনাগাদের ব্যবস্থা করা।