দিনে ফেরিওয়ালা সেজে বিভিন্ন স্থান রেকি করার পর রাতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গাড়িসহ বিভিন্ন কিছু ছিনতাই করত সিদ্দিকুরসহ ৪ জন। ছিনতাই করা গাড়িতে ঘুরে পথচারীদের টাকাসহ মূলব্যান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিত। ছিনতাইয়ে কোন সমস্যা হলে রুট পাল্টে বাসাবাড়িতে ঢুকে চুরি করত। এভাবে একেক সময় একেক ধরনের অপরাধ করা তাদের নেশায় পরিণত হয়েছে। একাধিক বার গ্রেফতার হয়ে জেলে গেলেও স্বভাব পাল্টাতে পারেননি। একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে চিহ্নিত ছিনতাইকারী চক্রের ২ সদস্যকে আটক করার পর এমন তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
গত ৯ জানুয়ারি গাজীপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয় মো. সিদ্দিকুর রহমান, মো. নুরু মিয়া, মো. হেমায়েত হোসেন হিমু এবং মো. আবুল বাশার নামের ৪ জনকে। একটি চুরির মামলায় সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়ে ওই ৪ জনকে আটক করার পর জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে যে তথ্য মিলেছে তাতে হতবাক পুলিশ কর্মকর্তরাও। আটক হওয়ার সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহার করা ১টি প্রাইভেটকার, ১টি মোটরসাইকেল, তালা কাটার কার্টার, লাগেজসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের হওয়া চুরির মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
গতকাল ডিএমপির (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, মিরপুর এলাকায় একটি চুরির ঘটনায় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা রুজু হয়। পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ ওই মামলার তদন্ত শুরু করে। সেই মামলার সূত্র ধরেই এ চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করে ডিবি লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম। অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, এ চক্রের মূল কাজ হলো গাড়ি ছিনতাই। ছিনতাইকৃত গাড়ি দিয়ে ঢাকার আশপাশে আশুলিয়া, গাজীপুর ও ঢাকার উত্তরায় বাজার ও দোকানপাট লুট করে। এই চক্রের আরও কিছু সদস্য আছে। তাদের কাজ হলো রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রাইভেট কার কিংবা মোটরসাইকেল ছিনতাই করা। সেই গাড়িটি তারা ছিনতাই ও চুরির কাজে ব্যবহার করত। চুরি ছিনতাইয়ের কাজ শেষ হলে নিজেরা বাঁচতে কোন এক নির্জন স্থানে গাড়ি ফেলে রেখে চলে যেত এ চক্রটি।
অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, এই চক্রটি বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চুরি ও ছিনতাই করে। গ্রেফতারকৃতরা ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে রাতের বেলায় বিভিন্ন দোকানপাটে চুরি ও ছিনতাই করত। চুরি-ছিনতাই করাকালে যেন কোন সমস্যা না হয় সেজন্য তারা রাতের বেলা বেছে নেয়। রাস্তার পাশে বিভিন্ন দোকানে বিশেষ করে মোবাইলের দোকানগুলোতে চুরি করত চক্রটি। কোন দোকানে চুরি করলে সবকিছু নিয়ে নিত, কোনটা আসল আর কোনটা নকল তখনও তাদের দেখার সুযোগ থাকত না। গাড়ি চুরি বা ছিনতাই রোধে গাড়িতে ট্র্যাকার মেশিন ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানান ডিবির এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
ডিবির সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস বলেন, গ্রেফতারকৃতরা অত্যন্ত কৌশলে দিনের বেলায় ফেরিওয়ালা সেজে গাড়ির মালিকদের গাড়ি কোথায় রাখে, কোন দোকান ও বাড়িতে নিরাপত্তাকর্মী নেই এবং চুরি করার আগমন ও প্রস্থান পথ রেকি করে। পরবর্তী সময়ে ওই চক্রটি গভীর রাতে বা সুবিধামতো সময়ে কার্টার দ্বারা বিভিন্ন বাড়ি ও দোকানের তালা কেটে টাকা, গাড়ি, মোবাইলসহ মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে দ্রুত গাড়িযোগে পালিয়ে যেত। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১ , ২৭ পৌষ ১৪২৭, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
দিনে ফেরিওয়ালা সেজে বিভিন্ন স্থান রেকি করার পর রাতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গাড়িসহ বিভিন্ন কিছু ছিনতাই করত সিদ্দিকুরসহ ৪ জন। ছিনতাই করা গাড়িতে ঘুরে পথচারীদের টাকাসহ মূলব্যান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিত। ছিনতাইয়ে কোন সমস্যা হলে রুট পাল্টে বাসাবাড়িতে ঢুকে চুরি করত। এভাবে একেক সময় একেক ধরনের অপরাধ করা তাদের নেশায় পরিণত হয়েছে। একাধিক বার গ্রেফতার হয়ে জেলে গেলেও স্বভাব পাল্টাতে পারেননি। একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে চিহ্নিত ছিনতাইকারী চক্রের ২ সদস্যকে আটক করার পর এমন তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
গত ৯ জানুয়ারি গাজীপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয় মো. সিদ্দিকুর রহমান, মো. নুরু মিয়া, মো. হেমায়েত হোসেন হিমু এবং মো. আবুল বাশার নামের ৪ জনকে। একটি চুরির মামলায় সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়ে ওই ৪ জনকে আটক করার পর জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে যে তথ্য মিলেছে তাতে হতবাক পুলিশ কর্মকর্তরাও। আটক হওয়ার সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহার করা ১টি প্রাইভেটকার, ১টি মোটরসাইকেল, তালা কাটার কার্টার, লাগেজসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের হওয়া চুরির মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
গতকাল ডিএমপির (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, মিরপুর এলাকায় একটি চুরির ঘটনায় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা রুজু হয়। পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ ওই মামলার তদন্ত শুরু করে। সেই মামলার সূত্র ধরেই এ চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করে ডিবি লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম। অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, এ চক্রের মূল কাজ হলো গাড়ি ছিনতাই। ছিনতাইকৃত গাড়ি দিয়ে ঢাকার আশপাশে আশুলিয়া, গাজীপুর ও ঢাকার উত্তরায় বাজার ও দোকানপাট লুট করে। এই চক্রের আরও কিছু সদস্য আছে। তাদের কাজ হলো রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রাইভেট কার কিংবা মোটরসাইকেল ছিনতাই করা। সেই গাড়িটি তারা ছিনতাই ও চুরির কাজে ব্যবহার করত। চুরি ছিনতাইয়ের কাজ শেষ হলে নিজেরা বাঁচতে কোন এক নির্জন স্থানে গাড়ি ফেলে রেখে চলে যেত এ চক্রটি।
অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, এই চক্রটি বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চুরি ও ছিনতাই করে। গ্রেফতারকৃতরা ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে রাতের বেলায় বিভিন্ন দোকানপাটে চুরি ও ছিনতাই করত। চুরি-ছিনতাই করাকালে যেন কোন সমস্যা না হয় সেজন্য তারা রাতের বেলা বেছে নেয়। রাস্তার পাশে বিভিন্ন দোকানে বিশেষ করে মোবাইলের দোকানগুলোতে চুরি করত চক্রটি। কোন দোকানে চুরি করলে সবকিছু নিয়ে নিত, কোনটা আসল আর কোনটা নকল তখনও তাদের দেখার সুযোগ থাকত না। গাড়ি চুরি বা ছিনতাই রোধে গাড়িতে ট্র্যাকার মেশিন ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানান ডিবির এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
ডিবির সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস বলেন, গ্রেফতারকৃতরা অত্যন্ত কৌশলে দিনের বেলায় ফেরিওয়ালা সেজে গাড়ির মালিকদের গাড়ি কোথায় রাখে, কোন দোকান ও বাড়িতে নিরাপত্তাকর্মী নেই এবং চুরি করার আগমন ও প্রস্থান পথ রেকি করে। পরবর্তী সময়ে ওই চক্রটি গভীর রাতে বা সুবিধামতো সময়ে কার্টার দ্বারা বিভিন্ন বাড়ি ও দোকানের তালা কেটে টাকা, গাড়ি, মোবাইলসহ মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে দ্রুত গাড়িযোগে পালিয়ে যেত। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।