কালীগঞ্জে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি হাওয়া ভুয়া এনজিও

অফিসের ফাইলপত্র, টেবিল চেয়ার, অন্যান্য জিনিসপত্র ঠিক একটা নামি দামি অফিসের মতো। এখানকার কর্মকর্তাদের কথাবার্তাও ছিল বেশ স্মাট। তারা সদ্য গজিয়ে ওঠা ‘জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন’-এর কর্মকর্তা। তাদের আস্তানা বেশি দিনের না হলেও ঋণ দেয়ার কথা বলে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে সঞ্চয় জমা নিয়ে রাতের আঁধারে হঠাৎ হাওয়া হয়ে গেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, জনকল্যাণ নাম দিয়ে অকল্যাণ করে চম্পট দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের নলডাঙ্গা রোডস্থ ফজলুর রহমানের বাসায়। ভাড়া নিয়ে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা এক প্রতারক চক্রের এনজিও। যারা ঋণ দেয়ার নাম করে অসংখ্য মানুষ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে সঞ্চয় জমা নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে উধাও। এদিকে স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর বলছে, তাদের কাছে এ এনজিওর কোন তথ্য নেই। আবার এখন পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের কেউ অভিযোগও দেয়নি।

ভুক্তভোগীরা জানান, কালীগঞ্জ শহরের নলডাঙ্গা রোডস্থ ফজলুর রহমানের বাসা ভাড়া নিয়ে জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন নাম দিয়ে কিছুদিন আস্তানা গেড়েছিল। এরপর কয়েকজন কর্মকর্তা সেজে বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে তারা অত্যন্ত মার্জিত ভাষায় নিজেদের ফাউন্ডেশনের পরিচয়ে ভিজিটিং কার্ড দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রথমে মালামাল কিনে কৌশলে সখ্যতা তৈরি করে। এরপর ২ বছর মেয়াদী ঋণ প্রজেক্ট আছে বলে প্রত্যেককে জানায়। কিন্ত শর্ত মোতাবেক প্রতি লাখ ঋণের জন্য ৭ থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত সঞ্চয় জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে এবং পরবর্তীতে এটা ফেরতযোগ্য। এতে রাজি হয়ে ঋণ নিতে আগ্রহীরা সঞ্চয় জমা দিতে থাকে। এরপর রাতের আঁধারে তারা হাওয়া হয়ে গেছে। পৌরসভার খয়েরতলা গ্রামের শরিফুল ইসলাম আরিফ জানান, কয়েক দিন আগে আমার দোকানে ২ জন লোক এসে নিজেদের এনজিও কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেয়।

দোকানে ১ লাখ টাকা ব্যবসায়ী ঋণ দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা নেয়। গত শনিবার সকালে আমার ঋণ দেয়ার কথা ছিল কিন্তু ঠিকানা ও সময়মতো সেখানে গিয়ে দেখি জনৈক এক বাড়ির পুরা এক ফ্ল্যাটে জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের অফিস। সাইনবোর্ড ঝুলানো আছে কিন্তু এনজিওর কেউ নেই। অফিসটি তালাবদ্ধ রয়েছে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমার মতো শত শত মানুষ সঞ্চয়ের টাকা জমা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। শহরের কোটচাঁদপুর রোডের মদিনা থাই অ্যান্ড এসএস ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী তরিকুল ইসলাম জানান, আমাকে ৫ লাখ টাকা ঋণ দিতে চেয়েছিল। এজন্য ১৫ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা নিয়েছে। এখন দেখছি তারা লাপাত্তা। জনকল্যাণের নামে অকল্যাণ।

