নদী দূষণ : চাই সমন্বিত উদ্যোগ ও আইনের কঠোর প্রয়োগ

তিনশ’র বেশি উৎসমুখ বা ড্রোন দিয়ে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোতে প্রতিদিন বর্জ্য পড়ছে সাড়ে ৩ লাখ কেজি। এর মধ্যে শিল্প বর্জ্য ৬০ শতাংশ। সিটি করপোরেশন, ওয়াসা ও ইউনিয়ন পরিষদের ড্রেনের বর্জ্য ৩০ শতাংশ। বাকি ১০ শতাংশ গৃহস্থালি ও অন্যান্য বর্জ্য।

দেশের নদ-নদীগুলো বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। শিল্প কলকারখানার মালিকদের অবিবেচনাপ্রসূত কর্মকাণ্ডের কারণেই নদীগুলো বেশি দূষিত হচ্ছে। তবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত সংস্থাগুলোও দূষণ ঘটাচ্ছে। নাগরিকদের অসচেতনতা তো রয়েছেই।

নদ-নদীর অবস্থা দেখে মনে হয় না যে এগুলো দেখভাল করার জন্য দেশে কেউ আছে। জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন নামেই অভিভাবক। দখল-দূষণ বন্ধে তাদের অসহায়ত্ব সর্বজনবিদিত। কমিশন বিভিন্ন সময় এ অসহায়ত্বের কথা স্বীকারও করেছে। আদালতকে নদ-নদী রক্ষায় প্রায়ই নির্দেশনা দিতে দেখা যায়। এসব নির্দেশনার বেশিরভাগই উপেক্ষিত রয়ে যায়। নদী কমিশনকে সহযোগিতা বা আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব যাদের তারা কী ভূমিকা পালন করছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নদ-নদী রক্ষা করার কথা গুরুত্ব দিয়েই বলা হয়। এ যাবত অনেক কমিটিই গঠন করা হয়েছে। টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। দখল-দূষণ বন্ধে বিচ্ছিন্নভাবে কখনো কখনো অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসবের কোনটি থেকেই টেকসই সুফল মেলেনি।

নদ-নদী রক্ষায় বড় বড় অনেক পরিকল্পনার কথা শোনা যায়। আমরা বলতে চাই, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকতে হবে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে দখল-দূষণ বন্ধে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা জরুরি। পুনর্দখল-পুনর্দূষণও বন্ধ করতে হবে। দূষণ বন্ধে পরিবেশ অধিদফতরকে উদ্যোগী হয়ে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্রের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে নিতে হবে সমন্বিত উদ্যোগ। দূষণের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি।

রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১ , ২৬ পৌষ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

নদী দূষণ : চাই সমন্বিত উদ্যোগ ও আইনের কঠোর প্রয়োগ

তিনশ’র বেশি উৎসমুখ বা ড্রোন দিয়ে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোতে প্রতিদিন বর্জ্য পড়ছে সাড়ে ৩ লাখ কেজি। এর মধ্যে শিল্প বর্জ্য ৬০ শতাংশ। সিটি করপোরেশন, ওয়াসা ও ইউনিয়ন পরিষদের ড্রেনের বর্জ্য ৩০ শতাংশ। বাকি ১০ শতাংশ গৃহস্থালি ও অন্যান্য বর্জ্য।

দেশের নদ-নদীগুলো বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। শিল্প কলকারখানার মালিকদের অবিবেচনাপ্রসূত কর্মকাণ্ডের কারণেই নদীগুলো বেশি দূষিত হচ্ছে। তবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত সংস্থাগুলোও দূষণ ঘটাচ্ছে। নাগরিকদের অসচেতনতা তো রয়েছেই।

নদ-নদীর অবস্থা দেখে মনে হয় না যে এগুলো দেখভাল করার জন্য দেশে কেউ আছে। জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন নামেই অভিভাবক। দখল-দূষণ বন্ধে তাদের অসহায়ত্ব সর্বজনবিদিত। কমিশন বিভিন্ন সময় এ অসহায়ত্বের কথা স্বীকারও করেছে। আদালতকে নদ-নদী রক্ষায় প্রায়ই নির্দেশনা দিতে দেখা যায়। এসব নির্দেশনার বেশিরভাগই উপেক্ষিত রয়ে যায়। নদী কমিশনকে সহযোগিতা বা আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব যাদের তারা কী ভূমিকা পালন করছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নদ-নদী রক্ষা করার কথা গুরুত্ব দিয়েই বলা হয়। এ যাবত অনেক কমিটিই গঠন করা হয়েছে। টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। দখল-দূষণ বন্ধে বিচ্ছিন্নভাবে কখনো কখনো অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসবের কোনটি থেকেই টেকসই সুফল মেলেনি।

নদ-নদী রক্ষায় বড় বড় অনেক পরিকল্পনার কথা শোনা যায়। আমরা বলতে চাই, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকতে হবে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে দখল-দূষণ বন্ধে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা জরুরি। পুনর্দখল-পুনর্দূষণও বন্ধ করতে হবে। দূষণ বন্ধে পরিবেশ অধিদফতরকে উদ্যোগী হয়ে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্রের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে নিতে হবে সমন্বিত উদ্যোগ। দূষণের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি।