এই ব্যাধির ভ্যাকসিন কী

গত বছর দেশে ৬২৬টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে উক্ত পরিসংখ্যান তৈরি করেছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)।

ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ মানব সমাজের আদিলগ্ন থেকেই সংঘটিত হয়ে আসছে। প্রচারমাধ্যমের কল্যাণে এ অপরাধের অনেক খবর জানা যাচ্ছে। ইংরেজি মাধ্যম স্কুল মাস্টারমাইন্ডের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামে একটি ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য দেয়া এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে এখনো ধর্ষণের অনেক ঘটনাই বোধগম্য কারণে রয়ে যাচ্ছে আড়ালে।

সমাজ-সভ্যতার অগ্রগতি হলেও ধর্ষণ বা নারী-শিশু নির্যাতনের চিত্র পরিবর্তিত হয়নি। দেশে ধর্ষণবিরোধী আইন রয়েছে, সম্প্রতি এ আইনকে আরো কঠোর করা হয়েছে। তবে শুধু আইন কঠিন করলেই যে প্রতিকার মিলবে তেমনটা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। এ পর্যন্ত ধর্ষণ মামলার বিচারের যে পরিসংখ্যান পাওয়া যায় তা খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। এটা আমাদের এ কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, আইনকে কঠোর করার চেয়ে এর যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি।

মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে নারী-শিশুরা একরকম ঘরবন্দী জীবনযাপন করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। শিক্ষার্থীদের চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। এরপরও নারী-শিশু নির্যাতন বেড়েছে, ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। নিজের ঘরে, আপনজনের মাধ্যমেই নারী ও শিশুরা বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। নিজ বাড়ির উঠানের গণ্ডি পেরোতে পারে না এমন শিশুও ধর্ষিত হয়। এর কারণ কী? সমাজবিদ ও মনস্তাত্ত্বিকদের গবষেণার বিষয় হতে পারে এটি। নীতিনির্ধারকদেরও এর উত্তর খুঁজতে হবে। নইলে ধর্ষণ-নির্যাতন থেকে নারী-শিশুদের সত্যিকার অর্থে মুক্তি দেয়া যাবে না।

ধর্ষণ-নির্যাতনের ঘটনা সরলীকরণের সুযোগ নেই। দৃশ্যমান কোন একক কারণে এসব ঘটছে না। এ ব্যাধির শেকড় অনেক গভীরে প্রোথিত। কোন সমাজ থেকে যখন ন্যায়-নীতি নির্বাসিত হয়, মূল্যবোধে ঘাটতি থাকে, আইনের প্রয়োগ দুর্বল হয়, তখন এ ধরনের অপরাধের শেকড় আরো বিস্তৃত হয়। সমস্যার গভীরে যেতে না পারলে আইনকে কঠোর করেও কোন সুফল মিলবে না।

সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১ , ২৭ পৌষ ১৪২৭, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

থামছে না ধর্ষণ

এই ব্যাধির ভ্যাকসিন কী

গত বছর দেশে ৬২৬টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে উক্ত পরিসংখ্যান তৈরি করেছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)।

ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ মানব সমাজের আদিলগ্ন থেকেই সংঘটিত হয়ে আসছে। প্রচারমাধ্যমের কল্যাণে এ অপরাধের অনেক খবর জানা যাচ্ছে। ইংরেজি মাধ্যম স্কুল মাস্টারমাইন্ডের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামে একটি ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য দেয়া এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে এখনো ধর্ষণের অনেক ঘটনাই বোধগম্য কারণে রয়ে যাচ্ছে আড়ালে।

সমাজ-সভ্যতার অগ্রগতি হলেও ধর্ষণ বা নারী-শিশু নির্যাতনের চিত্র পরিবর্তিত হয়নি। দেশে ধর্ষণবিরোধী আইন রয়েছে, সম্প্রতি এ আইনকে আরো কঠোর করা হয়েছে। তবে শুধু আইন কঠিন করলেই যে প্রতিকার মিলবে তেমনটা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। এ পর্যন্ত ধর্ষণ মামলার বিচারের যে পরিসংখ্যান পাওয়া যায় তা খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। এটা আমাদের এ কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, আইনকে কঠোর করার চেয়ে এর যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি।

মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে নারী-শিশুরা একরকম ঘরবন্দী জীবনযাপন করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। শিক্ষার্থীদের চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। এরপরও নারী-শিশু নির্যাতন বেড়েছে, ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। নিজের ঘরে, আপনজনের মাধ্যমেই নারী ও শিশুরা বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। নিজ বাড়ির উঠানের গণ্ডি পেরোতে পারে না এমন শিশুও ধর্ষিত হয়। এর কারণ কী? সমাজবিদ ও মনস্তাত্ত্বিকদের গবষেণার বিষয় হতে পারে এটি। নীতিনির্ধারকদেরও এর উত্তর খুঁজতে হবে। নইলে ধর্ষণ-নির্যাতন থেকে নারী-শিশুদের সত্যিকার অর্থে মুক্তি দেয়া যাবে না।

ধর্ষণ-নির্যাতনের ঘটনা সরলীকরণের সুযোগ নেই। দৃশ্যমান কোন একক কারণে এসব ঘটছে না। এ ব্যাধির শেকড় অনেক গভীরে প্রোথিত। কোন সমাজ থেকে যখন ন্যায়-নীতি নির্বাসিত হয়, মূল্যবোধে ঘাটতি থাকে, আইনের প্রয়োগ দুর্বল হয়, তখন এ ধরনের অপরাধের শেকড় আরো বিস্তৃত হয়। সমস্যার গভীরে যেতে না পারলে আইনকে কঠোর করেও কোন সুফল মিলবে না।