ভুক্তভোগী কালীগঞ্জ শহরের জুতা ব্যবসায়ী বার্মিজ ঘরের স্বত্বাধিকারী ছামছুল ইসলাম জানান, কয়েক দিন আগে দুই ভদ্রলোক আমার দোকানে এসে জুতা কিনে নিজেদের এনজিও কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে রিয়াজুল ইসলাম নাম লেখা একটি ভিজিটিং কার্ড দেন। এরপর বলেন, তাদের ঋণ প্রজেক্ট আছে। আমি ঋণ নেয়ার কথা বললে তারা রাজি হয়ে সঞ্চয় জমা দিতে বলেন। ২ দিন পর ৪ লাখ টাকা ঋণ নেয়ার জন্য মোট ২৮ হাজার টাকা জমা দেই। বুধবার এনজিওর কর্মকর্তারা এসে ঋণ দেয়ার কথা। শুধু আমি একা না আমার পাশের জুতা ব্যবসায়ী বার্মিজ সুয়ের মালিকের কাছ থেকে ৪০ হাজার, ড্যান্ডি সুয়ের দোকান মালিকের কাছ থেকে ৩৫ হাজার, জেরিন এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে ৩৫ হাজার, রিফাত গার্মেন্টস থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়েছে। এছাড়া শুভশ্রী ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী প্রশান্ত বিশ্বাসের কাছ থেকেও একইভাবে ৫ হাজার, মাসুদ রেজার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ও একটি চেক বইয়ের পাতা নিয়েছে। শিবনগর গ্রামের পারভিনা আক্তারের কাছ থেকে ৫৪ হাজার, কাশীপুর রেশমা লস্করের কাছ থেকে ৫৪ হাজার, চাঁদবা গ্রামের মোস্তফা নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এখন শুনছি বিগত ৩ দিন এ এনজিওর অফিসে তালা ঝুলানো। কর্মকর্তাদের কোন হদিস নেই। তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ। এখন বোঝা যাচ্ছে জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের নামে একটি প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়েছেন। ধরাশায়ী হয়েছেন এক মিডিয়াকর্মী, এক সাবেক মহিলা জনপ্রতিনিধিসহ শত শত মানুষ। লুটে নিয়ে গেছে লাখ লাখ টাকা। স্থানীয় ভুক্তভোগীদের সূত্রে আরও জানা গেছে, জানুয়ারির প্রথম থেকে এই প্রতারকচক্র কালীগঞ্জ পৌরসভার গোরস্তানপাড়া নলডাঙ্গা রোডের ফজলুর রহমানের বাড়ির একটি ফ্ল্যাট ৫ হাজার টাকা মাসিক চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন নাম দেয়। যেখানে এনজিও (এমআর সনদ নং- ০৯০০১৯০০৭৪ ) নামের একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে কালীগঞ্জ শহরের ছোট বড় বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে প্রথমে দু’একশ টাকা নিয়ে সদস্য করে। পরে সঞ্চয়ের কথা বলে টাকা নেয়া শুরু করে। সঞ্চয় বাবদ ৫ থেকে ৫০ হাজার পর্যন্ত জমা নিয়েছে। তারা ০১৮১৭-৪৬৯৪৪৩ নম্বর, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রিয়াজুল ইসলাম পরিচয়ে ০১৭৯৩-৩১২০৪৩ নম্বর থেকে কথা বলতেন। মিজানের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নং ঢাকা মেট্রো- হ-২৫-১৮৬৮। এ সম্পর্কিত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্তে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। দেখলাম অফিসে অনেক ফাইলপত্র। এলাকার লোকজন বললেন, ৩-৪ দিন ধরে এনজিওর কক্ষে তালা দিয়ে হাওয়া হয়ে গেছে।

বুধবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২১ , ২৯ পৌষ ১৪২৭, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

জনকল্যাণের নামে অকল্যাণকর ফাউন্ডেশন

কালীগঞ্জে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি হাওয়া ভুয়া এনজিও

সাবজাল হোসেন, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)

অফিসের ফাইলপত্র, টেবিল চেয়ার, অন্যান্য জিনিসপত্র ঠিক একটা নামি দামি অফিসের মতো। এখানকার কর্মকর্তাদের কথাবার্তাও ছিল বেশ স্মাট। তারা সদ্য গজিয়ে ওঠা ‘জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন’-এর কর্মকর্তা। তাদের আস্তানা বেশি দিনের না হলেও ঋণ দেয়ার কথা বলে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে সঞ্চয় জমা নিয়ে রাতের আঁধারে হঠাৎ হাওয়া হয়ে গেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, জনকল্যাণ নাম দিয়ে অকল্যাণ করে চম্পট দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের নলডাঙ্গা রোডস্থ ফজলুর রহমানের বাসায়। ভাড়া নিয়ে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা এক প্রতারক চক্রের এনজিও। যারা ঋণ দেয়ার নাম করে অসংখ্য মানুষ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে সঞ্চয় জমা নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে উধাও। এদিকে স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর বলছে, তাদের কাছে এ এনজিওর কোন তথ্য নেই। আবার এখন পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের কেউ অভিযোগও দেয়নি।

ভুক্তভোগীরা জানান, কালীগঞ্জ শহরের নলডাঙ্গা রোডস্থ ফজলুর রহমানের বাসা ভাড়া নিয়ে জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন নাম দিয়ে কিছুদিন আস্তানা গেড়েছিল। এরপর কয়েকজন কর্মকর্তা সেজে বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে তারা অত্যন্ত মার্জিত ভাষায় নিজেদের ফাউন্ডেশনের পরিচয়ে ভিজিটিং কার্ড দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রথমে মালামাল কিনে কৌশলে সখ্যতা তৈরি করে। এরপর ২ বছর মেয়াদী ঋণ প্রজেক্ট আছে বলে প্রত্যেককে জানায়। কিন্ত শর্ত মোতাবেক প্রতি লাখ ঋণের জন্য ৭ থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত সঞ্চয় জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে এবং পরবর্তীতে এটা ফেরতযোগ্য। এতে রাজি হয়ে ঋণ নিতে আগ্রহীরা সঞ্চয় জমা দিতে থাকে। এরপর রাতের আঁধারে তারা হাওয়া হয়ে গেছে। পৌরসভার খয়েরতলা গ্রামের শরিফুল ইসলাম আরিফ জানান, কয়েক দিন আগে আমার দোকানে ২ জন লোক এসে নিজেদের এনজিও কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেয়।

