সাঈদীসহ ৬ জন অভিযুক্ত

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত। যুদ্ধাপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত সাঈদীর উপস্থিতিতে গতকাল ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে মামলার অভিযোগ গঠন হয়। বিচারক সৈয়দা হোসনে আরা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর তারিখ ঠিক করেছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলোÑ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও ইফার মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল হক, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস। এদের মধ্যে সাঈদীসহ চারজন আদালতে হাজির থাকলেও আবুল কালাম আজাদ ও আবদুল হক পলাতক রয়েছেন। আদালতে উপস্থিত আসামিরা অভিযোগ গঠনের সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করেন মোশাররফ হোসেন কাজল। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ফাউন্ডেশনের তৎকালীন পরিচালক আইয়ুব আলী চৌধুরী ২০১০ সালের ২৪ মে শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী। ২ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকা আয় গোপন করে তার ওপর প্রযোজ্য ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১২ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলাও বিচারাধীন। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। ৮০ বছর বয়সী সাঈদী তার আগে থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। ওই রায়ের পর দেশজুড়ে সহিংসতা চালায় জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা। ওই তাণ্ডবে প্রথম তিন দিনেই নিহত হন অন্তত ৭০ জন। এছাড়া বহু গাড়ি-দোকানপাট ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, হিন্দুদের মন্দির-ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সাঈদী আপিল করলে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেয়। তাতে সাজা কমে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ আসে। ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন হলেও তাতে কোন পরিবর্তন আসেনি।

মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১ , ২৮ পৌষ ১৪২৭, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

জাকাতের অর্থ আত্মসাৎ

সাঈদীসহ ৬ জন অভিযুক্ত

আদালত বার্র্তা পরিবেশক

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত। যুদ্ধাপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত সাঈদীর উপস্থিতিতে গতকাল ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে মামলার অভিযোগ গঠন হয়। বিচারক সৈয়দা হোসনে আরা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর তারিখ ঠিক করেছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলোÑ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও ইফার মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল হক, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস। এদের মধ্যে সাঈদীসহ চারজন আদালতে হাজির থাকলেও আবুল কালাম আজাদ ও আবদুল হক পলাতক রয়েছেন। আদালতে উপস্থিত আসামিরা অভিযোগ গঠনের সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করেন মোশাররফ হোসেন কাজল। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ফাউন্ডেশনের তৎকালীন পরিচালক আইয়ুব আলী চৌধুরী ২০১০ সালের ২৪ মে শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী। ২ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকা আয় গোপন করে তার ওপর প্রযোজ্য ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১২ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলাও বিচারাধীন। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। ৮০ বছর বয়সী সাঈদী তার আগে থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। ওই রায়ের পর দেশজুড়ে সহিংসতা চালায় জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা। ওই তাণ্ডবে প্রথম তিন দিনেই নিহত হন অন্তত ৭০ জন। এছাড়া বহু গাড়ি-দোকানপাট ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, হিন্দুদের মন্দির-ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সাঈদী আপিল করলে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেয়। তাতে সাজা কমে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ আসে। ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন হলেও তাতে কোন পরিবর্তন আসেনি।