দোকানে ১ লাখ টাকা ব্যবসায়ী ঋণ দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা নেয়। গত শনিবার সকালে আমার ঋণ দেয়ার কথা ছিল কিন্তু ঠিকানা ও সময়মতো সেখানে গিয়ে দেখি জনৈক এক বাড়ির পুরা এক ফ্ল্যাটে জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের অফিস। সাইনবোর্ড ঝুলানো আছে কিন্তু এনজিওর কেউ নেই। অফিসটি তালাবদ্ধ রয়েছে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমার মতো শত শত মানুষ সঞ্চয়ের টাকা জমা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। শহরের কোটচাঁদপুর রোডের মদিনা থাই অ্যান্ড এসএস ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী তরিকুল ইসলাম জানান, আমাকে ৫ লাখ টাকা ঋণ দিতে চেয়েছিল। এজন্য ১৫ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা নিয়েছে। এখন দেখছি তারা লাপাত্তা। জনকল্যাণের নামে অকল্যাণ।

ভুক্তভোগী কালীগঞ্জ শহরের জুতা ব্যবসায়ী বার্মিজ ঘরের স্বত্বাধিকারী ছামছুল ইসলাম জানান, কয়েক দিন আগে দুই ভদ্রলোক আমার দোকানে এসে জুতা কিনে নিজেদের এনজিও কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে রিয়াজুল ইসলাম নাম লেখা একটি ভিজিটিং কার্ড দেন। এরপর বলেন, তাদের ঋণ প্রজেক্ট আছে। আমি ঋণ নেয়ার কথা বললে তারা রাজি হয়ে সঞ্চয় জমা দিতে বলেন। ২ দিন পর ৪ লাখ টাকা ঋণ নেয়ার জন্য মোট ২৮ হাজার টাকা জমা দেই। বুধবার এনজিওর কর্মকর্তারা এসে ঋণ দেয়ার কথা। শুধু আমি একা না আমার পাশের জুতা ব্যবসায়ী বার্মিজ সুয়ের মালিকের কাছ থেকে ৪০ হাজার, ড্যান্ডি সুয়ের দোকান মালিকের কাছ থেকে ৩৫ হাজার, জেরিন এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে ৩৫ হাজার, রিফাত গার্মেন্টস থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়েছে। এছাড়া শুভশ্রী ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী প্রশান্ত বিশ্বাসের কাছ থেকেও একইভাবে ৫ হাজার, মাসুদ রেজার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ও একটি চেক বইয়ের পাতা নিয়েছে। শিবনগর গ্রামের পারভিনা আক্তারের কাছ থেকে ৫৪ হাজার, কাশীপুর রেশমা লস্করের কাছ থেকে ৫৪ হাজার, চাঁদবা গ্রামের মোস্তফা নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এখন শুনছি বিগত ৩ দিন এ এনজিওর অফিসে তালা ঝুলানো। কর্মকর্তাদের কোন হদিস নেই। তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ। এখন বোঝা যাচ্ছে জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের নামে একটি প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়েছেন। ধরাশায়ী হয়েছেন এক মিডিয়াকর্মী, এক সাবেক মহিলা জনপ্রতিনিধিসহ শত শত মানুষ। লুটে নিয়ে গেছে লাখ লাখ টাকা। স্থানীয় ভুক্তভোগীদের সূত্রে আরও জানা গেছে, জানুয়ারির প্রথম থেকে এই প্রতারকচক্র কালীগঞ্জ পৌরসভার গোরস্তানপাড়া নলডাঙ্গা রোডের ফজলুর রহমানের বাড়ির একটি ফ্ল্যাট ৫ হাজার টাকা মাসিক চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন নাম দেয়। যেখানে এনজিও (এমআর সনদ নং- ০৯০০১৯০০৭৪ ) নামের একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে কালীগঞ্জ শহরের ছোট বড় বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে প্রথমে দু’একশ টাকা নিয়ে সদস্য করে। পরে সঞ্চয়ের কথা বলে টাকা নেয়া শুরু করে। সঞ্চয় বাবদ ৫ থেকে ৫০ হাজার পর্যন্ত জমা নিয়েছে। তারা ০১৮১৭-৪৬৯৪৪৩ নম্বর, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রিয়াজুল ইসলাম পরিচয়ে ০১৭৯৩-৩১২০৪৩ নম্বর থেকে কথা বলতেন। মিজানের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নং ঢাকা মেট্রো- হ-২৫-১৮৬৮। এ সম্পর্কিত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্তে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। দেখলাম অফিসে অনেক ফাইলপত্র। এলাকার লোকজন বললেন, ৩-৪ দিন ধরে এনজিওর কক্ষে তালা দিয়ে হাওয়া হয়ে গেছে।